জিহাদ সম্পর্কে যা জানা জরুরী

10 মতামত পাওয়া গেছে

প্রেমিক প্রেমিকার যে উদাহরণটি দিলেন তা সত্যিই দুর্দান্ত। প্রেমিকা এক সময় প্রেমিকের হাতে নিজেকে সপে দেয় পরিণতির কথা না ভেবেই। একজন সাধারণ মুসলমান ঠিক হুবহু একাজটিই করে থাকে, তারা জিহাদীদের মতাদর্শে নিজেদেরকে সপে দেয়। যে কারনেই উপরে উপরে সাধারণ মুসলমানরা যতই ওসামা লাদেন সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করুক না কেন , তলে তলে তাকে মহাবীর বা মহাপুরুষ মনে করে। তেমনি ভাবে জাকির নায়েকের বক্তব্য শুনে কিছু কিছু ইসলাম জানা মুসলিম যতই বলুক না কেন জাকির মিয়া ইসলামের অপব্যখ্যা করছে, তলে তলে তাকে বিশাল পন্ডিত ও ইসলামের মহাপ্রচারক জ্ঞান করে। এভাবেই সাধারন মুসলমানরা নিজেদের সাথে প্রতিটা মুহুর্তে প্রতারণা করে চলে। এরও কারন হলো- তাদের মনের গহীনে দৃঢ় বিশ্বাস ইসলাম হলো একমাত্র সত্য ধর্ম।

    আসলে মুসলিমরা বোঝেই না যে তারা ভিক্‌টিম। অদ্ভুত ভাবে তারা পরিচালিত হচ্ছে। বুঝেও বোঝেনা। জানেন , একদিন কোন এক প্রসঙ্গে রাতে শুয়েও এই কথাটাই ভাবছিলাম, তখনই এই লেখার খসড়া তৈরি করেছিলাম।

ইসলামকে অনেকদিন ধরেই গভীরভাবে দেখে যাচ্ছি। আত্মীয় স্বজন সবাইকেই খুব ভালোভাবে খেয়াল করি। ইসলাম প্রশ্ন সবাই যেন আ্ডেনন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগে। পরকাল নিয়ে সবাই খুব চিন্তিত। আমার আপা আর দুলাভাই দুজনেই খুব নিষ্ঠাবান মুসলিম।আপা এককাঠি বেশী। এমনিতে তেমন কিছূ গোড়াঁমি নেই। পরকালে কি সুযোগ আছে আপার জন্য এইটা বলতে পারলে ভাল হতো। দেখি সুযোগ বুঝে একদিন বলতে হবে।

জেহাদী মনোভাব প্রত্যেক কলেমা বিশ্বাসী মুসলিমের মনে বিরাজমান। ইসলামের কিছু হয়েছে, এই কথা শুনলে আর ঘরে থাকা যায় না। মানবতাকে ইসলামের উপরে কখনই এরা তুলে ধরতে পারেনা, আফসোস। এখান বছর দুই আগে আমার ব্লগে রোজার সময় একজন পোস্ট দিয়েছিলেন জরুরী রক্ত প্রয়োজন বলে। লোকও পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি রাজি হলেন না রোজা ভেঙে যাবে বলে!! পরে সেই ব্লগার ধর্মের প্রতি একটু বীতশ্রদ্ধ হয়েছিলেন এই উদাহরনে।

মানবতাকে উপরে তুলে ধরতে সব ধর্মই ব্যর্থ। তবে যুগের সাথে সাথে অন্য ধর্মগুলো কিন্তু নিজেদের বদলাচ্ছে। এখন প্রচুর উদাহরন পাওয়া যাবে যেখানে ধর্মকে অগ্রাহ্য করে মানবতার ডাকে সাড়া দিয়েছেন অন্য ধর্মের মানুষ। কিন্তু ইসলামী বিশ্বাসী মানুষের ক্ষেত্রে এমনটি দুর্লভ হয়ে যাচ্ছে, স্বীকার করতেই হবে।

    ঠিক বলেছেন! কিন্তু মানবতাকে তুলে ধরতে কোন ধর্মই সফল নয় বা ব্যর্থ, সেটা কথা না। আসল কথা হল, তারা মানবতাকে তুলে ধরতে চেয়েছিল কীনা। কিংবা সেইসময় মানবতার পরিভাষা সেটাই ছিল কীনা! ইসলাম তার উদ্দেশ্যকে ফুলফিল করতে ইসলামকে এত ক্লোজড একটা ধর্মতে রূপদান করেছে যে, তার দরোজা অন্যদের জন্য সর্বদায় বন্ধ।

ইসলামি জিহাদ নিয়ে আজকাল প্রচুর লেখা দেখা যাচ্ছে। আপনার লেখাটি একেবারে মৌলিক এবং সম্পূর্ণ নতুন আঙিকে। লেখা পড়ে সত্যিই অনেক কিছু জানলাম–বিশেষতঃ সার্ত্রের অভিমত এবং তুলনা। আমি আজ পর্যন্ত কোরানের কোথাও দেখি নাই যে নবি বলেছেন–জিহাদ বিভিন্ন ধরণের- কোরানের কোথাও লেখা নাই যে জিহাদের অর্থ ভালভাবে পড়াশোনা করা, সার্থকভাবে কম্পুটার শেখা…অথবা বাড়ির বাগানের ঘাস কাটা। কিন্তু উদারপন্থী সাধারণ মুসলিমরা মনে করে যে, মনের মধ্যেকার অসৎ প্রবৃত্তিকে ধ্বংস করতে সংগ্রামই আসলে আল্লাহ-র পথে সংগ্রাম। দেখুন, আল্লাহ্‌ পাক কী লিখেছেন কোরানে। এই ধরণের আরও অনেক আয়াত কোরানে আছে। কোরানের কোথাও লেখা নাই যে জেহাদ হচ্ছে মনের মন্দের সাথে ভালোর যুদ্ধ করা।

৪:৭৪ কাজেই আল্লাহ্‌র কাছে যারা পার্থিব জীবনকে আখেরাতের পরিবর্তে বিক্রি করে দেয় তাদের জেহাদ করাই কর্তব্য। বস্তুতঃ যারা আল্লাহ্‌র রাহে লড়াই করে অতঃপর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদেরকে মহাপুণ্য দান করব।

এদিকে ইবন কাসিরের কোরানের ব্যাখ্যা থেকে পরিষ্কার হয় যে জেহাদের অর্থ হচ্ছে অমুসলিম এবং মন্দ-মুসলিমদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম চালানো–অর্থাৎ মার এবং মর–রক্তপাত করো।

@আবুল কাশেম, ধন্যবাদ ! আসলে সার্ত্র অনেক অনেক অনুভবী দার্শনিক। আমি উনার দ্বারা দারুন প্রভাবিত! যখনি কোন কিছুর ব্যাখ্যা খুঁজি, সার্ত্র এর দর্শনে সেই ঘতনার কি ভাষ্য হতে পারে, একবার অন্তত ভেবে দেখি! ব্যাক্তি স্বাতন্ত্রবাদী দার্শনিক হিসাবে উনি আমার খুব পছন্দের একজন।

সার্ত্রের শুধু নামই শুনেছি। উনার দর্শন ব্যাপারে আমার কোন জ্ঞানই নেই। উনি কী ফরাসি না জার্মান?

আসলে সার্ত্র অনেক অনেক অনুভবী দার্শনিক। আমি উনার দ্বারা দারুন প্রভাবিত!

সার্ত্রের কোন লেখা (মানে বই) আপনার চিন্তাধারাকে এত বিপুলভাবে প্রভাবিত করেছে?

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও তার অব্যবহিত পরবর্তী সময়ের ফরাসী দার্শনিক ছিলেন জাঁ পল সার্ত্র। ইনি একজন বিখ্যাত নাত্যকার ও উপন্যাসিক। অবশ্য সেগুলি তার দর্শনের উপরেই বাস্তব রুপদান। । তার দার্শনিক গ্রন্থ ‘being and nothingness’ , ‘existentialism and humanism’ এই বই দুটো আমার পরা। দ্বিতীয়টার অনুবাদ ও বাংলাদেশে পাওয়া যায় শুনেছি। আর এর আর একটি পরিচয় এ হল মহিলা দার্শনিক সিমঁ দ্য বুভয়া , যিনি the secend sex ( এই বইটির অনুবাদ মনে হয় ডঃ হুমায়ুন আজাদ করেছেন)নামক একটি ক্লাসিক নারী ও নারীবাদী দর্শনের বই লিখেছেন। এর সারা জীবনের প্রেমিক। এদের জিবনী যত পরবেন অবাক হবেন। এরা কেউ কাউকে কখনো প্রতারিত করেন নি সারা জীবনে। আবার বিয়েও করেননি। ভাবছেন লিভ তুগেদার , সেতাও করেন নি। কিন্তু সারা জীবন তারা প্রেমে অটুট থেকেছেন!

      অনেক ধন্যবাদ–ব্যাপারটা পরিষ্কার করার জন্য। যা বুঝলাম তা এই প্রকার–ভুল হলে সংশোধণ করে দিবেন। জাঁ পল সার্ত্র ছিলেন একজন পুরুষ, আর সিম দ্য বুভয়া একজন মহিলা। দুই জনই ছিলেন ফরাসি। দুজনই একে অপরকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালবাসতেন–যদিও বিবাহ হয় নাই, বা একসাথে থাকা ছিল না।
      এই ধরণের প্রেম সত্যই অপূর্ব–অনেকে এই ধরণের প্রেমকে প্লাটনিক প্রেম বলে থাকেন। আপনার প্রস্তাবিত বইগুলো খুঁজবো। বইগুলো কী খুব লম্বা নাকি? কারণ আমি কিন্তু শম্বুক গতিতে পড়ি। একটা মাঝারি সাইজের বই পড়তে অনায়াসে দুই থেকে তিন মাস লেগে যায়। তারপর বুঝতে লাগে আরও অনেক দিন।

      না না আপনি ঠিকই বুঝেছেন। বইগুলো ছোটই। কিন্তু বুঝতে সময় লাগে।


আপনার মতামত দিন

আপনার ই-মেইল অ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।