বাঙালিদের মধ্যে প্রচলিত স্টিরিওটাইপ

5 মতামত পাওয়া গেছে

এতদিনে মুসলমানের অন্দরমহল দেখতে পেলুম

ইসলামে অন্দরমহলের ব্যাপারটি সেই গোড়াতেই নবী (সঃ) প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। কোরানের বিধানও সেটাই। কিন্তু মুসলমানদের আগমনের পর হিন্দু সমাজ যে অনুরূপ এবং আরও জঘন্য ধরনের অন্দরমহল প্রথা গড়ে উঠে, তা খুবই বেদনাদায়ক। নবী ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে যখন মারা গেলেন, ঠিক সেই ৬৩২ সালে এক চীনা বৌদ্ধ তীর্যযাত্রী লালন্দায় এসে প্রায় ২০ বছর কাটান। তিনি বলে গেছেন নালন্দায় ছেলে-মেয়েরা পাশাপাশি পড়াশুনা করতো। অথচ ইংরেজরা আসার পর পশ্চিমা মহিলারা ধীরে হিন্দু মহিলাদেরকে শিক্ষা-দীক্ষায় উন্নীত করা ও অন্তঃপুর বাস থেকে বের করে আনার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। তবুও ইংরেজ শাসনের শত বছর পরও কেশব সেন স্ত্রীকে নিয়ে এক বন্ধুর নিমন্ত্রণে যাওয়ার চেষ্টা করলে পিতা তাকে ত্যাজ্য করেন। সেখান থেকে হিন্দু সমাজ যে কতটা বদলেছে, তা সেদিনের হিন্দুরা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারত না।
উল্লেখ্য, কেশব সেন-এর কথা আমরা তেমন জানি না। তবুও হিন্দু নারীদের মুক্তি ও অধিকার অর্জনের ক্ষেত্রে ইংরেজ মহিলাদের পাশাপাশি কেশব সেনের ভূমিকা অসামান্য।

    গোঁড়ামি, পশ্চাদপসরতা সব সমাজে আছে। আধুনিককালে এসে ইংরেজের ফরমায়েশী বাংলা সাহিত্যে বিশেষ করে উপন্যাসে মুসলমানদের যথাযথ চিত্র ফুটে ওঠেনি। কারণ বেশিরভাগ সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক ছিলেন হিন্দু, তাদের মুসলমান সমাজ সম্পর্কে ভাল অভিজ্ঞতা ছিল না। জাত-পাত, ধর্ম আর সামাজিক নানা কারণে পাশাপাশি থেকেও বাঙালি হিন্দু এবং মুসলমান পরস্পর সম্পর্কে খুব কম জানে। জানাশোনার এ গ্যাপের কারণে গুজব এবং স্টিরিওটাইপ বেশি জনপ্রিয়তা পায়।

      দুর্ভেদ্য অন্দর মহলের ব্যাপারে বিদেশী লেখকদের রচনায় অতিরঞ্জনের অভিযোগ পাওয়া যায়। তবে সহজেই দৃশ্যমান মুসলমানদের ডাকাতি, লুটপাট, মন্দির ধ্বংস, মুর্তি ভাংচুর, কাফের নারী অপহরণ, ধর্ষণ ইত্যাদি বিষয়ক সে স্টেরিওটাইপ পাওয়া যায়, সেগুলো মূলত বাস্তব।

      তবে সহজেই দৃশ্যমান মুসলমানদের ডাকাতি, লুটপাট, মন্দির ধ্বংস, মুর্তি ভাংচুর, কাফের নারী অপহরণ, ধর্ষণ ইত্যাদি বিষয়ক সে স্টেরিওটাইপ পাওয়া যায়, সেগুলো মূলত বাস্তব।

      স্টেরিওটাইপ তো স্টেরিওটাইপই হবার কথা, সেটা বাস্তব হয় কিভাবে?

      স্টেরিওটাইপ হচ্ছে প্রচলিত বা অপরিবর্তনীয় ভাবনা/ধারনা। কোন সমাজের সব প্রচলিত ধারনাই মিথ্যে নয়। আবার মুসলিমদের কাছে যা স্টেরিওটাইপ, হিন্দুদের কাছে তা স্টেরিওটাইপ নাও হতে পারে। একইভাবে হিন্দুদের কাছে যা স্টেরিওটাইপ, মুসলিমদের কাছে তা স্টেরিওটাইপ না। হিন্দু লেখকদের যে ধারনাকে মুসলমানরা স্টেরিওটাইপ আখ্যা দেয়, সেসব লেখকদের কাছে তা কিন্তু ধ্রুব সত্য।


আপনার মতামত দিন

আপনার ই-মেইল অ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।