২
১৭৯৬ বার পঠিত
বেহেস্তী হুরী ও শরাবের পেয়ালা
বেহেস্তএ- পরহেযগারদের জন্য রয়েছে সাফল্য, উদ্যান, আঙ্গুর সমবয়স্ক পূর্ণযৌবনা তরুণী এবং পূর্ণ পানপাত্র-৭৮:৩১-৩৪ অনু-ম মুহিউদ্দিন। মারেফুল কোরাণ। [….শরাব ভর্তিপেয়ালা সমূহ] -থানভী
একই আয়াতের ড মুহম্মদ শহীদুল্লাহকৃত অনুবাদ – ‘সাবধানীদের জন্য রয়েছে সাফল্য, উদ্যান দ্রাক্ষা, সমবয়স্কা উদভিন্ন যৌবনা তরুণী এবং পূর্ণ পানপাত্র [ইসলামিক ফাউন্ডেশন,বাংলাদেশ]
এটি বুঝতে অসুবিধা হয়না যে আরবদেশের রুক্ষ মরুভূমির ধূলিধূসর আবহাওয়ায় উচ্ছৃঙ্খল বেদুইনদের কামকাতর জীবনের জন্য এ এক লোভনীয় অনুগ্রহ। পার্থিব কষ্টকর জীবনযাপনে এ ছিল সত্যিকার বেহেস্তি প্রলোভন।
কিন্তু সংস্কৃতিবান, মার্জিত রুচি ও জ্ঞানসম্পন্ন ব্যাক্তিদের কাছে পাণপাত্র হাতে উদভিন্ন যৌবনা তরুণীর আহ্বান অশ্লীল কুরুচিপূর্ণ মনে হতেই পারে। সে কারনেই ইংরেজি অনুবাদের সময় আয়াতটিকসম্পুর্ণ ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করা হয় – সেখানে উদভিন্ন যৌবনা তরুণী হয়ে যায় – companion of equal age [ইউসুফ আলি]
ইংরেজিতে ‘সঙ্গী’ হিসেবে অনুদিত করে তাকে উভলিঙ্গ করা হয়েছে যাতে এমন মনে হয় যেন নারীরাও তাদের পুরুষ সঙ্গী পাবে।
শাকির এর অনুবাদে তাও বাদ হয়ে গেছে- for the righteous is achievement,gardens,and vineyards and those showing freshnesh of youth,equal in age and a pure cup। এই অনুবাদে সেক্সী ‘মোঘলাই খানা’টি হয়ে গেছে রক্ষণশীল ভিক্টোরীয়ন বৃটিশ ‘ফিস এনড চিপস’। শাকিরকেন লাস্যময়ী তরুণী বাদ দিয়ে কেবল those showing freshnesh of youth লিখলেন ? কারন তার কাছেও ওই কোরান বানীকে রুচিসম্পন্ন মনে হয়নি-একতরফা পুরুষদের কাম চাহিদা মোতাবেক বর্ণনা মনে হয়েছে। তাই সাফসুতরো করে পশ্চিমা সমাজে তাকে হাজির করেছেন।
পুরুষরা হুরী পেলে মেয়েরা কি পাবে – এই সমালোচনার জবাব হিসেবে হুরী হয়েছে সঙ্গী – অর্থাৎ নারীরাও প্রত্যেকে ৭২ টি পুরুষ পাবে। কিন্তু মুসলিম জনগন এক নারীর ৭২ পুরুষ গমন মানবে কি?
আল্লাহর হাঁটু দেখা।
‘-স্মরণ কর গোছা পর্যন্ত পা খোলা রাখার দিনের কথা যেদিন তাদের আহ্বান করা হবে সেজদা করার জন্যে,অতঃপর তারা সক্ষম হবেনা ।’ ৬৮:৪২ মারেফুল কোরান। অনু-ম মহিউদ্দিন।
বিখ্যাত পারসী ভাষায় মুহাম্মদ জীবনীকার আলী দাস্তির অনুবাদ – On the day when the leg will be bared and they will be bidden to kneel, but cannot…..
‘ The day that the shin* shall be laid bare, and they shall be summoned to bow in adoration, but they shall not be able. সৌদি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত আব্দুল্লাহ ইউসুফ আলির অনুবাদ। এখানে তিনি shin অর্থ-হাঁটুর নিম্নস্থ পায়ের সম্মুখভাগ এর কথা বলেছেন।
কিন্তু শাকির অনবাদ করেছেন – On the day when there shall be a severe affliction- এখানে হাঁটু বা পায়ের গোছার কথা নাই।
কিন্তু নিরাকার আল্লাহর হাঁটু দেখা যায় কি প্রকারে? আল্লাহ কি তবে মানুষের মত কিছু? আধুনিক মুসলিমরা অনেকে এইটে মেনে নিতে পারেন না। কিন্তু স্বয়ং আল্লাহ বলছেন তার কোরানে, তাই বা কি করে হয়। তাই অনেক অনুবাদক অনুবাদ কালে বাক্যটি অস্পষ্ট করে দেন, কেউ আবার বেমালুম গায়েব করেও দেন।
মোবারক করিম গওহর, কলকাতা মল্লিক ব্রাদার্স থেকে প্রকাশিত অনুবাদে হাঁটুর ব্যপারটাই রাখেন নাই – স্মরণ কর সে চরম সংকটের দিনের কথা যেদিন ওদের সিজদা করার কথা বলা হবে কি্তু ওরা সক্ষম হবে না —এখানে হাটুর কথা বাদ দিয়ে চরম সংকটের কথা বলা বয়েছে।
আশরাফ আলি থানভিও তার অনুবাদ করেছেন হাটু বা গোছার বা শিন এর কথা একেবারে বদলে দিয়ে অন্য কথা দিয়ে। -‘যেদিন যবনিকা উত্তোলিত হইবে ও তাঁর সেজদার দিকে আহুত হইবে, কিন্তু তাতে হইবে না ওরা সমর্থ ।বাংলা অনু- ফজলুর রহমান মুন্শী।
তবে ব্যখ্যায় হাদিসের কথা উল্লেখ করেছেন সেখানে পায়ের গোছার কথা আছে-
হুজুর বলেছেন আল্লাহ কিয়ামতের ময়দানে স্বীয় পায়ের গোছা উন্মুক্ত করিবেন। সেই নূর দর্শণ করিয়া সকল মুমিন নরনারী সেজদায় পতিত হইবে, কিন্ত যারা লোক দেখান সেজদা করিত তারা তক্তার ন্যায় সোজা হইয়া থাকিবে, সেজদা করিতে পারিবে না।
কিন্তু এরূপ দেখালে তার নিরাকার সত্ত্বার বরখেলাপ হয় তাই অনুবাদকেরা অনুবাদের সময় একটু ঝাড়পুছ করে নেন – বিশেষ করে যারা কোরানে কোন বিতর্কে যেতে চান না।
আকাশ পতন।
‘এবং তিনিই আকাশ’কে স্থির রাখেন, যাতে তা পৃথিবীর উপর তার অনুমতি ভিন্ন পতিত না হয় ।’২২:৬৫
অনু :ম মুহিউদ্দিন খান। মারেফুল কোরান।
আকাশ কি করে পৃথিবীর উপর পতিত হবে? আকাশ বলে তো কিছু নেই। প্রাচীন কালের মানুষদের এমন মনে হোত। কোরান রচয়িতাও সেভাবেই বলেছেন। কোরানের এই ভ্রান্ততাকে তাই ইউসুফ আলি ঘোচাবার চেষ্টা করেছেন আকাশ শব্দটির পর ব্রাকেটে Rain বা বৃষ্টি শব্দটি বসিয়ে – যাতে বোঝা যায় ‘আকাশ পড়া’ অর্থ বৃষ্টি পড়া। আকাশ মানে বৃষ্টি? হয়তো তাই, নইলে শাকির তার অনুবাদে আর ব্রাকেটএ বন্দি নয় সরাসরি অনুবাদ করেছেন-And He with holds the rain from falling on the earth except with His permission 22:65 এখানে আর ব্রাকেট নেই ।আকাশ হয়ে গেছে বৃষ্টি। অবশ্য অযুহাতের তো অভাব নাই, কারন এক একটি আরবী অক্ষরের নাকি ১৭ রকমের অর্থ।
….beat her [ lightly ] 4:34
উল্লেখ করা যায় যে স্ত্রী প্রহারের আয়াত টিতেও আব্দুল্লাহ ইউসুফ আলী beat her এর পর ব্রাকেটে [ lightly] লিখেছিলেন – যা মূল কোরানে নাই। পরবর্তিকালে অনেক অনুবাদক ব্রাকেট তুলে অনুবাদ করেন- স্ত্রীকে মৃদু ভাবে প্রহার কর। কিন্দু মুল কোরানে সরাসরি প্রহারের কথাই শুধু আছে । মৃদু ভাবে নাই।
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন
আগস্ট ১৭, ২০১২; ১২:৫৯ অপরাহ্ন
শুধু হাঁটু নয়—আল্লাহ্পাকের রয়েছে, চক্ষু, ললাট, হাত, মাথা—সবকিছুই, একমাত্র লিঙ্গ বাদে।
তবে আল্লাহ্পাক যে পুংলিঙ্গ তা কোরানেই লেখা আছে।
আগস্ট ১৯, ২০১২; ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন
যারা কোরানের প্রকৃত অনুবাদকে বিকৃত করে তারা সভ্যতার শত্রু, তারা চরম প্রতারক।