পৃথিবীর সবচেয়ে সফল ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব বলতে গেলে প্রথমেই যার কথা মনে আসে সে হলো ইসলামের নবী মুহাম্মদ। কোন এক অদ্ভুত কারণে কুরআন, হাদিস এবং সীরাতে যে মুহাম্মদকে আমরা চিনি তাকেই আমরা ঐতিহাসিক সত্য বলে ধরে নিয়েছি। আমরা কখনো প্রশ্ন করি না, আসলেই কী মুহাম্মদ বলে কেউ ছিল কীনা অথবা আমরা যে মুহাম্মাদকে চিনি সেই কী আসল মুহাম্মদ নাকী অন্য কেউ। প্রশ্ন করি না, এই মুহাম্মদ কী যিশু মুসার মতই কাল্পনিক নাকী এর আসলেই কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি আছে। এমনকী কখনো খুঁজেও দেখি না সে সময়ের অমুসলিম সোর্সগুলো থেকে পাওয়া তথ্য মুসলিম সোর্সের সাথে মিলিয়ে দেখার।
ট্রেডিশনাল ইসলামিক সোর্স কুরআন, হাদিস এবং সিরাত থেকে আমরা জানি মুহাম্মদ ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মারা যান। প্রাথমিক জীবনে ছিলেন ব্যবসায়ী। ধর্ম প্রচার শুরু করেন ৪০ বছর বয়স থেকে এবং জীবনের বাঁকী সময়টা অস্ত্রের মাধ্যমে ধর্মপ্রচার করেই কাটে।
মুহাম্মদ সম্পর্কে জানতে কুরআনের দ্বারস্থ হলে একটা অদ্ভুত ব্যাপার লক্ষ করা যায়। সেখানে মুহাম্মদ শব্দটি খুব কমই এসেছে, তিন চারবারের বেশী না। যতবার না মুহাম্মাদের নাম বলা হয়েছে তার থেকে ঢের বেশিবার বলা হয়েছে মুসা (১৩৬ বার), ইব্রাহিম (৭৯ বার) এমনকী ফেরাউনের (৭৪ বার) নাম। অন্যদিকে নবী শব্দটা ব্যবহার হয়েছে ৪৩ বার এবং রাসূল শব্দটি এসেছে ৩০০ বারের মত। কখনো কখনো তাকে সম্বোধন করা ‘সম্মানিত একজন‘ বা ‘প্রশংসিত একজন‘ এবং বিশ্বাসী অবিশ্বাসী সবাই ধরেই নিয়েছে সেগুলো মুহাম্মাদকে উদ্দেশ করে বলা। কিন্তু আমরা কী আসলেই নিশ্চিত হতে পারি একশতভাগ যে এই বিশেষণগুলো মুহাম্মাদকেই উদ্দেশ করে বলা। তবে হ্যা, ট্রেডিশনাল মুহাম্মাদের কথা যদি সত্য হয় তাহলে এটা সম্ভব যে আত্মপ্রেমে মুগ্ধ মুহাম্মদ নিজেকেই নিজে সম্বোধন করে এসব বিশেষণে।
উল্লেখ্য ইসলামিক সোর্স মতে কুরআন সংকলিত হয় মুহাম্মাদের মৃত্যুর প্রায় ৩৩ বছর এবং হাদিস সংকলিত হয় প্রায় আড়াইশ বছর পরে। মুহাম্মাদের জীবনী সীরাত প্রথম লেখা হয় মুহাম্মাদের মৃত্যুর ১০০ বছর পরে যদিও সেটা সময়ে হারিয়ে যায়। সেই লেখার ওপর নির্ভর করে ইবনে হিশাম লিখেন আরেকটি সীরাত।
মৌখিক ট্র্যাডিশনের ওপর ভিত্তি করে লেখা সীরাত এবং হাদিস যে আসলে ঐতিহাসিকভাবে কতটা সঠিক তা নিয়ে যে শুধু অমুসলিম স্কলারদের মধ্যে দ্বিধা ছিল তা না, অনেক আগে থেকেই মুসলিম স্কলারদের মধ্যেও ছিল দ্বিধা। যে কারণে সহীহ হাদিস এবং জাল হাদিস নিয়ে তর্ক বিতর্ক ইসলামি স্কলারদের মধ্যে এখনো চলছে। যদিও কিছু স্কলার সীরাত এবং হাদিসকে সত্য বা সত্যের কাছাকাছি মনে করেন মুহাম্মাদের জীবনের বিতর্কিত এবং নৃশংস ঘটনাগুলো বর্ণনা করার জন্য।
কুরআন সংকলনের ব্যাপারে মুসলিম সোর্স যায় বলুক না কেন এর পেছনে ঐতিহাসিক তেমন শক্ত প্রমাণ নাই। সবচেয়ে পুরাতন কুরআনের সম্পূর্ণ সংকলন (টপকাপি ম্যানুস্ক্রিপ্ট এবং সমরকন্দ কুফিক কুরআন) ও অষ্টম শতাব্দীর পুরাতন না। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে পুরাতন আংশিক কুরআন বার্মিংহাম ম্যানুস্ক্রিপ্ট। রেডিও কার্বন ডেটিং অনুসারে ম্যানুস্ক্রিপ্টটি লেখা হয় ৫৬৮ সাল থেকে ৬৪৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে। যা থেকে আমরা এমনকী ধারণা করতে পারি ম্যানুস্ক্রিপ্টটি লেখা হয়েছে মুহাম্মাদের জন্মের আগে অথবা পরে অথবা তার জীবনদশায়।
মুহাম্মাদের কথিত জীবনদশার সময়ে ইসলামিক কোন টেক্সট না পাওয়া গেলেও ঐতিহাসিকভাবে এটা মোটামুটি প্রমাণিত যে আরবের গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সেসময় রাজনৈতিক একটা একত্বের সৃষ্টি হয়। যার প্রায় একশবছরের মধ্যেই আরব সাম্রাজ্য ছড়িয়ে পরে পুরো মধ্যেপ্রাচ্যে, উত্তর আফ্রিকা, ইরান এমনকী ভারতীয় উপমহাদেশের কাছাকাছিও তারা চলে আসে। আর এর মধ্যেই প্রথম ইতিহাসে মুহাম্মাদের নাম প্রথম শোনা যেতে থাকে।
এখন প্রশ্ন হল মুহাম্মদ বলে যাকে জানি তিনি যদি না-ই থাকে তাহলে তিনি কী কল্পিত লিজেন্ডারি কোন চরিত্র? তাহলে কল্পিত এই চরিত্র বানানো? নাকী মুহাম্মদ বলে আসলেই কেউ ছিল কিন্তু আমাদের জানা মুহাম্মদ তিনি নন? এই মুহাম্মদ কী একজন মানুষ নাকী একাধিক চরিত্র কোনোভাবে মানুষের মুখে মুখে এক হয়ে গেছে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে শুধু নতুন প্রশ্নই বের হয় শুধু, কোনো উত্তর পাওয়া যায় না।
ঐতিহাসিকভাবে সর্বপ্রথম আরবদের নবীর তথ্য পাওয়া যায় ‘Doctrina Jacobi‘ নামের এক লেখায়। যদিও সেখানে মুহাম্মাদের নাম উল্লেখ ছিল না। প্যালেস্টাইনে বসবাস করা কোন এক খ্রিস্টান লেখক ৬৩৪ থেকে ৬৪০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে গ্রিক ভাষায় লেখাটি লিখেন। ডকট্রিনা জ্যাকোবির একাংশের বাংলা ভাবানুবাদ মোটামুটি এরকম –
(৬৩৪ খ্রিস্টাব্দে ) ”যখন রোমান রাজকীয় এক সৈন্য আরবদের হাতে মারা যায় তখন আমি ছিলাম সিক্যামিনার পথে নৌকায় সিজারিয়াতে। এ খবরে ইহুদিরা খুব উল্লাস করছিল। লোকে বলছিল নতুন এক নবী এসেছে আরবদের মাঝে যে কিনা (ওল্ড টেস্টামেন্টের) সেই প্রতিশ্রুত নবী। সিক্যামিনায় এসে এক জ্ঞানী বৃদ্ধের কাছে সেই নতুন নবীর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আরবদের নবী মিথ্যা নবী। নবীরা কখনো তলোয়ার নিয়ে আসে না।”
তৎকালীন সময়ে আরবদের অন্য কোন নবী যদি না থেকে থাকে তাহলে ধরে নেয়া যেতে পারে এখানে মুহাম্মাদের কথাই বলা হচ্ছে যা অনেকটাই ট্রেডিশনাল মুহাম্মাদের সাথে মেলে। সমস্যা হল দিন তারিখে। ট্রেডিশনাল সোর্স বলছে মুহাম্মদ মারা যায় ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে আর ডকট্রিনা জ্যাকবির তথ্যমতে আরবদের সেই নবী তখনও বেচে আছে এবং তার সৈন্যদলের সাথে সাম্রাজ্য বিস্তার করে চলছে।
টমাস নামের আরেকজন খ্রিস্টান যাজকের লেখায় জানা যায় ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দে গাজার পূর্বে আরবদের মোহামেত বা মহমত এর (tayayee d-mhmt) সৈন্যদের সাথে রোমানদের এক যুদ্ধের কথা। ভাষার ভিন্নতার কারণে মোহাম্মদ যদি মোহামেত বা মহমত হয়ে যায় তাতে অবাক হবার কিছু নেই। এমনকী বাংলাতেও মোহাম্মদকে মোহাম্মদ বলার কাল এখনো আছে। এখানে কোন নবীর উল্লেখ না থাকলেও মোহামেত বা মোহাম্মদের উল্লেখ আছে। দুটো সূত্রেই ৬৩৪ সালে আরবদের সাথে রোমানদের যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে এর মধ্যে একটাতে বলা হয়েছে মোহাম্মদের কথা আরেকটাতে বলা হয়েছে কোন এক প্রতিশ্রুত নবীর কথা। দুই দুই চার করে আমরা কী ধরে নিতে পারি মোহাম্মদই সেই প্রতিশ্রুত নবী। তারপরেও সেই একই সমস্যা থেকেই যায়, ট্রেডিশনাল সূত্র অনুসারে মোহাম্মদ তার দুই বছর আগেই মারা গেছেন।
৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে খলিফা উমরের সৈন্যদল জেরুজালেম দখল করলে সেখানকার প্রধান খ্রিস্টান ধর্মগুরু সোফ্রোনিয়াস আরবদের সম্পর্কে বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং তথ্য দেয়। যেমন সোফ্রোনিয়াস এক বর্ণনায় বলে চার্চ, গ্রাম ধ্বংস করার কথা, ক্রীতদাস নেয়ার কথা যা ট্রেডিশনাল ইসলামিক একাউন্ট অনুযায়ী মেলে না। ইসলামিক সোর্স অনুসারে, সোফ্রোনিয়াস শান্তিপূর্ণভাবে জেরুজালেম খলিফা উমরের হাতে দিয়ে দেয় এবং উমর সেখানে খ্রিস্টানদের থাকার অধিকার দেয় জিজিয়া কর দেবার পরিবর্তে। ইসলামিক সোর্স ঐতিহাসিকভাবে কতটুকু সত্য তা সন্দেহ করার মূল কারণ হলো ইসলামিক সোর্সটি নিজেই, যা কীনা সেই ঘটনার প্রায় তিনশ বছর পরে লিখা, অন্যদিকে সোফ্রোনিয়াসের বর্ণনা সেসময়ের সমসাময়িক।
আরেকটা ব্যাপার, সোফ্রোনিয়াস, টমাস বা ডকট্রিনা জ্যাকোবির কোথাও ইসলাম বা মুসলিম শব্দটির উল্লেখ নেই। তার বদলে তাদের সারাসিন বা আরব বলেই ডাকা হয়েছে। শুধু এই না, ৬৩৯ সালে এন্টিওখের খ্রিস্টান ধর্মগুরু জন তৃতীয় তাদের হাগারিয়ান বা হাগারের মানুষ বলে সম্বোধন করেন। ৬৪৭ সালে সেলুসিয়ার খ্রিস্টান ধর্মগুরু ইসোয়ায়েব তৃতীয় আরবদের বলেন হাগারিয়ান আরব।
৬৬০ থেকে ৬৭০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে আর্মেনিয়ান বিশপ সেবেওস তার লেখায় মাহমেত নাম এক ইসমায়েলাইট ব্যবসায়ী ও ধর্মগুরুর কথা উল্লেখ করেন যদিও সে লেখায় মুসলিম বা ইসলামের নামগন্ধও ছিল না বরং নতুন একটা শব্দ পাওয়া যায় ইসমায়েলাইট। ৬৫১ সালে মুয়াবিয়া, তৎকালীন সিরিয়ার গভর্নর, যখন বাইজান্টাইন সম্রাট কনস্টান্টিন দ্যা বিয়ার্ডেড এর কাছে চিঠি পাঠান সেবেওসের সুবাদে সে চিঠির ভাষা সম্পর্কে আমরা জানতে পারি। যার বাংলা অনুবাদ –
যদি তুমি শান্তিতে বসবাস করতে চাও তাহলে ত্যাগ করো তোমার ছোটবেলা থেকে মেনে চলা অহং পরিপূর্ণ ধর্ম। ত্যাগ করো যিশুকে এবং গ্রহণ করো আমাদের পিতা ইব্রাহিমের ঈশ্বরের ধর্মকে। যদি না করো তাহলে তোমার যিশু, যে কীনা ইহুদিদের থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেনি, সেও পারবে না আমার হাত থেকে তোমাকে রক্ষা করতে।
এখানেও উল্লেখ নেই কোন মোহাম্মদের, ইসলামের, মুসলিমের বা কোরানের। এমনকী সেবেওস এই চিঠির সাথে ইসমায়েলাইট ব্যবসায়ী মাহমেতেরও কোন যোগাযোগ টানেনি। ব্যাপারটা অদ্ভুত না যে বাইজান্টাইন সম্রাটের কাছে পাঠানো চিঠিতে মোহাম্মদ বা ইসলামের কোনোই উল্লেখ নেই, মুহাম্মাদের মৃত্যুর ১৯ বছর পরেও। এর মানে কী মুহাম্মদ তখন পর্যন্ত ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ কোন চরিত্র হয়ে উঠতে পারেনি নাকী মুয়াবিয়া ইচ্ছে করেই মুহাম্মাদকে অগ্রাহ্য করেছেন।
৭৩০ খ্রিস্টাব্দের দিকে সেসময়ের বিখ্যাত খ্রিস্টান ধর্মগুরু জন অব দামাস্কাস তার লেখা বই ‘On the heresies‘ তে আরবদের নতুন এক ধর্মের কথা লিখেন যার নবী মুহাম্মদ। আরবদের উল্লেখ করা হয় এখানে হাগারিয়ান, ইসমায়েলাইট ও সারাসিন নামে। তার লেখায় মুসলিম বা কুরআন শব্দ দুটো পাওয়া না গেলেও আরবদের ধর্মগ্রন্থের কথা উল্লেখ আছে। উল্লেখ আছে সূরা বাকারার কথা, উল্লেখ আছে সূরা নিসার কথা, উল্লেখ আছে মুহাম্মাদের পুরুষ অনুসারীদের চার বিয়ের অধিকারের কথা এবং এক হাজার যৌন দাসী নেয়ার (যা বর্তমান কুরআনে নেই) কথা সম্ভব হলে। বলা হয়েছে কুরআনে উল্লেখ করা ইসলামিক যিশুর কথাও। যিশু প্রসঙ্গে কুরআনের বর্ণনা দেবার সময় জন লেখেন,
“আল্লাহ্ তাকে স্বর্গে নিয়ে গেলেন এবং আল্লাহ্ তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “ঈসা, তুমি কি বল যে তুমি আল্লাহ্ ও আল্লাহর পুত্র?” এবং তিনি ঈসা মসিহ উত্তর দিয়েছিলেন, “আমাকে করুণা কর, প্রভু, আপনি জানেন যে আমি এই কথা বলিনি”
মজার ব্যাপার হলো বর্তমান কুরআনে ঈসা বা যিশু সম্পর্কিত এ ধরনের যে আয়াত আছে তাতে তার সাথে জনের বর্ণনার হালকা অমিল পাওয়া যায়। কুরআনের সূরা মায়েদার ১১৬ নাম্বার আয়াতে পাওয়া যায় –
“যখন আল্লাহ বললেনঃ হে ঈসা ইবনে মরিয়ম! তুমি কি লোকদেরকে বলে দিয়েছিলে যে, আল্লাহকে ছেড়ে আমাকে ও আমার মাতাকে উপাস্য সাব্যস্ত কর? ঈসা বলবেন; আপনি পবিত্র! আমার জন্যে শোভা পায় না যে, আমি এমন কথা বলি, যা বলার কোন অধিকার আমার নেই। যদি আমি বলে থাকি, তবে আপনি অবশ্যই পরিজ্ঞাত; আপনি তো আমার মনের কথা ও জানেন এবং আমি জানি না যা আপনার মনে আছে। নিশ্চয় আপনিই অদৃশ্য বিষয়ে জ্ঞাত।”
জনের বর্ণনায় বর্তমান ইসলামের এবং মুসলিমদের ছবি যেরকম স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে তা থেকে স্বাভাবিকভাবেই বুঝে নেয়া যায় আরবদের সেই ধর্ম সম্পর্কে জনের ধারণা বেশ ভালোই ছিল। কিন্তু ছোটখাটো অমিল যেমন এক হাজার যৌন দাসী নেয়ার কথা বা আল্লার সাথে যিশুর কথোপকথন দেখলে মনে হয় জন যেখান থেকে এগুলো কোট করেছে সেটা বর্তমান কোরানের থেকে আলাদা কিছু। আবার কুরআনের নাম উল্লেখ না করে শুধু সূরা গুলোর নাম উল্লেখ করা দেখলে মনে হয় জনের কাছে হয়ত পুরো সংকলিত কুরানটিই ছিল না। সূরাগুলো ছিল আমপারার মত করে আলাদা আলাদা ডকুমেন্ট হিসাবে।
এই পর্ব শেষ করার আগে সেসময়ের আরবদের যে নামগুলোতে ডাকা হতো সেগুলো নিয়ে দুটো কথা না বললেই নয়। হাগারিয়ান এবং ইসমায়েলাইট শব্দ দুটির উৎস মূলত একই। ইহুদিদের নবী ইব্রাহিমের দাসী হাগার এবং তার ছেলে ইসমায়েল। জুডো-খ্রিস্টান থিওলজিতে আলাদাভাবে আরবদের কিছু কথা বলা না হলেও আরবদের হাগারিয়ান বা ইসমায়েলাইট বলে সম্বোধন করা থেকে আমরা ধারণা করতে পারি এটলিস্ট ওরাল ট্রেডিশনে হলেও এটা সেসময় প্রচলিত ছিল যে আরবেরা ইসমায়েলের বংশধর। খ্রিস্টপূর্ব নবম শতাব্দীর আসিরিয়ান এবং ব্যাবিলোনিয়ান রয়াল ইনস্ক্রিপশনেও ইসমায়েলাইটদের উল্লেখ পাওয়া যায় যেখানে কেদারাইট কিংডমের রাজা আরব এবং ইসমায়েলাইটদেরও রাজা।
সারাসিন শব্দটা সম্ভবত এসেছে আরবি sāriq থেকে যার অর্থ চোর, ডাকাত অথবা খুনী। আরেক মতে সারাদিন শব্দটা এসেছে ২য় শতাব্দীতে টলেমির লেখা জিয়োগ্রাফিতে মেনশন করা Sarakēnḗ থেকে যারা কীনা সিনাই পেনিনসুলা এবং উত্তর আরবে বসবাস করতো।
রেফারেন্স :
1. Yehuda D. Nevo and Judith Koren, Crossroads to Islam (Amherst, NY: Prometheus, 2003), 265.
2. Ibid., 265–66.
3. Quotations from the Qur’an are taken, except where noted, from A. J. Arberry, The Koran Interpreted (New York: George Allen & Unwin, Ltd., 1955).
4. Doctrina Jacobi vol. 16, 209 (quoted in Robert G. Hoyland, Seeing Islam as Others Saw It: A Survey and Evaluation of Christian, Jewish, and Zoroastrian Writings on Early Islam [Princeton: Darwin Press, 1997], 57).
5. Historian Robert G. Hoyland notes that the first editor of this text suggested that it had begun as a continuation of Eusebius’s ecclesiastical history and was then updated a century after it was first written: “A mid-seventh century Jacobite author had written a continuation of Eusebius and…this had been revised almost a century later when the lists of synods and caliphs and so on were added” (Hoyland, Seeing Islam, 119).
6. Thomas the Presbyter, Chronicle, 147–48 (quoted in Hoyland, Seeing Islam, 120). 7 Nevo and Koren, Crossroads to Islam, 264.
8. John Moschus, Pratum spirituale, 100–102, Georgian translation, Gérard Garitte, trans., “‘Histoires édificantes’ géorgiennes,” Byzantion 36 (1966): 414–16 (quoted in Hoyland, Seeing Islam, 63).
9. Homily on the Child Saints of Babylon, §36 (tr. de Vis, 99–100) (quoted in Hoyland, Seeing Islam, 121).
10. Sophronius, Ep. Synodica, Patrologia Greca 87, 3197D–3200A (quoted in Hoyland, Seeing Islam, 69).
11. Sophronius, Christmas Sermon, 506 (quoted in Hoyland, Seeing Islam, 70).
12. Sophronius, Holy Baptism, 162 (quoted in Hoyland, Seeing Islam, 72–73). 13 Steven Runciman, A History of the Crusades, vol. 1 (Cambridge: Cambridge University Press, 1951), 3.
14. Ibid., 1:4.
15. On the Pact of Umar, see Mark Cohen, “What Was the Pact of Umar? A Literary-Historical Study,” Jerusalem Studies in Arabic and Islam 23 (1999), 100–158.
16. Muhammad ibn Jarir at-Tabari, The History of al-Tabari, vol. XII, “The Battle of al-Qadisiyyah and the Conquest of Syria and Palestine,” trans. Yohanan Friedmann (Albany: State University of New York Press, 1992), 191–92.
17. Quoted in J. B. Chabot, trans. and ed., Synodicon Orientale, 3 vols. (Paris: Imprimerie Nationale, 1902), Syriac text, 1:224, French translation, 2:488 (quoted in Nevo and Koren, Crossroads to Islam, 218).
18. Quoted in Chabot, Synodicon Orientale, Syriac text, vol. 1, 224, French translation, 2:488, Nestorian Synod, 676 C.E., Canon 16 (quoted in Nevo and Koren, Crossroads to Islam, 219).
19. Quoted in F. M. Nau, “Littérature Canonique Syriaque Ineditée,” Revue de l’Orient Chrétien 14 (1909): 128–30 (quoted in Nevo and Koren, Crossroads to Islam, 217).
20. Quoted in Nau, “Littérature Canonique Syriaque Inéditée,” 128–30 (quoted in Nevo and Koren, Crossroads to Islam, 217–18).
21. For more on this from a different perspective, see Fred M. Donner, Muhammad and the Believers: At the Origins of Islam (Cambridge, MA: The Belknap Press of Harvard University Press, 2010).
22. Patriarch John–Arab Emir, Colloquy, trans. Francois Nau, “Un colloque de patriarche Jean avec l’émir des Agareens et fait divers des années 712 a 716,” Journal Asiatique 11/5 (1915): 225–79 (quoted in Hoyland, Seeing Islam, 459).
23. Alphonse Mingana, “The Transmission of the Koran,” in Ibn Warraq, ed., The Origins of the Koran
(রবার্ট স্পেন্সারের Did muhammad exist বই এবং টম হলান্ডের ডকুমেন্টারিIslam: The Untold Story অবলম্বনে)