জেরুজালেমের ওপর ইসরায়েলের দাবির তুলনায় ফিলিস্তিনি আরবদের দাবি অতিশয় দূর্বল
গতবছর ৬ই ডিসেম্বর জেরুজালেম নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আচমকা দু’টি ঘোষণা ইসরায়েল-আরব সংঘাত যা আপাত শান্ত ছিলো তাকে উস্কে দেয়। ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, জেরুজালেম হলো ইসরায়েলের রাজধানী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জেরুজালেমেই স্থানান্তরিত করা হবে। প্যালেস্টাইন বা ফিলিস্তিনের একটি সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ শহর হলো জেরুজালেম। জেরুজালেম আবার বাইতুল মুকাদ্দাস নামেও খ্যাত। এই শহরটি ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইহুদিদের বিশ্বাসের গভীরে প্রোথিত রয়েছে যে এই জেরুজালেমেই তাদের ঈশ্বর ‘ইয়াওয়ে’ (হিব্রু ভাষায় ঈশ্বরকে ইয়াওয়ে বলে) বাস করে। ফিলিস্তিনি আরবরা কিন্তু জেরুজালেমের উপর তাদের অধিকার ছাড়তে নারাজ। তাদের পেছনে রয়েছে আরবের অধিকাংশ দেশ এবং বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ। এ শহরটি বিশ্বের মুসলিমদের কাছে অতি পবিত্র এক তীর্থভূমি যার স্থান মক্কা ও মদিনার ঠিক পরেই। এই জেরুজালেমই ছিলো তাদের প্রথম কিবলা যে দিকে মুখ করে তারা নামায পড়তো। তাই জেরুজালেমের উপর থেকে দাবি ছাড়তে তারা নারাজ। স্বভাবতই ট্রাম্পের ঘোষণায় তৎক্ষণাৎ পরষ্পরবিরোধী তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ইসরায়েল প্রবল সোল্লাসে স্বাগত জানায়, আর আরবরা প্রবল ক্ষোভে তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানায়। বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্রোধে ও ক্ষোভে ফেটে পড়ে।
গতবছরটি আর পাঁচটা বছরের মতো একটা সাধারণ বছর ছিলো না, এটা ছিলো একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বছর। বিশ্বজুড়ে এ বছর উদযাপন করেছে একদিকে কম্যুনিস্ট ও বামপন্থীরা আর একদিকে ইহুদিরা। কারণ, গতবছর নভেম্বর মাসে রুশ বিপ্লবের শত বছর পূর্ণ হয়েছে। আবার ‘বেলফোর ঘোষণা’রও শত বছর পূর্ণ হয়েছে গত বছর নভেম্বর মাসেই। ১৯১৭ সালের ২রা নভেম্বর ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস আর্থার ইহুদি নেতা ব্যারন রথচাইল্ডের কাছে চিঠি লিখে জানান যে ব্রিটিশ সরকার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইহুদি রাষ্ট্র গঠনে তাঁদের পূর্ণ সহায়তা দেবে। এটা ইতিহাসে ‘বেলফোর ঘোষণা’ নামে খ্যাত। গত বছরটি আবার ইহুদিদের কাছে আর একটি কারণে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বছর ছিলো। কারণ, গতবছর জাতিসংঘে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরায়েল রাষ্ট্র স্থাপনের প্রস্তাব পাশ হওয়ার ৭০ বছর পূর্ণ হয়েছে। ১৯৪৭ সালের ২৯শে নভেম্বর জাতিসংঘ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে দ্বিখণ্ডিত করে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব গ্রহণ করে। সেই ঐতিহাসিক প্রস্তাবটি রাষ্ট্রসঙ্ঘের ১৮১ নং প্রস্তাব (United Nations Resolition 181) নামে খ্যাতি লাভ করে।
ভিডিও: Jehovah’s Temple Animation
জেরুজালেম ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলমানদের তীর্থভূমি। জেরুজালেম ছিলো একদা ইহুদিদের বাসভূমি। খ্রিস্টের জন্মের এক হাজার বছর আগে ইহুদি রাজা ডেভিড ও তাঁর পুত্র সালমান এখানেই স্থাপন করেছিলেন জিহোভার মন্দির। জিহোভা হলো ইহুদিদের ঈশ্বর যেমন আল্লাহ্ মুসলমানদের। একেশ্বরবাদী ইহুদিরা মোজেসকে ঈশ্বরের সর্বশেষ দূত বলে বিশ্বাস করে। এদিকে যিশুও নিজেকে ঈশ্বরের দূত ও পুত্র বলে দাবি করেছিলেন। তাতে তার পরিণতি কী চরম ভয়াবহ হয়েছিলো তা সর্বজন বিদিত। মোজেস ঈশ্বরের সর্বশেষ দূত – এ বিশ্বাস ও দাবিকে অগ্রাহ্য ও চ্যালেঞ্জ করার চরম মাশুল দিতে হয়েছিলো যিশুকে। ত্রিশ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি রাজা হেরড তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করে চরম যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা করেছিলেন। তার আগে হত্যা করেছিলেন তাঁর ভাই জনকে কারাগারে বন্দি করে। খ্রিস্টানরা এর চরম প্রতিশোধ নিতে দ্বিধা করেনি। যিশুকে হত্যা করার মাত্র চার দশক পর সত্তর খ্রিস্টাব্দে রোমান রাজপুত্র টাইটাস ক্ষুধার্ত হিংস্র শ্বাপদের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন জেরুজালেমের ওপর। ইহুদিদের চরম বিশ্বাস ও অহংকারের প্রতীক জিহোভার মন্দিরটি ধূলায় মিশিয়ে দিয়েছিলেন রাষ্ট্রশক্তির দম্ভে। শুধু মন্দির ধ্বংস করেই তাঁর প্রতিহিংসার আগুন নেভে নি। পাশবিক হিংস্রতায় ঝাঁপিয়েছিলেন নিরীহ ইহুদিদের ওপর এবং লক্ষাধিক ইহুদিকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিলেন। বাকি ইহুদিরা প্রাণ বাঁচাতে দেশত্যাগ করে উদ্বাস্তু হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিলেন পৃথিবীর পথে পথে। তারপর থেকে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ইসরায়েল রাষ্ট্র তৈরি হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় দু’হাজার বছর ধরে তারা উদ্বাস্তু হয়ে পৃথিবীর দেশে দেশে যাযাবরের মতো ছুটে বেড়িয়েছে। রাজা ডেভিডের তৈরি মন্দিরটি অবশ্য প্রথম ভেঙে দিয়েছিলেন ব্যবিলিন সম্রাট নেবুচাদনেজার খ্রিস্টের জন্মের ৬০০ বছর পূর্বে। কিন্তু পারসিক সম্রাট সাইরাস দ্য গ্রেট সেই শতকেই জেরুজালেম জয়ের পর মন্দিরটির পূনর্নিমাণ করেন। রোমান রাজপুত্র টাইটাস ধ্বংস করেছিলেন পুনর্নির্মিত সেই ২য় মন্দিরটিকেই। কিন্তু ইতিহাসের কী নিষ্ঠুর পরিহাস, টাইটাসের উত্তরসূরী রোমান সম্রাটরা টাইটাসের ঐ ধ্বংসলীলায় ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন, ভেবেছিলেন জিহোভার মন্দির ভাঙার জন্যে ঈশ্বরের অভিশাপে তাঁদের অকল্যাণ হবে। তাই তাঁরা পুনরায় ঐ একই স্থানে ঐ মন্দিরের পুনর্নিমাণ করে টাইটাসের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেন।
জেরুজালেমের ওপর আক্রমণ এসেছিল মুসলমান খলিফাদের দিক থেকেও। ৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে ২য় খলিফা ওমর ফারুকের সেনাবাহিনী খ্রিস্টান সম্রাট সাফ্রোনিয়াসকে পরাস্ত করে জেরুজালেমের দখল নিয়েছিল। তারপর খলিফা ওমরের নির্দেশে ইহুদি ও খ্রিস্টানদের পবিত্র তীর্থভূমি জেরুজালেমের মাটিতেই নির্মিত হয় মুসলমানদের একটি উপাসনালয় যেটা আল-আকসা মসজিদ নামে খ্যাত। ইহুদি ও খ্রিস্টানদের পবিত্র তীর্থভূমিতে মুসলমানদের শাসন ও আধিপত্য বজায় ছিল ১০৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। সেই বছর ১ম ক্রুসেডের সময় খ্রিস্টানরা জেরুজালেমকে মুসলমানদের হাত থেকে মুক্ত করে। নিজেদের পবিত্র তীর্থভূমির দখল নেওয়ার পর তারা শুরু করে প্রতিহিংসার রাজনীতি। আল-আকসা মসজিদটিকে সালমানের মন্দির নাম দেয় এবং মসজিদের জায়গায় এক স্থানে একটি গির্জা স্থাপন করে। খ্রিস্টানরা কিন্তু খুব বেশীদিন জেরুজালেমের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে নি। ১১৮৭ খ্রিস্টাব্দেই সুলতান সালাহউদ্দিন আয়ুবী জেরুজালেম পুনরায় দখল করে নিয়ে ক্রুসেডের বদলা নেয়। সর্বশেষ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়েও জেরুজালেম ছিলো উসমানিয়া খেলাফতের অধীনে তথা মুসলমানদের দখলে।
শুধু প্রাচীন ও মধ্য যুগের আদিম বর্বতার শিকার নয় ইহুদিরা। আধুনিক যুগেও পৈশাচিক হিংস্রতার শিকার হয়েছে তারা। হিটলার নানা অপবাদ দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ইহুদিদের ওপর। তিনি যেন পণ করেছিলেন যে পৃথিবীর বুকে ইহুদিদের নাম ও নিশানা রাখবেন না। তাঁর নাৎসীবাহিনী ৬০ লক্ষ ইহুদিকে নৃসংশভাবে গ্যাসচেম্বারে পুড়ে হত্যা করেছিলো। নিহত ইহুদিদের সংখ্যা ছিলো তখন তৎকালীন ইউরোপের প্রায় অর্ধেক। এতো বীভৎস গণহত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে সম্ভবত আর কোথাও ঘটেনি। টাইটাসের পরে এবং ইতিহাস কুখ্যাত এডলফ হিটলারের আগে সপ্তম শতাব্দীতে মুসলমানরাও ইহুদি নিধনযজ্ঞে মেতে উঠেছিল। সেটা প্রথমে আরবের বুকে মক্কা ও মদিনা সংলগ্ন অঞ্চলগুলিতে, তার পরে ফিলিস্তিনের মাটিতে ইহুদিদের মাতৃভূমিতে। মুসলমানদের রোষানলে পড়ার জন্যে তাদের অপরাধ ছিলো তারা মোজেস (মুসা) ঈশ্বরের শেষ নবী/দূত এই বিশ্বাস থেকে টলেনি এবং মুহাম্মদকে ঈশ্বরের দূত বলে মান্যতা দেয় নি। ইসলামকে অস্বীকার করার ঔদ্ধত্য (!) মুসলমানদের সহ্য হয় নি। লাগামহীন নৃশংস অত্যাচার ও নিপীড়ন চালিয়ে ইহুদিদের আরব ছাড়া করেছিলো। সে সময় হাজার হাজার ইহুদিকে নির্মমভাবে হত্যাও করেছিল আরবের মুসলমানরা।
বস্তুতঃ জেরুজালেম ও ইহুদিদের ইতিহাস খুবই করুণ। জেরুজালেমের মাটি শুধু খ্রিস্টান, পারসিক ও মুসলমানদের হাতেই লাঞ্ছিত, নিগৃহীত ও পদদলিতই হয় নি। আরো অনেক জাতি ও গোষ্ঠীই জেরুজালেমের ওপর অত্যাচারের স্টিমরোলার চালিয়েছে। জেরুজালেমের ভূমিপুত্র ইহুদিরা বোধ হয় যতো লাঞ্ছিত, উৎপীড়িত ও নির্যাতিত হয়েছে পৃথিবীর আর কোনো ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষ ততোটা হয় নি। অথচ তাদের জন্যে আমাদের কোনো সমবেদনা নেই, নেই একটু সহানুভূতিও। উল্টো তারা তাদের পূর্বপুরুষদের মাটিতে নিজেদের একটি রাষ্ট্র তৈরি করেছে এবং সেটা রক্ষা করতে চাইছে বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই।
জাতিসংঘ ট্রাম্পের ঘোষণা ধ্বনি ভোটে প্রত্যাখান করেছে। আন্তর্জাতিক সাম্প্রদায়িক মঞ্চ ইসলামি সহযোগী সংস্থা ওআইসি (Organization of Islamic Co-operation) তার শীর্ষ সম্মেলনে জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের হাত থেকে উদ্ধার করার জন্যে আরব দেশগুলিকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছে। ওআইসিভুক্ত দেশগুলি যদি ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ ফিলিস্তিন প্রশ্নে যে প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছিল সেটাকে স্বাগত ও সমর্থন জানাতো তবে তখনই ফিলিস্তিন ও জেরুজালেম নিয়ে সব বিতর্ক এবং ইসরায়েল ও আরবের মধ্যেকার দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান হয়ে যেতো। তাতে ইহুদিরা যেমন তাদের নিজেদের হারানো স্বদেশের খানিকটা ফিরে পেতো তেমনি ফিলিস্তিনি আরবদেরও তাদের প্রিয় জন্মভূমি থেকে উচ্ছেদ হয়ে উদ্বাস্তু হতে হতো না।
১ম বিশ্বযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৮) ফিলিস্তিন ছিলো উসমানিয়া সাম্রাজ্যের অধীনে। সেই যুদ্ধে উসমানিয়া সাম্রাজ্যের পরাজয় ও পতন হয় এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে চলে যায় ব্রিটিশদের হাতে। ১৯১৭ থেকে ১৯৪৮ পর্যন্ত সময়কালে ব্রিটিশ সরকারের সহায়তা ও মদতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্বাস্তু ইহুদিরা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ঢুকে বসতি স্থাপন করতে শুরু করে। ক্রমে ক্রমে বাড়তে থাকে ফিলিস্তিনি ভূমে ইহুদি জনসংখ্যা এবং একইসঙ্গে ইহুদি ও আরব সংঘাতও। ২য় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের পরাজয় ঘটলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে হাত গুটিয়ে নেওয়ার জন্যে ব্রিটিশদের ওপর চাপ ক্রমাগত বাড়তে থাকে। ফলে ১৯৪৭ সালে এপ্রিল মাসে ব্রিটিশ সরকার ফিলিস্তিন ইস্যুটি মীমাংসার জন্যে জাতিসংঘের কাছে প্রেরণ করে। জাতিসংঘ তখন ১১টি দেশ নিয়ে তৈরি করে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি UNSCOP (UN Special Committee on Palestine)। কমিটি দুটি প্রস্তাব দেয়। সংখ্যাগরিষ্ঠের প্রস্তাব ছিলো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে দুটি পৃথক রাষ্ট্র গঠন করা এবং সংখ্যালঘিষ্ঠের মত ছিলো ফিলিস্তিনে একটি রাষ্ট্রের অধীনে ইহুদি ও আরবদের জন্যে পৃথক স্বাশাসিত অঞ্চল গঠন করা। কমিটি জেরুজালেম সম্পর্কে খুবই সাবধানী প্রস্তাব দিয়েছিল, বলেছিল- জেরুজালেম থাকবে আন্তর্জাতিক সংস্থার নিয়ন্ত্রণে। ইহুদিরা ১ম প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানায়, কিন্তু আরবরা পুরো প্রস্তাবটাই প্রত্যাখান করে। ১৯৪৭ সালের ২৯শে নভেম্বর জাতিসংঘে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। জাতিসংঘ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ৫৭% অংশ ইসরায়েল রাষ্ট্রকে এবং ৪৩% অংশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্যে সুপারিশ করে।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে দুটি পৃথক রাষ্ট্র স্থাপন করার প্রস্তাব জাতিসংঘে গৃহীত হবার কিছুদিন পর (১৯৪৮ সালের ১২ই মে) ইহুদিরা স্বাধীন ইসরায়েল রাষ্ট্রের ঘোষণা দেয়। সঙ্গে সঙ্গে আমেরিকা ইসরায়েল রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয় এবং তার পর স্বীকৃতি দেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন। অন্ধভাবে কোরানের আজ্ঞা পালনকারী পাঁচটি আরব দেশ মিসর, ইরাক, সিরিয়া, লেবানন ও জর্ডান সম্মিলিত সেনাবাহিনী গঠন করে ১৯৪৮ সালের ৩০শে নভেম্বর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে ইহুদিদের নিশ্চিহ্ন করে দেবার বাসনা ও সংকল্প নিয়ে। কিন্তু সেই যুদ্ধে ইসরায়েলই বিজয়ী হয় এবং রাষ্ট্রসংঘ ইহুদি রাষ্ট্র স্থাপনের জন্যে যতোটা জায়গা দিয়েছিল তারচেয়ে বেশী এলাকা দখল করে নেয় ইহুদি সেনারা। এই যুদ্ধ থেকে আরবরা শিক্ষা নেয় নি। বারবার তারা ইসরায়েলের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়, ফলে ১৯৬৭, ১৯৭৩ ও ১৯৮২ সালে আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হয়। কিন্তু আক্রমণকারী আরবরা প্রত্যেকটা যুদ্ধেই পরাজিত হয় এবং অপরদিকে ইসরায়েল ক্রমশঃ তার সীমানা বাড়িয়ে নেয়। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে যুদ্ধে সিনাই মরুভূমির পাশাপাশি সিরিয়ার গোলান মালভূমি, জর্দান নদীর পশ্চিম তীর, গাজা উপতক্যা এবং জেরুজালেমের পূর্ব অংশসহ অবশিষ্ট সকল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ইসরায়েল দখল করে নেয়। এই যুদ্ধের ফলে ফিলিস্তিনি স্বাধীন রাষ্ট্র স্থাপনের যে সুযোগ ও সম্ভাবনা ছিলো সেটা একেবারেই বিলীন হয়ে যায়। ১৯৭৩ সালের যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাস্ত হয়ে মিশর ও জর্দান ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করে এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়। ১৯৭৮ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর ইসরায়েল ও মিশরের মধ্যে শান্তি চুক্তি (ক্যাম্প-ডেভিড চুক্তি) হয় এবং মিশর ইসরায়েলকে সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়। ক্যাম্প-ডেভিড চুক্তির ৩৮ বছর পর ২০১৬ সালে সৌদি আরবও মিশর-ইসরায়েল শান্তিচুক্তি মেনে নেয়। তখন থেকেই সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যেকার চির বৈরীমূলক সম্পর্কের অবসান হয়। এখন তো সৌদি আরব ও ইসরায়েল দু’ দেশই পারষ্পরিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটাবার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে। সৌদি আরব তার সেনাবাহিনীর একদল অফিসারকে পাঠিয়েছে সামরিক প্রশিক্ষণ নেওয়া এবং সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্যে। সৌদি আরব ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কের উন্নতিকরণের লক্ষ্যে একদল ব্যবসায়ী ও শিক্ষাবিদকেও ইসরায়েল পাঠিয়েছিল। সৌদি আরব ইতোমধ্যেই আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে পাঠ্যক্রমে ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকে ইসলামিস্টদের সরিয়ে দিচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য ওআইসি যে শীর্ষ সম্মেলনের মঞ্চে ইসরায়েলকে ফের হুঙ্কার দিয়েছে সেই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন নি সৌদি রাজা সালমান ও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মহম্মদ বিন সালমান। অংশ নেয় নি মিশর, আরব আমিরাত ও বাহরিনের রাষ্ট্রপ্রধানরাও। ওআইসির শীর্ষ সম্মেলনে অনুপস্থিত থেকে এই দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানরা বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তাঁরা ইসরায়েলের সঙ্গে আরবদের আর সংঘাত ও যুদ্ধ চায় না, তার পরিবর্তে আলোচনার মাধ্যমে সমস্ত রকম বৈরীতা ও সংঘাতের অবসান চান। ইসরায়েলও আরবদের সঙ্গে সংঘাতের স্থলে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহী। সেই উদ্দেশ্যে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে সৌদি আরবের রাজপুত্রকে মধ্যস্থতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু একই উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে যাবেন স্থির করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। সৌদি আরবও মধ্যস্থতা করতে আগ্রহী। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স ইতোমধ্যেই পিএলও-র রাষ্ট্রপ্রধান মাহমুদ আব্বাসকে জেরুজালেমের দাবি থেকে সরে এসে ‘আবু দিস’ নামক একটি শহরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের রাজধানী স্থাপন করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে খবর এবং সেখানে রাজধানী গড়ে তোলার জন্যে অর্থ সিয়ে সাহায্য আশ্বাসও দিয়েছেন।
মিসর, আরব আমিরাত, বাহরিন, সৌদি আরব ইত্যাদি আরব দেশগুলির মতো বাকি দেশগুলিরও উচিত ধর্মান্ধতা পরিত্যাগ করে ইতিহাস ও বাস্তবকে স্বীকার করে নেওয়া। তারা যদি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধংদেহী মনোভাব পরিত্যাগ করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ফিলিস্তিন ও জেরুজালেম সমস্যার সমাধানের পথ সন্ধান করতে সম্মত হয় তবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের মধ্যেকার চির বৈরী সম্পর্কের অবসান অধরা থাকবে না। আর তার ফলে লাভবান হবে দু’পক্ষই, তবে ফিলিস্তিনিরাই লাভবান হবে সবচেয়ে বেশী।
জানুয়ারি ১৪, ২০১৮; ৭:৫২ অপরাহ্ন
“জেরুজালেমের ওপর ফিলিস্তিনি আরবদের দাবি অতিশয় দূর্বল,” বেশ, ঐতিহাসিক যে যুক্তিতে লেখক এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন, ঠিক সেই একই যুক্তিতে তো ঢাকা তথা সমগ্র বাংলাদেশের উপরেই মুসলিমদের অধিকারও অতিশয় দুর্বল। কারণ গোটা ভুখণ্ডটাই ছিল সনাতন ভারতীয়দের। ১৯৪৭এর দেশ ভাগের অভিশাপে আজ আামাকে যে আমার চৌদ্দো পুরুষের ভিটে মাটি থেকে উদ্বাস্তু হয়ে বাংলাদেশের বাইরে জীবন যাপন করতে হচ্ছে সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে, তবে আমাকে আমার পূর্বপুরুষের ভিটে মাটি ফিরিয়ে দেওয়া উচিৎ বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের। তাই না? তোফা যুক্তি! ঠিক যে যুক্তিতে বাস্তুচুত ইহুদীদেরকে আবার আরব ভুখণ্ডে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিল ব্রিটিশ সরকার! আজকে ১৯৪৭ থেকে ভিটেমাটি ছাড়া কোটি কোটি বাঙালি যদি তাদের চৌদ্দো পুরুষের বাস্তুভিটেতে পুনর্বাসনের দাবি জানায়? বাংলাদেশ সরকার মেনে নেবে তো? আর সেই সব বাস্তুভিটেতে বিগত সাত দশক ধরে বসবাসকারী আজকের বাংলাদেশীরা অম্লান বদনে তাদের অধিকার ছেড়ে দিয়ে সরে যাবে কি বলেন?
শত শত শতাব্দী ধরে বসবাসকারী মুসলিমদের আজকে নিজ ভুখণ্ডে পরবাসী হয়ে থাকাটাই সঠিক? ব্রিটশ বলপূর্বক তাদেরকে বাস্তুভিটে থেকে উচ্ছেদ করে ইহুদীদেরকে উড়িয়ে নিয়ে এসে বসিয়ে দিল। আর মার্কিণ গোলাবারুদে বলীয়ান হয়ে সেই ইহুদীরাই বিগত সাড়ে সাত দশক ব্যপি ফিলিস্তিনিদের উপর অকথ্য অত্যাচার করে চলেছে, তার কোন বিচার হবে না? উল্টে ফিলিস্তিনিদের হাজার বছরের জেরুজালেমের উপর থেকে সব দাবিদাওয়া ছেড়ে দিতে হবে। এটাই ইঙ্গ-মার্কিণ বিধান। আর আমাদেরকে সেই অন্যায় বিধানেরই তাঁবেদারি করতে হবে আজ ইঙ্গ-মার্কিণ নুন খেয়ে? বেশ তো তাই যদি করতে হয়, তবে সোজা কথা, সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশ ছেড়েও মুসলিমরা সরে যাক। নিশ্চয় সৌদী আরব তাদের কোলে তুলে নেবে!
ইতিহাসের পথ বেয়ে রাজনীতির ঘাতপ্রতিঘাতে দিনে দিনে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বর্তমানের যে রূপ দাঁড়ায়, তাকে উল্টিয়ে দিয়ে ঘড়ির কাঁটাকে পিছিয়ে নিয়ে গিয়ে, কত হাজার বছর আগে কে কোথায় ছিল, তাকে সেই জায়গাই ছেড়ে দিতে হবে, এমন কথা যারা প্রচার করে, তাদের উদ্দ্যেশ্য আর যাই হোক সাধু নয়। আর সেই অসাধুদের তাঁবেদারি করাও সুস্থতা নয়। আর একবার সেই অসুস্থতার চর্চা শুরু হলে হাজার হাজার বাবরি মসজিদ ধুলোয় গড়াগড়ি যাবে। সেটা যাদের কাছেই কাম্য হোক কোন সুস্থ মানুষের কাছে কাম্য হতে পারে না কখনোই।
জানুয়ারি ১৫, ২০১৮; ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন
১৯৪৭-এ ভারত বিভক্তির সাথে ফিলিস্তিন বিভক্তির তুলনা টানাটা খুবই যুক্তিযুক্ত। উদার মানবিক মনের কেউই মনে করে না যে একটা বিদেশী আদর্শের ভিত্তিতে মুসলিমদের ভিন্ন দেশ দাবী এবং সে লক্ষ্যে হিন্দুদের বিরুদ্ধে গণহারে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার পন্থা গ্রহণ করা যৌক্তিক ও ন্যায্য ছিল। ভারত বিভক্তিকে যৌক্তিক দাবী করলে ফিলিস্তিন বিভক্তি কোন অংশেই কম যৌক্তিক ছিল না। গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা হচ্ছে — ভারতের আদিবাসী হিন্দুরা সে অন্যায় বিভক্তি মেনে নিলেও মুসলমানরা কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত হয় নি। তারা কাশ্মীরকে কেড়ে নিতে সেই শুরু থেকেই যুদ্ধ ও সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। কাশ্মীর সফল হলে আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম প্রাধান্যের অংশ বিভাজিত করা। এবং তা একে একে চলতেই থাকবে।
তবে ভারত বিভক্তির সাথে বেশী মিল উঃ ও দঃ কোরিয়ার বিভক্তি কিংবা চীন ও তাইওয়ান বিভক্তি। উভয় ক্ষেত্রেই একটা ভিন দেশীয় সহিংস ও গণহত্যামূলক আদর্শের কারণে বিভক্তি ঘটে।
তবে ভারত ও ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে যে বিষয়টি বেশী প্রাসঙ্গিক সেটি হচ্ছে ইংরেজ ও মুসলিম দখলদারিত্ব। মুসলমানরা ফিলিস্তিনে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন চালিয়ে দখল ও রাজত্ব চালিয়েছে প্রায় ১৪’শ বছর। ইংরেজরা বাংলা দখল করে রাজত্ব চালিয়েছে ২শ বছর। সে হিসেবে মুসলমানরা বড় সাম্রাজ্যবাদী। ছোট সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজদেরকে আমরা দূর দূর করে তাড়িয়ে দিয়েছি। ইংরেজরা প্রত্যেক ইঞ্চি জায়গা আমাদের হাতে ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে। সেখানে ইহুদীদের আদি বাসভূম ফিলিস্তিনের ছোট একটা অংশে (১২%) ইহুদীদের জন্য একটা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের প্রস্তাব খুব একটা অন্যায় ছিল না। অবশ্য এটাও বিবেচ্য যে, ইউরোপে, বিশেষত জার্মানীতে, ১৮৭০-এর দশকে কমিউনিস্টরা (উইলেম মা’র প্রমুখ) জগন্য ইহুদী বিদ্বেষী প্রচারণা শুরু করলে তারা আদি বাসভূমে ফিরে আসা শুরু করে। এসময় মুসলিম বিশ্বে টিকে থাকা সামান্য ইহুদীদের উপর অত্যাচার বেড়ে গেলে তারাও ফিলিস্তিনে আশ্রয় নেওয়া শুরু করে, যেমন উত্তর আফ্রিকার মুসলিম দেশগুলো থেকে। তবে ফিলিস্তিন ভেঙ্গে আলাদা ইহুদী রাষ্ট্র বানানো তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। ১৮৯০-এর দশকে ইহুদীদেরকে ফিলিস্তিন থেকে উৎখাত করতে মুসলমানরা নির্মম সহিংসতা শুরু করলে ইহুদীদের জন্য আলাদা বাসভূমের ব্যাপারটি ধীরে ধীরে চাঙ্গা হয়ে উঠে।
সম্প্রতি প্রায় ১৫-২০ লাখ মুসলমান শরনার্থীর ভেগ ধরে ইউরোপে পাড়ি জমিয়েছে। ইউরোপের উপর মুসলমানদের কোনই দাবী দাওয়া নেই। বরং ইসলামের জন্মের প্রায় শুরু (৬৫২ সাল) থেকেই মুসলমানরা ইউরোপের উপর আক্রমণ, গণহত্যা, দখলদারিত্ব, সাম্রাজ্যবাদ চালিয়েছে। সে ১৫-২০ লাখ মুসলমানকে ইউরোপ থেকে বিতাড়িত করা কি ঠিক হবে? বিশেষত যদি তারা শান্তি ও সম্প্রীতিতে বসবাস করতে চায় ইউরোপে। সেটা অন্যায় হলে ৫ লাখ ইহুদী শরনার্থীকে ফিলিস্তিন থেকে বিতাড়িত করার জন্য মুসলমানদের সহিংস প্রচেষ্টা আরও বেশী অন্যায় ছিল।
জানুয়ারি ১৬, ২০১৮; ৭:৪০ পূর্বাহ্ন
@শ্রীশুভ্র মহাশয়, আপনার মন্তব্যের সাথে মোটেই সহমত পোষণ করা সম্ভব নয়। কারণ এই মন্তব্য কোন বিচারেই যৌক্তিক হতে পারেনা। বিশ্ব-রাজনীতির জ্ঞান থাকলে এমন মন্তব্য আপনি করতে পারতেন না। বাংলাদেশ থেকে ভারতবর্ষে এক্সাইল হওয়া হিন্দুদের উদাহরণ টেনে আপনি যা বলেছেন তা শিশুতোষ ধারণা। বাংলাদেশ থেকে ভারতে এক্সাইল হওয়া হিন্দুদের যদি সুপার পাওয়ার থাকতো তাহলে আর ভারতে এক্সাইল হয়ে বসে থাকতোনা কেউ। সুপার পাওয়ারের ক্ষমতা প্রয়োগ করে ঠিক ঠিকই স্বভূম বাংলাদেশে থাকতো তারা। ইসরায়েল আজ সুপার পাওয়ার হয়েছে বলেই তারা কিন্তু তাদের হারানো ভূমি পূনর্দখল নিতে পেরেছে। এখানে অন্য কোনো যুক্তিই টিকবে না, ক্ষমতা ও সামর্থই মূল।
জানুয়ারি ১৭, ২০১৮; ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন
ইসরাইলকে অনেকে মহাশক্তিধর পরাশক্তি মনে করে। বাস্তবতা সে রকম ইঙ্গিত দেয় না। নইলে তাদের পিতৃভূমি, তথা রাজা ডেভিড-এর রাজ্য — যার অন্তর্ভুক্ত ছিল আজকের জর্ডান (৮০%), ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড (গাজা ও পশ্চিম তীর) এবং ইসরাইল — তার পুরোটাই তারা পুনর্দখল করে নিতো।