০
৫৯৭ বার পঠিত
জার্মান লেখক সমিতি জার্মান পেন সেন্টার (PEN-Zentrum Deutschland) এর বাৎসরিক সভায় ২৬ থেকে ৩০ এপ্রিল জার্মানির শিল্পনগরীখ্যাত ডর্টমুন্ড শহরে শতাধিক সদস্যদের উপস্থিতিতে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হন জার্মান কথাসাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক রেগুলা ভেন্সকে। তাঁর পূর্বসুরী জোসেফ হাসলিংগার এবছর আর প্রেসিডেন্ট পদে না দাঁড়াবার সিদ্ধান্ত নিলে মিসেস ভেন্সকে নতুন সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। তিনি মূলত থ্রিলার উপন্যাস লিখে তাঁর খ্যাতি অর্জন করলেও সমাজ সচেতনমূলক লেখায় জার্মান সাহিত্যাঙ্গনে ভেন্সকে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছেন। (ছবি: স্পিগেল অনলাইনের সৌজন্যে)
জার্মান পেন সেন্টার এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হবার পরে তিনি জার্মানির দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক আদর্শের বিরুদ্ধে তাঁর কলমকে আরও বেশি শক্তিশালী করা ছাড়াও বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও অবিরত হুমকীর মুখে থাকা লেখকদের জন্য কাজ চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি জার্মান পেন সেন্টারকে আরও শক্তিশালী করার ঘোষণা দেন।
১৯৯৫ এ প্রকাশিত রাজনৈতিক থ্রিলার, ‘অপেরা বল‘এর লেখক ভেন্সকে ব্যাপক সমাদৃত থাকায় এর আগে তিনি জার্মান পেন সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
Schriftstellervereinigung: Deutsches PEN-Zentrum hat neue Präsidentin – SPIEGEL ONLINE – Kultur https://t.co/bLRHRt9AYV
— PEN Deutschland (@PEN_Deutschland) April 28, 2017
Literatur, Politik & intensive Debatten: PEN-Jahrestagung in Dortmund beendet. Regula Venske neue Präsidentin…. https://t.co/XnqnaxXtZs
— PEN Deutschland (@PEN_Deutschland) April 30, 2017
বাক স্বাধীনতা: কেন এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়?
এই প্রশ্নের জবাবে পেন প্রেসিডেন্ট বলেন, শব্দ একটি অতি ভয়ঙ্কর অস্ত্র যা স্বৈরাচারী শাসক ও তাদের নেতারা সবচেয়ে বেশি ভয় পায়। গণমানুষ যাদের কাছথেকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত হয় তাঁরা হলেন লেখক ও সাংবাদিক। বিগত কয়েকদশক ধরে আমাদের এই ভূখণ্ডে লেখকরা নির্বিঘ্নে তাদের লেখনী চর্চা করতে পারলেও পৃথিবীতে বহু দেশ আছে যেখানে বাক স্বাধীনতা দারুণ হুমকির মধ্যে রয়েছে। তাই সাহিত্যচর্চা হলো একটি স্বাধীন এবং সত্যের পক্ষে এগিয়ে যাওয়ার সাধনায় মানবজাতির জন্য একটি মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
ফ্রান্সিসকা স্পের:
ফ্রান্সিসকা স্পের হচ্ছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন সেন্টার ও রাইটার্স ইন এক্সাইল কর্মকর্তা এবং লেখক। ১৯৪৯ সালে মিউনিখে জন্মগ্রহণ করেন। মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক বিজ্ঞান, দর্শন, আমেরিকান স্টাডিজ চর্চিত, আর্টস এ স্নাতক ও মাস্টার ডিগ্রি পাস করেন। তারপর প্যারিসে দুইবছর লেখাপড়া করেন।
১৯৮০ থেকে ১৯৮৭ রাজনৈতিক সাহিত্য পত্রিকা ‘এল ৮০‘ এর সম্পাদক, ১৯৯৮ থেকে ২০০১ মিউনিখ সাংস্কৃতিক পরিষদের প্রেস সেক্রেটারি, জুলাই ২০০১ থেকে আবার ফ্রিল্যান্স লেখক, সাংবাদিক ও অনুবাদক হিসেবে কাজ করেন। ২০০৫ সাল থেকে জার্মান পেন সেন্টার এর সদস্য।
অসংখ্য বই ও সাহিত্য পোর্ট্রেট প্রকাশনা এবং সাক্ষাত্কার রিপোর্ট (প্রধানত ফরাসি) অভিনেত্রী, শিল্পী ও সংবাদপত্র ও পত্রিকা প্রকাশক, ইংরেজি এবং ফরাসি, বিভিন্ন লেখকদের বই অনুবাদক। ১৯৯১ সনে অনুবাদ সাহিত্য ‘একশত ছেলে হোক তোমার‘ ক্নেসেবেক প্রকাশনী, ‘প্যারিসের বিস্ট্রো প্রতিদিন‘ ১৯৯২ থেকে সংকলন ও পত্রিকা অসংখ্য গল্প এবং রেডিও প্লে নাটক ‘আমি কি সোনার নাকি কারো না‘ ডয়েচলান্ড রেডিও – জীবন থেকে দৃশ্য ১৯৯৭ ‘রক্তাক্ত মেরি‘ ২০০০ এবং আরো অসংখ্য বই এবং সুড ডয়েচে সাইটুং এর সাহিত্য বিভাগের পর্যালোচনা করেন ফ্রান্সিসকা।
‘আনন্দের পূর্বাভাস‘, ছোট গল্প সংকলন, ২০০৫ ‘দ্য রিলিজ অফ দ্য ব্ল্যাকবোর্ড‘, রোমান, ফারেনহাইট প্রকাশনী, ২০০৮ এবং সম্প্রতি: ‘মিউনিখ একটি শহরের জীবনী‘ ২০১২ সালে। পেন সেন্টারে ফ্রান্সিসকার এখনকার মূল কাজ রিজিম ক্রিটিক করায় বা ধর্মীয় উগ্রগোষ্ঠীদের দ্বারা নির্যাতিত এক্সাইল লেখকদের জন্য জার্মানিতে মুক্তচিন্তার বাসভূমি সৃষ্টি করা।
জার্মান পেন সেন্টারের নতুন সভাপতি ৬১ বছর বয়সী ভেন্সকে, বাক-স্বাধীনতা সংরক্ষণের জন্য, পেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজ দেশে যুদ্ধ করতে চান। মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হয়ে যাওয়া দেশগুলির মধ্যে তুরস্ক ও রাশিয়ার কঠোর সমালোচনাও করেন তিনি।
চারদিনের এই সম্মেলনে জার্মান লেখক, কথা সাহিত্যিক, অনুবাদক ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নির্বাসিত লেখকবৃন্দ ছাড়াও বিদেশি পেন সেন্টারের সহায়তায় জার্মানিতে বসবাস করছেন ও সাহিত্যকর্ম করছেন তাঁরাও উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে জার্মান পেন সেন্টার এর ‘রাইটার্স-ইন-এক্সাইল‘ বৃত্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশী লেখক ও ব্লগার জোবায়েন সন্ধি‘ও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
১) Schriftstellervereinigung: Deutsches PEN-Zentrum hat neue Präsidentin
২) ঔপন্যাসিক রেগুলা ভেন্সকে: জার্মান পেন এর নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন