১
১৬২৫ বার পঠিত
ইসলাম ধর্মানুসারীরা সৃষ্টিকর্তা হিসেবে যাকে মান্য করেন তার নাম ‘আল্লাহ’। ইসলামি ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ‘আল্লাহ’ নামটি মোটেই ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক নবি মুহাম্মদের নয়।
নবি মুহাম্মদের জন্মের বহু আগে থেকেই আরবদের চন্দ্রদেবতা ‘হুবাল’ বা ‘মুন গড’কে মূর্তি বানিয়ে পূজা-অর্চনা করা হতো। আল্লাহ’কে প্যাগানরা (পৌত্তলিকরা) মুহাম্মদের জন্মের বহু আগে থেকেই উপাসনা করতো।
বর্তমানে কোন বাঙালি মুসলিমকে এসব কথা বলতে গেলে তারা রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়ে তেড়ে আসেন। তারা এককথায় বলে দেয়ার চেষ্টা করেন নাস্তিকরা এসব কথা ছাড়া কোন কথা বলার পায় না। এসব বানোয়াট কথাবার্তা নাস্তিকরা বলবেই।
কিন্তু একজনও একটু মাথা খাটায় না কী কারণে, কোন যুক্তিতে কথাগুলো বলা হচ্ছে। অথচ কোন বইপত্র না পড়েও কয়েক সেকেন্ড চিন্তা করলেই বিষয়টা সবার কাছেই দিনের আলোর মতোই পরিস্কার হয়ে যায়।
পৃথিবীর সকল মুসলমানমাত্রই নবি মুহাম্মদের পিতার নাম জানেন। তারপরেও আবারও মুহাম্মদের পিতার নাম এখানে বলছি। তাঁর পিতার নাম ছিল আবদুল্লাহ। আরবি আবদুল্লাহ শব্দের বাঙলা অর্থ হলো – ‘আল্লাহর দাস’।
মুসলমানরা কী অস্বীকার করতে পারবেন যে, মুহাম্মদের জন্মের বহু আগেই তাঁর পিতার জন্ম হয় নি? আর কোন ব্যক্তির নাম সে নিজে নিজে দেয় না। প্রত্যেকটি শিশুর বা মানুষের নাম রাখা হয় তার পিতা মাতা বা দাদা দাদী বা আত্মীয় স্বজনের দ্বারা। সেক্ষেত্রে আমরা সহজেই ধরে নিতে পারি মুহাম্মদের পিতা আবদুল্লাহর নাম রেখেছেন মুহাম্মদের দাদা দাদী বা সমগোত্রীয় কেউ।
মুহাম্মদের পিতা (?) কর্তৃক যখন মুহাম্মদের মাতা গর্ভবতী হন তখন ধরে নিই আবদুল্লাহর বয়স ১৮ ছিল। সেকালে আরবের পুরুষরা বাল্যবয়সে বিয়ে করার ক্ষমতা ছিল না। আলোচনার খাতিরে আবদুল্লাহর বয়স বের করার জন্য সর্বনিম্ন বয়সটাই ধরে নিলাম। মুহাম্মদের জন্মের পরে ৪০ বছর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মের কোন আলামত পরিলক্ষিত হয় নি।
তাহলে অংকটা এরকম – মুহাম্মদ কর্তৃক ইসলাম প্রচার শুরু ৪০ বছর + তাঁর পিতার বয়স ১৮ বছর + তাঁর মায়ের গর্ভে অবস্থান গড়ে ১ বছর = ৫৯ বছর। আমরা গড় হিসেবে ধরে নিলাম ৬০ বছর।
এখন যদি প্রশ্ন করা হয় ইসলাম ধর্ম আসার ৬০ বছর পূর্বে অবশ্যই ‘আল্লাহ’ নামক একজন সৃষ্টিকর্তা বা দেব-দেবির অস্তিত্ব অবশ্যই ছিল। এবং এই ‘আল্লাহ’ কোনভাবেই মুহাম্মদের আবিষ্কার তথা ইসলামের আবিষ্কার করা ‘আল্লাহ’ নয়।
পোস্টের শুরুতেই উল্লেখ করেছি – নবি মুহাম্মদের জন্মের বহু আগে থেকেই আরবদের চন্দ্রদেবতা ‘হুবাল’ বা ‘মুন গড’কে মূর্তি বানিয়ে পূজা-অর্চনা করা হতো।
বলা হয়ে থাকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার পরে মূর্তিপূজা বা কোন প্রতীকচিহ্নের উদ্দেশে ইসলামে উপাসনা করার বিধান নাই কিংবা নবি মুহাম্মদ তা বাতিল করে দিয়েছেন।
আসলেই কী তাই? বাঙালি মুসলমানরা একটু মাথা খাটান, নিজেরাই এর উত্তর পেয়ে যাবেন।
১) ইসলামের প্রতীক কী? [যারা জানেন না তাদের মনে করিয়ে দিই – চাঁদ-তারা]
২) আল্লাহ শব্দের অর্থ কী? [ কোরানে ‘আল-লাত‘ কে, তার বিবরণ দেয়া আছে, কোরান বের করে একটু পড়ে নিন]
ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠার শত শত বছর আগে থেকে আরবের ক্বাবায় যে মেলা বসতো সেখানে অসংখ্য মূর্তির উপাসনা চলতো, সেখানে মুন গডের অস্তিত্বও ছিল, যাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মূর্তি ছিল হুবালের মূর্তি।
ইসলামের বিজয়ের পরে নবি মুহাম্মদ সব মূর্তি ভেঙ্গে ফেলে ‘আল্লাহ’কে নিরাকার সৃষ্টিকর্তা বা ঈশ্বর হিসেবে প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। সেই থেকেই আল্লাহ নিরাকার ও অংশীদারহীন হিসেবে মুসলমানদের নিকট বিবেচিত।
রেফারেন্স:
১) Origins of Islam: Godess Allat
২) Al-Lat
৩) An-Najm
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন
সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭; ৮:২৪ পূর্বাহ্ন
আরবদের মাঝে আল্লাহর প্রকৃত স্বরূপ কি ছিল তার সঠিক উত্তর পাওয়া কঠিন। ক্বাবায় হুবালের মূর্তি ছিল ঠিকই, কিন্তু আল্লাহর কোন প্রতিকৃতি ছিল বলে মনে হয় না। মনে হয় আল্লাহর মর্যাদা ছিল হিন্দু ধর্মে ভগবানের অনুরূপ — তিনি বিশ্বশ্রষ্টা, সবকিছুর নিয়ন্তা। তার আকার-প্রকৃতি সম্পর্কে মানুষের ধারনা নেই, কাজেই তার কোন মূর্তিও নেই। নানান দেবদেবী পূজার মাধ্যমে হিন্দুরা ভগবানের কৃপা লাভের চেষ্টা করে। তেমনি ক্বাবায় স্থাপিত বহু দেব-দেবীর (হুবাল, আল-লাত, আল-মানাত ও অন্যান্য) পুজোর মাধ্যমে বিশ্বশ্রষ্টা আল্লাহর কৃপা অর্জনের চেষ্টা করতো আরবরা। উল্লেখ্য, কোরানে বলা হয়েছে কাবায় স্থাপিত দেবী আল-লাত, আল-মানাত ও আল-উজ্জা আরবদের কাছে ছিল আল্লাহর ফেরেস্তা (angel), যারা আরবদের কামনা-বাসনা আল্লাহ কাছে পৌছে দেওয়ার বাহন হিসেবে কাজ করতো, তাদের পক্ষে আল্লাহর কাছে সুরারিশ করতো ইত্যাদি।