দু’ঘণ্টার এক অপার বিস্ময়ের মধ্যে ডুবে ছিলাম। যার শুরু থেকে শেষপর্যন্ত ছিল ঘোরলাগা আবেশ! ‘লাভিং ভিনসেন্ট‘ ওয়েল পেইন্টিং এনিমেশন মুভিটি আমাদের অন্যজগতে নিয়ে গেলো যেন। যেখানে ভ্যান গঘের তৈলচিত্রগুলো বাস্তবের ছোঁয়া পেলো। বিমূর্ত অনুভূতি; মূর্ত হয়ে কথা বলে উঠলো। যা নতুন আঙ্গিকের এক এনিমেশন মুভি বটে । শুধুমাত্র ভ্যান গঘের পেইন্টিংয়ের ওপর বিশাল ক্যানভাস তৈরি করে মুভিটি হয়। তাঁর সমস্ত তৈলচিত্র এক ক্যানভাসে দেখার সৌভাগ্য হলো। ভ্যান গঘ এমনিতেই এক বিস্ময়; আর এই বিস্ময়কে মূর্ত করে তোলে ‘লাভিং ভিনসেন্ট‘ নামের এনিমেশন মুভিতে, যা শিল্পবোদ্ধাদের কাছে এক অত্যাশ্চর্য হয়ে ধরা দেয়। আমি আর কবি ফেরদৌস নাহার টরেন্টোর সিনেপ্লেক্সে প্রথম প্রদর্শিত ঐতিহাসিক এই মুভি দর্শনের মধ্যদিয়ে কালের সাক্ষী হয়ে যাই।
ভিনসেন্ট ভ্যান গঘের শিল্প ও জীবন ১২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। এখন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একটি দল বিশ্বব্যাপী একশরও বেশি শিল্পীর সাহায্যে ভ্যান গঘের পেইন্টিং দিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রথম পদক্ষেপ নেন। বলতে গেলে, ‘লাভিং ভিনসেন্ট’ চলচ্চিত্র জগতে প্রথম আর্ট ভিত্তিক এনিমেশন মুভি। ভ্যান গঘের লেখা চিঠি ব্যবহার করে তার সৃজনশীল প্রতিভা ও হঠাৎ মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে পেইন্টিংগুলো সাজানো হয় এবং সেই দৃশ্যের সাথে অভিনয় শিল্পীদের কথোপকথন ও অভিনয় সঞ্চালিত হয়। তাও প্রথমে চলচ্চিত্রে ধারণ করে, পরে তা এনিমেশনের সঙ্গে আর্ট ফর্মে যুক্ত করে দেওয়া হয়।
১৮৫৩ সালে নেদারল্যান্ডে ভ্যান গঘ জন্মগ্রহণ করেন। তার কর্মজীবনে তিনি সূর্যমুখী এবং গম ক্ষেতের মতো বিখ্যাত থিমসহ ৯০০টির মতো ক্যানভাস চিত্রিত করেন। ৩৭ বছর বয়সে একটি মানসিক হাসপাতাল থেকে থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি কোনও কারণ ছাড়াই আত্মহত্যা করেন। ছয় সপ্তাহের মধ্যে কীভাবে একজন সুস্থ মানুষ একেবারে শান্তভাবে নিজেকে নীরবে সরিয়ে নিলেন; তা ভ্যান গঘের বিখ্যাত ১৫০টি চিত্রকলার মধ্যদিয়ে বাস্তব জীবনের অবস্থার সাথে কল্পনাপ্রসূত সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে উদ্দীপনামূলক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়। অভিনয় শিল্পীরা পেইন্টিং এর চরিত্রের সাথে একাকার হয়ে যায়। মনে হবে ১২৬ বছর আগে মারা গেছেন এমন একজন শিল্পীর শৈলীতে চলমান দৃশ্যের ব্যাখ্যার পটভূমি।
অ্যানিমেটেড মুভি ‘লাভিং ভিনসেন্ট‘ নির্মাতারা দুটি বড়গল্পের কাজ করেছেন। এক- চলচ্চিত্রে ভিনসেন্ট ভ্যান গঘের ছবির সৌন্দর্যকে তুলে ধরা; দুই- ১৮৯০ সালে ডাচ চিত্রশিল্পীর চূড়ান্ত সপ্তাহ এবং আত্মহত্যার রহস্য আবিষ্কার করা। এর বৈশিষ্ট্য দীর্ঘ ক্যানভাসে আঁকা অ্যানিমেশন। এটাই পৃথিবীর প্রথম এনিমেশন ফিল্ম যা ভ্যান গঘের অঙ্কিত শিল্পকর্মের মাধ্যমে তার জীবন সম্পর্কে জানা এবং তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর অনুসন্ধান করা। তাছাড়া ভ্যান গঘের চিত্রকর্মগুলি সাধারণ মানুষের জীবনের কাছে পৌঁছে দেওয়াও ছিল নির্মাতাদের আরেক মহান উদ্দেশ্য।
পরিচালক ডোরোটা কোবিলা এবং হুগল ওয়েলচম্যান; যারা এই সাতবছর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন; ১২৫জন শিল্পীর একটি ক্রু দ্বারা ভ্যান গঘের সমস্ত তৈল চিত্র ৬৫ হাজার ফ্রেমে বন্দি করে চমৎকার এনিমেশন মুভি বানাতে। যা দেখে মনে হতে পারে; ভ্যান গগের ব্রাশস্ট্রোক্সের-এর নরম, কোমল এবং তীব্র ছোঁয়ায় আছি। সেই সাথে, যারা ভ্যান গঘের অপমৃত্যুর ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন; তাদেরও এই উজ্জ্বল এনিমেশনে তুলে এনেছেন।
প্যারিসের বাইরে ফ্রেঞ্চ শহর অউভার্স-সুর-ওয়েসে ৩৭ বছর বয়সে ভ্যান গঘের মৃত্যুর একবছর পর থেকে পরিচালক ও জেসাক দেহেরলের লেখা স্ক্রিপটির কাহিনী শুরু হয়। আর্লস শহরের পোস্টম্যান, জোসেফ রৌলিন (ক্রিস ও’ডাউডি অভিনীত), তার ছেলে আর্মান্ডকে (ডগলাস বুথ অভিনীত) বলেছিলেন, ভ্যান গঘের শেষ চিঠিটা তার ভাই থিও-এর কাছে পৌঁছে দিতে। সমস্যা হলো ভিনসেন্টে মারা যাওয়ার ছয়মাস পর থিও মারা যান। তাই আর্মান্ড নিশ্চিত করতে পারেন না যে; তিনি কাকে চিঠিটি সরবরাহ করবেন! তাছাড়া ছয় সপ্তাহ আগে ভিনসেন্ট চিঠিতে লিখেছিলেন, সে সুস্থ আছে, স্বাভাবিক আছে; সেই মানুষ হঠাত করে কেন আত্মহননের পথ বেছে নিলেন! এই বিষয়টাও আর্মান্ড এবং তার বাবা জোসেফ রোলিনকে ভাবিয়ে তোলে।
জুলিয়ান টাংগুয়ে (জন সিজন অভিনীত), যিনি ভিনসেন্টের পেইন্টিং বিক্রি করতেন; আর্মান্ড অউভারে তার সাথে দেখা করতে এবং তার কাছ থেকে চিত্রকরের শেষ দিনগুলি সম্পর্কে জানতে গিয়েছিলেন। সেখানে ডাঃ পল গ্যাচেটের (‘গেম অফ থ্রোনস‘ এর অভিনেতা জেরোম ফ্লিন) সাথে দেখা করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু ডাক্তার তখন ব্যবসায়িক কাজে বাইরে চলে যান। ডাক্তারের প্রত্যাবর্তনের জন্য অপেক্ষা করার সময়- আর্মান্ড, ডাক্তার গ্যাচেটের কন্যা, মার্গারিরেট (সাওইরেস রোনামন অভিনীত) এবং ডাক্তারের হাউস-কিপার, লুইসের (হেলেন ম্যাকক্রোজ অভিনীত) সাথে কথা বলেন। তাছাড়া শহরের পান্থশালা থেকে শুরু করে নৌকার মাঝির দেওয়া ভ্যান গঘ সম্পর্কে চিত্তাকর্ষক তথ্য সংগ্রহের সময় ভিনসেন্ট-এর চিত্রগুলো ফ্ল্যাশব্যাকে আসতে থাকে। তখন আমরা দেখি, স্থানীয় বিভিন্ন বয়সের মানুষের দ্বারা ভ্যান গঘকে নিগৃহীত হতে, তা অত্যন্ত মর্মস্পর্শী এবং হৃদয়বিদারক।
ভ্যান গঘ ছিলেন নিভৃতচারী, স্বল্পভাষী এবং অমায়িক ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তিনি শিশুদের খুব ভালোবাসতেন। ভ্যান গঘের স্বভাবটাই ছিল শুধু ছবি আঁকা। কাগজ, পেন্সিল, তুলি ছিল তার চলার সঙ্গী। যখন যেভাবে যা দেখতেন; ঠিক সেভাবেই ছবি এঁকে ফেলতেন। তার ছবিতে উঠে এসেছে ল্যান্ডস্কেপ, প্রকৃতি, মানুষ এবং বাস্তব-জীবন। যে ছবির প্রেক্ষাপটে ফুটে উঠেছে গঘের জীবন ও দর্শনের চিত্র এবং সেই সময়ের আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপট।। তাঁকে মূলত ছবি আঁকার জগতে বলা হয় পোস্ট ইম্প্রেসনিস্ট আর্টিস্ট।
ভ্যান গঘ ছিলেন সামাজিকভাবে অবহেলিত, অপমানিত এক মানুষ। সাধারণের বাইরে ছিলেন বলে তাকে অবজ্ঞা বঞ্চনার মধ্যদিয়ে যেতে হতো। জীবিত অবস্থায় ভ্যান গঘ মাত্র একটি ছবি বিক্রি করতে পেরেছিলেন। ছোটভাই থিও তার দেখাশুনা করতেন। একসময় সেও নিজেকে গুটিয়ে নিলেন গঘের কাছ থেকে। তারপর থেকেই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের চিন্তায় অস্থির হয়ে ভ্যান গঘ হয়তো আত্মহননের পথ বেছে নেন। যদিও তার এই মৃত্যুর কারণ আজও রহস্যাবৃত। যার অনেকটাই ‘লাভিং ভিনসেন্ট‘ মুভিতে সকরুণ ফুটে উঠেছে।
একজন ষড়যন্ত্র-তাত্ত্বিক ডাক্তার (বিল থমাস অভিনীত) যিনি মনে করেন, ভ্যান গঘকে হত্যা করা হয়েছিল; অথচ হত্যা গল্পটি যেন ভূতদের দ্বারা আচ্ছন্ন এবং তা সাধারণের সহজবোধ্য কাহিনী হয়ে ওঠেনি। এমনকি সেখানে ভ্যান গঘের শিল্পসম্মত প্রতিভাও কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি । কিন্তু ‘লাভিং ভিনসেন্ট‘ এক অসাধারণ ব্যাপার ঘটিয়েছে। হত্যা রহস্যটিকে বাস্তবে কিভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা হয়েছিল তা মুভিতে ঘটনার ধারাবাহিকতায় মূর্ত করে তুলেছে এবং সেইসাথে দর্শকদের কাছে প্রশ্ন রেখে গেছে।
কোবিলা ও ওয়েল্চম্যান চলচ্চিত্রের একটি বিশেষ পুরনো স্কুলের টেকনিক রোটোস্কোপিংয়ের টেকনিককে কাজে লাগান। মুভির মতো অভিনয়; সেইসাথে চিত্রশিল্পী ও তাদের চলাচলের অ্যানিমাইটিং, ভ্যান গঘের ছবির প্রেক্ষাপটের সাথে মিল রেখে চলচ্চিত্রটি ধারণ করা হয়। তারপর অ্যানিম্যান্টের দল ভ্যান গঘের কৌশল অনুকরণ করে, এবং কল্পনায় ছবির ইমেজ ধারণ করে সমস্ত দৃশ্যপট ফুটিয়ে তোলেন । এভাবে তার সৃষ্টি ও প্রতিকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।।
ভ্যান গঘ-এর সাথে পরিচিত যেকেউ মুখভর্তি দাড়িওয়ালা পোস্টম্যান রওলিন বা ফোয়াত টাঙ্গুয় এবং বিশেষত ডাঃ গ্যাচেট (যিনি গঘের একটি প্রতিকৃতি ১৮৯০ সালে $৮২.৫ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেন) এদের চরিত্রগুলো অনুধাবন করতে পারবে। এই ‘লাভিং ভিন্সেন্ট’ মুভিতে কীভাবে যে তাদের জীবন্ত করে তুলেছে; দেখে অবাকই হতে হয়। শেষে এসে মনে হবে মুভিটি ছবি আঁকার শূন্য পৃষ্ঠায় একবিন্দুতে সংযোগ করে দিলো।
ভিনসেন্ট ভ্যান গঘ-এর চরিত্রে অভিনয় করেন রবার্ট হল; যিনি পোল্যান্ডের থিয়েটার অভিনেতা। তিনি ল্যাজনিকাতে মোডেশেস্কা থিয়েটারে অভিনয় করেছেন। পোল্যান্ডের এক বিখ্যাত থিয়েটার; যেখানে তিনি অভিনয় প্রতিভার গভীরতার জন্য বিখ্যাত। তার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে পেশাদার থিয়েটার প্রযোজনায় প্রায় ৪০টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার অভিনয় অন্তর্ভুক্ত। দুইবছর আগে তিনি একটি ফোন কল পেয়েছিলেন। রবার্টকে বলা হয়; তিনি ভিনসেন্ট ভ্যান গঘের মতো দেখতে। এই প্রথমবার কেউ তাকে এই কথাটি উল্লেখ করলেন। ওইদিনে একটি আন্তর্জাতিক ফিচার ফিল্মের প্রধান ভূমিকার জন্য রবার্ট অডিশনে ছিলেন। স্কুল ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি খুব কম ইংরেজিতে কথা বলতেন। যখন রবার্টকে অবিলম্বে ডেকে এনে পোশাক পরিয়ে আপগ্রেড করা হয়; এবং ইংরেজিতে ভিনসেন্টের চিঠি পড়তে দেওয়া হয়; তখন থেকেই ভিনসেন্ট ভ্যান গঘ-এর জীবন ও কর্মের অনুসন্ধানে রবার্ট হলের নতুন যাত্রা শুরু হলো। রবার্ট নিজেকে একজন ভাগ্যবান লোক মনে করেন। কারণ, তিনি তার অভিনয় ভালবাসেন। সেইসাথে এখন তিনি ভিনসেন্টকেও খুব ভালোবাসেন।
‘লাভিং ভিনসেন্ট‘ – শিরোনামটি ভ্যান গঘ তার শেষ চিঠির স্বাক্ষরে লেখেন। মুভিটি তার প্রতিভা ও সংগ্রামের জন্য নিবেদিত। তাছাড়া ভ্যান গঘ-এর প্রতিটি ছবি মানুষের জীবনের কাছে নিয়ে আসাও ছিল নির্মাতাদের মূল উদ্দেশ্য। যারা শিল্প ভালোবাসেন বা শিল্প বুঝতে চান; তাদের জন্য ‘লাভিং ভিনসেন্ট‘ সত্যি একটি বিস্ময়কর মুভি।
ভিনসেন্ট ২৯ বছর পর্যন্ত কোনও ছবি আঁকেননি। তিনি চারবার ক্যারিয়ারে ব্যর্থ হয়েছেন। কোন আয় নেই, পরিবার নেই, এমতাবস্থায় তিনি হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। তার পরিবার তাকে কালো ভেড়া ডাকতেন। ভ্যান গঘ বিশ্বাস এবং শক্তি দিয়ে ভিন্নমাত্রার কিছু করতে চেষ্টা করেন। 8 বছর ধরে, অবিশ্বাস্য আবেগ এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি নিজেকে সর্বকালের সবচেয়ে উদ্ভাবনী এবং প্রভাবশালী চিত্রশিল্পীদের মধ্যে নিজেকে অন্যতম করে তোলেন।
‘লাভিং ভিনসেন্ট‘ প্রকল্প একটি প্রেমের শ্রম বটে। পরিচালক ডোরোটা কোবিলা বলেন,
“মোট সাত বছর কাজ করেছি । ভিনসেন্টের কাজের প্রতি আমার ভালোবাসা, তার চিঠি এবং তার সংগ্রামের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আমাকে সেই সাত বছর ধরে রেখেছিল। এটা শুধু আমার ছিল না, ভিনসেন্ট প্রেম ছিল সব চিত্রশিল্পীদের, যারা আমাদের দলে ওয়েল পেইন্টিং ৬৫,০০০ ফ্রেমে বন্দি করেছেন। তাদের প্রতিটি ফ্রেম, বুরুশ স্ট্রোক ছিল চলন্ত ও জীবন্ত । ভ্যান গঘ একজন প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পী, তার কাজের প্রতি তো আমাদের সম্মান দিতেই হবে। চলচ্চিত্রের নামরকণ করা হয়েছে তার ভাইকে লেখা চিঠির শেষে শিল্পী যেভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতেন, ‘ইয়োর লাভিং ভিনসেন্ট’ সেখান থেকে নেওয়া। আমরা বিশ্বের প্রথম, এমন এক চলচ্চিত্র তৈরির ঝুঁকি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কারণ বিশ্বব্যাপী কত মানুষ যে ইতোমধ্যে ভিনসেন্টকে ভালবাসে, তার ফলশ্রুতিতে কাজটি করা। আমি আশা করি এই চলচ্চিত্রটি মানুষকে ভিনসেন্ট সম্পর্কে আরও জানতে অনুপ্রাণিত করবে এবং তার আঁকা ছবি দেখবে। আমি আশা করি, কিছুটা স্বচ্ছন্দে ভিনসেন্টকে আরও লোকেদের কাছে উপস্থাপন করতে সাহায্য করবে। আমি মনে করি সেই যোগ্যতা অর্জন করেছি। আমি সবাইকে ভিনসেন্ট প্রেমময় করতে চাই!”
সৃষ্টিশীল মানুষমাত্রই নিভৃতচারী। তারা নিজের মধ্যে নিজে ডুবে থাকেন। যা সাধারণের চোখে বালখিল্যের মতো মনে হতে পারে। তাই অনেক অন্যায়, উপদ্রব সহ্য করে সৃষ্টিশীল, মননশীল মানুষ; নিজের সৃষ্টির মধ্যে বিলীন হয়ে জীবনকে উৎসর্গ করেন। ভ্যান গঘ সেইরকম একজন মানুষ ছিলেন; যিনি জীবিতাবস্থায় দেখে যেতে পারেননি তার শিল্পের পৃথিবীব্যাপী স্বীকৃতি। সব সৃষ্টিশীল মানুষের জীবনই কি এমন বিড়ম্বনার উপাখ্যান? ‘লাভিং ভেনসেন্ট‘ দেখার পর প্রশ্নটা খুব বেশি করে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। আমি সাধারণ মানুষ; ভ্যান গঘ-এর চিত্র নিয়ে কথা বলা বা পর্যালোচনা করা আমার জন্য একধরণের ধৃষ্টতা । এতো বিশাল, ব্যাপক এক বোধের সাগর তার শিল্পকর্মে ফুটে উঠেছে যে; তা নিয়ে আলোচনার জন্য আমাকে আরেকবার জন্ম নিতে হবে। কিন্তু মুভিটি দেখার পর গঘ-এর সৃষ্টিরহস্যের উন্মুক্ত বেড়াজালে আটকে গেছি। তাই ‘লাভিং ভিনসেন্ট‘ নিয়ে কিছু লেখার ভীষণ তৃষ্ণা অনুভব করলাম।
নভেম্বর ২০, ২০১৭; ৩:৩৮ পূর্বাহ্ন
সঠিক তথ্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে এই লেখায়। লেখক লেখালেখির অ-আ-ই-ঈ কিছুই জানেন না। গুগল থেকে টুকলিপনা করেছেন ভালো কথা, কিন্তু সেটারও সঠিক অনুবাদ করতে পারেন নি। আর সিনে পর্যালোচনার যে বিষয় সেটাতেও গড়ল। যথাযথভাবে লেখাপড়া করে এসে সিনে পর্যালোচনা করা উচিত।