০
১৯৪২ বার পঠিত
বালগোপালেরা প্রতিদিন দুইটি ফতোয়া দেয়
১) রাজাকার হইল জগতের নিকৃষ্টতম জীব।
২) একবারের রাজাকার চিরকাল রাজাকার।
তাই কেহ যদি শিশুকালে শিবির করিয়া থাকে তবে তাহার দেশপ্রেমিক হইবার আশা ফুরাইল। সে আর কোনোদিন দেশের কোনো উপকারে লাগিবে না। দেশ লইয়া কোনো মতামত দিতে পারিবে না। কারণ সে চিরকালের জন্য পাকিস্তানের দালাল বলিয়া সার্টিফায়েড হইয়া গিয়াছে। এমনটাই বালের বিচার।
আসুন দেখি রাজাকার কী এবং তাহাদের কাজকর্ম কী।
রাজাকার শব্দের অর্থ স্বেচ্ছাসেবক বা ভলান্টিয়ার। বৃটিশ ভারতে যখন সিদ্ধান্ত হইল যে স্বাধীনতা লাভের পর ম্লেচ্ছপ্রধান অঞ্চল পাকিস্তানে এবং হিন্দুপ্রধান অঞ্চল হিন্দুস্থানের অন্তর্ভুক্ত হইবে তখন হায়দ্রাবাদ এর নিজাম এই রাজাকার বাহিনী (অর্থাৎ ভলান্টিয়ার বাহিনী) গঠন করিয়াছিলেন। ইহাদের কাজের মূল উদ্দেশ্য ছিল নিজামের রাজত্ব হইতে হিন্দুদিগকে তাড়াইয়া অথবা মারিয়া রাজ্যটিকে নিরঙ্কুশ ম্লেচ্ছপ্রধান অঞ্চলে পরিণত করা। যাহাতে নিজাম মহাশয়ের পাকিস্তানে যোগ দিতে কোনো প্রকার বাধা না থাকে।
বাংলাদেশেও পাকিস্তানের পথের যেকোনো কাঁটা সরাইবার জন্য এই প্রকার ভলান্টিয়ার বাহিনী কি করিয়াছে তাহা সকলেই জানেন।
সেই একই সময়ে বাংলায় প্রধানমন্ত্রী (আসলে বৃটিশ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী) ছিলেন হোসেন শহীদ সুরাবর্দী। তিনি ছিলেন মুসলিম লীগ এর নেতা এবং জিন্নার অতি প্রিয়। হিন্দুপ্রধান অঞ্চল ভারতে এবং ম্লেচ্ছপ্রধান অংশ পাকিস্তানে দিবার জন্য তখন বাংলাকে ভাগ করার কথা উঠিয়াছে। কিন্ত সুরাবর্দী ছিলেন বাংলা ভাগ করার প্রবল বিরোধী। তিনি চাহিয়াছিলেন সমস্ত বাংলা পূর্ব পাকিস্তানে চলিয়া যাক। এজন্য প্রয়োজন ছিল বাংলার হিন্দুপ্রধান অংশের মধ্যে ম্লেচ্ছদের অনুপাত বাড়ানো। তিনি এই মিশন সফল করার জন্য প্রাণপাত করিয়াছিলেন। তিনি বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের অংশে উদেশ্যপ্রণোদিত ম্লেচ্ছ বসতি বিস্তার শুরু করেন। এবং জিন্নার প্রত্যক্ষ সংগ্রাম এর ডাক দেওয়ার পর নিজের পুলিশ প্রসাশনকে শুধুমাত্র কাফের দাঙ্গাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেন। হিন্দু অঞ্চলে আক্রমন হইলে সরকার ঘুমাইত। তাঁহারও নিজের ভলান্টিয়ার বাহিনী ছিল যাহারা কাফের খতম করিয়া পুলিশের নাকের ডগায় ঘুরিত।
তাঁহার রাজত্বে কাফের প্রধান মেদিনীপুর জিলায় তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দুর্ভিক্ষ বৃদ্ধি করেন। কোনো প্রকার সহায়তা না করিয়া সেখানে তিনি হাজার হাজার কাফের খতম করিয়া পুণ্য অর্জন করিয়াছিলেন। অবশ্য পরে তিনি বলিয়াছিলেন যে তিনি নাকি পুলিশ ও সেনার অপ্রতুলতার কারণে এবং ইংরাজ গভর্ণরের অসহযোগিতার জন্য কাফেরদের নিরাপত্তা দিতে পারেন নাই। যেমনটা আজকাল বালের সরকার বলিয়া থাকে “বেডরুম পাহারা দেওয়ার মতন লোক নাই”।
আর সেই সময়ে এই সুরাবর্দীর দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন শেখ মুজিবর রহমান। সমগ্র বাংলাকে পাকিস্তান বানাইবার এই মিশনের সক্রিয় সহযোগী ছিলেন মুজিবর রহমান। বালের স্লোগান আর একবার মনে পড়িয়া যায়; একবারের রাজাকার চিরকাল রাজাকার।
এই ঐতিহাসিক সত্যকে ভুল প্রমাণ করিতে বালের হাতে যাহা আছে তাহা হইল সুরাবর্দীর আর মুজিবের নিজের মুখের কথা। আর সব গোপন করিয়া তাহারা কেবল ঐগুলিই ঢোল বাজাইয়া প্রচার করে। ইংরাজী ও বাংলা উইকিপিডিয়ার তুলনা করিলেই পাঠক আসল খেলা ধরিতে পারিবেন।
মুজিব: http://en.wikipedia.org/wiki/Sheikh_Mujibur_Rahman
সুরাবর্দী: http://en.wikipedia.org/wiki/Huseyn_Shaheed_Suhrawardy
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন