আজকালকার বাবামারা সন্তানের বুদ্ধির বিকাশ তথা পড়ালেখার বিষয়ে যতটা সচেতন, তাঁদের শিশুদের শারীরিক, মানসিক, আবেগিক, নৈতিক ইত্যাদি বিকাশের বিষয়ে তাঁরা ততটাই উদাসীন। ফলে ছেলেমেয়েদের সব গুণের পরিপূর্ণ বিকাশ হচ্ছেনা। অথচ বিকাশ একটি নিরবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। উপরে উল্লেখিত যেকোন একটি বিকাশের সাথে আরো এক বা একাধিক বিকাশ ওতপ্রোতভাবেভাবে জড়িত। একটির বিকাশ আরেকটির বিকাশকে সাহায্য করে। যেমন- কখনও দৈহিক বিকাশ মানসিক বিকাশকে, আবার কখনও আবেগিক বিকাশ মানসিক বিকাশকে প্রভাবিত করে। বিকাশ একটি জটিল প্রক্রিয়া। শিশুর কোন বিকাশ কীভাবে, কতোটা, কখন অন্য কোন বিকাশকে প্রভাবিত করে তা স্পষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে এইসব বিকাশ ধারাবাহিকভাবে বা নিরবিচ্ছিন্নভাবে মানুষের মধ্যে প্রতিনিয়ত ঘটতে থাকে। মানুষের ভাল ও মন্দ আচরণের পিছনে দায়ী হল এই বিকাশগুলো ঠিকমতো হওয়া বা না হওয়া।
আমার নিজের, আত্মীয় ও পরিচিত ছেলেমেয়েদের, বিশেষ করে স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদের দেখে আমার মনে হয়, আমাদের সময়ের ছেলেমেয়েদের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, আবেগিক, নৈতিক বিকাশ অনেক বেশী হতো যা এখনকার বাচ্চাদের হয় না। এখনকার বাচ্চারা খুব বেশী আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর, অনুদার, অসামাজিক, অমিশুক, অধৈর্য্য। এদের মধ্যে নৈতিকতাবোধের ঘাটতি আছে। এরা নিজেদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে জানে না। নিজের চেয়ে বা নিজের আগে অন্যের ভালোমন্দের কথা বেশী ভাবতে জানে না। এরা অন্যের মতকে শ্রদ্ধা করতে জানে না। এরা বেয়াদব। এরা গুরুজনদের ভক্তি করতে জানে না। কাউকে অপমান করতে পারাকে এরা ‘কৃতিত্ব‘ মনে করে। এরা সংযমী নয়, অপচয় করতে দ্বিধা করেনা, অন্যের জন্য কোনকিছু ত্যাগ বা অন্যের সাথে কোনকিছু শেয়ার করতে চায় না। এদের মধ্যে কৃতজ্ঞতাবোধ নেই। জীবনে অন্যের জন্য কিছু করার ব্রত এদের মনে নেই। সমাজের, দেশের, পরিবারের প্রতি এদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। আমাদের সময়ে বড় ভাইবোনেরা ছোট ভাইবোনদের দেখাশোনা করতো। এখনকার বাচ্চারা কোন দায়িত্ব নিতে চায় না। এরা শুধু অভিযোগ করতে জানে, সমাধান করতে জানে না। এদের মধ্যে নিজের পোশাক, সাজগোজ নিয়ে সচেতনতা আছে। নিজের ঘর, পড়ার টেবিল, কাপড়, জিনিশ গোছানোর তাগিদ নেই। বাবা, মা, ভাই, বোন, আত্মীয়কে কোন কাজে বা কোন কিছুতে মন থেকে তৎপর হয়ে সাহায্য করার ইচ্ছা, চেষ্টা বা আগ্রহ এদের নেই। সামান্য থেকে সামান্যতর কোন কাজের কথা বললে এরা মহাবিরক্ত হয়। এরা শারীরিকভাবেও অতটা শক্তিশালী নয়। কাজ না করে করে এরা অথর্ব হয়ে যাচ্ছে। শহরের অধিকাংশ বাচ্চার ওজন অতিরিক্ত। (তুলনামূলকভাবে গ্রামের ছেলেমেয়েরা অনেক পরিশ্রমী) এদের বাকী বিকাশগুলোও কম। এরা ফার্মের মুরগীর মত শুধু খেতে জানে, পেতে জানে। আর জানে ফেসবুক, মোবাইল, কম্পিউটার নিয়ে মত্ত থাকতে। তার আশপাশে, এমনকী নিজের আত্মীয়স্বজনদের কার কী অবস্থা, কার কী সমস্যা, ইত্যাদি কোনকিছু নিয়ে এদের বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। বাসায় কে এলো, কে গেলো, তা জানার কৌতুহলও এদের নেই। ফোনে আত্মীয়দের সাথে কথা বলা, খোঁজ নেয়াও এদের কাছে ‘সময় নষ্ট’ মনে হয়। অথচ বন্ধুবান্ধবের সাথে রাতদিন কথা বা চ্যাট করতে এদের কখনোই ক্লান্তি আসেনা। এরা শুধু স্কুলে-কলেজে যাওয়া, আড্ডা দেয়া, প্রেম করা আর প্রাইভেট পড়তে জানে। এদের জীবন একঘেঁয়ে। বুঝতে পারছি, কথাগুলো খুব কর্কশ শোনাচ্ছে। তবে আমার বক্তব্যের সপক্ষে আমি বাংলাদেশেরই অতীত ও বর্তমান প্রজন্মের জীবনযাপনের একটি তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরছি, যাতে এ বিষয়গুলো স্পষ্ট হবে।
বাচ্চাদের সবধরনের বিকাশে কিছু বিষয় প্রভাব বিস্তার করে যেগুলো সম্পর্কে আমাদের ধারণা পরিস্কার নয়। যেমন,
১) ভাষার বিকাশ
২) দৈহিক বিকাশ
৩) প্রকৃতির সান্নিধ্য
৪) বয়স
৫) আত্মধারণার বিকাশ
৬) পাঠ্য বিষয় নির্ধারণ
৭) শিশুর নৈতিক বিকাশে বাবামা-ই প্রধান বাধা
ভাষার বিকাশ:
বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী জ্যাঁ পিঁয়াজের মতে, ভাষার বিকাশ শিশুদের বুদ্ধিগত, আবেগিক, সামাজিক ও মানসিক বিকাশকে প্রভাবিত করে। তাই ভাষার বিকাশকে দ্রুত করার চেষ্টা থাকতে হবে। শিশু কথা বলতে শিখলে তবেই সে অন্যের সাথে মনের ভাব আদানপ্রদান করতে পারে বা অন্য মানুষের সাথে সহজে মিশতে পারে। এভাবে তার সামাজিক বিকাশ হয়। আবার মিশতে পারে বলেই অন্য শিশুদের সাথে খেলতে পারে। খেলা থেকে আনন্দ উপভোগ করতে পারে, পরাজয়ের কষ্ট অনুভব করতে পারে। খেলার মাধ্যমে সে তার বন্ধু বানায়। তার সাথে থাকতে চায়, মিশতে চায়। এভাবে তার আবেগিক ও মানসিক বিকাশ হয়।
ভাষার দ্রুত বিকাশের জন্য আমরা তেমন চেষ্টা করিনা। মনে করি, শিশু এমনিতেই ভাষা শিখে যাবে। কিন্তু শিশুর ভাষার বিকাশ দ্রুত করতে শিশুর সাথে বেশী কথা বলা, বিশেষ করে শিশুদের কথা শোনা জরুরী। শিশুকে গান, ছড়া গল্প বলতে উৎসাহী করতে হবে। বেশী লোকজনের মধ্যে থাকলে শিশুরা তাড়াতাড়ি কথা শেখে। ফলে তার উপরোক্ত বিকাশগুলো তাড়াতাড়ি ঘটে। যৌথ পরিবারের শিশুরা, বিশেষ করে গ্রামের শিশুরা অনেক মানুষের মধ্যে থাকার ফলে তাড়াতাড়ি কথা শেখে। ফলে তাদের ভাষা ও বুদ্ধির সাথে সাথে অন্যান্য বিকাশও তাড়াতাড়ি হয়।
দৈহিক বিকাশ:
ছেলেমেয়েদের দৈহিক বিকাশ ঠিকমত না হলে তাদের মানসিক বিকাশও ঠিকমত হয়না। যেমন – বাচ্চারা যখন প্রথম হাঁটতে শেখে, তখন পড়ে যায়। ফলে ভয় পায়, হতাশ হয়। কিন্তু একবার চলতে শিখে গেলে তার আত্মবিশ্বাস বাড়ে, শিশু খুশী হয়, আনন্দ পায়। হাঁটতে শিখলে সে একা একা এখানে ওখানে যাওয়া, এটা সেটা ধরা ইত্যাদি করতে সাহসী হয়। এভাবে তার দৈহিক সামর্থ্য তার মানসিক শক্তি বাড়ায়। ফলে পড়ে যাওয়া সত্ত্বেও সে বার বার চলার চেষ্টা করে। এভাবে একসময় হাঁটতে শেখে। শিশুকে আত্মনির্ভরশীল হতে দিলে সে নিজের মত করে সমস্যার সমাধান করতে শেখে, শিশুর মনে সাহস বাড়ে, শিশু আত্মবিশ্বাসী হয়, ভয় কেটে যায়, কোন কাজ করতে নিজে নিজেই উদ্যোগী হয়।
গ্রামের ছেলেরা পড়ালেখার পাশাপাশি কৃষিকাজও করে। মেয়েরাও পড়ালেখার পাশাপাশি ঘরের সব কাজ করে অভ্যস্ত। তাই তারা শারীরিক ও মানসিক উভয় দিক দিয়েই শক্তিশালী হয়। এখনকার শহুরে ছেলেমেয়েরা ঘরের কাজ করাকে অপমানজনক ও বিরক্তিকর মনে করে।
আগেকার দিনে রাজা বাদশারাও সন্তানদের বিদ্যার্জনের পাশাপাশি শরীরচর্চা, ঘোড়ায় চড়া, যুদ্ধবিদ্যা শেখাতেন তাদের শরীরকে ফিট রাখার জন্য। শহুরে শিক্ষিত ও ধনী পরিবারের বাবামারা সন্তানকে দিয়ে কোন কাজ করানোকে সন্তানকে ‘কষ্ট দেয়া‘ মনে করেন। ফলে তাদের বাচ্চারা কখনোই আত্মনির্ভরশীল হয়না। এরা আজীবন পরনির্ভরশীল থেকে যায়। কাজের লোক ছাড়া চলতে পারে না।
গ্রামের ছেলেমেয়েরা নদী সাঁতরানো, গাছে চড়া, সাংসারিক কাজ এসব করে বলে তাদের শারীরিক বিকাশের সাথে সাথে মানসিক স্বাবলম্বিতা বাড়ে। কম্পিউটারে গেম খেলা শহুরে শিশুদের শারীরিক বিকাশে কোন কাজে আসে না। শীতকালে ব্যাডমিন্টন বা মাঝে মধ্যে ক্রিকেট খেলা বিনোদন দেয় বটে। তবে শহরের সব ছেলেরা সবসময় এসব খেলে না। মেয়েরাতো আরোই খেলেনা। ফলে তারা শারীরিকভাবে দূর্বল হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে খেলাধুলা করে যে বিনোদন পাওয়া যায়, তা থেকেও তারা বঞ্চিত হয়। গ্রামে ছেলেমেয়েদের মাছ ধরা, ভেলা চালানো, আম পাড়া, ঝড় বৃষ্টিতে ফল কুড়ানো, খেলা, এসবের মাধ্যমে শারীরিক বিকাশ হয় এবং প্রকৃতির নানারূপ সরাসরি দেখার ফলে তারা আনন্দ উপভোগও করতে পারে যা শহুরে বাচ্চারা পারে না।
আমরা ছোটবেলায় স্কুলের লম্বা ছুটি হবার অপেক্ষায় থাকতাম। বিশেষ করে বার্ষিক পরীক্ষার পরে গ্রামে বেড়াতে গিয়ে কত মজা করতাম! আখ খাওয়া, নদী বা পুকুরে গোসল, মাছ ধরা, দোলনায় দোল খাওয়া, মাঠের খড়ে ছোলার গাছসহ ছোলা পুড়িয়ে ছোলা খাওয়া, খোলা মাঠে চড়ুইভাতি, সাইকেল চালানো, চারদিকে খোলা মাঠে ছুটাছুটি, খেলা, আরও কত কী!!! আমার আফসোস হয়, আমার বাচ্চারা এসব করে না, করতে পারে না। এরা পার্কের কৃত্রিম বিনোদনেই সন্তুষ্ট। তবু আমি সুযোগ পেলেই ওদের নিয়ে গ্রামে যাই। কিছুটা হলেও ওরা বাংলাদেশের প্রকৃতিকে চিনুক।
প্রকৃতির সান্নিধ্য:
আদিকাল থেকে প্রকৃতির বিরূপ পরিবেশে খাপ খাওয়াতে গিয়েই মানুষের সবরকমের বিকাশ হয়েছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। বিখ্যাত দার্শনিক, মনোবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদদের মতে, শিশুরা শিখবে তাদের চারপাশোর পরিবেশ, প্রকৃতি থেকে। সহজ থেকে কঠিন, জানা থেকে অজানা, মূর্ত থেকে বিমূর্ত সবকিছু। চেনা পরিবেশ, প্রকৃতি থেকে শিখলে তাদের শেখা সহজ হবে, শিখতে গিয়ে ভয় পাবে না, তারা শিখবে আনন্দের সাথে। ফলে তাদের দেহ-মনের পরিপূর্ণ বিকাশ হবে। শিশু তার পরিবেশের সাথে যথাযথভাবে খাপ খাওয়াতে পারবে, সে সুখি হবে, প্রকৃত মানুষ হবে।
কিছুদিন আগেও আমরা পরিবেশ থেকেই শিখতাম। নদী, পুকুর, বিল আমাদের শেখাতো সাঁতার কাটা, মাছ ধরা, নৌকা চালানো। গাছ শেখাতো কীভাবে গাছে চড়ে ফল, ফুল, খড়ি পাড়তে হয়, বাবার পেশা (কৃষক, কামার, কুমার, জেলে তাঁতি, যাই হোক) ও মায়ের কাজ শিশুদের শেখাতো জীবিকা বা সাংসারিক কাজ। এখন আমাদের শিশুরা আর প্রকৃতি থেকে শেখে না। শেখে প্রাইভেট আর কোচিং সেন্টার থেকে। ফলে তারা শুধু পড়ালেখা করে, আর কিছু করে না, শেখে না।
বয়স:
পিঁয়াজের মতে, এক একটা বয়সে শিশুদের এক এক রকমের ধারণার বিকাশ হয়। ফলে শিশুর চিন্তা ধীরে ধীরে যুক্তিনির্ভর হয়। শিশুরা তার চারপাশের প্রকৃতি সম্পর্কে জানতে চায়। তাই শিশুকে কল্পনার খোরাক দিতে হবে, তার প্রশ্নের জবাব দিতে হবে, শিশুর ভ্রান্ত ধারণা বা বিশ্বাস শুধরে দিতে হবে। আগেকার দিনে নানী দাদীরা বাচ্চাদের গল্প শোনাতেন। রাজা-রাণী, দৈত্য-দানব, চাঁদের বুড়ি, পরীদের রাজ্যের নানা কাহিনী তাদের বিনোদন দিতো, তেমনি দিতো মানসিক বিকাশের নানা উপাদান। এখনকার বাচ্চারা আর গল্প শোনে না। তারা টিভি দেখে, গেম খেলে। তারা কল্পনা করতে শেখে না।
আত্মধারণার বিকাশ:
শিশুদের নিজের সম্পর্কে ধারণা বা আত্মধারণা বা সেল্ফ কনসেপ্ট তৈরি হয় তার চারপাশের মানুষজন তাকে কীভাবে মূল্যায়ন করে, তার ভিত্তিতে। শিশু নিজেকে বিচার করে অন্যের মন্তব্য শুনে। তুমি ভাল ছেলে, তুমি পড়ালেখায় ভাল, তুমি বুদ্ধিমান… বড়দের এমন হাজার মূল্যায়ন বা মন্তব্য থেকে শিশু নিজের সম্পর্কে ধারণা পায়। আত্মধারণা ভাল হলে শিশুর আচরণ ইতিবাচক হয়। কিন্তু মূল্যায়ন বা মন্তব্য নেতিবাচক হলে আত্মধারণা নেতিবাচক হয়। তাই কোন শিশুকে ক্রমাগত হতাশাজনক কোন কথা বলা যাবে না, শিশুকে হেয়, অপমান বা হতাশ করা যাবে না। যেমন – তুমি কিছু পারো না, তোমাকে দিয়ে কিছু হবে না, তুমি কোন কাজের না, তুমি একটা বোকা বা খারাপ ছেলে বা মেয়ে… এমন মন্তব্য করা যাবে না। সবসময় উৎসাহজনক কথা বলতে হবে। যেমন – তুমি পারবে, চেষ্টা কর, এটি খুবই সহজ কাজ ইত্যাদি।
পাঠ্য বিষয় নির্ধারণ:
আমাদের ছেলেমেয়েদের ওপর অতিরিক্ত পরীক্ষার চাপ ও বয়সের তুলনায় পাঠ্য বিষয়ের আধিক্য তাদের মেধার ওপর চাপ ফেলে। এত বেশী পড়ার চাপ পড়ার প্রতি শিশুদের আগ্রহ কমাচ্ছে। এর কুফল আমরা প্রতিনিয়তই পাচ্ছি। গোল্ডেন এ প্লাসের ছড়াছড়ি। কিন্তু তারা শুদ্ধভাবে বাংলায় একটা প্যারাও লিখতে পারে না।
এজন্য বিখ্যাত দার্শনিক সক্রেটিস বলেছেন, শিশুদের পাঠ্যবইতে ৮০-৯০ ভাগ কন্টেন্ট বা উপাদান হতে হবে তার পরিচিত জগৎ থেকে। আর ১০-২০ ভাগ উপাদান হবে অপরিচিত। এমন হলে শিশু পড়াকে ভয় পাবে না। তার পছন্দের বিষয়গুলো তার পাঠ্যবিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করা গেলে শিশু আনন্দ নিয়ে শেখে। পড়াতে তার বুদ্ধি, ক্ষমতা, আবেগ, মনোযোগ ইত্যাদি বাড়ে। ফলে তার শিখন স্থায়ী ও ভাল হয়। কিন্তু আমাদের পাঠ্যবইগুলোতে অপরিচিত অনেক বিষয় থাকে। বিশেষ করে ইংরেজিমাধ্যম স্কুলের বইগুলোতে ও মাদ্রাসার পাঠ্যবইয়ের অনেক বিষয়গুলো শিশুদের অপরিচিত। তাই আমাদের শিশুরা সেগুলো বাধ্য হয়ে শুধু মুখস্থ করে। তারা আনন্দ নিয়ে কোন কিছু শেখে না।
শিশুর নৈতিক বিকাশে বাবামা-ই প্রধান বাধা:
শিশুরা তার চারপাশের, বিশেষ করে বাবামার আচরণ অনুকরণ করে। তাই বাবামা অসৎ হলে শিশুর মধ্যে নৈতিক বিকাশ ঘটে না। বাবামার ত্রুটিপূর্ণ আচরণ, যেমন ঝগড়া-মারামারি-গালাগালি করা, মিথ্যে বলা, প্রতারণা করা, অসৎ কাজ ও অসৎ আয় করা, আক্রমণাত্মক আচরণ, শিশুর প্রতি অবহেলা, নির্যাতন করা ইত্যাদি আচরণ শিশুর নৈতিক বিককাশকে বাধাগ্রস্ত করে। শ্রদ্ধা, ভক্তি, মায়া, স্নেহ, সমবেদনা, উদারতা, সততা, পরোপকার ইত্যাদি মানবিক গুণগুলোর বিকাশ শিশুদের মধ্যে ঘটাতে হলে বড়দের উচিত নিজেদের জীবনে এসবের চর্চা করা, যাতে শিশুরা তাদেরকে ‘আদর্শ’ ভেবে অনুসরণ করে।
আমাদের সন্তানদের সব গুণের বিকাশে বাবামাসহ সবার আন্তরিক চেষ্টা খুব জরুরী।
ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭; ৬:০০ পূর্বাহ্ন
একটি জাতির ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন শিক্ষিত মানুষ। শিক্ষিত মানুষ গড়ার প্রাথমিক ধাপ হলো শিশুর সুস্থ বিকাশ।
লেখাটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭; ২:০২ অপরাহ্ন
অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭; ৯:০৫ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশে শিশুর প্রতি যত্ন নেয়ার বিষয়টা গুরুত্ব পায় না।
ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭; ২:০৩ অপরাহ্ন
শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য কোন চেষ্টা করা হয়না। ধন্যবাদ।