নরেন্দ্র মোদি মানেই কী রক্তপাত। শুরু সেই গোধরা হত্যাকাণ্ড দিয়ে। এরপর একে একে কাশ্মীর-আসাম-নতুন দিল্লী-এলাহাবাদ; মুসলমান বিদ্বেষী হিংস্র হিন্দুত্ববাদের খলনায়ক মোদি তার হাত রক্তে রঞ্জিত করে চলেছেন গোটা ভারত জুড়ে। এখন তার শ্যোন দৃষ্টি পশ্চিমবঙ্গের দিকে। অসাম্প্রদায়িকতার উদার জমিন কলকাতায় মোদির ভূত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশে ৫০ তম স্বাধীনতা দিবসে আমন্ত্রিত হয়ে; বাংলাদেশকে মোদি বেছে নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বিজয়ের স্ট্র্যাটেজিক নির্বাচনী প্রচারণার প্রক্সি ফিল্ড হিসেবে।
এইখানে ‘ধর্ম নিয়ে পুতুল নাচের ইতিকথায়’ হিন্দুদের জীবন বিপন্ন করে মুসলিম ঘৃণা উদগীরণের কারখানা বসিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদ ও কট্টর ইসলামপন্থার রসুনের গোড়াটিতে। শাল্লায় আল্লার ভীতি তৈরির কাজ কিংবা হিন্দু পরিবারের কাছে ইসলাম ধর্মগ্রহণের আহবান জানিয়ে চিঠি বিতরণ; এসবের যে টাইমিং; এই যে পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন সামনে রেখে; বাংলাদেশের মুসলমানদের রাক্ষস হিসেবে তুলে ধরার যে হিন্দুত্ববাদী প্রয়াস; এর আগেও আই এস জঙ্গী নামধারী বিজেপি কর্মী বাংলাদেশে গ্রেফতার হওয়া; এসবের মাঝে খুঁজে পাওয়া যায়; হিন্দু ভারত রচনার জ্বালানী মুসলিম বিদ্বেষ বাংলাদেশে উতপাদনের এই যে ভূত নৃত্য; এগুলো এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। হেফাজত শাল্লায় আল্লার ভীতি রচনার কাজটি আওয়ামী নামধারী কিছু শিবসেনার সঙ্গে হাতে হাত লাগিয়ে করেছে; এরপর শাল্লায় গেছে মিলমহব্বতের নাটক করতে। তারপর মোদির সফরের মৃদু প্রতিবাদের লোকদেখানো নাটক করেই; পরক্ষণে ‘যেমনে নাচাও তেমনে নাচি’ স্টাইলে বলেছে, মোদির আগমনের বিরুদ্ধে আর প্রতিবাদ নয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি যেমন বলেছেন, …”ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে এত বিরোধিতা কেন? এরা সেই পাকিস্তানের পরাজিত শক্তি যারা পাঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর বাংলাদেশে কথিত ভারতের বিরোধিতার নামে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বুনেছিল। যারা এদেশে জঙ্গির উৎত্থান করেছিল। এখন সময় এসেছে এদের বিরুদ্ধে ঐক্য করার।” উল্লেখ্য যে, এই হানিফ প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনে ডার্ক হ্যান্ডশেক করে জামায়াতে ইসলামির সদস্যদের আওয়ামী লীগে বরণ করেছিলেন।
মায়ানমারে বিপন্ন মুসলমানের মুখের ওপর সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে মায়ানমার জান্তার গণহত্যার সহযোগী হবার পালকও রয়েছে মোদির মুকুটে। শুধু মুসলমানই নয়; আসামের হিন্দুরাও মোদির কনসেনট্রেশান ক্যাম্পে মারা গেছে; লাখ লাখ মানুষকে কলমের খোঁচায় দেশহীন করে; বাংলাদেশের নাকের ডগায় লাখ লাখ ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রত্যাখাত মানুষ পুশ ইনের ভীতি ঝুলিয়ে রেখে; মোদি তার বাংলাদেশ সন্নিহিত ভারতীয় রাজ্য শাসনের প্রক্সি তখত বসিয়েছে ভাওয়ালপিণ্ডিতে। এ ছাড়া একটি মন্দির পরিদর্শনে যাচ্ছেন মোদি; যেটি জামাতের মগবাজারের মতো শিবসেনার গেরুয়াবাজার।
রক্তপিপাসু মোদি মানবতাবিরোধী অপরাধী; আমরা জানিনা আর কত রক্ত পিপাসা তার। ঢাকায় প্রগতিশীল উদারপন্থী মানবতাবাদী তারুণ্য মোদির এই বাংলাদেশ মৃগয়ার প্রতিবাদ জানালে; ঢাকার রাজপথে তাদের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে হাতে শিবসেনার ফিতাবাঁধা মোদির মেল স্ট্রিপার, প্রকাশ্যে বিজেপির পেশী প্রদর্শন করতে গিয়ে বজরং ওয়ালার জেনিটাল পার্ক প্রদর্শন চোখে পড়ে। মোদির সমর্থক এই রক্তপিপাসুরা নিষ্কৃতি দেয়নি দেবকিশোরীদের; আদরনীয় কন্যা সন্তানদের। বাংলাদেশের কন্যা সন্তানের গায়ে হাত তুললে কী পরিণতি হয়; তা জানে পাকিস্তানের একাত্তরের কট্টর ইসলামপন্থী সেনারা। কাজেই ভারতের এই দুই হাজার একুশের কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের প্রস্তুত হতে হবে; বাংলাদেশ কন্যার মুখমণ্ডল থেকে ঝরে পড়া প্রতিটি রক্তবিন্দুর দাম চুকাতে।
ত্রিকালদর্শী কবি আবুল হাসান তাঁর “কুরুক্ষেত্রে আলাপ” কবিতায় লিখেছিলেন, “ভারতীয় যুদ্ধের উৎসবে আজ এই শুধু আমাদের
ধনুক ব্যবসা,আমি জানতাম, হে অর্জুন,- আমি ঠিকই জানতাম!”
ফিরে যাও মোদি; অসাম্প্রদায়িক ভারতের হত্যাকারী; অসংখ্য ফুলের পাঁপড়ির মতো নিষ্পাপ স্বপ্ন পায়ে দলে যাওয়া ধর্ম-রাক্ষস; নরেন্দ্র মোদি! ফিরিয়ে নাও তোমার গেরুয়া আর ত্রিশূলের রক্তপিপাসু ঘাতক কাঁটা।
(Photo: While protesting against Modi’s upcoming Dhaka visit, progressive student activists were violently attacked by hardcore Modi supporters in Dhaka. The attackers claimed to be part of the student wing of Bangladesh Awami League.)
ছবিঃ ঢাকা; ২৩-৩-২০২১, মোদির আসন্ন ঢাকা সফরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকালে প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের উপর কট্টর মোদি সমর্থকরা সহিংস হামলা চালায়। হামলাকারীরা বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের ছাত্র সংগঠনের অংশ বলে দাবী করা হয়।