০
১৬০৪ বার পঠিত
(সম্প্রতি ডেভিড বার্গম্যান The Sunday Times has a lot of explaining to do about its article on Bangladesh শিরোনামে একটি লেখা লিখেছেন। লেখাটি গুরুত্বপূর্ণ বিধায় নবযুগ ব্লগের পাঠকদের উদ্দেশে বাংলায় অনুবাদ করে পোস্ট করলাম। )
সানডে টাইমস-এ বাংলাদেশের ওপর করা প্রতিবেদনটির বিশদ ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন
প্রতিবেদনটি বাংলাদেশ পলিটিকোতে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল, কিন্তু বাংলাদেশ সরকার সাইটটি নিষিদ্ধ করে দেওয়ার কারণে লেখাটি পুনরায় এখানে প্রকাশ করতে হলো।
একজন ব্যাবসায়ী, যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জিহাদ ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার অপরাধে গত দশ বছর যাবৎ যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন, তার দেওয়া বিবৃতি অনুসারে বাংলাদেশে বিদ্যমান স্বৈরতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থা, অবাধ ধরপাকড়, মিথ্যা মামলা, বিচার বহির্ভূত হত্যা ও গুমের তথ্য সামনে নিয়ে আসা হয়েছে তার উৎস কতটুকু নির্ভরযোগ্য, সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক কর্নেল শহিদ উদ্দীন খানের বিরুদ্ধাচার করে যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছিলেন সানডে টাইমসের নিজস্ব সাংবাদিক টম হার্পার, তার এই প্রতিবেদনটি করতে একটুও বেগ পেতে হয়নি।
এই প্রতিবেদনের উৎস যদি তাদের সততা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন না উঠে (অনেকে মনে করছেন প্রশ্ন উঠবে না), জনাব হারপার-এর কাজ ছিল আল জাজিরাতে প্রকাশিত একটি তদন্ত প্রতিবেদন পাঠ করা, যে কীভাবে একজন অবৈধ অস্ত্র ব্যাবসায়ী, সন্ত্রাসী ও জিহাদি থেকে বাংলাদেশ সরকারের নিরাপত্তা বিয়য়ক উপদেষ্টা ও (টিউলিপ সিদ্দিকী) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যের চাচা তারেক আহমেদ সিদ্দিকীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও ব্যাবসায়িক সহযোগী হয়ে উঠলেন। দীর্ঘ দশ বছর (২০০৯-২০১৮) জনাব সিদ্দিকী ও খানের পরিবার যৌথভাবে জমি ক্রয় বিক্রয়-এর ব্যবসা করেছেন যেখানে সিদ্দিকের সহধর্মিনী ছিলেন প্রধান এবং জনাব খান সহযোগী ব্যাবস্থাপক হিসাবে কাজ করেছেন।
আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী (৫ এপ্রিল ২০১৮) জনাব খান ও সিদ্দিকী তাঁদের পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেন, ঠিক তারপরেরদিন বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক একরকম উদ্ভট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল সিদ্দিকীকে আড়াল করা এবং খানকে চুপ করে দেওয়া।
বাস্তবিক অর্থে হারপার এ প্রতিবেদন তৈরি করা উচিত ছিল গত চৌদ্দমাসে জনাব সিদ্দিকী কীভাবে তাঁর প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে খানের চারজন সহযোগীকে জেলে দিয়েছেন যাদের মধ্যে রয়েছে খানের তিন ভাই, যাঁদেরকে বিভিন্ন সময়ে জেলে দিয়েছেন; সাথে খানের তিনজন অফিস সহযোগী ও এক ভাইকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যাওয়া মাস অতিক্রম করলেও এখনো তাদের খোঁজ মেলেনি।
(সম্পুর্ন ঘটনা অন্য একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে, এই প্রতিবেদনটিও পড়ুন)
সানডে টাইমসের বোঝা উচিত বাংলাদেশ সরকার বা গোয়েন্দা সংস্থার সাথে কোন ধরনের আলোচনা বা বৈঠক ছাড়াই এই ধরনের প্রতিবেদন তৈরি করা শুধু বোকামিই নয়, চরমমাত্রার অপবাদও বটে।
যখন বোঝা যাচ্ছে সানডে টাইমসের এই ধরনের প্রতিবেদনের কোন ভিত্তিই নেই, তখন খানকে ডেকে নিয়ে তথ্যগুলোর বিষয়ে অস্বীকার করা একদমই গ্রহণযোগ্য নয়।
এই প্রতিবেদনে সিদ্দিকির সাথে জনাব খানের ব্যাবসায়িক সম্পর্ক, বিচারবিহীন জেল, গুম, এমনকী এই সংবাদ প্রকাশ করার পর-পরই যে বাংলাদেশে আলজাজিরার নিজস্ব ওয়েব সাইট নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে এ বিষয়েও কিছু উল্লেখ করেন নি।
যদি সানডে টাইমসের এই প্রতিবেদনের কোন বিশ্বস্ত সুত্র থেকেও থাকে তবে তা খুজে পাওয়া মুশকিল যে এই তথ্য কীভাবে পেল।
কিছুই না, ঘটনার সুত্রগুলো একটু ভালোভাবে দেখলেই বোঝা যাবে জনাব খানের বিপক্ষে জিহাদ ও সন্ত্রাসবাদের যে অভিযোগগুলো তুলে ধরা হয়েছে, তা সম্পুর্ণভাবে অস্পষ্ট এবং মিথ্যা।
সানডে টাইমসের আরো অনেক ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন।
নোট:
শহিদ উদ্দীন খান (খান)
তারিক আহমেদ সিদ্দিকী (সিদ্দিকী)
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন