০
১৪৪১ বার পঠিত
তসলিমা নাসরিন বড় দুঃখ করে ঢাউস এক লেখা লিখেছেন সামাজিকমাধ্যমে। যে লেখার মোদ্দাকথা হলো, ক্রিকেটার মঈন আলী’র বিরুদ্ধে টুইট করায় সবাই তার বিপক্ষে বলেছেন, তাকে এক অর্থে ছিড়ে খেয়েছেন। তার বাকস্বাধীনতা নাকি বিঘ্নিত হয়েছে। তার সেই লেখাকে তিনি ঐতিহাসিক বলে দাবি করেছেন। তার দুঃখ তার সেই ঐতিহাসিক লেখাও কোনো মাধ্যম প্রকাশ করেনি। আশ্চর্য, না করার তো কথা নয়। বিশেষ করে বাংলাদেশে তসলিমার এরচেয়েও অখাদ্য লেখা প্রকাশ হয়েছে। কোনো কোনো মাধ্যম আগ্রহ নিয়ে যত্ন করে তা প্রকাশ করেছে।
আমার ফাজিল টাইপ এক বন্ধু আছেন, তিনি শুনলে বলতেন, ‘রাখো, আগে হেসে নিই’। আমি সিরিয়াস হয়ে লিখতে বসেছি, তাই আমার হাসিটাসি মানা। যাহোক, তসলিমার সেই ঐতিহাসিক লেখাটাকে এক লাইনে খারিজ করে দেয়া যায়। কোর্ট যেমন শুনানির জন্য অগ্রহণযোগ্য বলে কোনো আবেদন খারিজ করে তেমনি।
তসলিমা সারাজীবন মানুষকে গালি দেয়া থেকে শুরু করে বিরুদ্ধাচারণের জন্য যা করা দরকার সব করেছেন। তিনি যাকে অপছন্দ করেছেন, তাকে যৌন নিগৃহকারী বলতেও বাধেনি। সুনীল থেকে শামছুল হক কেউ বাদ যাননি। এ সবই তার বাকস্বাধীনতার অংশ ছিলো। অথচ তার কথার বিরুদ্ধে, যা অন্যদের পছন্দ হয়নি, তা নিয়ে কথা বলতে গেলেই সমস্যা। সে মঈন আলী’কে আইসিস বলেছে, তার বিপরীতে কেউ তাকে নিরীহ একটি প্রাণির নামেও আখ্যা দিতে পারবে না। ছাগল বলতে পারবে না!
যাকগে, আমি তাকে সাহস করে রামছাগল বললাম। ‘রাম’ মানে বড়, আর ছাগল তো ছাগলই। তসলিমাকে বড় কিছু ছাড়া মানায় না। এই লেভেলের মূর্খের জন্য ছাগলের সমুখে ‘রাম’ অবশ্যই বসাতে হয়।
ওহ, আরেকটি কথা। তসলিমা বলেছেন, মঈন আলী’র বিরুদ্ধে করা তার টুইটটি সারকাজম ছিলো। আমার ফাজিল বন্ধুটি থাকলে আবার হেসে উঠতেন, বলতেন, ‘তসলিমা নিজেই তো একটা সারকাজম’। সুতরাং তার এই লেখাটি মাধ্যমগুলো যেন প্রকাশ করে। প্রয়োজনে সেই টুইটের মতন না হয় ডিলিট করে দেয়া যাবে। তারপর এটাকেও সারকাজম বলে চালিয়ে দেবেন। নাকি?
তসলিমার দুঃখ, তার অধিকার বিষয়ক লেখাগুলো এই টুইটের মতন ছড়ায়নি। ছড়ানোর কারণ তো নেই। তিনি সব সময় সুবিধাবাদের পক্ষে কাজ করেছেন। যখন দেখেছেন গো রক্ষকদের বিপক্ষে মত বেশি তখন তিনি নিহত মুসলমানদের পক্ষে বলেছেন। যখন দেখেছেন গো রক্ষকদের পক্ষে গেলে ফায়দা বেশি, এখন যেমন তিনি ইনিয়ে বিনিয়ে তাদের পারপার্স সার্ভ করছেন।
তসলিমা সবসময়ই ফায়দার স্রোতে থাকতে চেয়েছেন, আলোচনায় থাকতে চেয়েছেন। আর আলোচনায় থাকাই মানে ফায়দায় থাকা। আর মুসলিমদের বিপক্ষে তার গলা এবং লেখা সবসময়ই ভোকাল ছিল। কারণ এতে ফায়দা বেশি। সেটাই তিনি করতে গিয়েছিলেন মঈন আলী’র বিরুদ্ধে টুইটের মাধ্যমে। কিন্তু এখন বিশ্ব পরিবর্তিত হচ্ছে, ধারণার পরিবর্তন ঘটছে। ইসলাম বিরোধীতায় আর তেমন ফায়দা পাওয়া যাচ্ছে না। বরং মুসলমানরা যে নির্যাতিত হচ্ছে, এই মত ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। সে অর্থেই মঈন আলী’র বিরুদ্ধে করা টুইটটি ব্যাকফায়ার করেছে। না করার কারণ নেই। ধান্ধাবাজিরও একটা সময়সীমা আছে এবং তা শেষ হতে চলেছে। তসলিমার করুণ আর্তি তারই প্রমাণ।
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন