০
৯১৭ বার পঠিত
আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ এই দিনটিকে নারী দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। সময় এখন নারীর : উন্নয়নে তারা বদলে যাচ্ছে গ্রাম শহরে কর্মজীবন ধারা। এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য।
বাংলাদেশ, যে দেশের সরকার প্রধান নারী, জাতীয় সংসদের স্পীকার, বিরোধী দল প্রধান এমনকি সংসদ উপনেতাও নারী। একবিংশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশ যে উন্নয়নের সোপান ভাঙছে আর সেটা নারীর হাত ধরে এতে কোনো সন্দেহ নেই। তৈরি পোশাক খাতসহ দেশের সকল শিল্প খাতে এখন নারীর কর্ম চঞ্চলতায় মুখরিত। একটা সময় বলা হতো, সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে। নারী মা হবে সংসারের কেন্দ্রে থেকে সংসার সামলাবে এটা ভেবেই বলা হতো। তখন সংসারই ছিলো নারীর শেষ আশ্রয়।
আজ দেশের নারীর সামনে একটা বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত! আজ বাংলার নারী যুক্ত হচ্ছে দেশের উন্নয়নের ধারায়। রক্ষণশীল সমাজের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে গ্রামে গ্রামে মেয়েরা বিভিন্ন কর্মসূচীর আওতায় ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প কারখানা গড়ে তুলছে। প্রাথমিক মাধ্যমিকের পর বর্তমানে স্নাতক পর্যন্ত মেয়েদের লেখাপড়া অবৈতনিক। সরকারের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় স্বনির্ভর হচ্ছে গ্রামীণ নারী।
সংসার সামলে বাড়ির আঙিনায় সবজিচাষে আজ দেশের প্রান্তিক নারীও আত্মকর্ম সংস্হানে খুঁজে নিচ্ছে জীবনের নতুন অর্থ। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে চলেছে শহুরে ও গ্রামীণ নারী। নারীর এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০১২সালে নারী উন্নয়ন নীতি প্রবর্তন করে। নারীর প্রতি সহিংসতা নিরোধে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন ২০১০,পারিবারিক সুরক্ষা বিধিমালা ২০১৩, ডিএনএ আইন ২০১৪ নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ জাতীয় নীতিমালা প্রনয়ণ করেছে। মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম (৪)চলছে (জুলাই২০১৬-জুন২০১৯)। এতদসত্বেও পারিবারিক পরিমন্ডলে নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছে। ডোমেষ্টিক ভায়োলেন্সের শিকার এসব নারী আদৌ কতটা নিরাপদ এই সমাজে। পুরুষকে পৃথিবীর আলো দেখানো নারী তার ঘরেই পুরুষের দ্বারা সহিংসতার শিকার! বদলে যাওয়া সময়ে আজ কর্মজীবী বা গৃহিণী উভয় নারীকেই বিভিন্ন কারণে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বা গণমাধ্যমে যাতায়াত করতে হয়।
ঘন বসতির এই দেশে গণপরিবহনেও পড়ে ভীড়ের চাপ। আর প্রতিদিন ঘর থেকে বেরুনো অসংখ্য নারীকে নিতে হয় আরো কিছু বাড়তি চাপ। উন্নয়ন সংস্হা ব্রাকের নগর উপনগর ও গ্রামাঞ্চলে তিনমাস ব্যাপী চালিত গবেষণা প্রতিবেদন বলছে দেশের ৯৪ শতাংশ নারী গণপরিবহনে যাতায়াতে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি হচ্ছে লেগুনা ও টেম্পো তে। ৪১-৬৬ বছর বয়সী পুরুষেরা তাদের অবদমিত কামনার শিকার বানান অসহায় নারীকে।
জরীপে নারীরা এরকম ঘটনায় তাদের নিশ্চুপ ভূমিকা বা প্রতিবাদ না করার কথাও বলেছেন। এরকম নিপীড়ন শ্রীলঙ্কাতে ৯০ শতাংশ, পাকিস্তানে ৮৫, লন্ডনে৩২। সাম্প্রতিক সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নিপীড়ন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। দেশজুড়ে আছে কিছু বিকৃত মানসিকতার পুরুষ। এদের প্রতিহত করতে চাই সম্মিলিত উদ্যোগ। সাধারণ নাগরিকের প্রতিবাদ জরুরী। আইন আছে তবু প্রয়োগ নাই, আইন যেন ঠুঁটো জগন্নাথ!
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন