০
১০৭৬ বার পঠিত
অনেক দিন থেকেই বলছি ভাঙনের কথা। শুনতে পারছেন কি ভাঙনের শব্দ? সমাজ ভেঙে পড়ছে। শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ছে। মানুষ ভেঙে পড়ছে। এখনো ঘুমাবেন! ওয়াহিদা খানম না হয় আপনাদের প্রতিনিধিত্ব করে। খাদিজা তো আমাদের। ওয়াহিদা আর খাদিজা মিলেমিশে আজ এক হয়ে গেছে। এমন বিপজ্জনক মিলনকালে ‘এখনো ঘোর ভাঙে না তোর’, বলেছেন রবীন্দ্রনাথ!
মিতু আর তনু, সাগর-রুনি সাথে আমার ফাগুন সব মিলে মিশে এক হয়ে গেছে। মেজর সিনহা যোগ দিয়েছেন তাদের সাথে। চারিদিকে মৃত্যুর মিছিল, ধ্বংসের উৎসব। ভাঙনের শব্দ কি এখনো কানে বাজে না। প্রেসক্লাবের সমুখে স্বজনকে ফিরে পাওয়ার আকুতি কি স্পর্শ করে না হৃদয়! এই যে কান্না, এই যে অশ্রুজল, তবে কি সবই বৃথা! এখনো ঘোর ভাঙে না তোর!
কতটা হারালে, কতটা ভাঙনে সর্বহারা হয় মানুষ। একজন পিতা, একজন মা, একজন পুত্র বা কন্যা আর কতবার স্বজন হারালে হারানোর হিসাব পূর্ণ হবে? হত্যাকারী পথের বাঁকে বাঁকে। মৃত্যু পথে পথে অপেক্ষায়। নিরাপদ ঘরেও ঢোকে নিঃশব্দ আততায়ী। খুন হয়ে যায় স্বজন, আত্মজ-আত্মজা। এখনো ঘোর ভাঙে না তোর!
কুম্ভকর্ণ ভর করা কাঠামো অবিচল। কাঠামোর হৃদয় নেই বলেই তাকে ছোঁয় না কোনো অশ্রুর বিষাদ। মানুষেরা মরে যায়, হারিয়ে যায়। হাসপাতালের শয্যায় কাতরায়। পিতার শূন্য চোখ চেয়ে থাকে আকাশের দিকে। যে চোখে অশ্রুর বিকল্পে থাকে ফরিয়াদ। মায়েদের চোখের পানিতে কবরের ঘাস তাজা হয়। এতিমের চোখে ভাসে অনিশ্চিত ভবিষ্যত। বিধবার সাদা কাপড় মেঘ হয়ে আকাশ ঢেকে দেয়। প্রাণহীন কাঠামোর বাঁধনে হয়ে উঠা অন্ধ ও হৃদয়হীন, এখনো ঘোর ভাঙে না তোর!
অন্ধ আর হৃদয়হীনের সমাজ ভেঙে পড়বে একদিন। প্রকৃতি ঠিক তার প্রতিশোধ নেবে। তারাও যাবে। হবে ভাঙন কবলিত। তাদের জন্যে তখন ‘নো ওয়ান লেফ্ট টু স্পিক’ এবং এটাও নিয়তি অমোঘ।
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন