‘উপরে যা আছে নীচেও তাই’, ‘As above, so is below’, পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র পৃথিবীতে যেমনভাবে কাজ করে তেমনি মহাবিশ্বের সবজায়গাতে একইভাবে কাজ করে। এক থেকে বহু, বহু মিলে এক । “Unity in diversity, diversity in unity।”
মানুষ তার অভিজ্ঞতায় দেখে এক সূর্যে জগত আলোকিত হয়, এক চাঁদের আলোয় রাতের আঁধার কাটে, সে একা এ পৃথিবীতে আসে, একা একা তার পথচলা, একা দুঃখ-কষ্ট, রোগ-শোক ভোগ করে, আবার একাই তার চলে যাওয়া। এই একের নেশা তাই কাটে না, কারণ ‘এক’ না থাকলে মানুষই থাকে না। নবী ইব্রাহীমের একত্ববাদী ধর্মগুলোতে আজকের জগতের সবচেয়ে বেশী অনুসারী।
ভারতবর্ষের তথা দুনিয়ার প্রাচীনতম গ্রন্থ বেদ। চার বেদে চারটি বাক্য আছে যেগুলো মহাবাক্য নামে পরিচিত। এ মহাবাক্যগুলোতে মানুষের মধ্যে একেশ্বরের অস্তিত্বের কথা এবং তার স্বরূপ সম্পর্কে বলা আছে।
#ঋকবেদ এ আছে-
‘প্রজ্ঞানাম ব্রহ্মা’ – ব্রহ্মজ্ঞানই ব্রহ্মা, অর্থাৎ, ব্রহ্মের জ্ঞান থেকে ব্রহ্মকে আলাদা করা যায় না। অগ্নিকে যেমন তার দাহিকা শক্তি থেকে আলাদা করা যায় না তেমনি মহাবিশ্বের যাবতীয় কর্মকান্ডের পেছনের সকল জ্ঞান, শৃঙ্খলার সাথে তার বস্তুগত ভিত্তি থেকে আলাদা করা যায় না।
#অথর্ববেদ মতে-
‘অয়মাত্মা ব্রহ্মা’ – আত্মাই ব্রহ্ম ; আমার আত্মার সাথে পরমাত্মা সম্পর্কিত। আত্মা আর পরমাত্মা সমার্থক, তাদের মধ্যে কোন ছেদ নেই। পরমাত্মার সাথে আত্মার বিচ্ছেদ কল্পনা, আত্মাকে পরমাত্মা থেকে পৃথক ভাবা মায়ার কাজ, জীবের কষ্টের মূল কারন। মানুষ শরীর নয়, এমনকি সে তার মনও নয়। শরীর হল খাবারের ফল, আর মন হল বয়সের সাথে বেড়ে ওঠা অভিজ্ঞতা, পরিবেশ, প্রতিবেশের ছাপ। মানুষ হল তার শরীর ও মনের উর্ধ্বে আত্মা, আর সেই আত্মা পরমাত্মার সাথে সম্পর্কিত।
#সামবেদে আছে ঋষি উদ্দালকের ছেলে শ্বেতকেতু বাবার কাছে প্রশ্ন করে, বাবা ঈশ্বর কী রকম, তাঁর স্বরূপ কী? জবাবে ঋষি উদ্দালক মহাবাক্যটি বলেন-
‘তত্ ত্বম আসি’- তুমিই সে । তোমার ভেতরে যে স্ফুলিঙ্গ বা প্রাণবায়ু আছে সেই পরমাত্মা। বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ডের সবকিছু একে অপরের সাথে সম্পর্কিত, তোমার এবং তাঁর মধ্যে এবং জগতের অন্যান্য প্রাণি ও বস্তুর মধ্যে যে ফারাক তার কারন ‘ইল্যুশান’।
#যযুরবেদ অনুসারে-
‘অহম ব্রহ্মাস্মি’ – আমিই ব্রহ্মা, অর্থাৎ মানুষের মধ্যে অহম বা ‘আমি’ রুপে যে কর্তাসত্ত্বা সাক্ষীচৈতন্য রূপে বিরাজ করেন তিনিই ব্রহ্মা। তোমার,আমার, সকলের মধ্যে থেকে যিনি সকল অভিজ্ঞতাকে উপভোগ করেন তিনিই ব্রক্ষ্মা।
ভারতীয় দর্শনের একত্ববাদের গুরু অদ্বৈতবাদী শংকরাচার্য। ব্রক্ষ্মবাদী এ দর্শনের মূল কথা একমাত্র ‘ব্রক্ষ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা’। শংকরের কাছে জগত মিথ্যা, মায়াময়, তাই রজ্জুতে সর্পভ্রম করলে চলবে না।
হারমেটিক দর্শনের অন্যতম দলিল বিখ্যাত ‘এমারেল্ড ট্যাবলেট’ যেটি মধ্যযুগে আলকেমি’র চর্চার অন্যতম অনুপ্রেরনা ছিল। এর মূল কথা হল, এক থেকে সব সৃষ্টি, উপরে বা নীচে যা আছে সব আসলে এক নিয়মের অধীন। বিজ্ঞানী নিউটনের করা অনুবাদে ‘এমারেল্ড ট্যাবলেট’ এর কিয়দংশ-
“Tis true without lying, certain and most true.
That which is below is like that which is above & that which is above is like that which is below to do the miracles of one only thing.
And as all things have been and arose from one by the mediation of one: so all things have their birth from this one thing by adaptation.”
দার্শনিকেরা সব সময় সৃষ্টিজগতের একটা আদি উৎসের সন্ধান করেছেন। একটা আদিবিন্দু নির্দেশ করা জ্ঞানচর্চার অন্যতম শর্ত। সৃষ্টির পেছনে একটা ভারবিন্দুর ধারণা ভারতীয় ষড়দর্শনের অন্যতম বৈশেষিক দর্শনের কেন্দ্রীয় ধারণা। দার্শনিক কণাদ এ দর্শনের প্রবক্তা। কণাদ-এর বৈশেষিক দর্শনেই সর্বপ্রথম ভারতীয় পরমাণু চিন্তার প্রকাশ ঘটেছিল। কণাদ তাঁর দর্শনে ছয়টি পদার্থের উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে পঞ্চম হল: ‘বিশেষ’ (particular)। এই বিশেষ পদার্থটি অপর কোনও দর্শনে স্বীকৃত হয়নি। সুতরাং বিশেষ পদার্থ স্বীকার করার জন্যই দর্শরটির নাম বৈশেষিক। আত্মার বৈশিষ্ট্য অনেকটা সত্তার মতোই। কণাদ মনে করতেন চৈতন্য হল দৈব । যখন আত্মা শরীরে সংলগ্ন হয় তখনই শরীর চৈতন্য লাভ করে, মন হল আণবিক কিন্তু অবিভাজ্য এবং শ্বাশত পদার্থ। জগতে যে সব বস্তু রয়েছে মন তার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে সাহায্য করে।
গ্রীক দার্শনিক ডেমোক্রিটাসের কণাবাদে, সৃষ্টিজগতের মূলে রয়েছে এক অবিভাজ্য মৌলিক কণা যা নিসীম শূন্যে ঘুর্ণায়মান। উনিশ শতকে ডাল্টনের কণাবাদ বস্তুর আনুপাতিক সংমিশ্রণের পরিমাপ পদ্ধতি, যার মাধ্যমে গ্যাসের সূত্র এবং বহুবিদ অনুপাতের সূত্র (law of multiple proportion) প্রণয়ন করা সম্ভব হয়।
গ্রীকদর্শনের আয়োনীয়ান ধারায় বস্তুজগতের ব্যাখ্যায় প্রাকৃতিক ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করে একটা মূলবস্তু খোঁজার চেষ্টা করা হয়।
গ্রিক দার্শনিক থ্যালিস ভাবতেন পানি দিয়ে জগতের সৃষ্টি, তার কাছে পানি ছিল মৌলিক কণা, পানি থেকে যাবতীয় সকল পদার্থের সৃষ্টি।
তেমনি হেরাক্লিটাস ভাবতেন আগুন আর এনাক্সিমেনেস মনে করতেন বাতাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক শক্তিকে সৃষ্টির মূল উপাদান। অপরদিকে পীথাগোরীয়ান স্কুল বিমূর্ত সংখ্যা এবং জ্যামিতি দিয়ে বস্তুজগতকে ব্যাখ্যা করেন। পীথাগোরাসের মতে বস্তুনিচয় হল সংখ্যা (things are numbers)।
গ্রীক দর্শনের মূলে তিনটি ধারণা, প্রথমতঃ প্রকৃতিতে একক একটি প্রক্রিয়ায় চুড়ান্ত বস্তু (ultimate substance) থেকে সব কিছু তৈরি। দ্বিতীয়তঃ বৈপরীত্যের সংঘর্ষে (conflict of opposites)উৎপন্ন একত্ববাদ দ্বারা গতিশীল বিশ্বজগতের ধারণা, এবং সবশেষে বস্তুর গঠন উপাদানের সুনির্দিষ্ট আকারের (definite structure) ধারণা। কণার বিভিন্ন সমাবেশের মাধ্যমে অথবা কণার স্তরে জ্যামিতিক সন্নিবেশের মাধ্যমে কাঠামোর গঠন হতে পারে। তিনটি ধারণার প্রথম এবং তৃতীয়টিতে একটাই আদিবিন্দু বা ধারণা ধরা হয়েছে। দ্বিতীয়টিতে দ্বিত্ব এসেছে কিন্তু সে দ্বৈততাকে সংশ্লেষণ করে একত্ববাদই জয়ী হয়েছে। বিন্দু এরিস্টটলের ‘প্রিমা ম্যাটেরিয়া’, গুরুবস্তু যার শুধুমাত্র অস্তিত্ব আছে, রূপের প্রভাবে সেটা নানা আকার ধরে।
“He supposed the ultimate basis to be a primitive matter, which had only potential existence till impressed by form”.
সূফীদর্শনে বিন্দুর ধারনাঃ
সূফী শিক্ষার বিস্তারে নুক্তা (N Q T) বা বিন্দুর গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার আছে। সূফীবাদের গাণিতিক অংশের সাথে এটি জড়িত। জ্যামিতিবিদ বা স্থাপত্যবিদের আরবী প্রতিশব্দ মুহান্দিস। আরবী M,H,N,D,S বর্ণের সাহায্যে শব্দটি গঠিত যাদের তুলনামূলক সংখ্যা যথাক্রমে ৪০, ৫,৫০,৪,৬০, যোগ করলে সর্বমোট ১৫৯। সংখ্যাটিকে নিয়মানুযায়ী একক, দশক এবং শতক অনুযায়ী সাজালে দাঁড়ায়
১০০ = Q, ৫০ = N, ৯ = T
এ তিনটি ব্যঞ্জন বর্ণকে ২,১,৩ ক্রমে সাজালে শব্দমূল NQT পাওয়া যায়, যার মানে বিন্দু। আনুষ্ঠানিক কিছু ব্যবহারে বিন্দু দিয়ে এর অভ্যন্তরীন গুপ্ত মানে আর্কিটেক্ট বুঝানো হয়। এ তিনটি সংখ্যার মধ্যে আরও অনেক উপাদান আছে। যেমন প্রথম দুটি অক্ষর (Q N) দিয়ে বুঝানো গভীর ধ্যান বা মেডিটেশান, যা সূফীজমের আরেক প্রতিশব্দ। আরব অকাল্টে শেষ অক্ষর (T) দ্বারা বুঝানো ‘আত্মজ্ঞান’। এজন্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে নবীসের জ্ঞান পরীক্ষা করতে বিশেষ ডায়ালগ ব্যবহার করা হয়:
প্রশ্নকর্তাঃ জ্যামিতিকার বলতে কি বুঝ?
নবীসঃ বিন্দু দিয়ে ‘আমি’ প্রতিনিধিত্ব করা হয়।
প্রশ্নকর্তাঃ কিভাবে এটি বানান করা হয়?
নবিসঃ বিন্দুর মত
প্রশ্নঃ ধ্যানের (Q N) পরে কি হয়?
উত্তরঃ আত্মজ্ঞান (T)
প্রশ্নঃ সেটা কি ? আমাকে বল।
উত্তরঃ আমার কাছে শুধু দুই-তৃতীয়াংশ আছে- N এবং Q ।
বিন্দু প্রতীকঃ
জ্যামিতির ভাষায় যার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং বেধ নাই শুধুমাত্র অবস্থান আছে তাকে বিন্দু বলে। বিন্দুর ধারণা সম্ভব কিন্তু বাস্তবে বিন্দু সম্ভব নাও হতে পারে, কারন বিন্দুর অবস্থান যত ছোট হোক না কেন তার একটা পরিমিতি (দৈর্ঘ্য,প্রস্থ, উচ্চতা) থাকবে। তাই বিন্দুর অবস্থান নির্ভর করছে পরিমাপ পদ্ধতির সীমাবদ্ধতার উপরে। এর উৎকর্ষতা যত বৃদ্ধি পাবে বিন্দু তত অদৃশ্য হতে থাকবে, বা আমরা তত ছোট বিন্দু তৈরি করতে পারব। কিন্তু মানুষের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ দৃষ্টির সীমা আছে।
মানুষের ইতিহাসে বিন্দু সবচেয়ে পুরাতন প্রতীক। শাদা কাগজের পাতায় বিন্দু প্রথম বিভ্রম তৈরি করে, কারণ বিন্দু স্পেসের আদি অবস্থান থেকে প্রস্থানের প্রথম ধাপ। শাদা কাগজের অসীম প্রাণশক্তির ক্ষেত্রমধ্যে বিন্দু প্রাণশক্তির স্থানিক ক্ষমতার কেন্দ্র। বিন্দু দর্শন শাস্ত্রের উপযুক্ত প্রতীক, কারণ দর্শনে বুদ্ধিবৃত্তিক বিভ্রমের অবকাশ সবচেয়ে কম। প্রকৃতিগতভাবে একমাত্র দার্শনিক উপায়ে কম পরিমাণ বিভ্রান্তি ঘটিয়ে বাস্তবতাকে উপলদ্ধির চেষ্টা সম্ভব। কিন্তু বিন্দু যেমন তার পেছনে গিয়ে যে শাদা কাগজের উপর তার অবস্থান তার প্রকৃতি সম্বন্ধে জানতে পারে না, তেমনি কোন দর্শনই সম্পূর্ণভাবে মনের প্রভাব মুক্ত হতে পারে না।
বিন্দু চিরস্থায়ী নয়, অনন্ত শাদা কাগজকে বুঝতে হলে বিন্দুকে সরিয়ে ফেলতে হবে। সকল ধরণের গতি, সত্তার কাছ থেকে দূরে সরে যায়। পারফেক্ট অবস্থায় প্রর্তাবর্তনের প্রক্রিয়ায় সকল গতি সত্তা অভিমূখে। আপন সত্তা থেকে দূরে সরে গেলে শক্তি এবং চেতনা দুটোই কমতে থাকে, পক্ষান্তরে সত্তার দিকে গতিমূখ হলে চৈতন্য এবং শক্তির প্রাবল্য বাড়ে।
‘বিন্ধুতে সিন্ধু দর্শন’ এর ধারনা বাংলার বাউল সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত একটা রূপকল্প।
“গুরুর দয়া যারে হয় সে জানে
যেরুপে সাঁইর লীলাখেলা এ দেহ-ভুবনে।
হায় জলের ডিম্ব আগের উপর অথ প্রলয়ের মাঝার
বিন্দুতে সিন্ধু তাহার
ধারা ত্রিগুণে।” – ফকির লালন
“নিরাকারে ছিলেন সাঁই একা একজনা
এক হইতে দুই হইল মোহাম্মদে জানা। ” -সূর্যলাল ফকির
প্রাকৃতিক জগতে বিভিন্ন চক্রাকার প্রক্রিয়া আছে যেমন, নাইট্রোজেন চক্র। বাতাসের নাইট্রোজেন বিজলীর দ্বারা, শিম জাতীয় গাছের মাধ্যমে বা জমিতে সারের মাধ্যমে মাটিতে আবদ্ধ হয়। সে নাইট্রোজেন উদ্ভিদ গ্রহন করে, তার থেকে প্রাণির শরীরে যায়। এসব উদ্ভিদ এবং প্রাণি মরে পচে গেলে বিভিন্ন অণুজীব নাইট্রোজেনকে আবার বাতাসে অবমুক্ত করে। এভাবে জগতে নাইট্রোজেনের চক্র চলতে থাকে। নাইট্রোজেন চক্রের মত ঋতুচক্র, পানির চক্র, জন্ম-মৃত্যুর চক্র থেকে মানুষ ধারনা করে এসবের পেছনে একটা কারন আছে, এবং চক্র থেকে তার ‘এক’ এর ধারনা আরো পোক্ত হয়।
“সমুদ্রের জল উঠে বাতাসের জোরে
আবর হইয়া ঘুরে পবনের ভরে
জমিনে পড়িয়া শেষে সমুদ্রেতে যায়
জাতেতে মিশিয়া জাত তরঙ্গ খেলায় ।
তুমি আমি আমি তুমি জানিয়াছি মনে
বিচিতে জন্মিয়া গাছ বিচি ধরে কেনে
এক হইতে দুই হইল প্রেমেরই কারণ
সে অবধি আশিকের দিল করে উচাটন ।।” – অরকুম শাহ
আধুনিক বিজ্ঞানের অগ্রগতির পেছনে কণার ধারণাঃ
প্রাচীন গ্রীসের ডেমোক্রিটাসের কণাবাদ, নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র, ডালটনের পরমানুবাদ বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে একেকটা মাইলফলক হয়ে আছে।
পদার্থবিজ্ঞানে বিগ ব্যাং তত্ত্বে বিন্দু থেকে মহাবিশ্বের উৎপত্তি, মহাবিস্ফোরণের প্রাক্কালে ঘন, সংবৃদ্ধ অনন্যতা (এক, ইউনিটি), বা সিংগুলারিটির সৃষ্টি হয়। তারপর মহাবিস্ফোরণের ফলে সে এককাবস্থার বিচ্ছুরণ থেকে বিশ্বব্রক্ষ্মান্ডের সৃষ্টি। সেই থেকে আজো আমাদের মহাবিশ্ব ক্রমসম্প্রসারণশীল।
বিজ্ঞানের মতে বস্তুজগত এ পর্যন্ত জানা ১০৯ টি মৌলিক পদার্থ কণার সমন্বয়ে গঠিত, এদের বলা হয় পরমাণু। আর দুই বা ততোধিক পরমাণু মিলে তৈরি হয় অণু। অণুর স্বাধীন অস্তিত্ব আছে, কিন্তু পরমাণুর স্বাধীন অস্তিত্ব নাই, এরা খুব ক্রিয়াশীল ফলে অন্য পরমাণু বা অণুর সাথে খুব দ্রুত বিক্রিয়া করে অণুতে পরিণত হয়। পরমাণুর কেন্দ্রে আছে ধনাত্মক প্রোটন এবং আধানবিহীন নিউট্রন যার কারণে এদের যাবতীয় ভর থাকে কেন্দ্রে। বাহিরে কেন্দ্রের তুলনায় বিশাল ফাঁকা অংশে আছে যেখানে ঋণাত্মক আধানযুক্ত ইলেকট্রন থাকে। এখন জানা যাচ্ছে এসব ইলেকট্রন, প্রোটন আরো কমপক্ষে তিনটি সূক্ষ কণার দ্বারা গঠিত। ফলে দার্শনিকের জগত সৃষ্টির আদি ‘একমাত্র’ মৌল কণার যে ধারণা তার সন্ধান বাস্তবে এখনো মিলেনি, আছে কিনা তাও বলা সম্ভব নয়। কিন্তু কণা এবং একের কল্পনা মানুষকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছে। সংখ্যার ইতিহাসেও আমরা দেখি এক (১) তার আধিপত্য বজায় রেখেছে।