ধর্মের রাজনীতি ও আধুনিক সভ্যতা

1 মতামত পাওয়া গেছে

অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক আলোচনা। লেখকের সাথে সম্পূর্ণ একমত হয়ে বলতে পারি, এই আলোচনার সাথে কে একমত হবেন বা ভিন্নমত পোষণ করবেন সেটা তত বড়ো বিষয় নয়, যতটা বড়ো বিষয় এই আলোচনাতে ইতিহাসের সঠিক বিশ্লেষণটই উঠে এসেছে। বর্তমান বাংলাদেশের বিষয়ে এটা অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথেই বলতে চাই, যতদিন বাঙালি ধর্মের মোহে নিজেকে হতবুদ্ধি করে অজ্ঞান করে রাখবে, ততদিন বাংলাদেশ কখনোই বিশ্বসভায় সামনের সারিতে পৌঁছাতে পারবে না। দেশে কটি হাইরাইজ আছে, কটি উড়ালপুল আছে, কত মানুষ ইনটারনেট ব্যবহার করছে প্রধান নগরীর জমির দাম কতটা আকাশ ছোঁয়া, এইসব তথ্যের উপর দিয়ে কোন দেশর উন্নতি নির্ভর করে না। এই উন্নতি কি করে সম্ভব হয়, সেটিই মূল আলোচনায় লেখক অত্যন্ত বলিষ্ঠ ও তথ্যনিষ্ঠ ভাবে দেখিয়েছেন। সেই সাথে আরও একটি বিষয়ে আমাদের খেয়াল রাখা উচিৎ, মার্কীন যুক্তরাষ্ট্র তার নিজের স্বার্থে কিভাবে বিশ্বরাজনীতিকে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রণ করে। আর সেই স্বার্থের প্রয়োজনেই যখন যে দেশটিকে যেরকম ভাবে নিয়ন্ত্রনের দরকার পড়ে তার, তখনই সেই দেশের উপর সে সর্বাত্মক ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু এই সর্বাত্মক ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে বহু বছর ধরেই সে আগাম প্রস্তুতি নিতে থাকে। ২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্বরাজনীতির সাথে যোগ থাকলেই এই মহাসত্যটকু উপলব্ধি করতে পারবো আমরা। এইকথা বলার কারণ একটিই, আজকে বাংলাদেশে যে মৌলবাদের উত্থান হচ্ছে ধীরে ধীরে, তার পেছনে পেন্টাগণের একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশকে ধীরে ধীরে আফগানিস্তানে পরিণত করে তুলতে পারলেই একদিন গণতন্ত্র রক্ষার অজুহাতে মৌলবাদ ধ্বংসের অজুহাতে বাংলাদেশে ইউএস মেরিন নামিয়ে দেওয়া সহজ হবে। আর তাহলেই চীনের নাকের ডগায় মিসাইল বসিয়ে চীনকে বাগে রাখার কাজটিই সম্পূর্ণ হবে। এখন মার্কীণ যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্দেশ্য সাধনের জন্যেই আজকের বাংলাদেশে ইসলামী মৌলবাদের আমদানি করা হয়েছে। এই কারণেই ব্লগার নিধন, হেফাজতি সমস্যা ইত্যাদি। এইগুলিই হলো সেই বেসিক প্রস্তুতি। কিন্তু এই দেশটি এই প্রস্তুতি নিতে পারছে যে, তার একটাই কারণ, বাঙালির সমাজ বাস্তবতায় ধর্মের সাথে রাজনীতির ও রাষ্ট্রব্যবস্থার ওতপ্রতো ভাবে জড়িয়ে থাকা। আমাদের রাষ্ট্রতন্ত্র রাজনীতি থেকে ধর্মকে যদি পৃথক করা যেত, তাহলে মার্কীণ প্রভুরা এত সহজে আমাদের ভুখণ্ডে তাদের নীলনকশার আমদানী করতেই পারতো না। শামসুজ্জোহা মানিকের এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাটির মূল প্রাসঙ্গিকতাই এইখানে। জাতি বুঝতে পারলে ভালো। নয়তো কপাল পুড়তে দেরি নাই বাংলাদেশের।


আপনার মতামত দিন

আপনার ই-মেইল অ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।