২
৯৫৭ বার পঠিত
৯৫৭ বার পঠিত
এখানে বৃষ্টির বেগ বেশি, বৃষ্টির সাথে পাল্লা দিয়ে প্রচণ্ড বেগে ঝড়ও চলছে; সকাল থেকে একনাগাড়ে চললেও বৃষ্টিবাবার থামার কোন লক্ষণ নেই। রিডিং রুমের জানালা হালকা খুলে রেখেছি বৃষ্টির শব্দ শুনবো বলে। কিন্তু দেশে থাকতে বৃষ্টির যেরকম ঝমঝম শব্দ শুনতে পেতাম, রাস্তায় হাঁটার সময় যে সেঁদো-আঁশটে গন্ধের পেতাম; তা এখানে পাই না। জানালার কাঁচে বৃষ্টির ছটা পড়ার যে শব্দ সেটাকেই টিনের চালের সেই ঝমঝম শব্দ হিসেবে মনে করে শান্তনা পেতে হচ্ছে।
দুপুরে পা পিছলে পড়ে বেদম ব্যথা শরীরে। তবুও ভালো যে হাড় গোড় ভেঙ্গে বিছানাগত হতে হয় নি। দেশে থাকতে বৃষ্টিতে ছাতা মাথায় চলে যেতাম কোন বন্ধুর বাসায় কিংবা হোটেলে। হাসের মাংস আর চাপাতি রুটি কিংবা গরম গরম লুচি ও গরুর ভূরি খেয়ে আড্ডা চলতো। কখনো কখনো বাড়িতে নরম খিচুরি, কাঁচা মরিচ বাটা, ডিমের অমলেট কিংবা ইলিশ মাছ ভাজার আসর হতো। এখানে খিচুড়ি খাওয়া পড়ছে না, ব্রেড কিংবা সবজি-সালাদই ভরসা।
দেশে থাকতে এমন বৃষ্টির দিনে জুতো জোড়া খুলে বিটুমিনের রাস্তায় খালি পায়ে হাঁটতাম। বিটুমিনের রাস্তায় বৃষ্টির দিনে খালি পায়ে হাঁটার মজাই আলাদা। ছোট ছোট বালুকণা পায়ের তালুতে যেভাবে সুড়সুড়ি দেয় সেটা অন্যরকম অনুভূতি। ২০১৪ সালের পরে প্রকাশ্যে রাস্তায় বের হওয়াও সীমিত হয়ে গেছিল অনেক কারণে। উদ্দামতা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে একটা রুটিন নিয়মের মধ্যে বেধে রাখতে হয়েছে বহুদিন।
আজ এখানে বৃষ্টিতে খুব ইচ্ছে করছিল খালি পায়ে হাঁটি। কিন্তু এখানে খালি পায়ে হাঁটার জো নেই। কখন কোন জায়গায় দুষ্টু মাতাল বিয়ারের ভাঙা বোতল ফেলে দিয়ে রেখেছে কে জানে! একটু অসাবধান হলেই পায়ের তালু চিড়ে চৌচির হয়ে যাবে। এরপরও মাঝে মাঝে নজরে পড়েছে কিছু উৎসাহী রমণী ইচ্ছে করেই খালি পায়ে হাঁটে। বৃষ্টিভেজা রমণীদের দেখতে ভালোই লাগে। এটা সত্য যে, পৃথিবীর সব জায়গার মানুষের মাঝেই প্রকৃতির সাথে মিলে মিশে থাকার একটা আকুলতা সারাক্ষণ তাড়া করে।
পৃথিবীতে মানুষই হয়তো একমাত্র প্রাণী যে সারাক্ষণ নিজের অতীতের সাথে বর্তমানের তুলনা করে ইমোশনাল হয়ে যায়। বড্ড জানতে ইচ্ছে করে, মানুষের মতো অন্য প্রাণীরাও কী বৃষ্টির দিনে ইমোশনাল হয়?
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন
জুন ৩০, ২০১৭; ২:৩৬ পূর্বাহ্ন
সুন্দর লিখেছেন , পড়ে ভালই লাগলো।
জুন ৩০, ২০১৭; ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।