৪
১৩৫৮ বার পঠিত
এটা ব্যজস্তুতি যে, কট্টর এক ইসলামি ব্লগ থেকে নবযুগের খবর পেলাম। ওরা মনে হয় বেশ হতাশ – কারণ তাদের বিপরীত ধারার সাইট বেড়েই চলেছে।
নামটা পড়ে মনে হয়েছিল কোন প্রাচীন টিপিক্যাল বাঙালি ব্লগ। পড়ে মনে হল ভীষণ রাডিক্যাল – খুব গোছান ভেবে চিন্তে করা, এলেবেলে টাইপ নয়।
রুশদী মঙ্গলের ইবনে সিনার অনুবাদ খুব ভাল লাগছে ,অন্যান্য লেখা গুলোর বৈচিত্র আশা করি নানা ধরনের খোরাক দেবে চিন্তার। শিল্পসাহিত্যসঙ্গীত বিষয়ও কেউ কেউ লিখবেন আশা করি।
আমি কিছু অনুবাদ কবিতা দিয়ে নবযুগে আমার যাত্রা শুরু করছি – এগুলোর কিছু কিছু অবশ্য অন্যান্য ব্লগে প্রকাশিত। প্রথম চতুষ্পদীটি বাদে বাকী সবগুলিই অনুবাদ। কিছু মূল কবিতা ও কবিদের নাম অনুবাদের সাথেই প্রকাশিত।
সবাইকে শুভেচ্ছা ।
—
শ্রাবণ দিনের চতুস্পদী।।
তুমি যখন সামনে এলে বাদল দিনের মেঘলা সাজে,
চারদিকে যেন রবীন্দ্রনাথ গানের সুরে উঠলো বেজে
ঘুচে যায় সব দিবসের গ্লানি আনন্দ যেন পাগল পারা
‘মেঘের পরে মেঘ জমেছে’ – ‘গহন রাতে শ্রাবণ ধারা’
আল মা’আরি’র দু’টি রুবাই।।
১ ‘মোহাম্মদ বা মেসিয়া গন,তোমরা আমায় শুনছো কি ?
পুরো সত্য এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে কি ?
চাঁদ–সুরুযের সৄষ্টিকর্তা কেন করলেন এমন কাজ–
সব আলো দিলেন একজনাকেই,কাজটা সঠিক হয়েছে কি ?’
২ ‘ওরা সবাই ভ্রান্ত যারা মুসলিম কিবা ইহুদী
প্যাগান অথবা খৄষ্টান বা যরস্থ্রয়ানবাদী,
পুরো পৄথিবীর মানবসমাজ বিভক্ত দুই ভাগে–
এক, বুদ্ধিদীপ্ত মানুষ কিন্ত ধর্মহারা,
দুই, ধর্মপ্রাণ মানুষ কিন্ত বুদ্ধিছাড়া ।
শয়তান আছে মক্কা
আছে যমযম , পবিত্র পানি ঝরছে অনিঃশেষ
পাকা খর্জুর, সবুজ পাতার মধ্যে বাহারি বেশ
আছে জলপাই, আর তার সাথে শ্যামল মরূদ্যান
কত শত নবী সাহাবিরা সেথা করেছেন জ্ঞানদান
আছে কত খনি ,ভূমি সম্পদ – আল্লাহ করুন রক্ষা
যত যাই বল ,যত ধন থাক, শয়তান আছে মক্কা ।
(সূত্র: ওমর খৈয়াম)
ভক্ত কবীর
নাই আমি দেবালয়ে নাই মসজিদে
নাই তো ক্বাবায় আমি না কৈলাশে,
আমারে কোথায় খোঁজ ,হে বান্দা মোর
আমি তো হেথায় আছি তোমারই পাশে। (ভক্ত কবীর)
তুলসীদাস।।
গোরস গলি গলি ফিরে, মদিরা বৈঠে বিকায়;
সতী কো না মিলে ধোতি, কসবি পহলে খাসা।
গোয়ালার দুধ ফেরে দ্বারে দ্বারে
মদ যে বেঁচে, বসে একঠাঁই।
পরণে বসন না মেলে সতীর
বেশ্যার গায়ে কত রোশনাই।
হাফেজ
কাম্য পেতে চাও,হে হাফেজ?
প্রনয়ে মাত সকল ধাম;
মুসলিমে বল আল্লাহ আ্ল্লাহ,
ব্রাহ্মন সাথে কহ রাম রাম।
ইকবাল
আপনাকে তুই এমন উপরে তোল্
যেন ভাগ্য লিখার আগেই এসে
বিধাতা যাচেন কুশল,
-‘কেমন আছিস বল‘।
খুদী কো কর বুলন্দ এতনা
কে হর তকদির কে পহলে
খুদাবন্দি খুদ পুছে তেরি বাত
রাজা কেয়া হাল – ইকবাল।
ওমর খৈয়াম
ভালোবাসাকেই চাইছো যখন খুঁজো সবার অন্তরে,
পেলে তুমি তারে, সযত্নে রেখো হৃদয় অভ্যন্তরে;
শত ক্বাবাতেও সমান হবেনা একটি হৃদয় প্রাপ্তির,
ক্বাবা নয়,খুঁজো ভালোবাসা কেই ,আপন হৃদয় মন্দিরে।
(When seeking love pay court to every heart,
When once admitted seize the perfect heart;
A hundred Ka’bas equal not one heart,
Seek not the Ka’ba ,rather seek the heart !)
তিনিই আমাকে এনেছেন হেথা, আমি নিজে আসি নাই;
সন্দেহের অন্ধকার জীবনে নিয়েছে ঠাঁই;
যেতে তো হবেই,আসা কেন তবে? বেঁচে থাকা? কেন যাওয়া?
প্রশ্ন এসব করি শুধু আমি, উত্তর নাহি পাই।
(He brought me hither ,to my great surprise;
From life I gather but a dark surmise;
I go perforce. Why come? Why live? Why go?
I ask these questions, but find no replies.)
প্রতি রাতেই করি প্রতিজ্ঞা আজকে থেকেই অনুতাপ,
পানশালাতে আর যাব না করবো না আর কোন পাপ;
কিন্ত এল বসন্ত যে , আলগা হল প্রতিজ্ঞা,
গোলাপ যখন প্রস্ফুটিত, কেমনে করি অনুতাপ?*
(Each morn I vow,”To-night I will repent
Of wine, and tavern haunts no more frequent;”
But now ’tis spring, so loose me from my vow,
While roses blosom, how can I repent?*)
*/Towba/, repentence, also breaking vows
Quatrains of Omar khayyam, tr. E. H.Whinfield
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন
আগস্ট ১১, ২০১২; ১:৪১ অপরাহ্ন
রুশদী মঙ্গলের ইবনে সিনার অনুবাদ খুব ভাল লাগছে
আমার মনে হয় মূল লেখক হচ্ছেন ইবন ওয়ারক।
আগস্ট ১১, ২০১২; ৮:১১ অপরাহ্ন
ঠিক ই বলেছেন- ‘কেন আমি মুসলিম নই ‘- গ্রন্থটির মুল লেখক ইবন ওয়ারক, ইবনে সিনা নয় । আমার ভূলের জন্য দুঃখিত ।
আগস্ট ১১, ২০১২; ৬:২৬ অপরাহ্ন
চতুস্পদীগুলো সত্যি চিন্তার খোড়াক যোগাবে। আপনার অনুবাদও বেশ চমৎকার।
আগস্ট ১১, ২০১২; ৮:১২ অপরাহ্ন
ধন্যবাদ আ্যডমিন উৎসাহ দেবার জন্য ।