৬
১৯২৩ বার পঠিত
অনেকবারই নিজেকে প্রশ্ন করি, এই ‘সত্য‘ কিংবা ‘মিথ্যা‘ অথবা ‘সত্য ও মঙ্গলময় হোক‘ এসব কথার ভিত্তি কী?
আমার জিজ্ঞাসা-
ক. ‘সত্য’ কী? ‘সত্য’ সম্পর্কে কীভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়?
খ. সত্য নিশ্চিত ও নির্ধারণের বৈজ্ঞানিক ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি কী? কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে সত্য নির্ধারণ হয়?
আমার মতে ‘মঙ্গলময়‘ বিষয়টা আপেক্ষিক, এটা কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে না। একজনের কাছে যা মঙ্গলময় তা অন্যের কাছে অমঙ্গলময় হতে পারে। যেমন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি’র কাছে গোরক্ষা আন্দোলন মঙ্গলময় হতে পারে আবার অন্যদের কাছে সেটা অমঙ্গল হতে পারে। এক্ষেত্রে ‘মঙ্গলময়’ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে কোন পদ্ধতিতে? কে নির্ধারণ করবে এই মঙ্গলময়?
বিজ্ঞানময় এই পৃথিবীতে কোন কিছুরই ‘চূড়ান্ত’ ও ‘একমাত্র’ বলে কোনোকিছু নেই। তেমনি উপায় নেই কোনো একটি পথের সবকিছুকে চূড়ান্ত সত্যমিথ্যা নিরুপণের। আজ যা সত্য আগামীকাল তা মিথ্যা হতে পারে, তেমনি আজ যা মিথ্যা আগামীকাল তা সত্য হতে পারে; এটাই বিজ্ঞানের নিয়ম।
অনেকে বলেন এটা ‘সত্য’ কিংবা ‘চূড়ান্ত সত্য’, এখানেও একটা ফাঁকি রয়ে যায়। সত্য এবং চূড়ান্ত সত্যের মাঝখানে একটা বিভাজনরেখা কিংবা দূরত্ব বিদ্যমান। সত্য যদি আসলেই সত্য হয়ে থাকে, তাহলে সেটাকে চূড়ান্ত সত্য বলার অর্থ সত্য’র মধ্যে ত্রুটি আছে বা ছিল; তাই ‘চূড়ান্ত সত্য’ বলে আগের সত্যকে খারিজ করে দেয়া হয়। অর্থাৎ এখানে সত্যর কোন চূড়ান্তরূপ পাই না।
অর্থাৎ সত্যমিথ্যা বলে কিছু নাই, বিকল্প শব্দ হিসেবে থাকা উচিত ‘গ্রহণযোগ্যতা’। বলা যেতে পারে ‘অমুকের গ্রহণযোগ্যতা কম বা বেশি’।
অর্থাৎ সত্য বলে কোনো কিছুই নেই। সত্য একটি মানসিক ধারণামাত্র।
লালন শাহ’র ভাষায়-
সত্য বল সুপথে চল
ওরে আমার মন।
সত্য সুপথ না চিনিলে
পাবিনে মানুষের দরশন।
খরিদ্দার মহাজন যে জন বাটখারাতে কম
তারে কসুর করবে যম।
গদিয়ান মহাজন যেজন
বসে কেনে প্রেমরতন।
পরের দ্রব্য পরের নারী হরণ করোনা
পারে যেতে পারবে না।
যতবার করিবে হরণ
ততোবার হবে জনম।
লালন ফকির আসলে মিথ্যে
ঘুরে বেড়ায় তীর্থে তীর্থে।
সই হলো না একমন দিতে
আসলেতে প’লো কম।
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন
ডিসেম্বর ৭, ২০১৭; ৬:৪১ পূর্বাহ্ন
চিরন্তন সত্য বলে কিছু নেই। কেউ বলবে, মৃত্যু সত্য, জীবন একটা ধাঁধাঁ, আমরা সবাই মৃত্যুর দিকে এগোচ্ছি। আবার কারো মতে মৃত্যু কোথায়, মৃত্যু একটা চিন্তা মাত্র। মানুষ তো মরে না, তাই জীবনটাই সত্য।
কবি বলেছেন, “সেই সত্য যা রচিবে তুমি”। আপনার মনে যা সত্য বলে প্রতীতি হয়, সেটাই আপনার জন্য সত্য। আপনার জীবনাচরণ দিয়ে আপনি যে সত্য প্রতিষ্ঠা করে যাবেন কেবল তারই কিছু মানে আছে, বাকি সব কেবলই বাগাড়ম্বর।
দার্শনিক হেগেল বলেছেন, যা কিছু টিকে যাবার ক্ষমতা রাখে তাই সত্য। সুতরাং যেসব বিষয় সুদূর অতীত থেকে আজ অবধি টিকে আছে তার মধ্যে কিছুটা সত্য আছে।
ডিসেম্বর ৭, ২০১৭; ৮:৫৮ পূর্বাহ্ন
মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ নাজিম ভাই।
আমি সত্য জিনিশটাকে বোঝার চেষ্টা করছি, কিন্তু পারছি না। সত্য আসলেই কঠিন।
ডিসেম্বর ৭, ২০১৭; ৮:৪৩ পূর্বাহ্ন
সন্ধি ভাই, ব্লগজগতে আমার প্রিয় মানুষগুলোর মধ্যে আপনিও একজন। আপনার সাহসকে আমি পছন্দ করি। কিন্তু মাঝে মাঝে খেয়াল করে দেখেছি আপনি আধ্যাত্মিক জগতের হয়ে যাচ্ছেন। মানুষের চিন্তা ও মনোজগতের বিষয়টা আসলেই রহস্যজনক।
আজকের লেখাটা পড়ে মনে হলো আপনি ধর্ম, গান বাজনা ছেড়ে সম্ভবত মানুষের জীবন নিয়ে বেশি চিন্তাভাবনা করছেন। আমার ধারণা ভুল না হলে আপনার ভাবনারই বহিঃপ্রকাশ এই লেখাটা। একটু দার্শনিক টাইপের মনে হচ্ছে লেখাটা। সত্য আসলেই কঠিন বিষয়। সত্যভাবনা সামনে এনে আমাকেও চিন্তায় ফেলে দিলেন।
ডিসেম্বর ৭, ২০১৭; ৯:০৩ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশে নিউজ মিডিয়ার যে ক’জন সংবাদকর্মীর সাথে আমার জানাশুনা আপনি তাদের মধ্যে ব্যতিক্রম। আপনাকে পছন্দ করি বলেই হয়তো আমাকে খুশি করার জন্য এই মন্তব্য করেছেন। কারণ আমি জানি আমি কতো ভীতু, ভীতু বলেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে এসেছি। যাই হোক বিশ্বজগতের অনেককিছু নিয়েই মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে, মানুষ সে উত্তর খোঁজার চেষ্টা করে। আমিও আমার মনের প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি অনবরত। কিন্তু বাস্তবতা হলো সত্যানুসন্ধান করতে গিয়ে সত্যের দেখা মিলছে না।
ডিসেম্বর ৯, ২০১৭; ৯:১১ অপরাহ্ন
একটা গভীর অর্থপূর্ণ বাংলা প্রবাদ — ‘নানা মুনীর নানা মত’। একই বিষয়ে নানান জনের নানান মত এবং যার যার নিজস্ব মতই তার কাছে সত্য। কাজেই কোন বিষয়েই অতি-উৎসাহী হওয়া অনুচিত। কেননা তা পরিণামে অনাচার, বিপর্যয় টেনে আনে। সুবিচার ও মানবতার নামে কমিউনিস্টদের বর্বরতা, গণহত্যা তো আমাদের চোখের সামনেই ঘটে গেল।
ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭; ৬:০২ পূর্বাহ্ন
আপনি কমিউনিজমফোবিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গেছেন মনে হয়। 😀 😀 😀