০
১০৭৬ বার পঠিত
ইসলাম শান্তির ধর্ম কথাটা প্রমাণ করার জন্য মমিনদের খুব কমন একটা আয়াত আছে। যেইখানে বলা হইছে, “এ কারণেই আমি বনী-ইসলাঈলের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবাপৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। এবং যে কারও জীবন রক্ষা করে, সে যেন সবার জীবন রক্ষা করে। তাদের কাছে আমার পয়গম্বরগণ প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী নিয়ে এসেছেন। বস্তুতঃ এরপরও তাদের অনেক লোক পৃথিবীতে সীমাতিক্রম করে।” (সুরা মায়েদা – ৩২)
শুনতে খুবই সুন্দর লাগে। আলাদা করে শুনলে মনে হয় আসলেই তো কুরানে কত ভালো কথা বলা হইছে, কত প্রেমের কথা বলা হইছে। আর নাস্তেকেরা কুরান না বুইঝা, কোন খালি এর বিকৃত মানে বের করে। কোন কনটেক্সটে কি বলা হইছে তা না জাইনাই খালি সিঙ্গেল আয়াত দিয়া ধইরা কুরানের ভুল মানে বের করে। ওয়েল, কনটেক্সট বুইঝা পড়লেও যে মোডারেট মুসলিমদের পছন্দের এই আয়াত যে আসলে কতটা মানবতাবাদী তা পুরা সূরা পরলেই বুঝবেন।
সুরা মায়েদার শুরু হইছে হজ্ব এর ইহরাম এবং কুরবানির ব্যাপারে কথা দিয়া(৫ঃ১-২)। হালাল হারাম খাবার (৫ঃ৩-৪), হালাল হারাম(৫ঃ৫) মেয়েসেলে, ওযু(৫ঃ৬) নিয়াও গোটা দুই কথা হইছে। কাহিনী হইল, সে সময়ে আরবের গোত্র গুলার মধ্যেঝামেলা লাইগাই থাকত আর ইসলামের ছায়াতলে আসার পরেওঝামেলা ছিল(৫ঃ৮)। এই দিকে হজ্বের মৌসুম ছিল কুরাইশদের টেকাটুকা কামানোর মৌসুম এবং যে কোন ভালো ব্যাবসায়ীর মত মুহাম্মাদও বুঝত যে গ্যাঞ্জাম ইস নট গুড ফর বিজনেস।
কিন্তু আরবেরা ছিল আসলেই বর্বর, ডাকাত। তাদের কন্ট্রোল করাটা খুব একটা সহজ ছিল না। তাই কুসংস্কারাচ্ছন্ন আরবদের কন্ট্রোল করার জন্য কুরানের আয়াত ডাউনলোড দেওয়া ছাড়া মুহাম্মাদের আর কোন উপায় ছিল না।
সেইকারণেই মুহাম্মাদ ইনায় বিনায় নানা ভাবে যীশু মুসা টাইনা আইনা সব এক কইরা গাড়ল আরবদের বোঝানোর চেষ্টা করছে যে হজ্বের সময়ে গেঞ্জাম করা ভালো না। মায়েদার ৩০ নাম্বার আয়াতে আছে, “অতঃপর তার অন্তর তাকে ভ্রাতৃহত্যায় উদুদ্ধ করল। অনন্তর সে তাকে হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।”
এখানে মূলত বলা হইছে বনী ইসরায়েলেরা যাতে নিজেদের মধ্যে খুনা খুনি না করে। উদাহরণ হিসাবে আদমের দুই ছেলে হাবিল কাবিলকে টাইনা ভাইয়ে মারামারি খুনাখুনি করা ঠিক না সে কথাই বলার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই কথার ধারাবাহিকতায় ৩২ নাম্বার আয়াতে সো কল্ড মানবতার কথা বলছে যা আসলে বনী ইসরাইল তথা মুসল্লিদের উদ্যেশ্যে, সমগ্র মানবজাতির কথা মিন কইরা না।
এখন আপনেরা বলতে পারেন যে কেমনে আমি বুঝলাম যে সেই আয়াতে সমগ্র মানবজাতির কথা বুঝানো হয় নাই। তাইলে পরেন তার ঠিক পরের আয়াত। “যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।”
সো মাচ ফর দ্যা রিলিজন অফ পিস আর মানবতা এবং এন্ড অব ডিসকাশন।
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন