০
১৫৯৬ বার পঠিত
জগতের সকল তরুণেরই স্বপ্ন থাকে পৃথিবীকে বদলে দেবার, সেটা যেমন ব্যক্তিগত তেমনি সমষ্টিগতও।
এই বদলে দেবার ইচ্ছেটি বা ভাবনাটাই রাজনীতি সচেতনতা।
খ
এই যে বদলে দেবার ইচ্ছে ও লড়াই সেটা আসলে কী বা কেন? বদল ব্যাপারটিই বা কী?
যা আছে কোন তারুণ্য তা নিয়ে সন্তষ্ট কী কখোনো হয়েছে?
না।
পিতার সাথে পুত্রের সংঘাতটি আসলে কী?
এই মানি না, মানবো না’ই তো।
প্রকাশ্য না হলেই কি রাজনীতি নেই। আছে, আপাত আমার চিৎকার করবার সক্ষমতার অভাব আছে তাই নিরব আছি কিংবা কুকুরের ন্যায় ভৌ ভৌ করিয়া লাভ নাই সময় ও সুযোগে আমার দিনে আমি করেই দেখাবো জীবন কী… এ ভাবনাই তো এক রাজনীতি, প্রাজ্ঞ রাজনীতি। এটা সমকালের তারুণ্যের অন্তরভাবনা বলেই আমার বিশ্বাস। আমরা যারা ভেড়ার পালের ভেড়া হয়ে ভ্যা ভ্যা করেছি আর স্বপ্ন দেখেছি- একদিন আমরাও পালের গোদা হবো, আমাদেরও এ রকম লেজ থাকবে। তাদের কাছে সমকালের তারুণ্যের এ রাজনীতি অবশ্যই অদ্ভুত, সঙ্গে পিছন ফিরে ভেড়ার পাল বা ল্যাজ দেখতে না পারার হতাশাটাও কী নেই?
গ
কেন এ রকম হলো? সোভিয়েত পতন, বিশ্ব ব্যাংক, এনজিও ইত্যাদি নিয়ে অনেক বিদ্যুৎ খরচ ও আঙ্গুল চালোনো হবে (বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের গল্প বলে রামপালও হবে)। কিন্তু এসবই কী কারণ? সোভিয়েত পতনজনিত হতাশার কারণটি খুবই বড়। তৎকালীন তারুণ্য ও মাদকের বিক্রয় বৃদ্ধি তার প্রমাণ। কিন্তু ঠিক তার পরের তারুণ্য, ১৯৯৩-এ এদেশের আকাশে এলো স্যাটেলাইট টিভি (তার আগেই এসেছে ভিডিও), ১৯৯৬ এ ইন্টারনেট, ১৯৯৭ এ মোবাইল ফোন। ১৯৯৮ এ Google, ২০০৩ এ এলো Hi5, ২০০৪ এ Facebook। সোভিয়েত পতনের হতাশায় রুদ্ধবাক দেশের পণ্ডিত সমাজ হারালো শেয়াল রাজত্ব। তাহাদের লেজ তাই ছোট হতে থাকলো। তাদের মুখে তাই এ তারুণ্য সচেতন নয় বলে চিৎকার।
ঘ
মুক্তিযুদ্ধের পরের প্রজন্ম বদলে দিতে গিয়ে দেশটাকেই নিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানের বন্দরে। তারপরের তারুণ্য রাজাকারদের গাড়িতেই দেশের পতাকা লাগিয়ে দিল। আর তথাকথিত রাজনীতি বিমূখ তারুণ্য (আসলে ভেড়ার পাল হতে অনিচ্ছুক) রাজাকারদের সে আসন থেকে শুধু টেনে নামালো না, চুলচেরা বিশ্লেষণ শেষে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়েও দিল।
ঙ
প্রগতি মানে প্রগতি, জমিদার বাবুদের বংশবদ হয়ে থাকবার কাল বহু আগেই ফুরিয়েছে। তো জমিদার বাবুরা লাল ঝাণ্ডা কিংবা সবুজ ঝাণ্ডা যতোই ওড়ান আমরা যারা ভেড়ার পাল তারা কিন্তু পালের গোদা নির্বাচন করতে শিখেছি ও শিখছি… রাণীমা ও মণি ছোটবাবুদের আমরা সম্মান করি শ্রদ্ধাও করি এবং এটা জানি আপনারা তা নন। আপনাদের গর্দানে জমে ওঠা চর্বিই তার প্রমাণ। আপনাদের উন্নয়ন গল্পের ইংরেজি স্কুলে পড়েই আমরা গুগল ও উইকিপিডিয়ার লেখাগুলি পড়তে শিখেছি। আপনাদের বোকাবাক্সের সিরিয়াল দেখেই আমরা জগতকে চিনতে শিখেছি। আপনাদের নিউজ চ্যানেল আর টকশোর তথ্যগুলো যাচাই করবার জন্য গুগল আমার হাতের মুঠোতেই আছে…
ছ
বদলে দেবার ইচ্ছেটার নামই তারুণ্য, ইহাই প্রাকৃতিক ও মানবিক…
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন