০
১৬৫৯ বার পঠিত
https://www.youtube.com/watch?v=-b2u8F6IvvY
আমার বন্ধুরা জানালেন, কবি বেগম সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রীদের ফিরিয়ে এনেছে কর্তৃপক্ষ।
এইটা এই আন্দোলনের দ্বিতীয় বিজয়।
এই আন্দোলন থেকে কে কী শিখেছেন জানিনা, কিন্ত বাংলাদেশে যারা রাজনীতি করেন, যাঁরা লেখালেখি করেন, যাঁরা সরকারের সাথে বিভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে আন্দোলন করছেন, তাদের জন্যে অনেককিছু শেখার আছে।
ফ্রাস্ট। ডোন্ট বি এফ্রেইড। আপনি যদি যৌক্তিক থাকেন, আপনার দাবীর যদি নৈতিক ভিত্তি থাকে, তবে, কোন ধরনের গুম-খুনের ভয় পাওয়ার দরকার নাই।
নাউ আমি জানি, বিএনপির লোকজন কী বলবে? তারা বলবে, আরে ভাই, বিএনপিকে তো গুম করে দেয়, বিএনপিকে তো জেলে ঢুকিয়ে রাখে, এদের পক্ষে মিডিয়া ছিল, আমাদের পক্ষে মিডিয়া নাই।
ওয়েল, লজিকটা ঠিক আছে কিন্ত আরগুমেন্টটা ঠিক নাই।
কেন ঠিক নাই?
কারণ বিএনপি যে নৈতিক প্রশ্নটা ক্লিয়ার না করে তাদের দলীয় কর্মীদের একটা আন্দোলনে গুম, খুন এবং জেলের মুখে ঠেলে দেয়, এইটা বিএনপির প্রবলেম। বিএনপি জন সম্মুখে তার দাবীর যে ভিত্তি সেই নৈতিক প্রশ্নটা ক্লিয়ার করতে পারে নাই, ফলে তারা যখন মাইর খায় তখন পাবলিক চুপ থাকে।
এইটা বিএনপির বা বিরোধী দলদের রাজনীতির ব্যর্থতা।
কোটাবিরোধী মুভমেন্টকে কেউ যদি অরাজনৈতিক বলেন, তো আপনি কাঁঠাল পাতা খান। এইটা প্রপারলি রাজনৈতিক মুভমেন্ট। এদের পরিষ্কার গুম, খুন, হুমকির মুখে থাকতে হয়েছে। এদের হলের ওপরে গুলি নিয়ে আক্রমণ হয়েছে, এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের প্রসিকিউশান হয়েছে, জামাত শিবির ট্যাগ দেয়া হয়েছে, একাত্তর টিভি এবং তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের মিডিয়া এটাক হয়েছে- কিন্ত এরা সব কাউন্টার দিয়েছে।
জাস্ট লুক এট দা পিকার অফ দ্যা গারলস, ভিসির সামনে তারা প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে গ্যাছে। এইটার জন্যে বলস লাগে।
সরকার তাদের সাহস দেখে ঘাবড়ায় গ্যাছে।
কিন্ত জাস্ট সরকার সাহস করে নাই, তাদেরকে বেশী ঘাঁটাইতে।
প্রশ্নটা নৈতিকতার। আপনি রাজনীতি করবেন, নৈতিকতার প্রশ্ন ক্লিয়ার করবেন না, কিন্ত এক্সপেক্ট করবেন, পাবলিক আপনাকে সাপোর্ট দিবে, আপনি গুম হলে রাস্তায় দাঁড়াবে তা হবে না বস। এইটা রাজনীতি। পাব্লিকের জন্যেও এইটা রাজনীতি।
https://youtu.be/wkWNVXAqFQE
এইটাই কোটা বিরোধী মুভমেন্ট থেকে সবচেয়ে বড় শিক্ষণীয় জিনিশ। আপনার নৈতিক প্রশ্নটা ক্লিয়ার করুন। মেসেজ ক্লিয়ার করুন, এবং মেসেজে স্টিক করুন।
সেকেন্ড হচ্ছে এক্টিভিজম। শুধু নৈতিকতার প্রশ্ন ক্লিয়ার করলে হবেনা। আপনাকে সংগঠিত করতে হবে। এক্টিভ হতে হবে। এক্টিভিজম এসেছে এক্টিভিটি থেকে।
এবং এই ছেলেগুলো কয়মাস ধরে এক্টিভিজম করছে, ইউনিভারসিটিতে ইউনিভারসিটিতে জনমত গড়ে তুলেছে, তাদের গ্রুপগুলোতে কত লক্ষ লক্ষ এক্টিভ মেম্বার সেইটা কী দেখেছেন? দেখেন নি।
আপনি জাস্ট তাদেরকে রাস্তায় দেখছেন, তার পেছনে যে হোমওয়ার্ক আছে, সেইটা আপনি মিস করছেন।
এখন বাকী বিরোধী দলদের জন্যে অনেক শিক্ষণীয় বিষয় আছে। শাহবাগে বামদেরকে দেখি নৈতিক একটা প্রশ্ন নিয়ে, ২০ জন্যের পারমুটেশান কম্বিনেশানে ১০ বছর ধরে একই লোক দাঁড়িয়ে থাকে।
বিএনপিরে দেখি, সেই তাদের বুইড়া বুইড়া নেতা এবং কিছু কর্মী। দ্যাটস ইট। তারা পাবলিককে এঙ্গেজও করেনা, পাবলিকও তাদের পুছেনা।
এখন তারা এক্সপেক্ট করে, তাদের ডাকে লক্ষ লক্ষ লোক নাইমা আসবে- বুলশিট।
এই দুইএর সাথে তিন নাম্বার হচ্ছে, কাউন্টারিং প্রপাগান্ডা। তাদের বিরুদ্ধে যত প্রপাগান্ডা হয়েছে, তারা সবগুলোকে প্রপারলি কাউন্টার হয়েছে। প্লাকার্ড করেছে, পোস্টার করেছে, সোস্যাল মিডিয়াতে সম্মিলিতভাবে মোকাবেলা করেছে।
https://youtu.be/XrJ7CHfhojY
https://www.youtube.com/watch?v=YJfRUmGZ0ag
বিএনপিরে দেখি, তাদের বিরুদ্ধে যেইসব আলাপ আসে, সেইগুলারে তারা ম্যাক্সিমাম কাউন্টার দেয় না। এবং তাদের নিজেদের আন্দোলনের যেসব মেসেজ আছে, সেইগুলো তারা তোতা পাখির মতো রিপিট করে যায়। এবং যারা তাদের মেসেজ ফলো করেনা, তাদের গালি দেয়।
মনে করেন, তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ বা বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আবার কী চেঞ্জ আসবে এইসব নিয়ে তাদের কোন বক্তব্য নাই, তাদের একমাত্র কথা হইলো, সুষ্ঠু নির্বাচন লাগবে।
সরি বাবু, সুষ্ঠু নির্বাচন লাগলে আমি আওয়ামী লীগের সাথে আলাপ করবো, কিন্ত আগে তুমি বলো তুমি ক্ষমতায় গেলে কী কী ফালাবা?
ফরথ এবং আপাতত লাস্ট হচ্ছে। সোস্যাল মিডিয়া। ইউজ সোস্যাল মিডিয়া ওয়েল। ট্রাডিশনাল মিডিয়া যে এখন পক্ষে নাই এইটা এখন একটা বড় এডভান্টেজ, কারণ ট্রাডিশনাল মিডিয়াকে এখন আর কেউ বিশ্বাস করে না।
সো যে কোন আন্দোলনে আন্দোলনকারী নিজেদের মতো করে মেসেজ ডিফাইন করতে পারে, সরকার ট্রাডিশনাল মিডিয়াতে কী বলছে সেটা কেউ পুছে না আর। বরং মজা হচ্ছে, ট্রাডিশনাল মিডিয়া যা বলে সেইটার ওপরে মানুষের অনাস্থা এখন এতো প্রকট সেইটা যদি সরকারের পক্ষে যায় তবে মানুষ তখন আরো সন্দেহ করে।
সো সোশাল মিডিয়া শক্ত ভুমিকা পালন করেছে বলবো না, বরং বলবো এই আন্দোলনকারীরা সোস্যাল মিডিয়াকে দারুণভাবে ব্যবহার করেছে।
বিশেষত ইমেজ এবং ভিডিও এবং এমনকী অডিও মানুষকে নাড়া দিতে ব্যপক ভুমিকা রেখেছে।
মনে করুন, রক্তমাখা সেই স্যান্ডেল, অথবা আমি রাজাকার টি-শার্ট পরা সেই ছেলেটি বা রগ কাটা পায়ের ছবি, অথবা রাতেরবেলায় মেয়েদের ঘরে ফিরে যাওয়ার সময়ে রিক্সায় ছবি- এইগুলোসহ অনেকগুলো ছবি একচুয়ালি এই আন্দোলনের ওয়েভগুলো ক্যারি করেছে।
বা মনে করেন, জুতার মালা পরানোর ভিডিও, বা রক্ত দেখে বেগম রোকেয়া হলে মেয়েদের শব্দ- “এইখানে রক্ত কীভাবে এলো, এই মেয়েটা কোথায়?” এই অডিওগুলো পুরো মুভমেন্টকে না পুরো দেশকে গ্যাল্ভেনাইজ করেছে।
সো ইন দ্য এন্ড, আবার বলবো। ডোন্ট বি এফ্রেইড। আপনার নৈতিক প্রশ্ন যদি পরিষ্কার থাকে, ডোন্ট বি এফ্রেইড। আওয়ামী ফ্যাসিজমের লক্ষ লক্ষ অবৈধ অস্ত্রের ভীত নড়ে গ্যাছে, এই সামান্য ইস্যুতে স্টুডেন্টদের এই আন্দোলনে।
যদি জাস্ট এই ছেলেদের এই স্ট্রাটেজিগুলো ফলো করেন আগামী যে কোন আন্দোলন হইতে পারে সেইটা নির্বাচন বা তত্ত্বাবধায়ক বা শেয়ার বাজারের বিচার বা ব্যাংক ডাকাতের বিচার বা ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলন বা রামপাল বিরোধী আন্দোলন- সবাই এদের কাছ থেকে অনেককিছু শিখতে পারেন এবং এইগুলো এপ্লাই করে সফল হতে পারেন।
কুডোজ ডিয়ার ব্রাদারস এন্ড সিস্টারস –
এমেজিং আন্দোলন করলে তোমরা দেখিয়ে দিলে।
======================
এ সংক্রান্ত নিউজ:
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন