রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ব্যাপারে ভারত সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তটি খুবই অবাঞ্ছিত ও অমানবিক। সিদ্ধান্তটি হলো, ভারতের ভূখণ্ডে ঢুকেপড়া রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে ভারত থেকে বিতাড়িত করা হবে। সিদ্ধান্তটি রূপায়ন করার জন্যে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারগুলিকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবার নির্দেশিকাও পাঠিয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে, ভারত সরকার যা চেয়েছে বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটছে। কারণ, দেখা যাচ্ছে যে ভারতের মাটিতে রোহিঙ্গা-ছায়া অপসৃত হওয়ার বদলে উল্টে দীর্ঘতর হচ্ছে। হ্যাঁ, বাস্তব চিত্রটা হলো এই যে, কতজন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এ দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে তার খবর নেই, কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে উল্টে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বারুইপুর থানায় দলে দলে ঢুকে পড়ছে এবং তাদের জন্যে কয়েকটি শিবিরও খোলা হয়েছে।
রোহিঙ্গারা মুসলমান। তাদের বিরুদ্ধ অভিযোগ রয়েছে যে তারা মিয়ানমারকে কখনই নিজেদের দেশ হিসেবে মনে করতে পারে নি। সেজন্যে তারা রাখাইন প্রদেশকে মিয়ানমার থেকে বিচ্ছিন্ন করে সেখানে ইসলামি রাষ্ট্র বানাতে বারবার জিহাদি হামলা চালিয়েছে মিয়ানমার রাষ্ট্র ও অসামরিক বৌদ্ধ নাগরিকদের ওপর। মিয়ানমার সরকার স্বভাবতই কড়া হাতে সেই জিহাদি সন্ত্রাস দমন করেছে। সেই রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের শিকার হতে হয়েছে নিরীহ রোহিঙ্গাদেরও। মাঝে মাঝে দেখা গেছে যে, রোহিঙ্গাদের উপর সেই রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন বীভৎস চেহারা নিয়েছে। রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন যখনই ভয়ংকর হয়ে উঠেছে তখনই তাদের মায়ানমার ত্যাগ করে বিভিন্ন দেশে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে। রাষ্ট্রীয় নিপীড়নে যখনই তারা স্বদেশ ত্যাগ করেছে, তখনই ত্যাগ করেছে হাজারে হাজারে কিংবা লাখে লাখে। তারা মূলতঃ দেশ ছাড়ে বাংলাদেশে যাবে বলে। কিন্তু বাংলাদেশও সীমান্তে কড়া নজরদারি থাকে। ফলে সবাই সে দেশে চেষ্টা করেও ঢুকতে পারে না। কয়েক লাখ রোহিঙ্গা যারা বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে রয়েছে তারা সবাই ঢুকেছে চোরা পথে। যারা পারে নি তারা বিভিন্ন দেশে যেখানে পেরেছে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এভাবেই তারা ভারতেও ঢুকে পড়েছে।
রোহিঙ্গারা অতীতে যখন ভারতে প্রবেশ করেছে তখন টের পাওয়া যায় নি। কিন্তু গত বছর যখন ওরা ভারত ভূখণ্ডে প্রবেশ করে তখন ভারত সরকার হৈ চৈ ফেলে দেয়। এরূপ ঘটনা ঘটল কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতাসীন রয়েছে আরএসএসের আদর্শপুষ্ট নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি সরকার। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, আরএসএস ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র বানাবার লক্ষ্যে কাজ করে। রাষ্ট্রসংঘ বিশ্বের সকল মানুষের কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যে আবেদন জানিয়েছে। তথাপি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান নিয়েছেন। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি মানবতা প্রদর্শন করা তো দূরের কথা, উল্টে তিনি তাদের চিহ্নিত করে ভারত থেকে বের করে দেবার নির্মম আদেশ দিয়েছেন। ভারতবাসী হিসেবে সরকারের এ সিদ্ধান্তে আমি প্রচণ্ড বেদনাহত এবং লজ্জিতও। কারণ, কোলের শিশু ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সহ অসহায় ছিন্নমূল মানুষ যারা প্রাণের দায়ে নিজের দেশ ও বাস্তুভিটা ত্যাগ করে ভারতে এসে আশ্রয় নিয়েছে তাদের জোর করে তাড়িয়ে দেওয়া একটা ভীষণ বর্বরোচিত ও অমানবিক কাজ। স্বভাবতই এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দেশ ও বিদেশে আমাদের সরকারকে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।
কবে থেকে পশ্চিমবঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা প্রবেশ করছে, কীভাবে ও কাদের মদতে করছে, তাদের জন্যে কারা শিবির স্থাপন করেছে, কীভাবে ও কাদের সহযোগিতায় শিবিরগুলি চলছে সে বিষয়ে একটু পরে আলোকপাত করব। তার পূর্বে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে ভারত সরকার কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত নিয়ে কয়েকটা কথা বলতে চাই। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিতাড়ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যে ভারত সরকারকে দেশ-বিদেশে যে সমালোচনা শুনতে হয়েছিল সেটা সরকারে প্রাপ্য ছিল। সেই সমালোচনার জবাব দিতে সরকার ও শাসক দল বিজেপি নানা যুক্তির অবতারণা করেছে। যে যুক্তিগুলি সাজিয়েছে সেগুলি হল, (১) ভারতের মাটিতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় জঙ্গী রোহিঙ্গাদেরও ঢুকে পড়ার প্রবল আশংকা রয়েছে। (২) শরণার্থীরা মাদক পাচার-সহ নানা প্রকার অসামাজিক কাজ যুক্ত হয়ে আইন-শৃংখলা ও সামাজিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে, যেমন বাংলাদেশে ঘটছে; শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের যে যে দেশ মুসলিম শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে সেই সমস্ত দেশগুলোর অভিজ্ঞতাও কমবেশী এ রকমই। (৩) শরণার্থী শিবিরগুলো ভবিষ্যতে মুসলিম জঙ্গী সংগঠনগুলোর আশ্রয়দাতা কিংবা ডেরা হয়ে উঠতে পারে। এবং (৪) মিয়ানমারের পরিস্থিতি ভাল হলেই যা তারা সেখানে ফিরে যেতে চাইবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই; বাংলাদেশ সরকার এখন এই সমস্যায় জর্জরিত।
হ্যাঁ, এটা অনস্বীকার্য যে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া নিঃসন্দেহে প্রবল ঝুঁকিপূর্ণ এবং সরকার যে যুক্তিগুলি দেখাচ্ছে সেগুলি কোনটাই অমূলক বা অবাস্তব নয়। এতদসত্ত্বেও নিরন্ন ছিন্নমূল মানুষদের তাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কিছুতেই গ্রহণযোগ্য ও সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। যে সমস্ত সমস্যা ও বিপদের আশংকার কথা বলা হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার যা করতে পারত তা হল, (১) রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নতুন করে দেশের ভিতর প্রবেশ নিষিদ্ধ করা, এবং (২) যে রোহিঙ্গার ইতিমধ্যেই চলে এসেছে তাদের উপর কড়া নজর রাখা।
প্রধানমন্ত্রী মাননীয় নরেন্দ্র মোদিজি কিন্তু এই কাজ দুটি না করে তার পরিবর্তে শরণার্থীদের বিতাড়িত করার অমানবিক সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হলো এমন বিবেকবর্জিত অমানবিক সিদ্ধান্ত তিনি কেন নিয়েছে? এর উত্তরে বলা যায় যে, তিনি আরএসএস (রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ) – এর হিন্দু রাষ্ট্রের ভাবনা থেকে এ কাজটি করেছেন। রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের হাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা আরএসএসের চোখে শরণার্থী নয়। তারা বিদেশী ও অনুপ্রবেশকারী। আরএসএসের তত্ত্ব হলো, প্রাণ বাঁচাতে স্বদেশ ছেড়ে পালিয়ে এসে যারা এ দেশে আশ্রয় নেয় তারা হিন্দু হলে শরণার্থী, আর মুসলমান হলে বিদেশী ও অনুপ্রবেশকারী। রোহিঙ্গারা যেহেতু মুসলমান তাই তারা শরণার্থী নয়, তারা বিদেশী ও অনুপ্রবেশকারী। আরএসএস বলছে এই রোহিঙ্গারা জাতীয় নিরাপত্তার কাছে হুমকি। সুতরাং তাদের জন্যে দয়া, মায়া, মমতা ও মানবতা প্রদর্শন করা যাবে না, তারা যদি নারী এবং দুধের শিশু ও অশক্ত প্রবীণ মানুষ হয় তবুও নয়। আরএসএসের এই সাম্প্রদায়িক ও সংকীর্ণ নীতিই প্রতিফলিত হয়েছে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া সিদ্ধান্তে। অথচ আমাদের রাষ্ট্রনেতা ও বিদ্বজনেরা ভারতবর্ষ একটি বহুত্ববাদী ও সহিষ্ণু দেশ বলে কতই না গর্ব করেন!
এবার আসা যাক পশ্চিমবঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে যে কর্মকাণ্ড চলছে সে প্রসঙ্গে। আমরা জানি যে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারের কোন সিদ্ধান্তে ভিন্ন মত ও আপত্তি থাকলে সেটা প্রত্যাহারের দাবিতে জনগণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্ত ও আদেশকে অমান্য করা যায় না। সুতরাং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে আসা ও তাদের জন্যে শিবির খোলা অসাংবিধানিক কাজ। পশ্চিমবঙ্গে এই চলছে অসাংবিধানিক কাজ চলছে গত বছর ডিসেম্বর থেকে। এই রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বারুইপুর থানার হাড়দহ, গ্রামে প্রথম এরূপ একটি শরণার্থী শিবির তৈরি করা হয়। তারপর বারুইপুর ও জীবনতলা থানার আরও কয়েকটি গ্রামে আরও কয়েকটি শিবির খোলা হয়েছে এবং দিন দিন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিবির সংখ্যা বেড়ে চলেছে। শরণার্থী শিবিরগুলি চলছে ‘সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেশারেশন’ – এর শাখা সংগঠন ‘দেশ বাঁচাও সামাজিক কমিটির’ নেতৃত্বে। ‘দেশ বাঁচাও সামাজিক কমিটির সভাপতি হোসেন গাজীর বয়ান অনুযায়ী তাঁদের নেতৃত্বে ৪০টিরও বেশী মুসলিম সংগঠন এই কাজগুলো করছে। এই সংগঠনগুলির মধ্যে বঙ্গীয় ইমাম পরিষদ, বিশ্বমানব কল্যাণ ইসলামিক ট্রাস্ট ইত্যাদি মুসলিম সাম্প্রদায়িক সংগঠনগুলিও রয়েছে।
একটি বিশেষ লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, রোহিঙ্গারা নিজেরাই এ রাজ্যে এসে ঢুকেছে এমন নয়। সংগঠিত উদ্যোগ নিয়ে তাদের এ রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বারুইপুর ও জীবনতলা থানার বিভিন্ন গ্রামে নিয়ে আসা হয়েছে ও হচ্ছে। তাদের আনা হয়েছে হরিয়ানা, দিল্লি এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন শিবির থেকে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসার ব্যাপারে ‘দেশ বাঁচাও’ সামাজিক কমিটির সভাপতি হোসেন গাজী অবশ্য একেক সময় একেক রকম কথা বলছেন। কখনও বলছেন হরিয়ানা ও দিল্লির রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কোন নিরাপত্তা নেই। হিন্দু মৌলবাদীরা তাদের উপর নানারূপ অত্যাচার চালাচ্ছে। হরিয়ানার শরণার্থী শিবিরে ওরা আগুন লাগিয়ে কিছু ঘর পুড়িয়ে দিলে সেখান থেকে কয়েকটি পরিবার এসে হাড়দহ গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে। এ কথা তিনি খুব সম্প্রতি (গত ১৫ই মার্চ) ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন যা গত জানুয়ারী মাসে দেওয়া তাঁর বয়ান থেকে আলাদা। সাম্প্রতিক বয়ানে তিনি বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসার কথা অস্বীকার করেছেন। অথচ তিনিই গত জানুয়ারি মাসে ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছিলেন যে, বাংলাদেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে তাঁরা কাজ করছেন। এ কাজের জন্যে তিনি নিজে একবার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিবিরে গিয়েছেলেন, তারপর সেখান থেকে গিয়েছিলেন দিল্লি। সেখান থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসেন বারুইপুর থানার কুলারি গ্রামে। তাঁর বয়ান কোট করে ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছে, “According to Gaji, his organisation coordinated with “people in Bangladesh”, where he had visited once, and other Rohingyas in Delhi to get these families to Kulari”। (সূত্র)
কুলারি ক্যাম্পে আশ্রয় পাওয়া ২৭ বছরের রোহিঙ্গা যুবক শহিদুলও সে কথাই বলেন। তিনি বলেন যে, তাঁরা বাংলাদেশ থেকে প্রথমে দিল্লি যান, তারপর তাদের ‘দেশ বাঁচাও’ সামাজিক কমিটি এখানে আসার প্রস্তাব দেন, তারপর তাদের মাধ্যমে তারা এখানে আসেন। শহিদুল ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে কী বলেছেন তা শোনা যাক,
“I worked as a daily labourer in Bangladesh before paying a tout some money to help us enter Bengal. Then, we went to Delhi. A few months later, we were offered this home by this organisation and we came here to stay,” said Sahidul (সূত্রঃ ঐ)
বিজেপির রাজ্য শাখার অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে শিবিরগুলি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়ার আগে পর্যন্ত হোসেন গাজী সংবাদপত্রের সামনে ছিলেন অকপট। জানুয়ারী মাসে তিনি জানিয়েছিলেন যে তাঁর নিজের ১৫ কাঠা জমির উপর তিনি রোহিঙ্গাদের জন্যে শিবির করে দিয়েছেন এবং বলেন যে জনগণের কাছ থেকে চাঁদা তুলে শিবির নির্মাণ ও পরিচালনার কাজ চললেও, তাঁর নিজেরও সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। এ কথা তিনি বলেন জানুয়ারী মাসে। সে সময় তিনি আরও জানিয়েছিলেন যে, রোহিঙ্গা শিশুদের বিভিন্ন মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেবার ব্যবস্থা তাঁরা করেছেন। তাছাড়া তরুণ ও যুবক রোহিঙ্গাদের জন্যে করে দিয়েছেন কাজের ব্যবস্থাও। তিনি তখনই ব্জানিয়েছিলেন যে, রোহিঙ্গাদের অনেকেই দিন মজুরের কাজ শুরু করে দিয়েছে এবং তরুণ ছেলেরা বিভিন্ন চামরার কারখানায় ইন্টার্ণ হিসেবে কাজে যোগদান করেছে। তিনি আর একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তখন দিয়েছিলেন। বলেছিলেন যে, প্রায় ৪০০০ (চার হাজার) রোহিঙ্গা পশ্চিম বাংলায় বিভিন্ন ক্যাম্পে রয়েছে। ওঁদের প্রধান নেতা সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ কামরুজ্জামান অবশ্য বলেছেন বারুইপুর থানায় মাত্র এক দেড়শ’ রোহিঙ্গা শরণার্থী এসেছে। এটা তিনি বলেছে গত ১৯শে মার্চ একটি ভিডিও বার্তায়। এটা তাঁদের কৃত বে-আইনী কর্মকাণ্ডকে লঘু করে দেখানোর হীন প্রয়াস বলে মনে হয়। তিনি আর একটি বিষয় গোপন করার চেষ্টা করছেন। তা হলো এই যে, উক্ত ভিডিও বার্তায় বলেছেন যে, তাঁরা রোহিঙ্গাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দাবি করছেন না। তাঁদের দাবি হল, যত দিন না তারা মিয়ানমার ফিরে যেতে পারছে ততদিন প্রশাসনকে তাদের নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে। কিন্তু না, আসলে তাঁরা যে রোহিঙ্গাদের ভারতের নাগরিকত্বই চান তা স্পষ্ট করেই জানিয়েছিলেন হোসেন গাজী। এ বিষয়ে তিনি ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে কী বয়ান দিয়েছিলেন তা দেখা যাক, –
“we will start a campaign for granting citizenship to Rohingya refugees,” (সূত্র)
এদিকে বিজেপি ক্রমশঃ গলা চড়াচ্ছে রোহিঙ্গাদের নিয়ে এসে আশ্রয় দেবার বিরুদ্ধে। রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পগুলি তুলে দেবার দাবি জানানোর পাশাপাশি যারা এর সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবার দাবিও জানাচ্ছে। ফলে যে প্রশাসনের নাকের ডগায় এতদিন অবাধে রোহিঙ্গাদের নিয়ে এসে তাদের জন্যে শিবির নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে সেই প্রশাসন কিছুটা হলেও নড়েচড়ে বসেছে। পুলিশ রোহিঙ্গা শিবিরে এসে খোঁজ খবর নিয়েছে এবং হোসেন গাজীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এতে মুসলিম সংগঠনগুলি ভয়ানক ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। সেই ক্ষোভের বহিপ্রকাশ দেখা গেছে সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ কামরুজ্জামান একটি ভিডিও (https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=612632692424447&id=0010331645224) বার্তায়। সেই বার্তায় তিনি পুলিশ প্রশাসন ও রাজ্য সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন ও হুমকি দিয়েছেন। হুমকি বার্তায় তিনি বলেছেন যে, পুলিশকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সমস্ত তৎপরতা বন্ধ করতে হবে। না করলে রাস্তায় নেমে তাঁরা গোটা বাংলা স্তব্ধ করে দেবেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকেও তিনি হুমকি দিয়েছেন ঐ ভিডিও বার্তায়। বলেছেন যে, রাজ্য সরকারের পুলিশ যদি একজন রোহিঙ্গারও লোম স্পর্শ করে তবে তাঁর সরকার নিজের কবর নিজেই খুঁড়বে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি এভাবেই ক্রমশঃ জটিল ও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ফলে এই রাজ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার পারদ চড়চড় করে উপরে উঠছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জোর করে কুকুর বিড়ালের মত তাড়িয়ে দেওয়া যে ভীষণ অমানবিক কাজ সে কথা পুর্বেই বলেছি। এটা এক প্রকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাও বটে। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্ত ও নির্দেশকে লঙ্ঘন করে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে মুসলিম সংগঠনগুলি যে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে তা কি সমর্থনযোগ্য? শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া, অন্ন-বস্ত্র, চিকিৎসা ও অন্যান্য সেবা প্রদান করা নিঃসন্দেহে মহৎ ও মানবিক কাজ। কিন্তু মানবতার নামে কি সরকারকে চ্যালেঞ্জ করা সমীচীন? বিশেষ করে সে কাজে যদি সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বৃদ্ধি ও আইন-শৃংখলার অবনতি হওয়ার আশংকা থাকে?
মুসলিম সংগঠনগুলি বলতে চায়ছে যে তারা মানবতার খাতিরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের জন্যে রিলিফ ক্যাম্প করেছে। মানবতার ভড়ং দেখিয়ে কয়েকটি অসাম্প্রদায়িক সংগঠনও তাদের ইন্ধন ও মদত দিচ্ছে। কিন্তু প্রায় অর্ধশত মুসলিম সংগঠন জোট বাঁধার পেছনে সত্যিই কি মানবতার আদর্শ নিহিত আছে? গোটা রাজ্যকে স্তব্ধ করে দেবার হুমকি এবং মুখ্যমন্ত্রীকে সরকার ফেলে দেওয়ার ভীতি প্রদর্শনও মানবতার আদর্শে তাড়িত হয়ে? রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ জানানো– এগুলি কি মানবতাবাদী কাজের নমুনা? বাস্তবে যেখানে কয়েক হাজার শরণার্থী এসেছে সেখানে কেন কমিয়ে মাত্র এক/দেড়শ’-র কথা বলা হচ্ছে? মানবতার স্বার্থেই যদি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়ে থাকে তবে শরণার্থীদের আসল সংখ্যাটা আড়াল করা হচ্ছে কেন? রোহিঙ্গাদের এ রাজ্যে নিয়ে আসার পেছনে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও উদ্যোগ যে রয়েছে তা স্পষ্ট। কিন্তু সেটা অস্বীকার করা হচ্ছে। এ তো মিথ্যাচার। মানবতার স্বার্থে যারা কাজ করলে মিথ্যাচারের আশ্রয় নিতে হবে কেন?
না, মানবতা নয়, আসলে মুসলিম সংগঠনগুলি রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে তাদের ইমানি দায়িত্ব পালন করার জন্য। সেই কাজে তারা রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করছে দাবার বোড়ে হিসেবে। মানবতাটা হলো ওদের মুখোশ। এই মুখোশটা খসে পড়েছে তখনই যখন তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রোহিঙ্গা পরিবারের শিশু সন্তানদের নিয়ে গিয়ে খারিজি মাদ্রাসায় ভর্তি করেছে। এখন প্রশ্ন হল, মুসলিম সংগঠনগুলি কোন ইমানি দায়িত্ব পালন করার জন্যে সরকারি আইন লংঘন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য শিবির খুলেছে ? তারা এক্ষেত্রে প্রধানতঃ দু’টি দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করছে। একটি হল, ইসলাম বলেছে পৃথিবীর সব মুসলমান পরস্পরের ভাই। মুসলমানরা যদি কোথাও বিপদে পড়ে তবে তাদের সাহায্য করার জন্যে বিশ্বের সকল মুসলমানদের তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানরা এখন যেহেতু বিপন্ন ও বিপদগ্রস্ত, তাই তাদের পাশে দাঁড়ানো এখন মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। রোহিঙ্গাদের জন্যে শরণার্থী শিবির খুলে সেই দায়িত্ব পালন করছে মুসলিম সংগঠনগুলি। দ্বিতীয়টি হল জিহাদি দায়িত্ব। জিহাদ করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ওয়াজিব বা ফরজ (অবশ্য পালনীয় কর্তব্য)। সরাসরি জিহাদে অংশ না নিয়েও জিহাদি কর্তব্য পালন করার ইসলামি বিধান আছে। অর্থাৎ মুজাহিদদের (জিহাদ যারা করে) নানা ভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা দিয়েও জিহাদি কর্তব্য পালন করা যায়। ভারতে প্রকাশ্যে জিহাদে অবতীর্ণ হওয়া যেহেতু আত্মহত্যার শামিল তাই এ দেশে মুসলিম সংগঠনগুলি আড়ালে থেকে জিহাদিদের সহায়তা দিয়ে থাকে। মুসলিম সংগঠনগুলি প্রকাশ্যে মুসলিমদের নানা দাবিদাওয়া নিয়ে প্রচার ও আন্দোলন করে ঠিকই, কিন্তু তাদের আসল কজ হলো প্রথমতঃ মুসলিম সমাজের ইসলামিকরণ করা এবং দ্বিতীয়তঃ গোপনে গোপনে জিহাদে মদত দেওয়া। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিবির খোলার পশ্চাতে রয়েছে মূলতঃ এই দুটি উদ্দেশ্য। প্রশ্ন উঠতে পারে যে শরণার্থী শিবির খুলে কীভাবে জিহাদি কর্মকাণ্ডে দেওয়া সম্ভব? হ্যাঁ, সম্ভব, এবং অপেক্ষাকৃত সহজও বটে। সেটা এভাবে করা সম্ভব, লোকচক্ষুর সামনে চলবে শরণার্থী শিবিরের মহৎ ও মানবিক কর্মকাণ্ড এবং লোকচক্ষুর আড়ালে এই শিবিরগুলিই মুজাহিদদের আস্তানা/ডেরা হিসেবে কাজ করবে।
রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর পেছনে দু’টি আশু লক্ষ্যও রয়েছে। তা হল– এক) রোহিঙ্গাদের কাছে টেনে সংগঠনের প্রভাব ও সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানো। দুই) রোহিঙ্গাদের বাহানায় এ রাজ্যের মুসলিমদের কাছে মুসলিম ঐক্যের শ্লোগান নিয়ে তাদের কাছে যাওয়া। বিজেপি সরকার রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে মুসলিম সমাজ সবচেয়ে বেশী আহত হয়েছে। মুসলিমদের এই ক্ষত ও ক্ষোভকে ব্যবহার করে তাদের সংগঠিত করতে চায়ছেন মুসলিম সংগঠনের নেতারা।
মুসলিম সংগঠনগুলি কীভাবে আড়ালে থেকে জিহাদি কর্মকাণ্ডে মদত ও সহায়তা দেয় পশ্চিমবঙ্গের মানুষ জানে। ২০১৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার বর্ধমান শহরের বুকে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের কথা স্মরণ করা যাক। বাংলাদেশের জঙ্গী সংগঠন ‘জামাআতুল মুসলিম বাংলাদেশ’ বা জেএমবি ছিল ঐ বিস্ফোরণ কাণ্ডের হোতা। বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর অভিযুক্ত জঙ্গীদের এবং বিস্ফোরণ কাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত খারিজি মাদ্রাসাগুলিকে আড়াল করতে কীভাবে মুসলিম সংগঠনগুলি ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নেমেছিল তা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ নিশ্চয়ই ভুলে যায় নি। সেই বিস্ফোরণ কাণ্ডের পরের ঘটনাবলী থেকে ভারতের মানুষ বুঝতে পরেছে যে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সংগঠনগুলি ও মুসলিম জঙ্গী সংগঠনগুলির মধ্যে কী গভীর সম্পর্ক রয়েছে। সেই জেএমবি ভারতের মাটিতে যে আজও সমান সক্রিয় তার প্রমাণ পাওয়া গেছে গত ১৮ই জানুয়ারী দলাই লামার সফরের সময় যখন বুদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণ কাণ্ড ঘটে। গোয়েন্দা রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে গত বছর নভেম্বর মাসে জেএমবি জঙ্গীরা হায়দ্রাবাদে বসে এই বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র করেছিল। ঐ বিস্ফোরণ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন জঙ্গী সম্প্রতি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে যাদের মধ্যে জেএমবির ধুলিয়ান মডিউল পয়গম্বর সেখও আছে।
মুসলিম সংগঠনগুলির ঔদ্ধত্য, দাপাদাপি এবং মুসলিম জঙ্গীদের আশ্রয় ও মদত প্রদান ইত্যাদি ঘটনাগুলি হিন্দু সমাজকে যে ক্ষুব্ধ করে তা বলা বাহুল্য। শুধু ক্ষোভই নয়, একাংশের মধ্যে আতংক ও ভীতিও তৈরী করে। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে বিজেপি হিন্দুদের হিন্দুদের পাল্টা সংগঠিত করার চেষ্টা করে চলেছে। তাদের সেই চেষ্টা যে ফলপ্রসূ হচ্ছে তা ভোটের ফলাফলেই প্রমাণিত। শুধু যে ভোটই বাড়ছে তা নয়, সাংগঠনিক শক্তিও যে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি লাভ করেছে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে বাদুরিয়া-বসিরহাট দাঙ্গাতেও। পশ্চিমবঙ্গে এর আগে পর্যন্ত হিন্দুরা যেখানে সংখ্যালঘু সেখানে মুসলিমদের হাতে শুধু একতরফা আক্রান্ত হয়েছে ও মারই খেয়েছে। বসিরহাট দাঙ্গায় তারা পাল্টা আক্রমণ করেছে এবং মেরেছেও।
এই পটভূমিতে রোহিঙ্গাদের যেচে নিয়ে আসা ও তাদের জন্যে শিবির খোলার বিষয়টা বিচার করতে হবে। মুসলিম সংগঠনগুলি মানবতার দোহাই দিয়ে সরকারের নির্দেশকে উপেক্ষা ও অগ্রাহ্য করে যখন রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসতে শুরু করেছিল তখনই তাদের বাধা দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বাধা দেবার পরিবর্তে শাসক দল মদত দিয়েছে, এবং প্রশাসন ও বিরোধী দলগুলি নীরব থেকেছে। সেই ধারা আজও অব্যাহত রয়েছে। এর সুযোগ নিচ্ছে বিজেপি। তারা হিন্দুদের মধ্যে যে নানা ঘটনায় মুসলিমদের বিরুদ্ধে যে অবিশ্বাস ও ক্ষোভ তৈরী হয়েছে তাকে আরো উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ফল যা হওয়ার তাই হচ্ছে, হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও সৌহার্দ যেটুকু আছে সেটাও ধীরে ধীরে অন্তর্হিত হয়ে যাচ্ছে।
খেয়ালে রাখতে হবে যে, এখন কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালনা করছে বিজেপি এবং পশ্চিমবঙ্গেও তারা যথেষ্ট শক্তিশালী। এ হেন অবস্থায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আগমন এবং শিবিরের সংখ্যা যদি ক্রমশঃ বাড়তেই থাকে তবে তার পরিণতি মোটেই ভাল হবে না। একদিকে বাদুরিয়া ও বসিরহাটের মত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরী হবে। অন্যদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিবিরগুলি মুসলিম জঙ্গীদের ডেরা হয়ে উঠবে যা দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে তুলবে। এরূপ পরিস্থিতির যাতে উদ্ভব না হয় তার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে মুসলিম সংগঠনগুলির ভূমিকা সম্পর্কে সর্বদা সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। পাশাপাশি এই কাজগুলিও করতে হবে। যেমন, রাজ্যে যাতে আর একজন শরণার্থীও প্রবেশ না করতে পারে তা সুনিশ্চিত করতে হবে। যারা একটা রোহিঙ্গা পরিবারকে নিয়ে আসবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। যে শিবিরগুলি চলছে সেগুলির গতিবিধির উপর কড়া নজর রাখতে হবে যাতে শিবিরগুলি জঙ্গিদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠতে না পারে।