(সতর্কতাঃ নরনারীর যৌনাচার নিয়ে এই প্রবন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই কাম সম্পর্কিত নানাবিধ টার্ম ব্যবহার করতে হয়েছে প্রবন্ধে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভাষার মধ্যেও তাই অশালীনতার গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। কাম সম্পর্কে যাদের শুচিবাই আছে, এই প্রবন্ধ পাঠে আহত হতে পারেন তারা। এই শ্রেণীর পাঠকদের তাই প্রবন্ধটি পাঠ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। পূর্ব সতর্কতা সত্বেও যদি কেউ এটি পাঠ করে আহত বোধ করেন, সেজন্যে কোনভাবেই লেখককে দায়ী করা চলবে না।)
কয়টাস ইন্টারাপশনঃ যোনির বাহিরে বীর্যস্খলন
Spilling one’s seed, and that also in one’s own clothes? নামে ইংরেজী ভাষায় একটি টার্ম চালু আছে। এর বাংলা প্রতিশব্দ স্ত্রীযোনির বাইরে বীর্যপাত ঘটানো। একজন মুসলমান কয়টাস ইন্টারাপশনের নাম শুনলেই আঁতকে উঠবেন। তৌবা তৌবা, একেবারেই অনৈসলামিক শয়তানের কাজ এটি। হাজার হলেও পুরুষের বীজ পরম পবিত্র জিনিস, এর আশ্রয়স্থল একমাত্র স্ত্রীযোনি। সেই বৈধ স্থান ছাড়া অন্য কোথাও বীজ বপনের মতো নোংরা কাজ একজন মুসলমান করতে পারে? এখন যদি বলা হয় যে নবীজি নিজেই কাপড়ের মধ্যে বীর্যপাত ঘটাতেন, তার প্রিয় বালিকা-বধু আয়েশা সেই কাপড় ধৌত করে দিতেন এবং রসুল সেই কাপড় পড়ে নিয়মিত নামাজ আদায় করতেন, কথাটি আপনার কাছে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হবে কি? কথাটি আপনার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, তবে প্রকৃত ঘটনা তাই! মা আয়েশার মুখ থেকে বিষয়টি যাচাই করে নিন তা’হলে।
সহি বুখারিঃ ভলিউম-১, বুক নং-৪, হাদিস নং-২৩১:
“সুলাইমান বিন ইয়াছার হতে বর্ণিতঃ
আমি আয়েশাকে বীর্যজড়িত কাপড় সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর করেন- “আমি রাসুলুল্লাহর (দঃ) কাপড় হতে বীর্য ধৌত করে দিতাম এবং পানির দাগ ভালভাবে না শুকাতেই তিনি তা পড়ে নামাজ পড়তেন।”
সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-১১, হাদিস নং-২১৬১:
“উম্মুল মোমেনিন আয়েশা হতে বর্ণিতঃ
আমার ঋতুকালে রাসুলুল্লাহ (দঃ) এবং আমি একই কাপড়ের নীচে শুয়ে থাকতাম। যদি আমার (শরীর) থেকে কোন কিছু তার কাপড়ে লাগত, তিনি সেই জায়গা ধুয়ে ফেলতেন, এর বাইরে ধুতেন না। যদি নিজের স্খলন হতে কাপড়ে দাগ লাগত, তিনি সে জায়গা ধুয়ে ফেলতেন, এর বাইরে ধুতেন না; এবং তা পরিধান করেই নামাজ পড়তেন।”
এখানে কিছু প্রশ্ন এসে যায়। বধুটি ঋতুমতী, তার সাথে স্বাভাবিক উপায়ে সেক্স করার পথ রুদ্ধ। নবী কী তাহলে কয়টাস ইন্টারাপশন পালন করতেন? কিংবা বালিকা বধুটির কাছে এসে এতোটাই কামতাড়িত হয়ে পড়তেন যে কাপড়ের উপরই তার বীর্যস্খলন হয়ে যেতো? পবিত্র বীজ যথাস্থানে না পড়ে কাপড়ের উপর পড়তো? ভাবার বিষয়।
নবীর সেইসব নিশানধারী বরকন্দাজ ইংরেজিতে যাকে বলে ফুট সোলজার তাদের অবস্থাই বা কীরূপ ছিল? ইসলামের এইসব প্রাথমিক সেনানীদেরকে যৌনশিকারী বলে অভিহিত করলেও অত্যুক্তি হয় না। কোন কাফের রমণীকে বন্দী করতে পারলে আর রক্ষা নাই, তৎক্ষণাৎ তার ওপর ঝাপিয়ে পড়ে যৌনক্ষুধা মিটিয়ে নিতে একদণ্ড বিলম্ব হতো না। এমনকী বন্দিনীটি গর্ভবতী হলেও তার ওপর সওয়ার হতে সঙ্কোচ ছিল না তাদের।
বিষয়টি যখন খুবই সিরিয়াস পর্যায়ে চলে যায় তখন স্বয়ং আল্লাহপাককে মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে আসতে হয়। বিধান করতে হয়- পিরিয়ড (ঋতুস্রাব) শেষ না হওয়া পর্যন্ত বন্দিনীদের সাথে সঙ্গম করা যাবে না। গর্ভবতীদের সাথে সঙ্গমও নিষিদ্ধ করা হয়। তবে এই নিষেধাজ্ঞা খুব একটা কাজে লেগেছিল বলে মনে হয় না, নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে জিহাদিরা তখন বন্দিনীদের যোনিদেশের বাইরে বীর্যস্খলনের পদ্ধতি অনুসরণ করতে শুরু করে। ইসলামের এই প্রাথমিক যোদ্ধারা হতভাগী বন্দিনীদের ওপর কীরূপ অশ্লীল এবং অমানবিক যৌননির্যাতন পরিচালনা করতো, সহিহ্ হাদিসগুলিতে তার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়। আমি এখানে কয়েকটি মাত্র হাদিস উল্লেখ করছি, আশা করি পাঠক পাঠিকারা এথেকেই ‘হলি পর্ণোগ্রাফি-লা ইসলামিক স্টাইল’ উপভোগ করতে পারবেন। (যুদ্ধ-বন্দিনী এবং ক্রীতদাসীর সাথে সেক্স করার বিস্তারিত বিবরণ থাকবে এই সিরিজের ৫ম পর্বে)।
সহি বুখারিঃ ভলিউম ৭, বুক নং-৬২, হাদিস নং-১৩৭:
“আবু সাইদ আল খুদরি থেকে বর্ণিতঃ
মালে গণিমত (War Booty) হিসেবে আমাদের হাতে বন্দিনী আসলে আমরা তাদের সাথে সঙ্গমের সময় যোনিদেশের বাইরে বীর্যপাত ঘটাতাম। অতঃপর এ সম্পর্কে আল্লাহর রাসুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- “তোমরা কি সত্যিই এরূপ কর”? এই প্রশ্নটি তিনি তিনবার করেন। (তারপর তিনি বলেন)- “যে সব আত্মা জন্ম নেয়ার জন্যে নির্ধারিত, সেগুলি আসবেই, পুনরুত্থানের দিন পর্যন্ত”।
সহি বুখারিঃ ভলিউম ৭, বুক নং-৬২, হাদিস নং-১৩৫:
“জাবির হতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহর জীবৎকালে আমরা কয়টাস ইন্টারাপশন পালন করতাম।”
সহি বুখারিঃ ভলিউম ৯, বুক নং-৯৩, হাদিস নং-৫০৬:
“আবু সাইদ আল খুদরি থেকে বর্ণিতঃ
বানু মুস্তালিক গোত্রের সাথে যুদ্ধকালে কিছু বন্দিনী তাদের (মুসলমানদের) দখলে আসে। তারা বন্দিনীদের সাথে এমনভাবে যৌনসম্পর্ক করতে চাইল যেন মেয়েগুলি গর্ভবতী না হয়ে পড়ে। সুতরাং বাইরে বীর্যপাতের বিষয়ে নবীর নিকট জানতে চাইল তারা। নবী বলেন – “এটা না করাই বরং তোমাদের জন্যে উত্তম। কারণ আল্লাহ যাকে সৃষ্টি করবেন তা লেখা হয়ে আছে, পুনরুত্থানের দিন পর্যন্ত”। ক্কাজা বলেন- “আমি আবু সাইদকে বলতে শুনেছি যে নবী বলেছেন – ‘আল্লাহর আদেশে আত্মার সৃষ্টি, আল্লাহর আদেশ ছাড়া কোন আত্মার সৃষ্টি হয় না”।”
সহি বুখারিঃ ভলিউম ৭, বুক নং-৬২, হাদিস নং-১৩৬:
“জাবির হতে বর্ণিতঃ
কোরান নাজেল হওয়ার সময় আমরা বাইরে বীর্যপাত পদ্ধতি প্রতিপালন করতাম।”
উপরোক্ত হাদিসগুলি পাঠ করলে কী মনে হয় পাঠক? এর পরেও কী বুঝার কিছু বাকী থাকে? একদিকে পবিত্রগ্রন্থ নাজেল হচ্ছে, আরেকদিকে ইসলামি জিহাদিরা আশে-পাশের কাফের গোত্রের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে তাদের ধনসম্পদ ও যুবতী নারীদের লুট করে আনছে। মালে গণিমত। মালে গণিমতের ওপর ইচ্ছেমতো সওয়ার হওয়া কোন দোষের কাজ না, তবে মেয়েগুলির তলপেট ভারী হয়ে গেলে দায়দায়িত্ব এসে যায়। সে দায়িত্বকে পাশ কাটাতে তখন আল্লাহর সৈনিকেরা তাদের পবিত্র বীর্য শিকারের যোনিদেশের ভেতরে নিক্ষেপ না করে বাইরে নিক্ষেপ করা শুরু করে এবং এই প্রথার পক্ষে আল্লাহর রাসুলের অনুমোদন নেয়ার চেষ্টা করে। কী দারুণ মজা! একবার ভাবুন তো। একদিকে মুখে ঐশ্বরিক আয়াতসমূহের বুলন্দ তেলাওয়াত, আরেকদিকে যোনিপ্রদেশের বাইরে বীর্যপাতের মহোৎসব! কী চমৎকার কম্বিনেশন! বাৎসায়নের কামসুত্রও হার মানবে এর কাছে।
মুক্তাসদৃশ এইরূপ আরও গোটাকয়েক হাদিস-
সহি মুসলিমঃ বুক নং-০০৮, হাদিস নং-৩৩৭১:
“আবু সিরমা আবু সাইদ আল খাদরিকে (রাঃ) বলেনঃ
হে আবু সাইদ, তুমি কী রাসুলুল্লাহকে (দঃ) ‘আজল’ প্রথা সম্পর্কে বলতে শুনেছ? তিনি বললেন- হ্যা, শুনেছি। আমরা রাসুলুল্লাহর (দঃ) সঙ্গে বি’ল মুস্তালিকের বিরুদ্ধে অভিযানে গিয়েছিলাম। (সেই অভিযানে) কিছু অপূর্ব আরব রমণী আমাদের হস্তগত হয়। বহুদিন যাবৎ স্ত্রীসঙ্গ হতে বঞ্চিত ছিলাম বিধায় আমরা গভীরভাবে তাদের কামনা করছিলাম, সেইসঙ্গে তাদের বিনিময়ে মুক্তিপণ পাওয়ার লোভও ছিল আমাদের। সুতরাং আমরা তাদের সাথে আজল পদ্ধতির মাধ্যমে যৌনসঙ্গম করার সিদ্ধান্ত নেই (মেয়েটি যাতে গর্ভবতী না হয় সেজন্যে বীর্যপাতের ঠিক আগ মুহুর্তে স্ত্রীযোনি হতে পুরুষাঙ্গ বের করে এনে বাইরে বীর্যপাত ঘটানোকে আজল বলে)। কিন্তু আমাদের মনে হলো আমরা একটি কাজ করতে যাচ্ছি; আল্লাহর রাসুল (দঃ) যখন আমাদের মাঝে আছেন, তখন তার কাছে জিজ্ঞেস করে নিই না কেন? সুতরাং আমরা আল্লাহর রাসুলকে (দঃ) জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন- তোমরা এরূপ কর আর না কর, কিছুই এসে যায় না। যে আত্মা জন্মানোর তা জন্মাবেই, পুনরুত্থানের দিন পর্যন্ত।”
সহি মুসলিমঃ বুক নং-০০৮, হাদিস নং-৩৩৭৩:
“আবু সাইদ আল খাদরি (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ কিছু যুদ্ধবন্দিনী আমাদের করায়ত্ত হলে আমরা তাদের সাথে (যৌনসঙ্গমকল্পে) আজল পদ্ধতি অবলম্বন করতে চাইলাম। আমরা এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহর (দঃ) কাছে জানতে চাইলে তিনি আমাদের বললেন- নিশ্চয়ই তোমরা তা করতে পার, নিশ্চয়ই তোমরা তা করতে পার, নিশ্চয়ই তোমরা তা করতে পার। কিন্তু যে আত্মা জন্মানোর কথা তা জন্মাবেই, হাশরের দিন পর্যন্ত।”
এখানে একটি ব্যাপার লক্ষণীয়, প্রতিটি জিহাদিই বীর্যপাতের ঠিক পূর্বক্ষণে স্ব স্ব লিঙ্গটি বের করে আনার জন্যে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল।
সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-১১, হাদিস নং-২১৬৬:
“আবু সাইদ আল-খাদরি হতে বর্ণিতঃ
জনৈক লোক বলল- হে আল্লাহর রাসুল (দঃ), আমার একটি ক্রীতদাসী আছে। (যৌনসঙ্গমকালে) আমি তার কাছ হতে আমার পুরুষাঙ্গটি বের করে আনি, কারণ আমি চাই না যে সে গর্ভবতী হয়ে পড়ুক। অন্যান্য লোকেরা যা করে, আমিও ঠিক তাই করি। ইহুদিরা বলে যে পুরুষাঙ্গ বের করে আনা কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেয়ার মতো। তিনি (নবী) বললেন- ইহুদিরা মিথ্যা বলেছে। যদি আল্লাহ তা সৃষ্টি করতে চান, তুমি ঠেকাতে পার না।”
উপরের হাদিসগুলি প্রমাণ করে যে উপপত্নী এবং ক্রীতদাসীরা যাতে অনাকাঙ্খিত গর্ভসঞ্চার না করে বসে, সে জন্যে প্রাথমিক যুগের মুসলমানগণ স্ত্রীযোনির বাইরে বীর্যপাত ঘটাতো।
তবে এই প্রথা শুধু উপপত্নী এবং যৌনদাসীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, স্ত্রীর ক্ষেত্রে নয়। নিচের হাদিস প্রমাণ করে যে নিজের স্ত্রী হলে বীজটি অতিঅবশ্য তার যোনির অভ্যন্তরে বপণ করতে হবে। স্ত্রীর অনুমতি ব্যতিত বীজ বাইরে ফেলা চলবে না। হাজার হলেও স্ত্রীর যোনি হচ্ছে শস্যক্ষেত্র !
সহি মুসলিমঃ বুক নং-০০৮, হাদিস নং-৩৩৬৫:
“জাবিরের বর্ণনাক্রমে এই হাদিস, যদিও একাধিক বর্ণনাকারী পরম্পরাক্রমে জাবিরের নামে এই হাদিস বর্ণনা করেছেন। তবে জুহরির অথরিটিতে যেটি এসেছে তার মধ্যে অতিরিক্ত (এই কথাগুলি) আছে “যদি সে ইচ্ছে করে, স্ত্রীর সামনের দিক অথবা পেছনের দিক হতে (সঙ্গম) করতে পারে। তবে ছিদ্রটি হবে অবশ্যই এক (অর্থাৎ পায়ুপথে নয়, যোনিপথে)।
সহি মুসলিমঃ বুক নং-০০৮, হাদিস নং-৩৩৬৪:
“জাবির (বিন আব্দুল্লাহ) (রাঃ) বলেছেন যে- ইহুদিরা বলতো যদি কেউ স্ত্রীর সাথে পেছনের দিক হতে সঙ্গম করে এবং সে (স্ত্রী) গর্ভবতী হয়, শিশুটি হবে টেরা। সুতরাং (পবিত্র কোরানের) আয়াত নাজেল হলো- “তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের শস্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষ কর”।”
ইমাম মালিকের মুয়াত্তা, বুক নং-৩৪, নাম্বার-৪২১০:
“আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ হতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (দঃ) দশটি জিনিশ অপছন্দ করতেন। যেমন-
১. হলুদ রং করা
২. শাদা চুল কলপ করা
৩. পোশাকের প্রান্তভাগ মাটি ছুয়ে যাওয়া
৪. স্বর্ণের তৈরী আংটি পরা
৫. সাজ-সজ্জা করে গায়ের মেহরাম পুরুষের সামনে যাওয়া (বাপ, ছেলে, ভাই ইত্যাদি চৌদ্দ প্রকার সম্পর্ক আছে যাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক হারাম, এরূপ সম্পর্কের ইসলামি নাম মেহরাম; এর বাইরে যাবতীয় সম্পর্ক গায়ের মেহরাম, যাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক বৈধ)
৬. তাবিজ/কবজ ব্যবহার করা
৭. বীর্যপাতের ঠিক আগ মূহুর্তে যোনির ভেতর হতে লিঙ্গ বের করে আনা, তা সে নিজের স্ত্রী হোক বা অন্য মেয়েলোক হোক (অর্থাৎ উপপত্নী বা যৌনদাসী) এবং
৮. এমন মেয়েলোকের সাথে যৌনসঙ্গম করা যে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছে। তবে তিনি এগুলিকে হারাম বলে ঘোষণা করেননি।
৯.
১০.
সহি মুসলিম, বুক নং-৮, হাদিস নং-৩৩৭৭:
“আবু সাইদ আল-খুদরি (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলু্ল্লাহর (দঃ) সামনে একবার আজল প্রথার কথা উল্লেখ করা হয়, তিনি বললেন- তোমরা এটি কেন কর? তারা বলল- জনৈক লোক যার স্ত্রী সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ায়, যদি সে তার সাথে (আজল না করে) সঙ্গম করে তবে স্ত্রী গর্ভবতী হয়ে পড়তে পারে যা সে পছন্দ করে না। আরেকজন লোক যার একজন ক্রীতদাসী আছে যার সাথে সে সহবাস করে, কিন্তু সে চায় না যে ক্রীতদাসীটি গর্ভবতী হোক এবং উম্-আওলাদ (সন্তানের জননী) হোক। উত্তরে নবী বলেন- এটি না করলে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই, কারণ তা (সন্তানের জন্ম) পূর্বনির্ধারিত। ইবনে আউন বলেন- এই হাদিসটি আমি হাসানের সামনে উল্লেখ করলে তিনি বলেন- আল্লাহর কসম, (মনে হয়) যেন এর মধ্যে (আজল প্রথার বিরুদ্ধে) তিরস্কার লুকিয়ে আছে।”
গ্রুপ সেক্স/ উন্মাতাল সেক্স
ব্লু ফিল্মে আমরা দেখতে পাই, একদঙ্গল নারী পুরুষ বিভিন্ন ভঙ্গিমায় সেক্স করছে । একই সময়ে কিংবা সামান্য সময়ের ব্যবধানে একজন পুরুষ একাধিক নারীর সাথে সেক্স করছে কিংবা একজন নারী একাধিক পুরুষের সাথে সেক্স করছে। এইসব অশ্লীল ছবির অন্যতম প্রধান আকর্ষণই হচ্ছে এই গ্রুপ সেক্স কিংবা দু’জনেরই সেক্স- তবে একটু পর পর সেক্স পার্টনারটি বদলিয়ে নেয়া। পর্ণো ছবির এ এক সাধারণ বৈশিষ্ট্য, এভাবেই ছবিগুলি দর্শক টানে। কারণ অধিকাংশ দর্শকের মনের গোপনে এ ধরনের উন্মাতাল সেক্সের জোয়ারে গা ভাসানোর ইচ্ছা সুপ্ত থাকে, কিন্তু বাস্তবে কখনও তা হয়ে উঠে না। সুতরাং এইসব ছবির মাধ্যমে দর্শকরা মনের অতৃপ্ত কামনার কিছুটা হলেও প্রশমন ঘটায়। ছবি দেখতে দেখতে তাদের হয়তো মনে হয় আহ্, আমিও যদি এরূপ একটি দৃশ্যে অভিনয় করার সুযোগ পেতাম! আচ্ছা এই ধরনের ইচ্ছা কী আমাদের নবীর (দঃ) মনেও জেগেছিল কোনদিন? তৌবা, তৌবা, নাউজুবিল্লাহ। এধরনের চিন্তাও পাপ, গার্ডেন ভ্যারাইটির জিহাদিরা শুনলে নির্ঘাৎ চাপাতি-কিরিচ হাতে কল্লা কাটতে বেরুবে। এখন নীচের হাদিসটি পড়ুন এবং হলি স্টাইলের উন্মাতাল সেক্স সম্পর্কে কল্পনা করুন। কল্পনা করুন, আপনার প্রায় ডজন খানেক বউ এবং উপ-পত্নী আছে। আরও কল্পনা করুন, আপনার সবচেয়ে প্রিয় বউটি আপনাকে নিজ হাতে সাজিয়ে অন্য নারীর সাথে সেক্স করতে পাঠাচ্ছে। যদি একে উন্মাতাল সেক্স (Sex Orgy) না বলা যায় তা’হলে সে জিনিশটি কী? অনুগ্রহপুর্বক স্মরণ রাখবেন, এই উন্মাতাল সময়ে নবীর (দঃ) হেরেমে কমপক্ষে গোটা ন’য়েক বিবি ছিলেন।
সহি বুখারিঃ ভলিউম-১, বুক নং-৫, হাদিস নং-২৭০:
“মহম্মদ বিন আল-মুনতাছির হতে বর্ণিতঃ
তার পিতার সূত্র উল্লেখ করে (তিনি বর্ণনা করেন) যে তিনি আয়েশাকে ইবনে উমরের বর্ণনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন (ইবনে উমরের বর্ণনা এরূপ- যতক্ষন পর্যন্ত তার শরীর হতে আতরের গন্ধ বেরুচ্ছে, ততোক্ষণ পর্যন্ত তিনি মাহরিম হতে ইচ্ছুক নন)। আয়েশা বলেন- “আমি আল্লাহর রাসুলকে সুগন্ধি লাগিয়ে দিতাম এবং তিনি পর্যায়ক্রমে সকল স্ত্রীর কাছে যেতেন এবং সকলের সাথে (যৌনসঙ্গম করতেন)), এবং সকালবেলায় (গোসলের পর) তিনি ছিলেন মাহরিম”।
সহি মুসলিমঃ বুক নং-৮, হাদিস নং-৩৪৪৫:
“আবু বকর বিন আব্দুর রহমান বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (দঃ) উম্মে সালমাকে বিয়ে করলেন এবং তার ঘরে গেলেন। অতঃপর যখন তিনি সেখান থেকে বের হয়ে আসার উদ্যোগ নিচ্ছিলেন, তখন তিনি (উম্মে সালমা) তার কাপড় আকড়িয়ে ধরলেন। রাসুলুল্লাহ (দঃ) এতে বললেন- যদি তুমি ইচ্ছে করো, আমি তোমার সাথে আরও বেশী সময় থাকতে পারি, সেক্ষেত্রে আমাকে সময় গণনা করতে হবে (অর্থাৎ যে সময়টুকু আমি তোমার সাথে কাটাব, অন্য স্ত্রীদের সাথেও আমাকে ঠিক সেই পরিমাণ সময় কাটাতে হবে)। কুমারী বউয়ের জন্যে এক সপ্তাহ, পূর্ব-বিবাহিতার জন্যে তিন দিন।”
এই উন্মাতাল সেক্সের পক্ষে স্বর্গীয় অনুমতি ছিল; ইমাম গাজ্জালির লেখা হতে তার প্রমাণ মেলে। একাধিক পার্টনারের সাথে সেক্সের নিয়মকানুন সম্পর্কে তিনি লিখেছেন (রেফারেন্স-৭, পৃ-৩৬৮):-
“গারিব হাদিসে বর্ণিত আছে যে আল্লাহর রাসুল বলেছেন- “আমি জিব্রাইলের কাছে অভিযোগ করেছিলাম যে স্ত্রীদের সাথে সঙ্গমের জন্যে আমি আরও অধিক পরিমাণ (যৌন) শক্তি লাভ করার ইচ্ছে করি, এবং তিনি (জিবরাইল) আমাকে হারিসা খাওয়ার জন্যে উপদেশ দেন”।”
একটি অসাধারণ হাদিস কোট করে বর্তমান প্রসঙ্গের ইতি টানব। অনুমান করুন, একটিমাত্র রাত্রিতে কী পরিমাণ বীজ প্রবাহিত হওয়ার প্রয়োজন হতো!
সহি বুখারিঃ ভলিউম-৭, বুক নং-৬২, হাদিস নং-৬:
“আনাছ হতে বর্ণিতঃ
নবী পর্যায়ক্রমে সকল স্ত্রীর ঘরে যেতেন এবং একইরাত্রিতে তাদের সকলের সাথে (সহবাস) করতেন। এবং তার স্ত্রীর সংখ্যা ছিল নয় জন। স্ত্রীলোকের বীর্যের রং হলুদ!”
যৌবনকালে অধিকাংশ মেয়েপুরুষই যৌনসম্পর্কিত স্বপ্ন দেখে। ছেলেদের বীর্যপাত হয় (স্বাভাবিক সঙ্গমকালে যেরূপ বীর্যপাত হয় ঠিক তদ্রুপ), বাংলা ভাষায় এর নাম স্বপ্নদোষ (Nocturnal Emission) মেয়েরাও যৌন বিষয়ক স্বপ্ন দেখতে পারে এবং চরম পুলক (অর্গাজম) হতে পারে, তবে পুরুষের মতো তাদের কোন স্খলন হয় না, কারণ যোনিদেশে সিমেন বা বীর্য উৎপন্ন হয় না। নবীর প্রিয় স্ত্রী আয়েশাও বিষয়টি জানতেন, কারণ তিনি ছিলেন একজন নারী। তবে মহম্মদ (দঃ) এই বৈজ্ঞানিক সত্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ ছিলেন এবং মনে করেছিলেন যে পুরুষদের মতো মেয়েদেরও বোধ হয় বীর্যপাত ঘটে। তিনি সম্ভবত কোন স্ত্রীলোকের কাপড়ে হলুদ দাগ দেখে থাকবেন যা সাধারণত ঋতুস্রাবের পরে ঘটে। তা দেখেই তিনি মনে করেছিলেন যে এটিই স্ত্রীলোকের স্পার্ম বা বীর্যের দাগ। যখন আয়েশা তার ভুল শুধরে দিতে চাইলেন, তিনি তাকে ধমক মেরে চুপ করিয়ে দিয়ে নিজের ভ্রান্ত ধারণা তার ওপর চাপিয়ে দিলেন। যদি কোন স্ত্রীলোক নীচের হাদিসগুলি পড়েন, তিনি যেন আবার যেন ভেবে না বসেন যে তার স্ত্রীঅঙ্গটিতে কোন রোগ বাসা বেধেছে।
সহি মুসলিমঃ বুক নং-৩, হাদিস নং-০৬০৮:
“আনাছ বিন মালিক বর্ণনা করেছেন যে উম্ সুলাইম (সুলাইমের মা) বলেছিলেন যে তিনি একবার রাসুলুল্লাহর (দঃ) কাছে একজন মেয়ে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে পুরুষদের মতোই স্বপ্ন দেখতো (যৌনস্বপ্ন)। আল্লাহর রাসুল (দঃ) বললেন- যদি কোন মেয়ে এরূপ দেখে, তাকে অবশ্যই গোসল করতে হবে। উম সালমা বলেন- আমি এ বিষয়ে (কথা বলতে) খুবই লজ্জা পাচ্ছিলাম এবং বললাম- ইহা কী ঘটে? তখন রাসুলুল্লাহ (দঃ) বললেন- হ্যাঁ (ইহা ঘটে)। নইলে একটি শিশু কীভাবে তার মা’র মতো হয়? পুরুষের স্খলন (বীর্য) ঘন ও শাদা, স্ত্রীলোকের স্খলন পাতলা এবং হলুদ। সুতরাং দু’জনের মধ্যে যার জিন বেশী প্রবল হবে, বাচ্চা তার মতো হবে।”
সহি মুসলিমঃ বুক নং-৩, হাদিস নং-০৬১০:
“উম্মে ছালামা বর্ণনা করেছেনঃ
উম্ সুলাইম রাসুলুল্লাহর (দঃ) কাছে গেলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন- হে রাসুলুল্লাহ (দঃ)। আল্লাহ সত্য হতে লজ্জিত নন। একজন মেয়ে যদি যৌনবিষয়ক স্বপ্ন দেখে, তার কী গোসল করার প্রয়োজন আছে? এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ (দঃ) বললেন- হ্যাঁ, যদি তার পানি বের হয়। উম্মে ছালামা বললেন- রাসুলুল্লাহ, মেয়েরা কী যৌনবিষয়ক স্বপ্ন দেখে? তিনি বললেন- তোমার হাত ধুলিধুসরিত হোক। তার শিশু তবে কীভাবে তার মতো হয়?”
পেছন হতে/ পায়ুপথে সেক্স
আমি একথা গোপন করব না যে হাদিস পাঠ করা ছিল আমার সময় কাটানোর সবচেয়ে প্রিয় উপায়। হাদিস পড়তে আমি ভালবাসতাম, যেখানে যতো হাদিস আছে। আমি যত বেশী হাদিস পড়তে থাকলাম, তত বেশী করে ইসলাম ও তার নবী মহম্মদকে (দঃ) বুঝতে পারলাম। আমি মনে করি হাদিসগুলিতে একজন ভাল ও খাটি মুসলমানের চিত্র সংরক্ষিত আছে। শুরুতে ভেবেছিলাম হাদিসে বোধ হয় শুধুমাত্র ধর্মীয় নিয়মকানুন, আধ্যাত্মিক নিয়মকানুন কিংবা ধর্মযুদ্ধ (জিহাদ) সংক্রান্ত বিষয়াদিই আছে। কিন্তু ইসলামের মুল লিপিগুলিতে যৌনকামনা উদ্রেককারী এতোসব বর্ণনা পেয়ে আমি যেন বোবা হয়ে গেলাম। এরূপ মন্তব্য করা বোধ হয় অসমীচিন হবে না যে, কোন কোন হাদিসকে যৌনাচারের সারগ্রন্থ (ম্যানুয়াল অব সেক্স) বলে অভিহিত করা যায়। সেক্স করতে গেলে কী কী করতে হবে এবং কী কী করা যাবে না তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ রয়েছে সেখানে। কোন কোন হাদিস এমনকী বিশ্বের প্রাচীনতম পর্ণোগ্রন্থ কামসূত্রকেও লজ্জা দিতে পারে। এগুলিকে ‘সহিহ পনোর্গ্রাফি- লা বেদুঈন স্টাইল’ কিংবা লা ইসলামিক স্টাইল বলে অভিহিত করলে অন্যায় হবে না। এখানে আমি মাত্র গোটাকয়েক নমুনা পেশ করছি। পাঠক পাঠিকাদেরকে অনুরোধ করব দয়া করে সিহা সিত্তা গ্রন্থ ছয়টি ভালভাবে পাঠ করুন। আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি, ঠকবেন না। এতো নূতন নূতন জিনিশ আবিষ্কার করতে পারবেন যে আপনাদেরকে মোটেই আফসোস করতে হবে না।
সে যুগের আরব বেদুঈনরা কী ধরনের সেক্সুয়াল প্র্যাক্টিস অনুসরণ করতো, হাদিগুলিতে তার বিশ্বস্ত বর্ণনা রয়েছে। আমরা দেখতে পাই যে বিভিন্ন গোত্রগুলি সহবাসের সময় যে পদ্ধতি বা স্টাইল অনুসরণ করতো, তার মধ্যে বিস্তর ফারাক ছিল। একজন ইহুদি তার স্ত্রীর সাথে যে স্টাইলে সেক্স করতো, তা তার বেদুঈন প্রতিবেশীর চেয়ে ভিন্নতর ছিল। শহরে এবং মরুভুমিতে প্রচলিত পদ্ধতিগুলিও ছিল ভিন্ন ভিন্ন। আমরা আরও দেখতে পাই যে সেক্সের ব্যপারে মরুচারি বেদুঈনরা বেশ এগিয়ে ছিল। সেক্সের আসন, সেক্সের স্টাইল ইত্যাদি কেলিগুলিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল তারা। আনসার এবং মোহাজেরদের মধ্যেও এই স্টাইলের বিস্তর পার্থক্য ছিল। ইহুদিরা সাধারণত শাস্ত্রীয় আসন অনুসরণ করতো। পক্ষান্তরে মক্কা হতে আগত মোহাজেররা স্ত্রীদের সাথে বিভিন্ন আসনে সেক্স করতে অভ্যস্ত ছিল। এইসব আসনের মধ্যে তাদের সবচেয়ে প্রিয় ছিল পেছন দিক হতে সঙ্গম করা। আনসার কিংবা ইহুদি রমণীরা এই স্টাইলে অভ্যস্ত ছিল না। মোহাজেরগণ এই স্টাইল আনসার রমণীদের ওপর প্রয়োগ করতে শুরু করলে রমণীরা অসন্তুষ্টি ও বিরক্তি প্রকাশ করে। কারণ কোন কোন মোহাজের ষণ্ড এই সুযোগে মেয়েদের পায়ুপথে লিঙ্গ প্রবিষ্ট করাতেও দ্বিধাবোধ করত না। এইসব মোহজেররা ছিল যৌন দূর্ভিক্ষের শিকার, নবীর সাথে মদীনায় হিযরতের কারণে অধিকাংশ মোহাজেরই তাদের বউ মক্কায় ফেলে এসেছিল। সুতরাং মেয়ে দেখলেই ক্ষুধার্ত নেকড়ের মতো হয়ে যেতো তারা। কোন মেয়ের সাথে ঘুমানোর সুযোগ পেলে এমন আচরণ করতো যে অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েটির কাছে তা বলাৎকার এবং গর্হিত বলে মনে হতো। মোহাজেরদের এই অনাকাঙ্খিত আচরণের কথা আনসারি মেয়েরা রাসুলের কানে তুলে। অবিলম্বে আল্লাহর তরফ থেকে অহি নেমে আসল এবং পায়ুপথে সঙ্গম নিষিদ্ধ বলে ঘোষিত হলো। কুকুরের স্টাইলটি (পেছনের দিক হতে সঙ্গম) অবশ্য বহাল রইল, যদিও আনসারি মেয়েরা এই পদ্ধতিটির উপর খুব একটা সন্তুষ্ট ছিল না।
এপ্রসঙ্গে গোটা কয়েক হাদিস বর্ণনা করা হলো নীচে। নিশ্চয়তা দিচ্ছি, হাদিসগুলি আপনাদের বিস্তর মজার খোরাক জোগাবে।
সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-১১, হাদিস নং-২১৫৯:
“আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিতঃ
ইবনে উমর ভুল বুঝেছিল (“তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের শস্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষ কর”– কোরানের এই আয়াতটির ভুল অর্থ বুঝেছিলেন ইবনে উমর), আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন। আসল ঘটনা এই যে আনসারদের এই গোত্রটি ছিল পৌত্তলিক। তারা ইহুদিদের পাশে বসবাস করতো যারা ছিল কেতাবধারী সম্প্রদায়। জ্ঞানের ক্ষেত্রে তারা (আনসাররা) ইহুদিদেরকে শ্রেষ্ঠতর বলে গণ্য করতো এবং তাদের রীতিনীতি অনুসরণ করতো। কেতাবধারী সম্প্রদায়রা (অর্থাৎ ইহুদিরা) স্ত্রী-সঙ্গমকালে শুধুমাত্র একটি আসন ব্যবহার করতো (চিৎ করে শায়িত অবস্থায়)। এই আসনটিতে মেয়েরা (অর্থাৎ তাদের যোনি) সবচেয়ে লুক্কায়িত অবস্থায় থাকে। আনসারদের এই গোত্রটি ইহুদিদের কাছ থেকে এই আসন শিখে নেয়। কিন্তু কোরেশরা মেয়েদেরকে সম্পূর্ণভাবে উলংগ করে নিত, এবং পেছন থেকে ও সামনে থেকে উভয় দিক থেকেই আনন্দ পেতে চেষ্টা করতো। মোহাজেরগণ যখন মদীনায় এলো, তাদের মধ্যে জনৈক ব্যক্তি একজন আনসার রমণীকে বিয়ে করে। সে যখন তার সাথে এইভাবে সঙ্গম করতে শুরু করল (অর্থাৎ মক্কা স্টাইলে), মেয়েটি তা পছন্দ করল না এবং তাকে বলল- একটিমাত্র আসনেই আমরা অভ্যস্ত। সেইভাবে কর, নচেৎ আমার কাছ থেকে দূর হয়ে যাও। ঘটনাটি ব্যাপকভাবে প্রকাশ হয়ে পড়ল এবং রাসুলের (দঃ) কানে পৌছল। সুতরাং মহান আল্লাহ কোরানের আয়াতটি অবতীর্ণ করলেন- “তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের শস্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষ কর”। অর্থাৎ সামনের দিক হতে, পেছনের দিক হতে কিংবা চিৎ করে শায়িত অবস্থায়। তবে এই আয়াত (শুধুমাত্র) সন্তান প্রসবের ছিদ্রকে অর্থাৎ স্ত্রীযোনিকে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে।”
সহি মুসলিমঃ বুক নং-০০৮, হাদিস নং-৩৩৬৪:
“জাবির (বিন আব্দুল্লাহ) (রাঃ) বর্ণনা করেন যে ইহুদিরা বলতো যে, যদি কেউ পেছনের দিক হতে স্ত্রীযোনিতে যায় এবং স্ত্রী গর্ভবতী হয়, তবে সন্তান হবে টেরা চোখবিশিষ্ট। সুতরা এই আয়াত নাজেল হলো- “তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের শস্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষ কর”।”
সহি বুখারিঃ ভলিউম-৬, বুক নং-৬০, হাদিস নং-৫১:
“জাবির হতে বর্ণিতঃ
ইহুদিরা বলত- “যদি কেউ পেছনের দিক হতে স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করে, তবে সে টেরা চোখবিশিষ্ট সন্তানের জন্ম দেবে”। সুতরাং এই আয়াতটি নাজেল হলো – “তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের শস্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষ কর”।”
সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-১২, হাদিস নং-২২১২:
“উরুয়া হতে বর্ণিতঃ
খাওলা ছিল আউস ইবনে আস-সামিতের স্ত্রী; সে এমন একজন পুরুষ যার যৌনক্ষমতা ছিল অসাধারণ। যখন তার সঙ্গম-বাসনা খুব প্রবল হলো, সে স্ত্রীকে তার মায়ের পাছা বলে কল্পনা করে নিলো। সুতরাং জিহারের প্রায়শ্চিত্তস্বরূপ মহান আল্লাহ কোরানের আয়াত নাজেল করলেন (জিহার শব্দের অর্থ হচ্ছে স্ত্রীর কোন অঙ্গকে মা, খালা ইত্যাদি মাহরিম মেয়েলোকের অঙ্গের সাথে তুলনা করা বা কল্পনা করা)।”
সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-১২, নাম্বার-২২১৪:
“ইকরিমা হতে বর্ণিতঃ
জনৈক লোক তার স্ত্রীকে তার মায়ের পাছা হিসেবে তুলনা করেছিল। অতঃপর কোনরূপ প্রায়শ্চিত্ত করার পূর্বেই সে তার সাথে সঙ্গম করল। সে রাসুলের (দঃ) নিকট গেল এবং তাকে বিষয়টি জানাল। তিনি (তাকে) জিজ্ঞেস করলেন- এ কাজ করতে তোমাকে প্রেরণা জোগাল কে? সে বলল- আমি চাঁদের আলোতে তার শুভ্র জঙ্ঘা দেখতে পাই। তিনি বললেন- যে পর্যন্ত তুমি তোমার কাজের প্রায়শ্চিত্ত না করেছ, সে পর্যন্ত তার (স্ত্রীর) কাছ থেকে দূরে থাক।”
সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-১১, নাম্বার-২১৫৭:
“আবু হুরাইরা হতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ (দঃ) বলেছেনঃ যে স্ত্রীর সাথে পায়ুপথে সঙ্গম করে, সে অভিশপ্ত।”
সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-২৯, নাম্বার-৩৮৯৫:
“আবু হুরাইরা হতে বর্ণিতঃ
যদি কেউ ঐশী কেতাবধারীকে অবলম্বন করে এবং সে যা বলে তাই বিশ্বাস করে (অর্থাৎ ইহুদি), অথবা ঋতুকালে স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করে, অথবা স্ত্রীর পায়ুপথে সঙ্গম করে, তবে মহম্মদের (দঃ) নিকট যা অবতীর্ণ হয়েছে সেগুলির সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই।”
[ চলবে… ]
ইসলামে কাম ও কামকেলি (২য় পর্ব)
ইসলামে কাম ও কামকেলি (১ম পর্ব)