৫৫২ বার পঠিত
সাংবাদিকতা করতে গিয়ে জীবনে কখনো ফিতে কাটা, শুভ উদ্বোধন বা প্রজাতন্ত্রের সেবকদের রুটিনওয়ার্ককে সংবাদ উপাদান বলে মনে করেনি, করবোও না। হ্যাঁ, ক্ষেত্রবিশেষ বা ব্যতিক্রম বলে মনে হলে সেটি করি, করব। তাই বলে সুটকেস টেনে দেয়া, রুমাল দিয়ে মুখ মুছে দেয়া, চেয়ারটা সোজা করে দেয়া আর তাহাদের সব কাজে ‘জ্বী স্যার সব ঠিক আছে চালিয়ে যান‘ এমন দালালময় সাংবাদিকতা আমার দ্বারা সম্ভব নয়।
ফেসবুক-ব্লগে ফিতে কাটা দাঁত কেলানো ছবি দিয়ে জনাব বাহাদুর মান্যবর জনপ্রিয় বলতেও রাজি নই বা রাজনীতি মার্কা পত্রিকায় এসব নিউজ করে সকালবেলা তা বগলে করে স্যারের টেবিলে দিয়ে চা- আড্ডা বা নগদ নারায়ণ নেয়াও আমার পক্ষে সম্ভব না। তারা ডাকলেই তাদের চারপাশ ঘুরে ঘুরে ছবি তোলা ভিডিও করাও সম্ভব না। তাদের আশীর্বাদ পেয়ে জেলায় নিজেকে ধন্যমার্কা সাংবাদিকও হতে চাই না।
চোখের সামনে তো অনেক কিছুই দেখে আসছি, প্রজাতন্ত্রের সেবক বলুন আর অসরকারি কর্তাবাবুদের কথায় বলুন, যদি এসব করে সুদৃষ্টি পান তবে খাস জমিও বরাদ্দ পেতে পারেন, টাকার তো কোন অভাবই হয় না, কাড়ি কাড়ি টাকা ঢুকবে স্যারদের পকেটে আপনার পকেটেও, বাড়ি-গাড়ি এটাও জুটিয়ে নিতে দেখছি অনেককে, শুধুমাত্র উপরে যা বর্ণনা করছি এগুলো ফলো করলেই যথেষ্ট। আপনি যে প্রতিষ্ঠান কিংবা অফিসের সাংবাদিক তারা আপনাকে মাসে কিছু দিক আর নাই দিক!
সংবাদকর্মী হিসাবে আমি ধন্য হতে চাই সাধারণ মানুষের কাছে, মুটে-মুজুর আর শ্রমিকের কাছে। সেখানে আমি আমার অবস্থান খোঁজার চেষ্টা করি, তাদের ঘামের গন্ধে যেন লেগে থাকে আমার সাংবাদিকতা, তাই কখনো কখনো বাতাসে কান পেতে সেই গন্ধে আমার অবস্থান খুঁজি, যখন পায় তখন আনন্দে আত্মহারা হই। খুঁজে ফিরি নতুন কোন সংবাদ নতুন কোন তথ্য। সাধারণ মানুষই আমাকে দালালির পরিবর্তে সব ধরনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করতে শিখিয়েছে। মফঃস্বলের সংবাদকর্মী হিসাবে কুড়িটি বছর এভাবেই পার করেছি। কখনো খেয়ে দিন কাটে কখনো না খেয়ে আবার কখনো এককাপ চা বিস্কুট খেয়ে, এতে আমার কোন দুঃখ নেই, নেই কোন দুঃখবোধও। আমি তাদের কথিত ধন্যমার্কা সাংবাদিক হতে চাই না।
আপনাদের সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী এই আমার, আমি, আমিত্ব বা প্রথম পুরুষের ব্যবহার সংক্রান্ত লেখার জন্য।
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন