১৬৬৬ বার পঠিত
কেউ যদি ভাবেন, তার ‘তন্ত্রে’র পক্ষে যারা নন, সে হোক গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র কিংবা ধর্মতন্ত্র, তারা তার শত্রু। এমন চিন্তার মানুষকে কী বলবেন? আইসিস, আরএসএস নাকি আত্মঘাতী গোপন কাল্ট অর্ডার অব সোলার টেম্পলের সদস্য। যে কাল্টের সদস্যরা বিশ্বাস করতেন, তাদের কাল্টের বিপক্ষে যারা, তারা তাদের শত্রু। তাদের বিনাশ করাই কর্তব্য। কিছু লোকের হয়তো বিনাশের সাহস্ বা শক্তি নেই, কিন্তু ইচ্ছেটা পুরোপুরি রয়েছে। সে কারণেই অন্যমতের মানুষদের শত্রুজ্ঞান করে।
যারা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে অন্যকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে, তাদেরকে এমন ভাবাটা সম্ভবত দোষের কিছু নয়। যদি আমাকে বলেন, আপনি কী ভাবেন? আমার উত্তর একটাই, রাম মানে বড় ছাগল, রামছাগল ভাবি। কারণ, মুক্তচিন্তা কিংবা শুভবুদ্ধির কোনো মানুষই মত-পথের ক্ষেত্রে কাউকে ব্যক্তিগত শত্রু ভাবতে পারেন না। পারা উচিত নয়।
২
কিছু লোক আছেন, যারা কম্যুনিজমের শব্দগত, উৎপত্তিগত অর্থ না বুঝেই কম্যুনিস্ট হয়ে যান। বিশাল কম্যুনিস্ট। নিজেকে বাংলায় সমাজতন্ত্রী বলেন, ইংরেজিতে বলেন কম্যুনিস্ট! বলেন তো, ওদের সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদের পার্থক্যের বোধটা কবে হবে?
গণতন্ত্র বলতে অনেকে বোঝেন সংখ্যাগরিষ্ঠের ইচ্ছা। তারাও ইচ্ছা আর মতের পার্থক্যটা বোঝেন না। যার ফলে সংখ্যালঘিষ্ঠদের ক্ষেত্রে অনেক সময় গণতন্ত্রের সুফল মেলে না।
ধর্মতন্ত্র অর্থাৎ ধর্মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দর্শনেও এমন না-না ফ্যাকড়া রয়েছে। যে ফ্যাকড়া মাঝে-মধ্যেই ফ্যাসাদে পরিণত হয়, হয়েছে।
৩
এই শত্রু-মিত্রের জ্ঞান যতদিন পর্যন্ত ব্যক্তি পর্যায়ে থাকবে, ততদিন পর্যন্ত কোনো তন্ত্রই সুফল দেবে না। যুক্তিকে যুক্তি দিয়ে পরাজিত করতে হবে, দর্শনকে দর্শন দিয়ে। শত্রুতা হবে যুক্তির সাথে, দর্শনের সাথে ব্যক্তির সাথে নয়। তবেই আমরা এসব রামছাগলের ঔদ্ধত্য থেকে মুক্তি পাবো, যারা অন্যকে প্রকাশ্যে শত্রু হিসেবে ঘোষণা করে। পাবো সত্যিকার একটা রাজনৈতিক পরিবেশ।
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন