(সতর্কতাঃ নরনারীর যৌনাচার নিয়ে এই প্রবন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই কাম সম্পর্কিত নানাবিধ টার্ম ব্যবহার করতে হয়েছে প্রবন্ধে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভাষার মধ্যেও তাই অশালীনতার গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। কাম সম্পর্কে যাদের শুচিবাই আছে, এই প্রবন্ধ পাঠে আহত হতে পারেন তারা। এই শ্রেণীর পাঠকদের তাই প্রবন্ধটি পাঠ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। পূর্ব সতর্কতা সত্বেও যদি কেউ এটি পাঠ করে আহত বোধ করেন, সেজন্যে কোনভাবেই লেখককে দায়ী করা চলবে না।)
যুদ্ধবন্দিনীদের সাথে সেক্স
যুদ্ধে অধিকৃত নারী/যৌনদাসীর সাথে সেক্স
ইসলাম যুদ্ধে অধিকৃত নারীদের সাথে অবাধ সেক্স করার অনুমতি দেয়। এই নিয়ম ইসলামের সোনালি যুগে প্রচলিত ছিল (এবং অন্ততঃ তাত্ত্বিকভাবে সে আইন এখনও বহাল আছে)। স্বয়ং রাসুলে করিম এই নিয়ম পালন করেছেন। কোরানের যে সমস্ত আয়াতে এই ধরণের সেক্স করার অনুমতি দেয়া হয়েছে, তার গোটাকয়েক নিম্নে উদ্ধৃত করা হলো।
৪.২৪ (সুরা নিসা):
এবং তোমাদের জন্যে অবৈধ করা হয়েছে নারীদের মধ্যে সধবাগণকে (অন্যের বিবাহিত স্ত্রীগণকেও); কিন্তু তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের অধিকারী আল্লাহ তোমাদের জন্যে তাদেরকে বৈধ করেছেন, এতদ্ব্যতীত তোমাদের জন্যে বৈধ করা হয়েছে যে, তোমরা স্বীয় ধনসম্পদের দ্বারা বিবাহবদ্ধ করার জন্যে তাদেরকে অনুসন্ধান কর ব্যভিচারের জন্যে নয়, অনন্তর তাদের জন্যে যে ফলভোগ করেছ তজ্জন্য তাদেরকে তাদের নির্ধারিত পাওনা প্রদান কর এবং কোন অপরাধ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পর সম্মত হও, নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী বিজ্ঞানময়।
০২৩.০০১–০০৫ (সুরা মুমেনুন):
০১- অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মুমিনগণ।
০২- যারা বিনয়নম্র নিজেদের নামাজে।
০৩- যারা অসার ক্রিয়াকলাপ হতে বিরত থাকে।
০৪- যারা যাকাত দানে সক্রিয়।
০৫- যারা নিজেদের যৌন অঙ্গকে সংযত রাখে।
০৬- নিজের স্ত্রীগণ ও অধিকারভুক্ত দাসীগণ ব্যতীত, এতে তারা নিন্দনীয় হবে না।
৭০.২৫-৩৫ (সুরা মা’আরিজ):
০২৫- প্রার্থী ও বঞ্চিতের,
০২৬- এবং (যারা) কর্মফল দিবসকে সত্য বলে জানে,
০২৭- আর যারা তাদের প্রতিপালকের শাস্তি সম্পর্কে ভীত সন্ত্রস্ত
০২৮- নিশ্চয়ই তাদের প্রতিপালকের শাস্তি হতে নিঃশঙ্ক থাকা যায় না
০২৯- এবং যারা নিজেদের যৌন অঙ্গকে সংযত রাখে,
০৩০- তাদের পত্নীগণ এবং অধিকারভুক্ত দাসীগণ ব্যতীত, এতে তারা নিন্দনীয় হবে না
০৩১- তবে কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা হবে সীমা লঙ্ঘনকারী,
০৩২- এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে,
০৩৩- আর যারা তাদের সাক্ষ্য দানে অটল,
০৩৪- এবং নিজেদের নামাজে যত্নববান
০৩৫- তারা সম্মানিত হবে জান্নাতে;
উপরোক্ত আয়াত অনুসারে একজন মুসলমান পুরুষ, সে বিবাহিত হোক আর অবিবাহিত হোক, ক্রীতদাসী কিংবা যুদ্ধে বন্দীকৃত নারীদের সাথে অবাধ যৌনসঙ্গম করতে পারে। আয়াতে বর্ণিত ‘তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের অধিকারী’ (আরবী ‘মালাকুল ইয়ামিন’, ইংরেজী ‘your right hand possesses‘) – এই কথার অর্থ হচ্ছে অধিকারভুক্ত দাসী বা যুদ্ধবন্দিনী। এটি একটি আরবী বাগধারা। এখানে আরও একটি বিষয় উল্লেখ্যযোগ্য। পবিত্র কোরানের অধিকাংশ বাংলা তরজমায় দেখা যায় তরজমাকারীরা এভাবে তরজমা করেছেন-‘তোমাদের পত্নী এবং অধিকারভুক্ত দাসীগণ ব্যতীত’। তারা পত্নী বলে একবচনে অনুবাদ করেছেন, পত্নীগণ বলেন নি। মুল আরবী আয়াতে আছে ‘আজওয়াজ’ শব্দটি যা জাওজ শব্দের বহুবচন। জাওজ হলো পত্নী আর আজওয়াজ হলো পত্নীগণ। বাংলা তরজমাকারীরা কেন পবিত্র গ্রন্থের তরজমায় এরূপ করেছেন তা তারাই ভাল বলতে পারবেন। তবে ইংরেজি অনুবাদকারীরা তা করেন নি, স্পষ্টভাবে ওয়াইভস (wives) বলে অনুবাদ করেছেন। পাঠকরা যাতে বাজারে প্রচলিত বাংলা অনুবাদ গ্রন্থগুলি পড়ে কোনপ্রকার ধন্দে না পড়েন, তাই এতো কথা বলা।
সে যাহোক, বর্তমান জমানায় যুদ্ধবন্দী কারা?
এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে বেশিদূর যাওয়ার প্রয়োজন নেই। যেহেতু কাফেরদের সাথে চিরস্থায়ী যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে বলে ইসলাম প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, সুতরাং কাফেরদের দেশের সমস্ত রমণীই অন্তত তাত্ত্বিকভাবে এই ক্যাটাগরিতে পড়ে। এর অর্থ এই দাঁড়ায় যে কাফেরদের দেশে বসবাসরত একজন মুসলমান (তা সে বিবাহিত বা অবিবাহিত যাই হোক না কেন) যে কোন সংখ্যক কাফের রমণীর সাথে ঘুমাতে পারে (অর্থাৎ সেক্স করতে পারে)। এই কাজের জন্যে জিনা বা ব্যভিচারের দায়ে লজ্জিত বা দণ্ডিত হওয়ার বিন্দুমাত্রও শঙ্কার কারণ নাই তার। অনেক ইসলামপন্থী হয়তো গর্ব করে বলেই বসবেন যে এইসব কাফের নারীরা মুসলমান পুরুষের স্বাদ গ্রহণ করতে পারছে এটা তাদের চৌদ্দ পুরুষের ভাগ্য।
একবার থাইল্যান্ডের এক মেসাজ পার্লারে কয়েকজন পাক্কা মুসলমানের সাথে দেখা হয় আমার। থাই যৌনকর্মীদের সাথে তারা কী করছে আমার এই প্রশ্নের জবাবে তারা অম্লানবদনে বলল যে থাই রমণীদের সাথে সেক্স করা দোষের কিছু না। কারণ থাইল্যান্ড কাফেরদের দেশ আর কাফের রমণীদের সাথে সেক্স করা পুরোপুরি ইসলামসম্মত।
বর্তমানে পৃথিবীজুড়ে মুসলমানরা কাফেরদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছে, বিশ্বের সমস্ত অমুসলিমদের সাথে যুদ্ধাবস্থায় আছে মুসলমানরা। যুদ্ধাবস্থায় সমস্ত কাফের রমণীরাই গণিমতের মাল হিসেবে বিবেচিত হওয়ার যোগ্য, তা সে যেখানেই থাকুক না কেন। তারা আমাকে আরও বলে যে, কোন মুসলমান যদি অমুসলিম দেশে ভ্রমণ করতে যায়, অমুসলিম রমণী ভোগ করায় তার কোন দোষ নেই, একাজ পুরোপুরি শরিয়ত সম্মত। তাদের কথাকে তখন মোটেও আমলে নেই নি আমি। ভেবেছিলাম এইসব মোল্লারা ইসলামের কিছুই জানে না, নিজেদের ভোগবাসনা চরিতার্থ করতে যা তা বানিয়ে বলছে। এর কয়েকবছর পর আমি ইসলাম সম্পর্কে স্টাডি করতে মনস্থ করি। গভীরভাবে অধ্যয়নের পর বিস্ময়ে যেন বোবা হয়ে গেলাম। বুঝতে পারলাম, থাইল্যান্ডে যাদেরকে আমি কাঠমোল্লা ভেবে মনে মনে গালি দিয়েছিলাম, তারা ঠিক কথাটিই বলেছিল সেদিন। জীবন্ত ইসলাম হিসেবে মুসলমানরা যা মান্য করে থাকে, সেই শারিয়ার বাইরে কিছুই করে নি তারা! বিশ্বাস হচ্ছেনা তো? তা’হলে শারিয়া বর্ণিত নীচের আইনটি পড়ে দেখুন।
বিদেশের মাটিতে জিনা বা ব্যভিচার করলে কোন শাস্তি নাই (রেফারেন্স-১১, পৃ-১৮৫)
বিদেশের মাটিতে বেশ্যাবৃত্তি সংঘটন (Committing whoredom) শাস্তিযোগ্য নয়, যদি কোন মুসলমান বিদেশের মাটিতে কিংবা বিদ্রোহী অধুøষিত অঞ্চলে বেশ্যাবৃত্তি সংঘটনের কারণে দোষী সাব্যস্ত হয়, এবং অতঃপর মুলিম রাষ্ট্রে প্রত্যাবর্তন করে, তার উপর শাস্তি প্রয়োগযোগ্য হবে না, এই কারণে যে একজন ব্যক্তি, সে যেখানেই থাকুক না কেন, মুসলিম ধর্মবিশ্বাস গ্রহণ করার কারণে, সেখানকার (অর্থাৎ মুসলিম রাষ্ট্রের) সমস্ত বাধ্যবাধকতা পালন করে চলতে নিজেকে দায়বদ্ধ করেছে। এর পক্ষে আমাদের পণ্ডিতজনদের (doctors) দ্বিবিধ যুক্তি রয়েছেঃ
প্রথমত: নবী বলেছেন যে, “বিদেশের মাটিতে শাস্তি প্রদান করা যায় না”
এবং দ্বিতীয়ত: শাস্তিপ্রদানের বিধানগুলির অভিপ্রায় হচ্ছে (অপরাধ) রোধ করা কিংবা সতর্ক করা;
এক্ষেত্রে বিদেশের মাটিতে একজন মুসলমান ম্যাজিস্ট্রেটের কোন কর্তৃত্ব নাই, সুতরাং বিদেশের মাটিতে বেশ্যাবৃত্তি সংঘটনের দায়ে যদি কোন ব্যক্তির ওপর শাস্তির বিধান প্রয়োগ করা হয়, তা’হলে উক্ত বিধান অর্থহীন, কারণ বিধানের উদেশ্যই হচ্ছে যেন শাস্তি কার্যকরী হতে পারে; এবং যেহেতু বিদেশের মাটিতে ম্যাজিস্ট্রেটের কর্তৃত্ব নাই, শাস্তি কার্যকর করা অসম্ভব; যা থেকে প্রতীয়মান হয় যে বিদেশের মাটিতে বেশ্যাবৃত্তি সংঘটনের দায়ে সেখানে শাস্তিপ্রয়োগযোগ্য নয়; এবং উক্ত ব্যক্তি যদি পরবর্তীতে বিদেশের মাটি হতে মুসলমান রাষ্ট্রে আগমন করে, তার ওপর শাস্তি প্রয়োগ করা যাবে না; কারণ বেশ্যাবৃত্তি সংঘটনের সময় যেহেতু শাস্তি প্রদান করা হয় নাই, পরবর্তীতে তা প্রদান করা যাবে না।
উপপত্নীপ্রথা (Concubinage):
‘ডিকশনারি অব ইসলাম’ (রেফারেন্স-৬, পৃষ্ঠা-৫৯) গ্রন্থ অনুসারে উপপত্নী বা ‘কঙ্কুবাইন’ শব্দের আরবী প্রতিশব্দ সুরিইয়া, বহুবচনে সারারি। ইসলাম ধর্ম উপপত্নী প্রথা পালন করার পক্ষে খোলা লাইসেন্স দিয়ে রেখেছে। একটিমাত্র শর্ত আছে, উপপত্নীটির স্ট্যাটাস হতে হবে দাসী। স্বাধীন নারীকে উপপত্নী করা চলবে না।
দাসী ৩ ধরনের-
(১) যুদ্ধবন্দিনী
(২) বাজার হতে নগদ মূল্যে ক্রয় করা দাসী এবং
(৩) দাসীর সন্তানসন্ততি (দাসীর সন্তানসন্ততিও পুরুষানুক্রমিকভাবে দাস বা দাসী)।
যুদ্ধবন্দিনী যদি বিবাহিতাও হয়, কোরানের নিয়মানুযায়ী (৪:২৮) তাদের ভাগ্য সম্পূর্ণরূপে বিজয়ী মুসলমানদের হাতে সমর্পিত।
“তোমাদের জন্যে অবৈধ করা হয়েছে নারীদের মধ্যে সধবাগণকে (অন্যের বিবাহিত স্ত্রীগণকেও); কিন্তু তোমাদের দক্ষিণহস্ত যাদের অধিকারী আল্লাহ তোমাদের জন্যে তাদেরকে বৈধ করেছেন”।
এই উপপত্নী প্রথা স্বয়ং মহম্মদ (দঃ) কর্তৃক স্বীকৃত এবং নিজের জীবনে তিনি তা পালনও করে গেছেন। বানু কুরাইজা নামক ইহুদি গোত্রের সাথে যুদ্ধান্তে (৫ হিজরি সালে) তিনি রায়হানা নাম্নী এক সুন্দরী ইহুদিনীকে উপপত্নী হিসেবে গ্রহণ করেন। মিশরের শাসনকর্তা কর্তৃক উপহার হিসেবে প্রদত্ত এক খ্রিস্টান ক্রীতদাসীও তার উপপত্নী ছিল যার নাম ছিল মারিয়া কিবতি।
জালালানের (কোরানের একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যাখ্যাকারক) উদ্ধৃতি দিয়ে ডিকশনারি অব ইসলাম লিখেছে (রেফারেন্স-৬, পৃ-৫৯৫-৬০০):
(১) দাসী যদি বিবাহিতাও হয়, তাকেও অধিকারে নেয়ার ক্ষমতা আছে মনিবের। সুরা ৪:২৮;
“তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের অধিকারী আল্লাহ তোমাদের জন্যে তাদেরকে বৈধ করেছেন”।
এই আয়াতের ব্যখ্যায় জালালান বলেন-
“অর্থাৎ, যাদেরকে তারা যুদ্ধের ময়দানে আটক করেছে, তাদের সাথে সহবাস করা তাদের জন্যে বৈধ, যদি তাদের স্বামীগণ দারুল হরবে জীবিতও থাকে”
(দারুল হরব অর্থ- অমুসলিম রাষ্ট্র বা দেশ)।
(পাঠক-পাঠিকাবর্গ। ডিকশনারি অব ইসলাম গ্রন্থটিতে ৪:২৮ নং আয়াত হিসেবে যে আয়াতটির উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে, আসলে সেটি কোরানের ৪:২৪ নং আয়াত (সুরা নিসা)। মাওলানা ইউসুফ আলী, পিকথল এবং যে কোন বাংলা তরজমায় একে ৪:২৪ আয়াত হিসেবেই পাওয়া যাবে। এই অধ্যায়ের প্রথমেই উক্ত আয়াতটির বর্ণনা রয়েছে।)
ইসলামপন্থীরা বয়ান করে থাকেন যে আদি ইসলামের স্বর্গীয় ও আধ্যাত্মিক রূপে মুগ্ধ হয়েই জিহাদিরা মহম্মদের (দঃ) সঙ্গে গাজওয়ায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিল (গাজওয়া শব্দের অর্থ নারী ও ধনসম্পত্তি লুটপাট করার জন্যে বিধর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযান)। কিন্তু মহম্মদের (দঃ) জীবনী পাঠ করলে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র ভেসে উঠে আমাদের সামনে। এইসব লুণ্ঠনকারী দস্যুদের মূল আকর্ষণ ছিল কাফের রমণীদের সাথে অপরিমিত সেক্স করা এবং তাদের ধনসম্পত্তি লুটপাট করা।
আমরা দেখতে পাই, যখনই মুসলমানরা কোন অমুসলিম গোত্রকে আক্রমণ করেছে, তারা তাদের নারীদিগকে এক জায়গায় জড়ো করে বন্দী করেছে। বৃদ্ধা এবং শিশুদিগকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হত্যা করা হতো, কারণ এই প্রজাতিগুলি জিহাদিদের কোন কাজে আসবে না, ভার বাড়াবে মাত্র। তরুণী এবং সেক্সি কাফের রমণীদের বাছাই করা হতো এবং জিহাদিদের মধ্যে বন্টন করা হতো। যুদ্ধের ময়দানেই তাদের উপর সওয়ার হয়ে অপরিসীম যৌনক্ষুধা মিটিয়ে নিত জিহাদিরা। অতঃপর হয় তাদেরকে দাসী হিসেবে অন্য কারও কাছে বিক্রি করা হতো নয়তো মুক্তিপণের বিনিময়ে আত্মীয়দের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হতো (যদি মুক্তিপণ দিয়ে স্ত্রীকন্যাকে ফিরিয়ে নেয়ার মতো কোন আত্মীয় অবশিষ্ট থাকতো)।
নিম্নে তাবুক যুদ্ধের একটি বর্ণনা পেশ করা হলো। ইবনে ইসহাক রচিত মুহাম্মদের জীবন চরিত গ্রন্থ হতে বিবরণটি নেয়া হয়েছে। (রেফারেন্স-১০, পৃ-৬০২-৬০৩)।
তায়েফ ও হোনায়েন যুদ্ধের পর মুহাম্মদ কয়েকমাস মদীনায় অবস্থান করলেন। অতঃপর তিনি বাইজেন্টাইনদের ওপর আক্রমণ পরিচালনা করার প্রস্তুতি নিতে আদেশ দিলেন। তখন ছিল ঘোর গ্রীষ্মকাল। আরব উপদ্বীপে সে বৎসর প্রচণ্ড খরা চলছিল, সূর্যের তাপ ছিল অসহনীয়। এইসময়ে অভিযানে বের হতে অনেকেরই ঘোরতর অনিচ্ছা ছিল। অভিযান থেকে রেহাই পেতে কেউ কেউ নবীর কাছে প্রার্থনা জানাল। তদসত্বেও অভিযানের আয়োজন চলল জোর কদমে। জা’দ বিন কায়েস নামক জনৈক মুসলমানকে নবী জিজ্ঞেস করলেন – সে জিহাদে যেতে প্রস্তুত কীনা। উত্তরে জা’দ এই বলে অস্বীকৃতি জানাল যে, সে খুব স্ত্রীলোক পছন্দ করে। বাইজেন্টাইন রমণীরা অপূর্ব সুন্দরী, তাদের দেখলে সে নিজেকে আয়ত্তে রাখতে পারবে না। সুতরাং তাকে যেন রেহাই দেয়া হয়। মুহাম্মদ (দঃ) তাকে ছেড়ে দিলেন, অতঃপর জা’দকে উদ্দেশ্য করেই পবিত্র কোরানের অত্র আয়াত নাজেল হলো-
“তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে যে আমাকে (যুদ্ধে না যেতে) অনুমতি দিন…”
(৯:৪৯, সুরা তাওবা)।
গাজওয়ায় যেসব নারীদের বন্দী হতো, তাদের মধ্য থেকে মুহাম্মদ (দঃ) স্বয়ং বেশ কয়েকজনকে নিজের স্ত্রী কিংবা উপপত্নী হিসেবে নির্বাচিত করেছিলেন। সবচেয়ে সুন্দরী এবং সবচেয়ে সেক্সি মেয়েটিকেই তিনি নিজের জন্যে রাখতেন। নিজের জামাইদেরকেও তিনি যুদ্ধবন্দিনীদের ভাগ দিতে কসুর করেন নি। হযরত আলী এবং হযরত ওসমানকেও তিনি উদারভাবে মালে গণিমত বণ্টন করেছেন। নীচের হাদিসটিতে দেখা যাবে, কীভাবে মা ফাতেমার স্বামী নবী জামাতা শেরে খোদা হযরত আলী বন্দিনীর সাথে সেক্স করছেন, যে বন্দিনীকে তিনি শশুরের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছেন। একদিক বিবেচনা করলে মুহাম্মদকে (দঃ) বরং বেশ উদারই মনে হয় এক্ষেত্রে। এই অধুনিক যুগেও কয়টা শশুর আছে যে নিজের মেয়ের জামাইকে অন্য মেয়ের সাথে সেক্স করতে দেখেও সহ্য করবে কিংবা তার জন্যে একটি সেক্স-পার্টনার জুটিয়ে দেবে?
সহি বুখারিঃ ভলিউম–৫, বুক নং–৫৯, হাদিস নং–৬৩৭:
বুরাইদা কতৃক বর্ণিতঃ
নবী আলীকে ‘খুমুস’ আনতে খালিদের নিকট পাঠালেন (যুদ্ধলব্ধ মালের নাম খুমুস)। আলীর ওপর আমার খুব হিংসা হচ্ছিল, সে (খুমুসের ভাগ হিসেবে প্রাপ্ত একজন যুদ্ধবন্দিনীর সাথে যৌনসঙ্গমের পর) গোসল সেরে নিয়েছে। আমি খালিদকে বললাম- “তুমি এসব দেখ না”? নবীর কাছে পৌঁছুলে বিষয়টি আমি তাকে জানালাম। তিনি বললেন- “বুরাইদা, আলীর ওপর কী তোমার হিংসা হচ্ছে?” আমি বললাম- “হ্যাঁ, হচ্ছে”। তিনি বললেন- “তুমি অহেতুক ঈর্ষা করছো, কারণ খুমুসের যেটুকু ভাগ সে পেয়েছে তারচেয়ে আরও বেশি পাওয়ার যোগ্য সে”।
যুদ্ধজয়ের পর শত্রুদের সুন্দর ও সেক্সি মেয়েগুলি তাদের হাতে আসবে, এই বিবেচনাই ছিল ইসলামের প্রাথমিক যুগের জিহাদিদের অন্যতম প্রধান ড্রাইভিং ফোর্স। অন্তত ইবনে ইসহাকের সিরাতে রাসুলুল্লাহ গ্রন্থ পাঠ করলে এই চিত্রই পাঠকের মনে সুস্পষ্ট হবে। বৃদ্ধা, কুৎসিৎ এবং খুব সেক্সি নয় এমন নারী জিহাদিদের কাম্য ছিল না। এদেরকে বোঝা হিসেবেই গণ্য করত তারা। মুহাম্মদের (দঃ) সবচেয়ে প্রামাণ্য এই জীবনচরিত পাঠ করে আমরা জানতে পারি, হুনায়েনের যুদ্ধে এক বৃদ্ধাকে ছেড়ে দেওয়া হলো, কারণ তার মুখমণ্ডল ছিল শীতল, বক্ষদেশ সমতল, সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা ছিল না তার এবং বুকে দুধের ধারা শুকিয়ে গেছে। সুতরাং ছয়টি উটের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হলো (রেফারেন্স-১০, পৃ-৫৯৩)। এ কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটাই ছিল রীতি। কদাকার হাসের ছানাটিকে ছেড়ে দাও, বুড়ি দিদিমাই বা কোন্ কাজে আসবে। তার বিনিময়ে বরং কয়েকটি উট-দুম্বা পেলেও লাভ।
নারীমাংসের প্রতি জিহাদিদের লোভের আরও প্রমাণ মেলে তায়েফ অবরোধের বিবরণ থেকে। তায়েফে ছিল তাফিক গোত্রের বাস। সুন্দরী এবং সেক্সি হিসেবে তাফিক মেয়েদের নাম-ডাক ছিল প্রচুর। এই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অধিকাংশই যোগ দিয়েছিল লুটতরাজ ও সুন্দরী তায়েফ নন্দিনীদের সাথে সেক্স করার লোভে। জনৈক জিহাদির বিবরণ হতে দেখা যায় যে সে অকপটে স্বীকার করছে- সে যুদ্ধ করার জন্যে এই অভিযানে শরিক হয় নি, বরং একটি সুন্দরী তাফিক রমণী কব্জা করা এবং তাকে গর্ভবতী করার উদ্দেশ্যেই সে অভিযানে এসেছে, কারণ সে জানে যে তাফিক নারীরা বুদ্ধিমান সন্তানের জন্ম দেয়।
বানু কুরাইজা নামক ইহুদি গোত্রটির সমস্ত পুরুষ সদস্যদের হত্যা করার পর তাদের ধনসম্পত্তি ও নারীগণ মুসলমানদের দখলে আসে। রায়হানা নাম্নী এক সুন্দরী ইহুদিনীকে নবী নিজের জন্যে নির্বাচিত করেন। তিনি রায়হানাকে বিয়ে করতে চাইলে রায়হানা সে প্রস্তাব অস্বীকার করে; বিবাহিত স্ত্রী হওয়ার পরিবর্তে তার নিজ ধর্মে (ইহুদি ধর্মে) অটল থেকে নবীর একজন উপপত্নী হিসেবে থাকতেই পছন্দ করে সে। এমতাবস্থায় উপপত্নী হিসেবেই রাসুলের হারেমে ঠাই হয় রায়হানার। ইবনে ইসহাকের বর্ণনা হতে আমরা জানতে পারি, মুসলমানগণ যখন বানু হাওয়াজিন গোত্রকে পরাজিত করে, প্রায় ৬ হাজার নারী ও শিশু বন্দী হয় মুসলমানদের হাতে। নারীমাংসের এতবড় চালান ইতিপূর্বে জিহাদিদের হাতে আর আসে নি। নারীদেরকে জিহাদিদের মধ্যে যথারীতি বণ্টন করে দেয়া হয়। রায়তা নাম্নী সুন্দরী বন্দিনীটি হযরত আলীর ভাগে পড়ে, জয়নাব নাম্নী আরেক হতভাগী পড়ে হযরত ওসমানের ভাগে। নারী-মাংসের এক ভাগ হযরত ওমরের ভাগ্যেও জুটেছিল, তবে ভাগটি তিনি নিজে না নিয়ে ভোগ করার জন্যে তা প্রিয় পুত্র আব্দুল্লাহর হাতে তুলে দেন। (প্রাগুক্ত, পৃ-৫৯২-৫৯৩)।
নৈতিকতা এবং ন্যায়বিচারের কথা ভাবছেন আপনি? হ্যাঁ, অসহায় নিরপরাধ বন্দিনীদের সাথে দয়াল নবীর ন্যায়বিচারের এই হলো নমুনা। শুধু রায়হানা নয়, জাওয়াহিরা এবং সাফিয়া নাম্নী আরও দুইজন রক্ষিতা ছিল নবীর। জওয়াহিরা তার হাতে আসে বানু আল-মুস্তালিক অভিযান থেকে, সাফিয়া আসে খায়বারের বানু নাজির গোত্রের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযান থেকে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে মুহাম্মদের উপত্নীদের অধিকাংশই ছিল হয় ইহুদি নয়তো খ্রিস্টান। (রায়হান, জওয়াহিরা ও সাফিয়া ছিল ইহুদি, মারিয়া কিবতি ছিল খ্রিস্টান)।
মুখ বাঁচাতে ইসলামপন্থীরা এখনই সমস্বরে কোরাস গেয়ে উঠবেন যে মুহাম্মদ বড়ই দয়ালু ছিলেন, ওইসব অসহায় তরুণীদের দুঃখ দেখে তাঁর কোমল প্রাণ কেঁদে উঠল। তাই তিনি তাদের গ্রহণ করে দাসী হিসেবে বিক্রি হওয়ার হাত থেকে তাদের রক্ষা করেছেন। তারা আমাদেরকে আরও বিশ্বাস করতে বলবেন যে ওইসব বন্দিনীরা মুহাম্মদকে বিয়ে করে খুবই সুখি হয়েছিল, কারণ মুহাম্মদকে দেখামাত্র তারা নবীর প্রেমে মাতোয়ারা হয়ে পড়েছিল। কী অবিশ্বাস্য অপূর্ব যুক্তি, লিখিতভাবে মানুষের ইতিহাস শুরু হওয়ার পর থেকে এমন অকাট্য যুক্তি কেউ আবিষ্কার করতে পেরেছে বলে অন্তত আমার জানা নেই। মাত্র ঘণ্টাকয়েক আগে যার হাতে তার স্নেহময় পিতা প্রাণ দিয়েছে, বড় আদরের ভাইটি অকালে ঝরে গেছে, প্রেমময় স্বামীর প্রিয়মুখটি অশ্বের খুরাঘাতে দলিতমথিত হয়েছে সেই হত্যাকারীর প্রেমে সে ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পাগল হয়ে গেল! মুহাম্মদ যা করেছেন, সে যুগে তাই ছিল রীতি। একবিংশ শতাব্দীর দোরগোড়ায় এসে কতগুলি খোঁড়া যুক্তি দিয়ে সেই বন্য রীতিকে জাস্টিফাই করা অমানবিক। মানবতার প্রতি চরম অবমাননাকর।
এর আগেও বলা হয়েছে, কাফেরদের বিরুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর পরিচালিত অভিযানের পেছনে ড্রাইভিং ফোর্স হিসেবে কাজ করেছে কাফের রমণীদের রসালো শরীরের প্রতি জিহাদিদের অপরিমিত লোভ। এতই প্রচণ্ড ছিল সেই লোভ যে কাঙ্খিত নারীটি করায়ত্ত হওয়ার পর বিন্দুমাত্র বিলম্ব সইতো না জিহাদিদের। বন্দিনীদের ঋতুস্রাবও নিবৃত্ত করতে পারতো না তাদের, তার মাঝেই বন্দিনীদের ওপর চড়ে বসতো তারা। এমতাবস্থায় স্বয়ং আল্লাহপাককে বাণী নিয়ে এগিয়ে আসতে হলো, ডিক্রি জারী করতে হলো যে পিরিয়ড শেষ হওয়ার পরেই কেবল বন্দিনীদের ধর্ষণ করা যাবে। ওইসব ইসলামি সৈনিকদের যৌনতাড়না এতোটাই বর্বর ও ঘৃণ্য ছিল যে তারা এমনকী কোনপ্রকার গোপনীয়তা অবলম্বনেরও ধার ধারত না। এমনও হয়েছে যে স্বামীদের সামনেই বন্দিনীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে জিহাদিরা। স্ত্রীকে এক নরপশু খাবলে খাচ্ছে, বন্দী স্বামী চোখ মেলে তাই দেখছে। মানবতার এত বড় অপমান বিশ্বসংসারে আর কখনও ঘটেছে কী?
নীচের হাদিস দু’টি পড়ুন এবং যুদ্ধবন্দীদের মর্যাদার প্রশ্নে জেনেভা কনভেনশনে রচিত আইনের সাথে ঈশ্বর প্রদত্ত ইসলামি আইনের তুলনা করুন।
প্রথম হাদিসটিতে বলা হয়েছে যে কিছু কিছু বন্দিনী ছিল যারা ছিল বিবাহিতা এবং তাদের স্বামী তখনও বেঁচে, যদিও স্বামীরা ছিল অমুসলিম কাফের। এই ধরনের বন্দিনীদের সাথে সেক্স করতে কোন কোন জিহাদি সঙ্কোচ বোধ করত। কেউ কেউ আবার পরাজিত শত্রুটির সামনেই তার স্ত্রীকে ভোগ করতে বেশী পছন্দ করত। এ এক ধরনের যৌনবিকৃতি, যার কিছু নমুনা আমরা দেখেছি একাত্তরে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়। পাঞ্জাবি এবং পাঠান সৈন্যরা একাত্তরে বাঙালি রমণীদের ওপর যা করেছে, তার পূর্ণ সমর্থন মেলে এই হাদিসগুলি হতে। ইয়াহিয়ার জল্লাদ বাহিনী একাত্তরে যা কিছুই করে থাকুক, ইসলামি শাস্ত্রের বাইরে কিছু করে নি। ইসলামের প্রাথমিক গাজওয়াগুলিতে নবীর বাহিনী ঠিক এমনটিই করতো।
দ্বিতীয় হাদিসটিতে বলা হয়েছে যে অনেক জিহাদিই পৌত্তলিক স্বামীটির সামনে তার স্ত্রীর ওপর বলাৎকার করতে দ্বিধান্বিত ছিল। কিন্তু মহম্মদ এখানে বিপদের গন্ধ পেয়েছিলেন, তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে জিহাদিরা যা করতে চায় তা করতে না দিলে বিপদের সম্ভাবনা আছে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে আল্লাহ যদি এই আনন্দোৎসবের অনুমতি না দেন, জিহাদিরা বেঁকে বসতে পারে, তাদের সমর্থন শূন্যে মিলিয়ে যেতে খুব বেশি দেরি হবে না। সুতরাং নবী মহামহিম আল্লাহর মধ্যস্থতায় সমাধান করলেন, তরিৎগতিতে আরশ-মোয়াল্লা থেকে মঞ্জুরি নেমে এলো। মহান আল্লাহ কাফের রমণীদের (বিবাহিতা হলেও) ভোগ করার অনুমতি প্রদান করে ধন্য করলেন জিহাদিদের।
কিছু কিছু জিহাদি স্বামী বর্তমান থাকতেও বন্দিনীদের সাথে সেক্স করে এবং কেউ কেউ তা করতে দ্বিধাগস্ত হয়। (সুনান আবু দাউদ: ১১:২১৫০)।
সুনান আবু দাউদ, বুক নং-১১, হাদিস নং-২১৫০:
“আবু সাইদ আল খুদরি বলেন- “হুনায়েন যুদ্ধের সময় আল্লাহর রাসুল (দ:) আওতাসে এক অভিযান পাঠান। তাদের সাথে শত্রুদের মোকাবেলা হলো এবং যুদ্ধ হলো। তারা তাদের পরাজিত করল এবং বন্দী করল। রাসুলুল্লাহর (দ:) কয়েকজন অনুচর বন্দিনীদের স্বামীদের সামনে তাদের সাথে যৌনসঙ্গম করতে অপছন্দ করলেন। তারা (স্বামীরা) ছিল অবিশ্বাসী কাফের)। সুতরাং মহান আল্লাহ কোরানের আয়াত নাজিল করলেন,
“সমস্ত বিবাহিত স্ত্রীগণ (তোমাদের জন্যে অবৈধ); কিন্তু তোমাদের দক্ষিণহস্ত যাদের অধিকারী (যুদ্ধবন্দিনী), আল্লাহ তোমাদের জন্যে তাদেরকে বৈধ করেছেন”।
[কোরান, ৪:২৪]
অর্থাৎ পিরিয়ড শেষ হলে তারা তাদের জন্যে বৈধ।
যুদ্ধবন্দিনীর সাথে সহবাস বৈধ, তবে শর্ত থাকে যে তার মাসিক স্রাব শেষ গেছে কিংবা গর্ভবতী হলে তার গর্ভ খালাস হয়ে গেছে। তার যদি স্বামী থেকে থাকে, বন্দী হওয়ার পর সে বিবাহ বাতিল বলে গণ্য হবে। (কোরাণ-৪:২৪, সহি মুসলিম-৮:৩৪৩২)।
সহি মুসলিম, বুক নং–৮, হাদিস নং–৩৪৩২:
আবু সাইদ আল খুদরি (রা:) বলেছেন যে, হুনায়েনের যুদ্ধকালে আল্লাহর রাসুল (দ:) আওতাস গোত্রের বিরুদ্ধে একদল সৈন্য পাঠান। তারা তাদের মুখোমুখি হলো এবং তাদর সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলো। যুদ্ধে পরাজিত করার পর কিছু বন্দী তাদের হাতে আসল। রাসুলুল্লাহর (দ:) কিছু সাহাবি ছিলেন যারা বন্দিনীদের সাথে সহবাস করতে বিরত থাকতে চাইলেন, কারণ তাদের স্বামীরা ছিল জীবিত, কিন্তু বহু ঈশ্বরবাদী। তখন মহান আল্লাহ এ সম্পর্কিত আয়াতটি নাজেল করলেন- “এবং বিবাহিত নারীগণ তোমাদের জন্যে অবৈধ, তবে যারা তোমাদের দক্ষিণ হস্তের অধিকারে আছে তাদের ছাড়া”।
এখানে একটি প্রশ্ন এসে যায়। জিহাদিদের উন্মত্ত ধর্ষণপ্রক্রিয়ার ফলে যদি বন্দিনীটির গর্ভসঞ্চার হয় তাহলে কী হবে? অনেক জিহাদিই চাইত না যে তাদের সেক্স-মেশিনটি তাড়াতাড়ি গর্ভসঞ্চার করে বসুক, সুতরাং তারা বীর্যপাতের ঠিক পূর্বমুহূর্ত লিঙ্গটি বের করে নিয়ে আসত। এই প্রথা সম্পর্কে মহম্মদের (দ:) মনোভাব ছিল ঘোলাটে, কখনও তাকে এই প্রথার বিরুদ্ধে কথা বলতে দেখা যায়, কখনওবা তাকে নিরপেক্ষ ভুমিকা পালন করতে দেখা যায়। এসম্পর্কে গোটাকয়েক সুন্দর হাদিস উল্লেখ করা হলো। (কয়টাস ইন্টারাপশন বা যোনির বাইরে বীর্যপাত সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যাবে এই সিরিজের ৩ নং পর্বে)।
বানু আল-মুস্তালিক গোত্রের বন্দিনীদের ক্ষেত্রে কয়টাস ইন্টারাপশন পালন করতে মহম্মদ অনুমতি দেন নি, তবে বন্দিনীদের ধর্ষণ করার ক্ষেত্রে তার কোন নিষেধ ছিল না (৫:৫৯:৪৫৯)।
সহি বুখারি, ভলিউম–৫, বুক নং–৫৯, হাদিস নং–৪৫৯:
ইবনে মুহাইরিজ হতে বর্ণিত:
আমি মসজিদে প্রবেশ করলাম এবং আবু সাইদ আল-খুদরিকে দেখতে পেলাম। আমি তার পাশে উপবেশন করে তার কাছে আজল (কয়টাস ইন্টারাপশন) সম্পর্কে জানতে চাইলাম। আবু সাইদ বলল- “আমরা রাসুলুল্লাহর সাথে বানু মুস্তালিকদের বিরুদ্ধে এক অভিযানে যাই। কিছু আরব বন্দিনী আমাদের হস্তগত হয়। আমরা প্রবলভাবে নারীসঙ্গ কামনা করছিলাম; নারীসঙ্গবিবর্জিত জীবন আমাদের জন্যে কঠিন হয়ে পড়েছিল এবং আমরা আজল করতে চাইলাম। আমরা বললাম- আল্লাহর রাসুল আমাদের মাঝে হাজির থাকতে তার কাছে জিজ্ঞেস না করে কী করে একাজ করি? আমরা এ সম্পর্কে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- এটা না করাই বরং তোমাদের জন্যে ভাল। কারণ কোন আত্মা জন্ম নেওয়ার হলে তা জন্মাবেই, পুনরুথানের দিন পর্যন্ত”।
যুদ্ধবন্দিনীদের সাথে সেক্স করার ঢালাও অনুমতি আছে ইসলামে এই সত্যটা মেনে নিতে অনেক ইসলামপন্থীর বড় কষ্ট হয়। এই বর্বর প্রথার মধ্যে লুক্কায়িত অমানবিকতাকে ঢাকা দিতে তারা নানারূপ যুক্তি খাড়া করেন। তারা আমতা আমতা করে বলেন-
“দেখ, কোনকিছুর ভালমন্দ যাচাই করতে হলে তোমাকে অবশ্যই পারিপার্শিকতা বা স্থানকাল বিবেচনায় রাখতে হবে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে যুদ্ধবন্দিনীদের সাথে সেক্স করার যে প্রথা চালু ছিল, তার অনেক ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে এখন। সেইসময়ে যুদ্ধবন্দিনীদের সাথে সেক্স করা দোষের কিছু ছিল না। মুসলমান সৈনিকদেরকে তাদের গৃহ হতে বহু দূরে যুদ্ধ এলাকায় পাঠানো হতো। বহুদিন যাবৎ স্ত্রীসঙ্গ হতে বিরত থাকতে হতো তাদের। সুতরাং তাদের যৌনক্ষুধা মেটাতে আল্লাহ এর অনুমতি দিয়েছিলেন। তাছাড়া বন্দিনীদেরও যৌনক্ষুধা ছিল, পুরুষের ছোঁয়া ছাড়া তারা বাকী জীবনটা কাটাবেইবা কী করে? সুতরাং এ ছিল নেহায়েতই সমানে সমান খেলা। ইসলামি আইন আপাত কঠোর মনে হলেও এর পেছনে অবশ্যই কোন সুন্দর ও জোরালো যুক্তি থাকতেই হবে”।
যদি তাদের প্রশ্ন করা হয় ‘ভাল কথা। এটা ছিল সে যুগের রীতি, তবে আইনটি কী এখনও চালু আছে? হ্যাঁ কিংবা না স্পষ্ট করে বলুন’। এই সহজ প্রশ্নের কোন সরাসরি জবাব অবশ্য মিলবে না। প্রশ্নটিকে সুকৌশলে পাশ কাটাবেন তারা, হয়তো বলবেন-
“আমাদেরকে অবশ্যই কন্টেক্সট বিচার করে কোন প্রথার ভালমন্দ যাচাই করতে হবে। কোন মুসলমান শক্তি যদি অন্য কোন দেশ জয় করে নেয়, ইসলামিক আইন অনুসারে তারা পরাজিতদের প্রতি সবসময়ই ন্যায়বিচার করে থাকে। ইসলাম অবশ্যই বিজিত নারী ও শিশুদিগকে রক্ষা করতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে… ইত্যাদি, ইত্যাদি”। কখনও সোজাসাপটা জবাব দেবেন না তারা।
মুসলমানরা আমেরিকাকে গ্রেট শয়তান বলে অভিহিত করে থাকে। আচ্ছা, যদি এমন হয় যে মুসলমান জিহাদিরা আমেরিকা দখল করে নিল। এই অবস্থায় আমেরিকার কাফের রমণীদের ভাগ্যে কোন্ পরিণতি অপেক্ষা করে আছে? দেখা যাক এই অবস্থায় প্রকৃত ইসলামের কাছথেকে কী সমাধান মেলে। জনৈক সুপণ্ডিত ইসলামি মোল্লা বন্দিনী মার্কিন নন্দিনীদের সম্পর্কে নিম্নোক্ত বিধান দিয়েছেন।
ইসলাম ধর্ম-সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তরের একটি ওয়েবসাইট:
দক্ষিণ হস্তের অধিকার (right hand possessions)
প্রশ্ন: দক্ষিণহস্তের অধিকার বলতে কী বুঝায়, তা পাওয়ার উদ্দেশ্যই বা কী? কোন কোন ভাই মনে করেন যে এই আমেরিকায়ও দক্ষিণহস্তের অধিকারে কোন কিছু আসলে তাতে দোষের কিছু নেই।
উত্তর: দক্ষিণ হস্তের অধিকার বা ‘মালাকুল ইয়ামিন’ বলতে বুঝায় ক্রীতদাস বা দাসী (স্লেভস কিংবা মেইডস), যা যুদ্ধবন্দী হিসেবে কিংবা বাজার হতে ক্রয়সূত্রে মুসলমানদের দখলে আসে। ক্রীতদাসী মুসলমানদের দখলে আসলে তাদের সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করা বৈধ এবং সঠিক। বর্তমান যুগেও যদি কোন কাফেরদের দেশ মুসলমানদের অধিকারে আসে, এই নিয়ম পালন করা বৈধ এবং সঠিক।
উপরের উত্তরটি একটু ভালভাবে অনুধাবন করুন পাঠক। উক্ত মোল্লা যে সিদ্ধান্তটি দিলেন, তার নিগলিতার্থ কী দাঁড়ায়! কোনপ্রকার রাখঢাক না করে খাঁটি ইসলাম সম্পর্কে অকপট মতামত দেয়ার জন্যে এই মোল্লাকে অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হয়। তথাকথিত ইসলামপন্থীদের মতো ঝোপের আড়ালে মুখ ঢেকে আসল প্রশ্নটিকে পাশ কাটাননি এই মোল্লা। তিনি কোরান-হাদিস বর্ণিত নিয়মটিকে সহজ, অবিকৃত, খাঁটি এবং দ্ব্যর্থহীনভাবে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। পাশ্চাত্য শিক্ষিত আধুনিক ইসলামপন্থীদের প্রতি আমার বিনীত আরজ, ইসলামি মোল্লাটির উপরোক্ত অকপট মতামতের জবাবে তারা কোন্ কৈফিয়ৎ পেশ করবেন এখন?
আসুন, উপরোক্ত ইসলামি নিয়মটিকে আরেকটু বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করে দেখি। ধরে নিন, অলৌকিক কোন ক্ষমতাবলে ইসলামি সেনাবাহিনী যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং অন্যসমস্ত কাফের মুলুকগুলি দখল করে নিল। পরাজিত কাফের পুরুষদের প্রতি মুসলমানরা কী আচরণ করবে? যুদ্ধবন্দী হিসেবে যেসব সুন্দরী তরুণী তাদের অধিকারে আসল, তাদের সাথেই বা ইসলামের সৈনিকেরা কোন্ আচরণ করবে? আপনি কী মনে করেন যে তারা বন্দী/বন্দিনীদের সাথে জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী আচরণ করবে? যদি সেরকম ভেবে থাকেন, তবে আপনি একটি বদ্ধ উন্মাদ। উপরোক্ত মোল্লা যা বলেছেন, ইসলামি সৈনিকেরা ঠিক তেমনটিই করবে। সমস্ত পুরুষ বন্দীদেরকে তারা দাস হিসেবে বেচে দেবে, মেয়েগুলিকে যৌনদাসী হিসেবে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেবে। বৃদ্ধা বন্দিনীদেরকে খুব সম্ভবত হত্যা করা হবে, কারণ অনর্থক বোঝা বাড়ানো কোনকালেই কাজের কথা বলে বিবেচনা করা হয় না। আরেকটি কাজ করতে পারে ইসলামের সৈনিকেরা। গ্রেট শয়তানটিকে আরেকটু শায়েস্তা করতে জিহাদিরা বন্দী পুরুষদের সামনেই তাদের স্ত্রীদের ওপর সওয়ার হতে পারে। স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ করার মজাই আলাদা!
আপনি হয়তো ভাবছেন, এ আমার আকাশ কুসুম কল্পনা, একবিংশ শতাব্দীতে এরকম কী করে হয়? হয় পাঠক, এখনও তা হয়। আপনার আমার জন্যে না হলেও ইসলামপন্থীদের জন্যে হয়। ইরাক-সিরিয়ার আইএস-এর কর্মকাণ্ডগুলো এতো সহজেই ভুলে যাবেন না। সেসব একটু ঝালাই করে নিন। মানসিকভাবে তারা এখনও দেড়হাজার বছর আগেকার সেই সোনালি যুগেই পড়ে আছে। সেই যুগকে ফিরিয়ে আনতে দেশে দেশে অজস্র জিহাদির জন্ম দিচ্ছে তারা। মাত্র তিরিশ বছর আগের কথা স্মরণ করুন, একাত্তরের বাংলাদেশের কথা। পাকিস্তানের ইসলামি সেনাবাহিনী বাংলাদেশে ঠিক ইসলামি নিয়মটিই চালু করেছিল সেদিন। তারা প্রায় তিরিশ লক্ষ বাঙালি পুরুষকে হত্যা করেছিল, কারণ তাদের ভাষায় তারা ছিল কাফের অথবা নিম্ন-মুসলমান। আড়াই লক্ষ বাঙালি নারীকে তারা উপপত্নী হিসেবে বন্দী করেছিল। মালে গণিমত টাইটেল দিয়ে তাদেরকে ধর্ষণ করেছিল, ঘরের ভেতর হতে ধর্ষিতার আকুল ক্রন্দন যখন আকাশ বাতাস পরিপ্লাবিত করে দিচ্ছিল, পাশের ঝোপে পালিয়ে থাকা তার অসহায় পুরুষটির কর্ণে সেই ক্রন্দনধ্বনি যে পৌছয় নি, তা আপনি কী করে ভাবলেন? ইরাক*-সিরিয়ায় আইএস এবং তালেবান অধ্যুষিত আফগানিস্তানেও ঠিক একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে বহু রিপোর্ট আমরা টিভি-পত্রিকায় দেখেছি। যারাই আইএস বা তালেবানদের বিরোধীতা করেছে, তাদের মেয়েদের ওপর নেমে এসেছে ধর্ষণ ও নির্যাতন।
যদি প্রশ্ন করা হয় যে, এইসব জিহাদীরা কী ইসলামের নিয়মের বাইরে কোনকিছু করেছে? ইসলামের বিধান মোতাবেক ধর্ষণকারী এইসব জিহাদিদের কী কোন শাস্তির আওতায় আনা যায়? এই প্রশ্নের একটিমাত্র জবাব ‘না’। সুতরাং এরূপ সিদ্ধান্ত টানা কী অন্যায় হবে যে দেশ-কাল নির্বিশেষে যুদ্ধবন্দিনীদের ওপর যৌননির্যাতনের এই যে কালচার জিহাদিরা প্রতিপালন করে আসছে, এর পেছনে যে প্রেরণাদায়ী শক্তি তার নাম হচ্ছে ইসলাম? এই কিছুদিন আগেও ইরানে কী ঘটল? ব্যভিচার ও ধর্মদ্রোহীতার অপরাধে এক মেয়েকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলো। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে তার সেলে এক ইসলামী গার্ডকে ঢুকিয়ে দেয়া হলো মেয়েটিকে পুনঃপৌনিকভাবে ধর্ষণ করার জন্যে! আহ্। একজন কাফের বন্দিনীর সাথে কী মহান ইসলামী আচরণ! বেটি তো নরকেই যাবে, যাওয়ার আগে একটু ইসলামি সেক্সের স্বাদ শরীরে বহন করে নিয়ে যাক!
পাঠক, ভুলে যাবেন না ইরানে এখন ইসলামের রক্ষকরা ক্ষমতায়। সেখানে যাকিছু ঘটে, মহান ইসলামি আইন বাস্তবায়ন করতেই ঘটে। সুতরাং কীভাবে বলবেন যে দেড়হাজার বছরের পুরোনো যুদ্ধবন্দীসংক্রান্ত আইনগুলো এখন আর কার্যকরী নয়?
ক্রীতদাসীর সাথে সেক্স
আলোচনার জন্যে এ এক হট টপিকস। এতোক্ষণ আমরা যে বিষয়ে আলোচনা করলাম, তা হচ্ছে যুদ্ধবন্দিনীদের সাথে ইসলামসম্মত যৌন-আচরণ। তবে হালালভাবে সেক্স করতে মুসলিম পুরুষদের সামনে এই একটিমাত্র পথ খোলা, তা কিন্তু নয়। যুদ্ধ করা আর যাই হোক মুখের কথা নয়, পৈতৃক প্রাণটা বাজী ধরতে হয়। পয়সা থাকলে হালালভাবে সেক্স করার জন্যে আরও একটি সহজ উপায় আছে মুসলমান পুরুষদের। নগদ পয়সা দিয়ে বাজার হতে মোটাতাজা দেখে একটি দাসী কিনে নেয়া। যৌনদাসী, ইংরেজী নাম সেক্স স্লেভ। যৌনদাসী ক্রয়বিক্রয় পরিপূর্ণভাবে ইসলামসম্মত, পয়সা থাকলে আপনি যতখুশী দাসী কিনতে পারেন। একসঙ্গে কতজন যৌনদাসী কিনতে পারবেন, তা নিয়ে মোটেও ভাবতে হবে না আপনাকে। শরিয়ত আপনার জন্যে কোন লিমিট বেধে দেয়নি। যতক্ষণ দেহে শক্তি আছে আর পকেটে পয়সা আছে চালিয়ে যান। এরজন্যে পরকালে আপনাকে জিনা বা ব্যভিচারের দায়ে জবাবদিহিও করতে হবে না। কেউ কেউ হয়তো যুক্তি দেখাবেন যে নারীমাংসের এই বিজনেসটি যেহেতু আর চালু নেই, সুতরাং এ নিয়ে আলোচনা করা অনর্থক। এই যুক্তির সাথে আমিও একমত। তবে কথা হচ্ছে, কাফেরদের বিরুদ্ধে ইদানীংকালে জিহাদিরা বিশ্বজুড়ে জিহাদের ডাক দিয়েছে। আটলান্টিকের পশ্চিম তীর থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব তীর পর্যন্ত সর্বত্র জিহাদি বোমায় কাফের মরছে। তাদের এই জিহাদ যদি সফল হয়, যদি জিহাদিরা পৃথিবীকে দখল করে নেয়, তবে কোরান-হাদিস সমর্থিত সেই রসালো প্রথাটি যে মানবসমাজে পুনঃপ্রবর্তিত হবে না, তার নিশ্চয়তা কে দেবে? কোরান-হাদিসে যে নিয়ম আছে তা চিরকালীন, একেবারে গ্র্যানাইট পাথরে খোদাই করা। স্বয়ং আল্লাহপাক তার প্রিয় বান্দাদের জন্যে এই নিয়ম বেধে দিয়েছেন। সেই ঐশী নিয়মের এক চুল ব্যত্যয় ঘটানো কী কোন মানবের পক্ষে সম্ভব? সম্ভব নয়। আর তাই যদি ইসলামী জিহাদিদের হাতে পৃথিবীর পতন ঘটে, তবে অমুসলিম নারীদের নধর মাংসে ভূপৃষ্ঠ পুনরায় সয়লাব হয়ে যাবে, নারীমাংস কেনাবেচার পুরনো প্রথাটি আবার সগৌরবে ফিরে আসবে তা প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়। যদি ইসলামপন্থীরা তাদের শাসিত রাষ্ট্রে শারিয়া আইন প্রবর্তিত করে চুরির দায়ে হাত-পা কাটতে পারে, ব্যভিচারের দায়ে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করতে পারে, মুরতাদ ঘোষণা করে মানুষের গলা কাটতে পারে, তবে শরিয়ার বিধান মোতাবেক দাসপ্রথার পুনঃপ্রবর্তন থেকে কে তাদের নিবৃত্ত করবে? অতি সম্প্রতি ইরাক-সিরিয়ায় আইএস এর দখলীকৃত এলাকায় ইরাকী ও কুর্দি নারীদের বেচাকেনার দৃশ্য এতো দ্রুত ভুলে গেলেন? পাঠক, বিষয়টি নিয়ে ভাবুন একবার।
আমরা এর আগে বলেছি, নবী মুহাম্মদের মারিয়া কিবতি নামক একজন যৌনদাসী ছিল। আলেকজান্দ্রিয়ার খ্রিস্টান শাসক মুকাকিস এই দাসীটিকে উপঢৌকন হিসেবে তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন। মুহাম্মদের কাছ থেকে ইসলাম গ্রহণ করার বার্তা নিয়ে একটি প্রতিনিধি দল যায় মুকাকিসের দরবারে। মুকাকিস ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। তবে এই অস্বীকৃতির পরিণাম কী হতে পারে তা ভেবে তিনি খুব শঙ্কিত ছিলেন। সুতরাং মুহাম্মদকে (দ:) তুষ্ট করতে তিনি দু’জন সুন্দরী দাসী পাঠান মদীনায়। দু’জনের মধ্যে অপেক্ষাকৃত সুন্দরী দাসীটিকে (মারিয়া) মহম্মদ নিজের ব্যবহারের জন্যে রাখেন, অপর দাসী শিরিনকে তিনি কবি বন্ধু হাসান ছাবিতকে উপহার দেন। মারিয়ার গর্ভে মহম্মদের এক পুত্র জন্মে যার নাম ছিল ইব্রাহিম। শিশু বয়েসেই মারা যায় ইব্রাহিম। শিরিনের গর্ভে হাসান ছাবিতের যে পুত্রসন্তান হয় তার নাম ছিল আব্দুর রহমান। (রেফারেন্স-১০, পৃ-৪৯৮-৪৯৯)। এই সমস্ত ঐতিহাসিক রেকর্ড থেকে প্রমাণিত হয় যে ইসলামে যৌনদাসী ভোগ করা পুরোপুরিভাবে হালাল এবং ইসলামসম্মত।
নিম্নে মুক্তোসদৃশ আরও কিছু হাদিস বর্ণনা করা হলো। হাদিসগুলি পড়ুন এবং ভেবে দেখুন যে সেক্সের ক্ষেত্রে মেয়েদের ওপর ইসলাম কতোই না দয়া, স্বর্গীয় আশীর্বাদ, সহানুভুতি এবং ন্যায়বিচার প্রদর্শন করেছে।
আপনি একইসাথে দুইজন যৌনদাসীর সাথে গোসল না করে সঙ্গম করতে পারেন; তবে স্বাধীন নারীর ক্ষেত্রে তা পারেন না। (মুয়াত্তা: ২.২৩.৯০)
মুয়াত্তা: বুক নং–২, হাদিস নং–২.২৩.৯০:
“…নাফি’র বরাতে মালিক কতৃক বর্ণিত: আব্দুল্লাহ ইবনে উমরের যৌনদাসীগণ তার পা ধুইয়ে দিত এবং তার জন্যে তালপাতার চাটাই এনে দিত, যখন তাদের মাসিক হচ্ছিল।
মালিককে জিজ্ঞেস করা হয় যে যদি কোন ব্যক্তির স্ত্রী এবং কয়েকজন যৌনদাসী থাকে, তবে সে গোসল না করেই সবার সাথে সহবাস করতে পারে কীনা। তিনি বলেন- “গোসল না করেও দু’জন যৌনদাসীর সাথে সহবাস করায় দোষের কিছু নেই। তবে স্বাধীন নারীদের ক্ষেত্রে একজনের বরাদ্দের দিন অন্যের কাছে যাওয়ার অনুমতি নাই। প্রথমে একজন যৌনদাসীর সাথে প্রেম করে অতঃপর দ্বিতীয় জনের কাছে যাওয়ায় দোষের কিছু নাই, যদি সে জুনুব অবস্থায়ও থাকে”।
মালিককে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে একজন লোক জুনুব অবস্থায় আছে। তার গোসলের জন্যে পাত্রে পানি ঢেলে দেয়া হলো। পানি গরম না ঠাণ্ডা তা পরখ করতে লোকটি পানিতে আঙ্গুল ছোয়াল।
মালিক বলেন- “যদি তার আঙ্গুলে কোন নাপাকি না লেগে থাকে, তাহলে আমি মনে করি না যে এজন্য পানি অপবিত্র হয়ে গেছে।”
নীচের হাদিসটি পড়লে আপনার বিবেক একেবারেই স্তব্ধ হয়ে যাবে পাঠক। এমন যে লৌহহৃদয় হযরত ওমর, তিনি পর্যন্ত এই ঘটনা সহ্য করতে পারেন নি। হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে যে ওমর কতৃক নিষিদ্ধ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত দাসী এবং তার গর্ভজাত কন্যার সাথে একইসঙ্গে যৌনসঙ্গম করা হালাল ছিল! কতো বড় অমানবিক প্রথা, ভাবা যায়?
ক্রীতদাসী (অথবা যুদ্ধবন্দিনী) এবং তার গর্ভজাত কন্যার সাথে একজনের পর আরেকজনের সাথে সহবাস করা উচিত নয়, উমর এই প্রথা নিষিদ্ধ করে গেছেন। (মুয়াত্তা: ২৮.১৪.৩৩)।
মুয়াত্তা: বুক নং–২৮, হাদিস নং–২৮.১৪.৩৩ :
“…আবদুল্লাহ ইবনে উতাবা ইবনে মাসুদ তার পিতার বরাত দিয়ে বলেন যে ওমরকে একজন ব্যক্তির কথা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যার দক্ষিণহস্তের অধিকারে ছিল একজন দাসী ও তার গর্ভজাত কন্যা, এই অবস্থায় লোকটি তাদের একজনের সাথে যৌনসঙ্গম করার পর অপরজনের সাথে করতে পারে কীনা? উমর বলেছিলেন- “উভয়ের সাথে একইসাথে (সহবাস) করা আমি অপছন্দ করি”। অতঃপর তিনি উহা নিষিদ্ধ করেন।
যদি এমন হয় যে যৌনদাসীগণ (কিংবা যুদ্ধবন্দিনীগণ) একে অপরের সহোদর বোন, তাদের সাথে একইসাথে সহবাস করা কী বৈধ? নীচের হাদিসটি পড়ুন। আপনি তাদের সাথে একইসঙ্গে সহবাস করতেও পারেন আবার নাও করতে পারেন, যেভাবে আপনার সুবিধা হবে সেভাবেই গ্রহণ করুন হাদিসটিকে। (মুয়াত্তা: ২৮.১৪.৩৪)।
মুয়াত্তা: বুক নং–২৮, হাদিস নং–২৮.১৪.৩৪:
“…ক্কাবিসা ইবনে জুওয়াইব এর সূত্রে বর্ণিত- এক ব্যক্তি ওসমান ইবনে আফফানকে জিজ্ঞেস করল যে কারও অধিকারে দুই সহোদর বোন যৌনদাসী থাকলে তাদের উভয়ের সাথে সহবাস করা বৈধ কীনা? ওসমান বলেলেন- “এক আয়াত অনুসারে এটি হালাল, আরেক আয়াত অনুসারে এটি হারাম। আমার ক্ষেত্রে হলে আমি এরূপ করতাম না”। লোকটি তার কাছে থেকে চলে গেল এবং রাসুলুল্লাহর (দ:) আরেক সাহাবির কাছে যেয়ে প্রশ্নটি রাখল। তিনি বললেন- “যদি আমার কাছে ক্ষমতা থাকত এবং কাউকে এমন করতে দেখতাম, আমি তাকে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিতাম”।
ইবনে শিহাব যোগ করেন- “আমার মনে হয় লোকটি আলী ইবনে আবি তালেব”।
(ইসলামী ভাইয়েরা গলাবাজি করে যতোই বলুন না কেন যে দাসী এবং স্ত্রী ভিন্ন কিছু নয়, কারণ বিয়ে না করে দাসীর সাথে সহবাস করা জায়েজ নয়, তাদের জন্যে ওপরের হাদিস দু’টি এক মারাত্মক আঘাত। প্রকৃত সত্য হলো এই যে ইসলামি দৃষ্টিতে ক্রীতদাসী এবং বিবাহিতা স্বাধীন নারী সম্পূর্ণ দুই প্রজাতির মেয়ে মানুষ। কারণ স্ত্রী ও গর্ভজাত কন্যার সাথে সহবাস করার কথা কোন উন্মাদও চিন্তা করবে না। কিংবা দুই সহোদর বোনের ওপর উপগত হওয়ার বিধান বিবাহিতা স্ত্রীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। অথচ ওপরের হাদিস দুটি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে উমর কতৃক নিষিদ্ধ করার পূর্বে দাসী মা ও তার মেয়ের উপর সওয়ার হওয়ার প্রথা দিব্বি প্রচলিত ছিল। দুই সহোদর বোনের সাথে সহবাস করার প্রথা থিওরেটিকালি এখনও চালু আছে ধরে নেয়া যায়। সুতরাং ক্রীতদাসী ও স্ত্রী এক জিনিশ ইসলামপন্থীদের এই দাবীর পেছনে কতটুকু সত্য লুকিয়ে আছে পাঠক পাঠিকারাই তা বিচার করুন।)
ক্রীতদাসীদের সাথে সহবাসকালে যৌনবিকৃতি বা সেক্সুয়াল পারভার্সন প্রদর্শন করা পুরোপুরি হালাল। হেদাইয়া থেকে আমরা জানতে পারি যে কোন ব্যক্তি তার যৌনদাসীর সাথে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে সঙ্গম করতে পারে, যদিও নিজের স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করার ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট বিধি-নিষেধ রয়েছে।
যৌনসঙ্গিনীটি যদি ক্রীতদাসী হয়, তবে তার সাথে মনিব যেভাবে খুশি সেভাবে যৌনসঙ্গম করতে পারে। (রেফারেন্স-১১, পৃ-৬০০)।
যৌনসঙ্গিনী ক্রীতদাসী হলে মনিব যেভাবে খুশি সেভাবে তার লালসার পরিতৃপ্তি ঘটাতে পারে:
যৌনদাসীর সাথে সঙ্গমকালে তার সম্মতির তোয়াক্কা না করেই মনিব আজল প্রথা (কয়টাস ইন্টারাপশন) অবলম্বন করতে পারে, কিন্তু স্ত্রীর সাথে সঙ্গমকালে তার সম্মতি ব্যতিরেকে স্বামী তা পারে না। এর কারণ এই যে নবী স্বাধীন নারীর সাথে সঙ্গমকালে তার অনুমতি ব্যতিরেকে আজল প্রথা অবলম্বন করতে নিষেধ করেছেন, কিন্তু দাসীর ক্ষেত্রে মনিবের জন্যে তা বৈধ করেছেন। এতদ্ব্যতীত, লালসা পরিতৃপ্তির জন্যে এবং সন্তানসন্ততি সৃষ্টির জন্য যৌনসম্পর্ক স্থাপন স্বাধীন নারীর অধিকার (যে কারণে স্বামী খোজা বা নপুংসক হলে স্ত্রীর স্বাধীনতা রয়েছে তাকে প্রত্যাখ্যান করার); কিন্তু দাসীর এরূপ কোন অধিকার নাই। সুতরাং স্ত্রীর অধিকারকে আহত করার স্বাধীনতা স্বামীর নাই, পক্ষান্তরে দাসীর ওপর মনিবের অধিকার সার্বভৌম। এমনকী যদি এমন হয় যে কোন ব্যক্তি অপরের ক্রীতদাসীকে বিয়ে করল, সে দাসীটির মনিবের অনুমতি ব্যতিরেকে তার সাথে আজল প্রথা পালন করতে পারবে না (অর্থাৎ বিয়ের পরও দাসীটি তার মনিবের সম্পত্তিই থেকে যায়)।
ইসলামের আরও কিছু মণিমুক্তা:
বিশেষ বিশেষ শর্তসাপেক্ষে পিতা তার ক্রীতদাসীটিকে ছেলের কাছে হস্তান্তর করতে পারে। (মুয়াত্তা: ২৮.১৫.৩৮)।
মুয়াত্তা: বুক নং–২৮, হাদিস নং–২৮.১৫.৩৮:
“…আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ানের বরাত দিয়ে ইবরাহিম ইবনে আবি আবলা বর্ণনা করেছেন যে, তিনি (আব্দুল মালিক) জনৈক বন্ধুকে তার এক ক্রীতদাসী (ধার) দিয়েছিলেন, এবং পরবর্তীতে একদিন দাসীটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেন- “আমি তাকে আমার ছেলেকে দিতে চেয়েছিলাম, সে দাসীটির সাথে এই এই করতে পারবে, এই এই করতে পারবে না”। আব্দুল মালিক বললেন- “মারওয়ান তোমার চাইতেও বেশী খুতখুতে ছিল। সে তার ছেলেকে নিজের দাসী দিল, তারপর বলল- ‘তার কাছে যেও না, কারণ আমি উন্মোচিত অবস্খায় তার পা দেখেছি’।”
মনিব তার মহিলা স্লেভ কিংবা পুরুষ স্লেভের ক্রীতদাসীর সাথে সেক্স করতে পারে। (মুয়াত্তা : ২৯.১৭.৫১)।
(এ এক সুকঠিন চেইন, ঠিকমতো অনুধাবন করতে পাঠকের কষ্ট হতে পারে। ধরুন আপনার একজন ক্রীতদাস বা একজন ক্রীতদাসী আছে। সেই ক্রীতদাস বা ক্রীতদাসীর আবার একজন ক্রীতদাসী আছে। এই হাদিস অনুসারে আপনি আপনার ক্রীতদাসের ক্রীতদাসী অথবা ক্রীতদাসীর ক্রীতদাসীর সাথে সেক্স করতে পারবেন। এবার বুঝুন ঠেলা)।
মুয়াত্তা: বুক নং–২৯, হাদিস নং–২৯.১৭.৫১:
“…আব্দুল্লাহ ইবনে উমর বলেছেন- “যদি কোন ব্যক্তি তদীয় দাসকে বিয়ে করার অনুমতি দেয়, তাহলে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার ক্ষমতা উক্ত দাসের হাতে, এবং তার এই তালাক দেয়ার ক্ষমতার ওপর কারও কোন হাত নেই। মনিব ইচ্ছে করলে তার পুরুষ দাসের স্লেভ-গার্ল কিংবা মেয়ে-দাসীর স্লেভ গার্লকে (নিজের অধিকারে) নিয়ে নিতে পারে, এরূপ করতে চাইলে কেউ তাকে বিরত রাখতে পারে না”।
দাসীরা আপনার চাষাবাদ করার ক্ষেত্র, আপনার ইচ্ছে হলে আপনি ক্ষেত্রের ভেতরে জল ঢালতে পারেন, ইচ্ছে হলে তাকে তৃষ্ণার্তও রাখতে পারেন। অর্থাৎ দাসীর সাথে কয়টাস ইন্টারাপশন বা যোনির বাইরে বীর্যপাত করা আপনার ইচ্ছাধীন। (মুয়াত্তা: ২৯.৩২.৯৯)।
মুয়াত্তা: বুক নং–২৯, হাদিস নং–২৯.৩২.৯৯:
“…আল হাজ্জাজ ইবনে আমর ইবনে ঘাজিইয়া’র বরাতে দামরা ইবনে সাইদ আল-মাজিনি কতৃক বর্ণিত: তিনি (হাজ্জাজ) জায়িদ ইবনে ছাবিতের নিকট বসেছিলেন, এমনসময় ইবনে ফাহদ তার কাছে আসল। সে ইয়েমেন থেকে এসেছিল। বলল- “আবু সাইদ, আমার কয়েকটি ক্রীতদাসী আছে। আমার যে কয়জন স্ত্রী আছে তারা কেউ আমাকে তাদের মতো (দাসীদের মতো) তৃপ্তি দিতে পারে না; (তবে) সবাই যে আমাকে এমন তৃপ্তি দেয় যে তাদের দ্বারা সন্তান উৎপাদন করতে হবে তাও নয়। (এমতবস্থায়) আমি কি আজল অবলম্বন করতে পারি?” জায়িদ ইবনে ছাবিত বললেন- “তোমার কী মত, হাজ্জাজ”! “আমি বললাম- ‘আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন! আপনার কাছ থেকে জানার জন্যেই আমরা আপনার কাছে আসি’। তিনি (আবারও) বললেন- ‘তোমার মত কী’! ‘আমি বললাম- ‘সে তোমার জমি। যদি তুমি ইচ্ছে করো জল দাও, যদি ইচ্ছে করো তৃষ্ণার্ত রাখ। জায়িদের কাছে আমি এমনটিই শিখেছি’। জায়িদ বললেন- ‘সে ঠিক কথাটিই বলেছে।”
যৌনক্রিয়ার উদ্দেশ্যে পরস্পরের মধ্যে ক্রীতদাসী ভাগাভাগি করা চলে।
এই নিয়মে পিতা তার পুত্রের, এমনকী পৌত্রের অধিকারভুক্ত ক্রীতদাসীর সাথেও সেক্স করতে পারে। পুত্র স্বীয় পিতার অথবা মাতার, এমনকী স্ত্রীর অধিকারভুক্ত দাসীকেও ধার নিতে পারে এবং তার সাথে সেক্স করতে পারে। ঠিক যেমন আপনার নিজের কোন দুধেল গাভী নাই, আপনার ভাইয়ের বেশ কয়েকটি আছে। এমতবস্থায় আপনি দু’চার দিনের জন্যে ভাইয়ের কাছ থেকে একটি গাভী ধার নিতেই পারেন এবং দুধ খেতে পারেন। এতে দোষের কিছু নাই, কারণ শরিয়ার আইন মোতাবেক একজন ক্রীতদাসীর স্ট্যাটাস দুধেল গাভীর চেয়ে বেশি কিছু নয়। এই চমৎকার নিয়মটির সপক্ষে যে যুক্তি আছে, হেদাইয়া থেকে তা পেশ করা হলো। মনে রাখবেন, হেদাইয়া মুসলিম সমাজের অন্যতম প্রধান আইন গ্রন্থ, ইসলাম ধর্ম সংক্রান্ত জটিল আইনী বিশ্লেষণে আইনবিদগণ প্রায়শই এই বইয়ের সাহায্য নিয়ে থাকেন এবং সেই মোতাবেক সমাধান দিয়ে থাকেন।
পুত্র কিংবা পৌত্রের ক্রীতদাসীর সাথে সেক্স করা শাস্তিযোগ্য নয় (রেফারেন্স-১১, পৃ-১৮৩)।
পিতা কতৃক পুত্রের ক্রীতদাসী অথবা পৌত্রের ক্রীতদাসীর সঙ্গে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করা শাস্তিযোগ্য নয়, যদিও এই ধরনের ক্রীতদাসী যে তার জন্যে বৈধ নয় সে সম্পর্কে তার জানা থাকা প্রয়োজন; কারণ এক্ষেত্রে যে ত্রুটি সংঘটিত হয়েছে তা ফলাফল-সঞ্জাত (by effect), যেহেতু ইহা এমন যুক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত যা নবীর বাণী দ্বারা সমর্থিত- “তুমি এবং তোমার সবকিছু তোমার পিতার” (Thou and thine are thy Father’s)…এবং পিতার ক্ষেত্রে যে নিয়ম পিতামহের ক্ষেত্রেও সেই একই নিয়ম, যেন সেও একজন পিতা। এই ধরনের যৌনক্রিয়ার ফলে যে সন্তানের জন্ম হয়, তার পিতৃত্ব আরোপিত হয় উপরোক্ত পিতার ওপর, যে ক্রীতদাসীটির মূল্যের জন্যে পুত্রের নিকট দায়ী থাকে।
অথবা কোন ব্যক্তি যদি তার পিতার ক্রীতদাসী, অথবা তার মাতার ক্রীতদাসী অথবা তার স্ত্রীর ক্রীতদাসীর সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করে, এবং এই আরজি পেশ করে যে উক্ত ক্রীতদাসী তার জন্যে অবৈধ নয়, তার ওপর শাস্তি প্রয়োগযোগ্য হবে না; এবং অভিযোগকারীর ওপরও শাস্তি প্রয়োগযোগ্য হবে না (কিন্তু যদি সে এরূপ সম্পর্কের অবৈধতা সম্পর্কে জ্ঞাত থাকে, তার ওপর শাস্তি প্রয়োগযোগ্য হবে, …এবং ওই একই নিয়ম প্রযোজ্য যখন কোন ক্রীতদাস তার মনিবের সঙ্গে দাসীবৃত্তিতে আবদ্ধ মেয়ের সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করে। …কারণ এদের মধ্য হতে লাভ অর্জন করার স্বার্থ বিরাজিত; সুতরাং যে ব্যক্তি এরূপ কাজ করেছে হয়তো সে ধারণা করেছে যে এ ধরনের উপভোগ তার জন্যে বৈধ, …যে কারণে তার ক্ষেত্রে ভ্রান্ত ধারণার ত্রুটি আরোপযোগ্য; যদিও ইহা সুস্পষ্ট বেশ্যাবৃত্তি সংঘটনের সমতুল্য। (জাহির রেওয়ায়েতেও) ওই একই আইন, যদি ওপরে বর্ণিত যে কোন ঘটনায় ক্রীতদাসীটি এই আরজি পেশ করে যে সে উক্ত কাজ বৈধ জেনে করেছে, এবং পুরুষটির তরফ হতে এই মর্মে কোন আরজি পেশ করা হয় নাই, …এবং যেহেতু একজন পুরুষ ও একজন নারীর মধ্যে সংঘটিত যৌনক্রিয়া একটিমাত্র কাজ হিসেবে বিবেচিত, এর অর্থ এই দাঁড়ায় যে যেকোন পক্ষ হতে পেশকৃত বৈধতা সংক্রান্ত আরজি ভ্রান্ত ধারণারূপ ত্রুটির সৃষ্টি করে যা উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, সুতরাং উভয়ের প্রতি শাস্তিপ্রয়োগ বাতিলযোগ্য।
আচ্ছা, স্ত্রীলোকের যৌনাঙ্গসমূহের ওপর দৃষ্টিপাত সম্পর্কে ইসলামি শাস্ত্রের বিধান কী? সবাই জানেন, গোপনে গোপনে এই রসালো কাজটি করতে পুরুষের লোভের অন্ত নাই। এই কারণেই প্লেবয় মার্কা পর্নো ম্যাগাজিনের রমরমা ব্যবসা বাজারে। ঝকঝকে মলাটের ওপর নগ্ন নারীমুর্তি নিয়ে বিচিত্র সব ম্যাগাজিন প্রতিনিয়ত ডাকছে আপনাকে, লুকিয়ে লুকিয়ে এক ঝলক দেখে চোখের সুখ মিটিয়ে নিচ্ছেন আপনি। তবে কোন ইসলামি ভাই কখনও তা স্বীকার করবে না। যৌনাঙ্গের কথা বাদ দিন, তাদের মতে স্ত্রীজাতির নাভির নীচে দৃষ্টিপাত করা সরাসরি হারাম। এতে কবিরা গুনাহ হয়। এমনকী মেয়েদের খোলা হাতের দিকে তাকানোও পাপ, কারণ কেজানে কখন সেই ‘মৃণালসদৃশ্য ভুজযুগল’ হতে মদনশর বের হয়ে ইসলামি ভাইয়ের নরম বুক বিদ্ধ করে বসে। ইসলামি ভাইদের নৈতিকতা এতটাই উঁচু আর ভঙ্গুর যে সুরক্ষিত দূর্গে আবদ্ধ করে না রাখলে যেকোন সময়ে তা ভেঙে চুরমার হয়ে যেতে পারে। স্ত্রী অঙ্গের প্রতি দৃষ্টিপাত না করার এই ইসলামি বিধান কী সকলের বেলায় সমভাবে প্রযোজ্য? আপনি বিশ্বাস করুন আর না করুন, এই বিধান সকলের বেলায় সমভাবে প্রযোজ্য নয়। নারীটি যদি দূর্ভাগ্যক্রমে দাসী হয়, তবে তার সর্বাঙ্গ ডিসপ্লে করা হার্ন্ড্রেড পারসেন্ট জায়েজ। আমি আবার বলছি তার সর্বাঙ্গ; অর্থাৎ তার বক্ষ, তার যোনি, তার ভগাঙ্কুর, তার পায়ুপথ সবকিছুকেই আপনি আপনার দৃষ্টি দিয়ে ইচ্ছেমত লেহন করতে পারেন। এতে কোন পাপ হবে না আপনার। মাশাল্লাহ, কী অপূর্ব নেয়ামত আল্লাহপাক আপনার জন্যে সৃষ্টি করে রেখেছেন। আমার কথা যদি আপনার বিশ্বাস না হয়, নীচের হাদিসটি পড়ুন।
স্লেভ-উয়োম্যানের (ক্রীতদাসী) জননেন্দ্রিয়ের প্রতি তাকানো জায়েজ (রেফারেন্স-১১, পৃ-৫৯৯)।
স্ত্রী অথবা ক্রীতদাসীর শরীরের যেকোন অংশের দিকে তাকানো জায়েজ:
কোন লোক তার ক্রীতদাসীর শরীরের যে কোন অংশের দিকে তাকাতে পারবে, এমনকী জননেন্দ্রিয়ের প্রতিও, যদি সে ইচ্ছে করে, তবে শর্ত থাকে যে সে নিষিদ্ধ সম্পর্কের আওতায় পড়ে না; এবং সে তার স্ত্রীর সর্বাঙ্গের প্রতিও তাকাতে পারবে, কারণ নবী বলেছেন-
“তোমার স্ত্রী এবং ক্রীতদাসী ছাড়া আর সকলের প্রতি দৃষ্টিকে সংযত রাখ”।
তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অনুষ্ঠিত সঙ্গমাদিতে একে অপরের যৌনাঙ্গের প্রতি দৃষ্টিপাত না করাই উত্তম, কারণ নবী বলেছেন-
“তোমরা যখন স্বগোত্রীয় স্ত্রীলোকের সাথে সঙ্গম করবে, তখন যতদুর পার নিজেদেরকে ঢেকে রাখবে; এবং ততটা উলঙ্গ হয়ো না, কারণ গর্দভ প্রজাতি এরূপ করে থাকে”।
উপরোক্ত নির্দেশে স্ত্রীর সাথে যৌনসঙ্গমকালে সংযত আচরণ অনুসরণ করতে সুপারিশ করা হয়েছে। তবে দাসী-প্রজাতির সাথে যথেচ্ছ আচরণ করা থেকে বিরত রাখতে কে তাকে নিষেধ করবে? বস্তুত: ইসলামের দৃষ্টিতে দাসী বাজার থেকে কিনে আনা একটি সেক্স মেশিন ছাড়া আর কিছু না, তার প্রভু বা মাস্টার মেশিনটিকে যেভাবে খুশি সেভাবে চালাতে পারে, যা সে স্ত্রীর ক্ষেত্রে পারে না। কেন ইবনে ফাহদ স্ত্রীদের চেয়ে দাসীদের কাছে বেশি তৃপ্তি পায় তার নিগুঢ় রহস্যটি বোধ হয় এখানেই নিহিত (দ্রষ্টব্য: ওপরে বর্ণিত মুয়াত্তা: বুক নং-২৯, হাদিস নং-২৯.৩২.৯৯)।
ইসলামপূর্ব এবং ইসলাম পরবর্তী আমলে অমানবিক যৌন-দাসত্ব প্রথা প্রচলিত ছিল। এই প্রথাকে ইসলাম সমর্থন করে এবং ইসলামের মহা-মনিষীরা তাদের জীবনে তা নিষ্ঠার সাথে পালন করে গেছেন। কিন্তু মুশকিল হলো এই যে আধুনিক ইসলামপন্থীরা এই সত্যটা স্বীকার করতে চান না। তারা খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে প্রমাণ করতে চান যে, ইসলাম দাসীদের সাথে সহবাসের অনুমতি দিয়েছে ঠিকই, তবে সহবাসের আগে দাসীটিকে বিয়ে করে নিতে হবে। তাদের এই যুক্তি যে নেহায়েতই খোঁড়া যুক্তি এবং আসল সত্যকে আড়াল করার অপপ্রয়াস, আশাকরি ইসলামি শাস্ত্র ঘেঁটে আমি এতোক্ষণে তা প্রমাণ করতে পেরেছি। ক্রীতদাসী এবং স্ত্রী যে সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন দু’টি প্রজাতি, আশাকরি পাঠক-পাঠিকরা তা ভালভাবেই অনুধাবন করতে পেরেছেন। আমি এখন শেষ তথ্যটি পেশ করে প্রসঙ্গটির এখানেই ইতি টানতে চাই। আসল সত্য এই যে, একজন মুসলমান বাজার থেকে ক্রীতদাসী ক্রয় করে তার সাথে সেক্স করতে পারে, তবে তাকে বিয়ে করতে পারে না! নিজের ক্রীতদাসীকে বিয়ে করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ! বিশ্বাস হচ্ছে না তো? তাহলে হেদাইয়া বর্ণিত নীচের আইনটি পড়ে নিন।
নিজের ক্রীতদাসীর সাথে বিবাহ নিষিদ্ধ, তবে সেক্স করা জায়েজ (প্রাগুক্ত–পৃ–৩১৭)।
আইনের দৃষ্টিতে বিবাহের অযোগ্যতা:
বিবাহের ক্ষেত্রে নয়টি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, যেমন-
(৮)- এমন স্ত্রীলোক যে সম্পত্তি (prohibited by reason of property), তার সাথে বিবাহ নিষিদ্ধ। যথা- নিজের ক্রীতদাসীর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া অবৈধ (অপরের মালিকানাধীন দাসীকে বিবাহ করা বৈধ)।
নোট: আগামী পর্বে সিরিজটির সমাপ্তি হবে