০
২৯৬ বার পঠিত
প্রাকৃতিকভাবে নারী তার ডিম্বকে নিষিক্ত করতে সক্ষম বীর্যকে খুজে নেয় বা নারীই পছন্দ করে পুরুষকে। পুরুষ বা বীর্য আসলে অন্ধ দৌড়বিদ (আন্ধারে সব সমান, হা হা হা…)। তার কোন পছন্দের বালাই নেই। ছুটতে থাকে, ছুটতে থাকে কখন তাকে ডিম্ব টেনে নেয় তা সে নিজেই জানে না।
খ
সমাজ গঠনের প্রারম্ভে এই প্রাকৃত নিয়মে নারী পুরুষ বেছে নিতো। তাতে দুর্বল (নপুংসক) পুরুষ নারী সঙ্গ থেকে বঞ্চিত হতো। সমাজ গঠনের পরবর্তী ধাপে নারীর করুণা থেকেই কিংবা শিকারী পুরুষের সামাজিক প্রতিপত্তি বৃদ্ধির কারণেই সঙ্গী নির্বাচনের নতুন ধারণা ‘সঙ্গবাস’ (leave together) বা বিবাহের প্রচলন ঘটে। কৃষি বা সামন্ত ব্যবস্থায় ‘বিবাহ’ বা ‘পরিবার’ সমাজ গঠনের একক হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সে সময়েও নারীই সঙ্গী নির্বাচন করতো। ‘বানিজ্য’ ও বানিজ্য যাত্রা শুরু হলে প্রাকৃতিক সক্ষমতা নির্ভর পছন্দের বিপরীতে ‘মানবিক বিবেচনা’ গুরুত্ব পেতে থাকে (সতী ও শীবের গল্প)।
গ
কৃষি বা সামন্ত বা পুরুষতন্ত্র মেসপটেমিয়-মিশর-বুদ্ধ, গ্রীক-রোমান, আরব বা ইসলামী সাম্রাজ্য পর্যায় পেরিয়ে ইউরোপীয় সাম্রাজ্যের আকারে সমগ্র বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বানিজ্য বা পুঁজির যাত্রা শুরু হলো…
ঘ
সামন্তের সূচনাতেই মানুষ দু’দলে বিভক্ত; প্রভু ও দাস। সামন্তে নারীর দাসে পরিণত হওয়ার যাত্রা রোমান থেকেই আমরা লক্ষ করবো যা ‘কুইন ভিক্টোরিয়ায়’পূর্নরূপে প্রকাশিত (Victorian taboos)।
ঙ
শিল্প বিপ্লবের ফলে দাসেরা শ্রমিকে পরিণত হতে থাকে। কেরানী বা বুর্জোয়া বা মধ্যবিত্তের সংখ্যাধিক্য বা নগর ও নাগরিকের বিকাশ সমাজ গঠনকেই পালটে দিতে লাগলো, রাষ্ট্র এর উদ্ভব নতুন এক নৈতিকতার সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে।
ছ
সামন্ত বা ধর্ম বা জমিদারী বা রাজ্য বা প্রজা বা দাস ও রাষ্ট্র বা পুঁজি বা আইন বা শ্রমিক/নাগরিক আলাদা গঠন ও নৈতিকতা। রাষ্ট্রে নারী ও পুরুষ প্রত্যেকই ব্যক্তি হিসেবে বিবেচ্য। রাষ্ট্রে পরিবার নয় ব্যাক্তিই একক।
জ
নারী ও পুরুষের এই অবস্থান পরিবর্তনই ধর্ষণসহ অন্যান্য নারীর প্রতি সহিংসতাকে নগরের পথে পথে নিয়ে এসেছে। নারী আইন কাঠোমোতেই প্রাকৃত নিয়মের অনুসরণ করবার সুযোগ পাচ্ছে, যা দুর্বল পুরুষের নারী সঙ্গলাভের নিশ্চিত সম্ভাবনাকে আর নিশ্চয়তা দিচ্ছেনা। দুর্বল পুরুষ তাই নারীকেই আক্রমন করছে, কারণ শত্রুকে সন্ধান করবার কিংবা বশে আনবার মেধা তার নেই। তার শত্ররু যে প্রকৃতি তাকে সে বহু আগেই ঈশ্বর নামক কল্পনায় মগজ ভর্তি করে রেখেছে। পুঁজি বা যুক্তি বা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি যে তার দুর্বলতা দূর করবার উপায় তা সে জানেনা বা বুঝতে পারছেনা বা তার ‘ঈশ্বর’* ভর্তি মগজে এ তথ্যটুকুর জায়গা হচ্ছে না…
সামন্ত পুঁজির দেশে পুরুষ তাই নারীকে হেনস্থা করতে আইনের ভয়ে বেলুন ভর্তি বীর্য ছুড়ে মারে**, সে বলতে চায় দেখ আমিও বীর্যবান, কিন্তু সত্য হচ্ছে সকল বীর্য নারীর ডিম্বকে নিষিক্ত করেনা। নারী পুরুষের চোখ ও শরীরের গন্ধ দিয়ে বুঝে কোন বীর্যে তার ডিমকে নিষিক্ত করবার শুক্রানু আছে…
ছ
প্রায় ৫০ হাজার বছরের সামন্ত মন/চর্চা পুঁজি ও রাষ্ট্রের উদ্ভবকে মেনে নিতে বা বুঝে নিতে সময় নিচ্ছে…
*আল্লাহ, ভহগবান, গড, ইত্যাদি…
** নয়া দিল্লী, দোল পূর্ণিমা, ২০১৮
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন