বিশ্বায়নের যুগে পরিচয় সংকট

1 মতামত পাওয়া গেছে

সমস্যাটা জিনেটিক ও প্রবৃত্তিগত। এর মূলে রয়েছে আমাদের সুগন্ধ থেকে দুর্গন্ধ, সুন্দর থেকে অসুন্দর, কিংবা কালো, সাদা বা লাল রঙকে একে অপর থেকে পৃথক করার ক্ষমতা। ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’তে প্রেয়সীর জন্য গোলাপ কিনতে গিয়ে দোকান থেকে আমরা সবচেয়ে তরতাজা, বড় ও দেখতে সুন্দর ফুলটিই কেনার চেষ্টা করি – যদিও এর মাঝে নিহিত আমাদের গোলাপে-গোলাপে বৈষম্য চর্চা।
ভিন জাতীয়তা ও সংস্কৃতির স্ত্রীকে নিয়ে দেশে গেলে অনেকেই দেখতে আসে — আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী। তাদের বেশীর ভাগ জিজ্ঞেস করে আমার স্ত্রী রীতিমত রোজা-নামাজ পালন করে কিনা? যারা একটু উচ্চ শিক্ষিত, তারা জিজ্ঞেস করে সে ইসলাম গ্রহণ করেছে কিনা? সে বাংলা শিখেছে কিনা, না শিখলে অবশ্যই শিখতে হবে, ইত্যাদি। নানান ছল-ছুতোয় এসব প্রশ্ন এড়িয়ে যাই। উদার সমাজগুলোতে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক বা জাতি-বিবেধ্মূলক প্রশ্ন সাধারণত কেউ জিজ্ঞেস করে না। এবং তা সম্ভব হয়েছে মানুষের মৌলিক প্রবৃত্তিগুলোকে অবদমিত করে, প্রবৃত্তিগুলোর উপর কৃত্তিম আস্তরণ ঢেলে। এবং আমাদের মৌলিক প্রবৃত্তির এ অবদমন, তার উপর ঢেলে দেওয়া কৃত্তিম আস্তরণই আমাদেরকে তথাকথিত সভ্য করে তোলে। তবে বিশেষ পরিস্থিতির মুখে সে কৃত্তিম আস্তরণ সহজেই উবে যায়, অন্ততঃ জনতার অংশ-বিশেষের মধ্যে। বিগত ২-৩ দশক ধরে গড়ে উঠা বিশেষ পরিস্থতির প্রেক্ষাপটে আমরা পাশ্চাত্যে জনতার অংশ-বিশেষের মধ্যে মানুষের মৌলিক প্রবৃত্তি জেগে উঠতে দেখছি — বিশেষত মুসলমানদের বিষয়ে।


আপনার মতামত দিন

আপনার ই-মেইল অ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।