শান্তির ধর্ম হবার পরেও তবুও কেন যে বিশ্বব্যাপী এমন আত্মঘাতী হামলা হয় আমার কিচ্ছু মাথায় ধরে না। আমি যেহেতু একটি মডারেট ইসলামিক সমাজের মানুষ, তাই আমিও সবার মতো কিছু না পড়ে, না ঘেঁটেই নিশ্চিত জানি- ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা বা শ্রেষ্ঠ শাসনব্যবস্থা।
২৩শে মে ২০১৭ তে ম্যানচেস্টারের ভয়ংকর আত্মঘাতী হামলার খবর নিউজে লাইভ দেখছিলাম। দেখতে দেখতে ভাবছিলাম এই ছেলেগুলি কী ধর্ম জানে না? ধর্ম জানলে কীভাবে এমন করে?
তারপর ভাবলাম পড়াশোনা করা যাক। এই সুইসাইডরা যে কেমন রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করতে চায় সেটা একটু পড়ে এবং জেনে দেখি। ওদেরটা ভালো লাগলে নিজেও আইএসআইএস জয়েন দিব। আমার ফেসবুকের বন্ধুদেরও বলবো আপনারাও আসুন। এটাই ভালো, আমি পড়ছি।
সেলফ থেকে নানান বইপত্র নামালাম। ধুলোয় হাঁচি দিতে দিতে পড়তে বসছি। সাথে আছে নেট এবং গুগল। দেখা যাক কোথায় যাই।
আমার প্রথম আগ্রহ হলো মহানবী (সঃ) এর এবং পরবর্তী খলীফায়ে রাশেদীনদের সময়ের পবিত্র শাসনব্যবস্থা। বা দ্যা গোল্ডেন এজ অফ ইসলাম।
পড়তে শুরু করলাম প্রাক ইসলামিক যুগের আরব থেকে।
প্রাক ইসলামিক যুগে আরবে ছিল মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা। অনেক গোত্রের নামও ছিল স্ত্রীবাচক । মহিলারাই ছিল তখনকার সমাজে সম্পত্তি ও পরিবারের তত্ত্বাবধায়ক। পুরুষরা শুধু পরিশ্রমই করতো কিন্তু পরিবারকে নিয়ন্ত্রণ করতো মহিলারা। মোহাম্মদের স্ত্রী খাদিজাও ছিলেন একজন সম্ভ্রান্ত প্রভাবশালী নারী। নিজের বিশাল ব্যবসা নিজেই দেখাশোনা করতেন। তাঁর বাণিজ্য বিস্তারিত ছিল দামেস্ক, সিরিয়াসহ তৎকালীন মধ্যপ্রাচ্যের অনেক প্রদেশে।
আমিতো অবাক! তাই নাকী? এরচেয়ে ভালো অবস্থাতো নারীরা বর্তমান কিউবাতেও পায়নি। দেখি হাদিস কোরান কী বলে?
পরবর্তীতে ইসলাম নাকী নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান। কীভাবে দিয়েছে আমি অবশ্য পড়ে কিছুই বুঝতে পারিনি, অবশ্য আমাদের যে মুসলিম নারীরা হিজাব পড়ে সহি ইসলাম মানছেন- তাঁরা নিশ্চল পড়ে বুঝেছেন। আমার আবার তাদের ওপর প্রচুর ভরসা। হাদিস, কোরআন যতোই ঘাঁটলাম, আমি অবশ্য অন্যকিছু পাই। কী পাই এটা যারা ভাবছেন, তাঁরা কষ্ট করে যদি পুরো লেখাটা শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে কিছু উত্তর পাবেন। অনেক লম্বা সম্মান দিয়েছে। তাই শেষে দিয়েছি। যার খুব আগ্রহ, সেই যদি শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে কিছু উত্তর পাবেন।
এবার যাই রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায়।
নিশ্চল সেখানে অনেক শান্তির বাণী থাকবে। যার কাছে প্ল্যাটো, এরিস্টটল, গৌতম বুদ্ধ, কনফুসিয়াসের বাণীর অস্তিত্ব থাকবে না।
Plato:
Good people do not need laws to tell them to act responsibly, while bad people will find a way around the laws
Plato:
Be kind, for everyone you meet is fighting a harder battle.
Aristotle:
It is not enough to win a war; it is more important to organize the peace.
Confucius:
What you do not want done to yourself, do not do to others.
Buddha:
Peace comes from within. Do not seek it without.
Buddha:
However many holy words you read, however many you speak, what good will they do you if you do not act on upon them?
প্ল্যাটো, এরিস্টটল, গৌতম বুদ্ধ, কনফুসিয়াসের কয়েকটা লাইন পড়ে এবার শুরু করলাম ইসলামিক শাসন ব্যবস্থা পড়া।
যেমন মুসলমানরা যতো বিধর্মীদের রাষ্ট্র আক্রমণ করেছেন, দখল করেছেন, সেইসব মানুষের প্রতি মুসলিম আইন কী এবং কেমন ছিল বা হবে! যতোই পড়তে থাকি ততোই আমার মনে হয়- বলে কী! এইটাই ইসলামিক আইন? শাশ্বত জীবনব্যবস্থা? আমি ভুল পড়ছি নাতো?
আসুন দেখি কেমন ছিল সেই আইন।
প্রথমে আসুন জেনে নেই খারাজ কী?
অমুসলিম জিম্মির ওপর ধার্যকৃত ভূমিকর হলো খারাজ। এই করের পরিমাণ ছিল ভূমিতে উৎপন্ন ফসলের অর্ধেক। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর সময় এটা ধার্য করা হয়। খাইবার বিজয় করে তিনি এই করপ্রথা চালু করেন। অর্থাৎ, আপনার দেশ মুসলমান শাসক কর্তৃক দখল হবার পরে আপনার সাথে তাদের এই চুক্তি হবে যে, আপনি আপনার ফসলের অর্ধেক আপনার মুসলমান শাসককে দিতে বাধ্য। যদি আপনি ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন অথবা মুসলিম সৈন্যবাহিনীতে যোগ দিতে পারেন তাহলে এই কর আপনার ওপর প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। যদিও সৈন্যবাহিনীতে যোগ দেয়াটা ছিল অসম্ভব। ইসলামপূর্ব আরবে খারাজের অস্তিত্ব ছিলো না।
এবার আসুন জিম্মি কারা সেটা জেনে নিই:
আহল আল কিতাব বা গ্রন্থানুগামীগণই আহল আল জিম্মার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। যারা পৌত্তলিক বা মূর্তি উপাসক তাদের ক্ষেত্রে দেশত্যাগ বা হত্যার বিধান। মহানবী (সঃ) আরবের ইহুদি ও খ্রিস্টানদের সাথে নিরাপত্তামূলক চুক্তি সম্পাদন করেন। তাদের বলা হতো আল্লাহ ও তার রসুলের নিরাপত্তাপ্রাপ্ত বা সংক্ষেপে আহল আল-জিম্মাহ বা জিম্মি। পরবর্তীকালে ইসলামের সাম্রাজ্য বিস্তারের সাথে সাথে পারস্যের জুরাস্ট্রিয়ান, ভারতীয় হিন্দু ও বৌদ্ধদের, হারানের মূর্তি পূজকদের এবং উত্তর আফ্রিকার বার্বানদের প্রতি জিম্মির মর্যাদা সম্প্রসারিত করা হয়।
কোনও রাষ্ট্র দখল করার সময় বা অবরোধকালে সেই শহরবাসীকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। তাঁরা আত্মসমর্পণ করলে তাদের সাথে এই জিম্মি চুক্তি সম্পাদিত হতো।
জিম্মিদের বিধিনিষেধ:
জিম্মিদের সাথে মুসলমানদের পার্থক্য বজায় রাখার জন্য তাদের আচার অনুষ্ঠান, পোশাক পরিচ্ছদের প্রতি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে কতগুলো বিধিনিষেধ প্রণয়ন করা হয়। এই নিয়মগুলো জিম্মিদেরকে মেনে চলতে হয়।
যেমন – জিম্মিদের সাথে মুসলমানদের পার্থক্য নিরূপণকারী পোশাক পরিধানের আদেশ। সে পোশাকের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল এক ধরনের কটিবন্ধ। পোশাকের ওপর বিশেষরকমের রঙিন ছাপ বা তালি। এবং একখানা পাগড়ি। তাদের ওপর আরো অনেক অপমানজনক বিধিনিষেধ আরোপ করা হতো, যেমন দামেস্কের পাকা রাস্তা দিয়ে তাদের চলা ফেরা করতে দেয়া হতো না। জিম্মিগণ সাধারণত সামরিক বাহিনীতে চাকুরী পেতো না। জিম্মিগণ নতুন গির্জা, মন্দির, উপাসনালয় নির্মাণ করতে পারতো না, তবে ভগ্ন হলে সেটা মেরামত করতে পারতো। তাঁরা প্রকাশ্যস্থানে ধর্মীয় সমাবেশ, মিছিল, বা উৎসবাদি করতে পারতো না। তাদের গৃহনির্মাণের জন্য অনুমতি যোগাড় করতে হতো। এবং তাদের গৃহ মুসলমানের গৃহ থেকে উঁচু হতে পারবে না। মজলিশে কোনও মুসলমান অপেক্ষা তাঁরা উঁচুকণ্ঠে কথা বলতে পারবে না। জিম্মি মুসলমানের ওপর কর্তৃত্ব করতে পারবে না। মুসলমানের সাথে জিম্মির বিরোধ ঘটলে সেটা মুসলিম আইনে বিচার হবে জিম্মির ধর্মীয় আইনে নয়। ইসলাম বা মহানবী (সঃ) এর বিরুদ্ধে কোনও কুৎসা রটালে তাকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেয়া হতো। বাদী-বিবাদী যদি মুসলমান এবং জিম্মি হয় তবে আইন অনুসারে মুসলমানকে কাজীর দরবারে প্রবেশের অগ্রাধিকার দেয়া হবে ও তাকে জিম্মি অপেক্ষা উন্নত আসন দেয়া হবে।
এবার আসুন জেনে নেই গণিমত কী ?
গণিমত হচ্ছে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ। গণিমতের এক পঞ্চমাংশ মহানবী রাষ্ট্রের জন্য রেখে বাকী চার অংশ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সৈন্যদের মধ্যে বণ্টন করে দিতেন। এক্ষেত্রে অশ্বারোহী সৈন্য, পদাতিক সৈন্যের দ্বিগুণ পেতো। আর এক পঞ্চমাংশকে মহানবী তিন ভাগ করতেন, নিজের জন্য এক ভাগ, আত্মীয় স্বজনের জন্য এক ভাগ, আর একভাগ বায়তুল মালে জমা দিতেন। আর অমুসলিম যুদ্ধবন্দী নর-নারীকে গণিমত হিসেবে যুদ্ধ অংশগ্রহণকারী মুসলিম সৈন্যদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া হতো।
রাজস্বের উৎস কী ছিল:
রাজস্বব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য হযরত মুহাম্মদ (সঃ) পাঁচটি রাজস্ব আয়ের ৫ টি উৎস প্রদান করেন।
১. গণিমত বা যুদ্ধপ্রাপ্ত সম্পদ
২. যাকাত
৩. জিজিয়া
৪. খারাজ
৫. আল- ফে / আল ফাই
আল ফে/ আল ফাই কী?
আলফাই হচ্ছে দখলকৃত রাষ্ট্রীয় ভূমি সম্পত্তি। কোন দেশ দখল করলে বেদাবী ভূমি, পলাতকদের বা পরাজিতদের কৃষি-খামার, অগ্নি-মন্দির, পাঠাগার, ঘর-বাড়ি, বনভূমি ইত্যাদিকে আলফাই বলা হতো।
জিজিয়া কর কী?
মুসলমান কর্তৃক অমুসলমানদের নিরাপত্তা করই এক কথায় জিজিয়া কর। অর্থাৎ, আপনি যদি মুসলমান না হোন কিন্তু আপনার দেশের শাসক যদি মুসলমান হয়, তাহলে আপনার জান-মালের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য আপনি তাকে জিজিয়া কর দেবেন। এই কর মুসলমানদের ওপর প্রযোজ্য নয়। তবে আপনি যদি সৈন্যবাহিনীতে যোগ দেন কিংবা মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত হন তাহলে আপনার জিজিয়া কর মওকুফ করা হবে। আগেই বলেছি- সৈন্যবাহিনীতে যোগ দেয়াটা জিম্মিদের জন্যে ছিল অসম্ভব ব্যাপার।
এই হচ্ছে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ পূর্ণাঙ্গ জীবন-বিধানের বিধর্মীদের প্রতি প্রয়োগিত আইন! এটা কোনও মুসলমানের সাথে যদি কোনও অমুসলিম রাষ্ট্র করে? বা আমার জিজ্ঞাসা মুসলমানেরা ইতিহাসের কোন রাষ্ট্রের কাছে এই সম্মান পেয়েছে? বা এখনো পাচ্ছে। এবং বর্তমান সৌদিতে অমুসলিমদের প্রতি নিয়ম-কানুন কী?
আচ্ছা খলিফা পদপ্রার্থীর হবার গুণাবলী কী একটু দেখে নিই:
১. তাকে মুসলিম হতে হবে
২. তাকে কুরাইশ বংশোদ্ভূত হতে হবে
৩. তাকে পুরুষ হতে হবে
৪. তাকে বালেগ হতে হবে
৫. তাকে অবশ্যই চরিত্রবান হতে হবে
৬. তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে রোগমুক্ত হতে হবে এবং
৭. সামরিক ও বেসামরিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য কোরান হাদিসের উপযুক্ত জ্ঞান থাকতে হবে।
এবং এই খলিফা মুসলিম দেশের শাসক হবেন। এবং তিনি এই উপরোক্ত নীতি বলবত করবেন। এবং তিনি যেই রাষ্ট্রের ক্ষমতাই দখল করেন তার সেই রাষ্ট্রের কোনও আইনে বিচার হবে না। কারণ মুসলিম আইনে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ, রসুলের আইন, বা খলিফার শাসন।
এবার আমার কাছে স্পষ্ট হচ্ছে- কেন এই মুসলমানরা যুদ্ধ করেন। ৬০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু করে তাঁরা ১৯ শতকের প্রায় শেষাব্দি প্রতিটি শতকে কত কত যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছেন তার সংখ্যা প্রায় একশর চেয়ে বেশি বৈ কম হবে না। যারা ইসলামি ইতিহাসের ছাত্র তাঁরা ভালো জানেন। কতো দেশকে মুসলিম শাসক আক্রমণ করেছে। আবার সেই দেশকে পূনরুদ্ধার করতে ওইদেশের মানুষের আক্রমণকে প্রতিহত করেছে।
গণিমত বা যুদ্ধপ্রাপ্ত সম্পদ, জিজিয়া, খারাজ, আল- ফে / আল ফাই এর মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। এই ধর্মে আখিরাতে বেহেস্তে যা দেবার লোভ দিয়েছে এর কাছে ইহকাল নেহায়েত কম মনে হচ্ছে না।
তারা সিরিয়া জয় করেন, মেসোপটেমিয়া জয় করেন, পারস্য জয় করেন, মিশর জয় করে, স্পেন জয় করেন, আফ্রিকা জয় করে, উজবেকিস্তান জয় করেন, আফগানিস্তান জয় করেন, ভারত জয় করেন, বাংলা জয় করেন, তারা কীভাবে জয় করেন? এই তেরোশো বছরে তারা কতগুলো যুদ্ধ করেছেন একবার ভাবুন! অথচ যার নিজের দেশ, সে হবে পরাধীন, সে হবে গণিমতের মাল, সে দিবে জিজিয়া, খারাজ, আল- ফে / আল ফাই। বাহ! সুন্দরতো সুন্দর না?
১৯৭০ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ৪৬৩ টি আত্মঘাতী হামলা করেছে তারা ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য। ৬০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯ শতকের শেষাব্দি ১০০ মতো যুদ্ধ করেছে।
এই ধর্ম যদি শান্তির ধর্ম না হয় তাহলে শান্তির ধর্ম আর কোনটা?
শুধু ভারতকে ধর্মের নামে ভাগ করে ১৯৪৭ সালে হত্যা করেছে ১৪ মিলিয়ন মানুষ। কতলোক মাইগ্রেট করেছে তার সংখ্যা অজানা। আমাদের বাংলাদেশে এতো বৌদ্ধ মঠ, এইসব বৌদ্ধরা গেলো কোথায়? এতো পুরানো পুরানো প্রাসাদের মতো হিন্দু বাড়ি, হিন্দুরা গেলো কই? সুমিয়েরিয় সভ্যতা, ব্যাবিলিওন সভ্যতা, এশিরিয় সভ্যতা, ইজিপশিয়ান সভ্যতা, উর সভ্যতা, ভারতীয় সভ্যতা বাংলার গৌরবের প্রাচীন ইতিহাস বৌদ্ধ সভ্যতা গেলো কোথায় ওইসব অঞ্চল থেকে? মুসলিম শাসকরা যেখানেই গেছে তাদের সভ্যতা-সংস্কৃতি আগে ধ্বংস করে দিয়েছে। যেনো তাঁরা আর নিজেদের শিকড় খুঁজে না পায়। আমাদের বাউলদের গানের ২ হাজার বছরের সভ্যতায় অনেক প্রাচীন পুঁথি ছিল। ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বখতিয়ার খিলজি সব পুড়িয়ে দেয়। যেমন তিনি নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করেছিল। তারা কোন দেশের সংস্কৃতি সহ্য করতে পারে না। যেমন এখন পারেনা বাংলাদেশের হেফাজতে ইসলাম। বাংলাদেশের সংস্কৃতি তাদের অনুভূতিতে আঘাত লাগে।
আহা! আত্মসম্মান থাকলে কোনো ধর্মের মানুষ একটা মুসলিম দেশে থাকবে। অথচ মুসলমানরা কোন দেশে থাকে না? সেইদেশের কোন সুযোগ সুবিধা ভোগ করে না। তবুও তাদের আরেকটু বেশি চাই। তাই এই আত্মঘাতী হামলা। আগে এরা সরাসরি রাষ্ট্র আক্রমণ করতো। এখন নানা ধরনের দেশের সাথে চলতে হয়, জোট আছে; তাই চক্ষুলজ্জায় সরাসরি আক্রমণ করতে পারছেনা। তবে যারা এই হামলা করছে যদি তারা সফল হয় তাতে তাদের লাভ বৈ ক্ষতি নেই। আর মরে গেলে শহীদের দরজাতো খোলা আছেই। এই বিষয়েও মাশাল্লা হাদিস কোরানে কম সমর্থন নেই।
যাক, অনেক পড়াশোনা হয়েছে এবার থামি। আমার যদি কোনও তথ্যে ভুল হয়- তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। ভুল তথ্য উপাত্ত দেয়ার অভিপ্রায় আমার নেই। যদি কেউ সংশোধন করে দেন তো কৃতার্থ হবো। আমি জানি পাঠকের পড়াশোনা লেখকের চেয়ে অনেক বেশি হতেই পারে।
আর হিজাবী সহি মুসলিম আপারা। আপনাদের জন্য এই নীচের বিশাল অংশ। পড়ুন। আমি নানান জায়গা থেকে ঘাটাঘাটি করে এইসব তথ্য নিয়েছি। যদি এখানেও কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে সংশোধন করে দিবেন। আর অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্যে মার্জনা করবেন।
ইসলাম দিয়েছে নারীদের সর্বোচ্চ সম্মান!
১) নারীর অবস্থান পুরুষের নিচে। ( কোরআন 4:34, 2:228)
২)তাদের মর্যাদা পুরুষের অর্ধেক। ( কোরআন 2:282, 4:11, বোখারি 3:48:826, 1:142)
৩)তারা পুরুষের অধিকৃত সম্পত্তি। (বোখারি 5:59:524)
৪)তারা কুকুরের সমতুল্য। (বোখারি 1:9:490, 1:9:493, 1:9:486, মুসলিম 4:1032)
৫) তারা ভালবাসার অযোগ্য। (বোখারি 7:62 :17, দাউদ 41:5119)
৬) তাদের বন্ধক রাখা যায়। (বোখারি 5:59:369)
৭) পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে তারা অপবিত্র। (কোরআন 2:222, আল তাবেরী, বই নং 1, পৃষ্ঠা 280) হজ্ব করার অযোগ্য। (বোখারি 1;6:302)
৮) তারা নিকৃষ্ট ( বোখারি 9:88:219) বুদ্ধিহীন ( বোখারি 2:24:541) অকৃতজ্ঞ ( বোখারি (1:2:28) খেলার পুতুল ( আল মোশারফ, ১ নং বই, পৃষ্ঠা 263) হাড়ের মতো বক্রতাযুক্ত। ( মুসলিম 8:3466-68, বোখারি 7:62:113-114, 4:55:548)
৯) তারা পুরুষের চাষযোগ্য ক্ষেত্র। ( কোরআন 2:223, দাউদ 11:2138)
১০) তারা শয়তানের রূপ। ( মুসলিম 8:3240)
১১) তাদের মাঝে নিহিত আছে যাবতীয় খারাপ। ( বোখারি 4:52:110-111)
১২) তারা বিশ্বাসঘাতক। ( বোখারি 4:55:547)
১৩) পুরুষের জন্য ক্ষতিকারক। ( বোখারি 7:62:33)
১৪) নেতৃত্ব দেয়ার অযোগ্য (বাখারি 9:88:219)
১৫) প্রার্থনা ভঙ্গ হওয়ার কারণ। ( বোখারি 1:9:490, 1:9:493)
১৬) স্বামীর যৌন আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে তারা বাধ্য। (মুসলিম 8:3368)
১৭) পুরুষরা ইচ্ছা করলেই ধর্ষণ করতে পারবে। (কোরআন 70:29-30,দাউদ 11:2153,31:4006, বোখারি 5:59:459,8:77:600,8:3432,8:3371)
১৮) পুরুষ পারবে চারজন নারীকে বিয়ে করতে। ( কোরআন 4:3)
১৯) তালাকের অধিকার রয়েছে শুধু পুরুষদেরই। (বোখারি 8:4871-82, মিশকাত হাদিস নং 15)
২০) স্ত্রীর গায়ে হাত তোলার অধিকার রয়েছে শুধুমাত্র পুরুষদেরই। ( কোরআন 4:34, মুসলিম 4:21127) যার কারণে কোনো জবাব চাওয়া হবেনা। ( দাউদ 11:2142)
২১) বেহেস্তে পুরুষের জন্য রয়েছে বহু কুমারী সম্ভোগের ব্যবস্থা। ( কোরআন 33:48,44:51-54,55:56-58,78:31-35, মুসলিম 40:6795,40:6796, বোখারি 4:54:476, তিরমিজি 2687)
২২) শুধুমাত্র নীরবতাই তাদের বিয়ের সম্মতি। (বোখারি 9:86:100-101,9:85:79)
২৩) সর্বদা আবদ্ধ রাখতে হবে পর্দায়। ( বোখারি 5:59:462,6:60:282)
২৪) মৃত্যুর পর তাদের অধিকাংশের জন্য রয়েছে দোজখের আগুন। ( মুসলিম 36:6596-7, বোখারি 7:62:124,1:2:29,2:18:161)
কোরান থেকে:
১.
“তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্যক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার করো। আর নিজেদের জন্য আগামীদিনের ব্যবস্থা করো এবং আল্লাহ্কে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাৎ করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।”
[কোরান: ২:২২৩]
২.
“আর তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েয পর্যন্ত। আর যদি সে আল্লাহর প্রতি এবং আখিরাত দিবসের উপর ইমানদার হয়ে থাকে, তাহলে আল্লাহ্ যা তার জরায়ুতে সৃষ্টি করেছেন তা লুকিয়ে রাখা জায়েজ নয়। আর যদি সদ্ভাব রেখে চলতে চায়, তাহলে তাদেরকে ফিরিয়ে নেবার অধিকার তাদের স্বামীরা সংরক্ষণ করে। আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনি ভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী। আর নারীদের ওপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। আর আল্লাহ্ হচ্ছে পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ।
[কোরান: ২:২২৮]
৩.
“আল্লাহ্ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেন: একজন পুরুষের অংশ দু’জন নারীর অংশের সমান। অত:পর যদি শুধু নারীই হয় দু-এর অধিক, তবে তাদের জন্যে ঐ মালের তিন ভাগের দুই ভাগ যা ত্যাগ করে মরে এবং যদি একজনই হয়, তবে তার জন্যে অর্ধেক। মৃতের পিতা-মাতার মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্যে ত্যাজ্য সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ, যদি মৃতের পুত্র থাকে। যদি পুত্র না থাকে এবং পিতা-মাতাই ওয়ারিশ হয়, তবে মাতা পাবে তিন ভাগের এক ভাগ। অত:পর যদি মৃতের কয়েকজন ভাই থাকে, তবে তার মাতা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ ওছিয়্যেতর পর, যা করে মরেছে কিংবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের জন্যে অধিক উপকারী তোমরা জান না। এটা আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত অংশ নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, রহস্যবিদ।
[কোরান: ৪:১১]
৪.
হে মুমিনগণ! যখন তোমরা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে ঋণের আদান-প্রদান কর, তখন তা লিপিবদ্ধ করে নাও এবং তোমাদের মধ্যে কোন লেখক ন্যায়সঙ্গত-ভাবে তা লিখে দেবে; লেখক লিখতে অস্বীকার করবে না। আল্লাহ্ তাকে যেমন শিক্ষা দিয়েছেন, তার উচিত তা লিখে দেয়া। এবং ঋণ গ্রহীতা যেন লেখার বিষয় বলে দেয় এবং সে যেন স্বীয় পালনকর্তা আল্লাহ্কে ভয় করে এবং লেখার মধ্যে বিন্দুমাত্রও বেশ কম না করে। অত:পর ঋণগ্রহীতা যদি নির্বাধ হয় কিংবা দুর্বল হয় অথবা নিজে লেখার বিষয়বস্তু বলে দিতে অক্ষম হয়, তবে তার অভিভাবক ন্যায়সঙ্গত-ভাবে লিখাবে। দুজন সাক্ষী কর, তোমাদের পুরুষদের মধ্যে থেকে। যদি দুজন পুরুষ না হয়, তবে একজন পুরুষ ও দুজন মহিলা। ঐ সাক্ষীদের মধ্য থেকে যাদেরকে তোমরা পছন্দ কর যাতে একজন যদি ভুলে যায়, তবে একজন অন্যজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। যখন ডাকা হয়, তখন সাক্ষীদের অস্বীকার করা উচিত নয়। তোমরা এটা লিখতে অলসতা করোনা, তা ছোট হোক কিংবা বড়, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। এ লিপিবদ্ধ করণ আল্লাহর কাছে সুবিচারকে অধিক কায়েম রাখে, সাক্ষ্যকে অধিক সুসংহত রাখে এবং তোমাদের সন্দেহে পতিত না হওয়ার পক্ষে অধিক উপযুক্ত। কিন্তু যদি কারবার নগদ হয়, পরপর হাতে হাতে আদান-প্রদান কর, তবে তা না লিখলে তোমাদের প্রতি কোন অভিযোগ নেই। তোমরা ক্রয়-বিক্রয়ের সময় সাক্ষী রাখ। কোন লেখক ও সাক্ষীকে ক্ষতিগ্রস্ত করো না। যদি তোমরা এরূপ কর, তবে তা তোমাদের পক্ষে পাপের বিষয়। আল্লাহ্কে ভয় কর তিনি তোমাদেরকে শিক্ষা দেন। আল্লাহ্ সব কিছু জানেন।
[কোরান: ২:২৮২]
৫.
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অত:পর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা; যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়।
[কোরান: ২:২৩০]
৬.
তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের ঋতু-বর্তী হওয়ার আশা নেই, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস। আর যারা এখনও ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি, তাদেরও অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে। গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তানপ্রসব পর্যন্ত। যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ্ তার কাজ সহজ করে দেন।
[কোরান: ৬৫:৪]
৭.
পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ্ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাজত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ্ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।
[কোরান: ৪:৩৪]
৮.
সকল সধবা নারীদের তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে, কিন্তু তোমাদের স্বত্বাধীন যেসব দাসী রয়েছে তাদের হারাম করা হয়নি। এ হল তোমাদের জন্য আল্লাহর বিধান। এদের ছাড়া অন্য সব নারীকে তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে এ শর্তে যে, তোমরা তাদের কামনা করবে অর্থের বিনিময়ে বিয়ে করার জন্য, ব্যভিচারের জন্য নয়। বিয়ের মাধ্যমে যে নারীদের তোমরা সম্ভোগ করেছ তাদের দিয়ে দিবে তাদের নির্ধারিত মহর। আর তোমাদের কোন গুনাহ হবে না যদি মহর নির্ধারণের পর তোমরা কোন বিষয়ে পরস্পর সম্মত হও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, হেকমত-ওয়ালা।
[কোরান: ৪:২]
পুরুষের তুলনায় নারীর মর্যাদা:
নারী-পুরুষের প্রকৃতিগত সম্পর্ক বিষয়ে এমন ব্যতিক্রমী বক্তব্যকে অনেকে প্রমাণ হিসেবে হাজির করেন, সমান গুরুত্ব সত্ত্বেও প্রকৃতির ভিন্নতায় যার সম্পর্ক রাত-দিনের মতো। পূর্বাপর বিবেচনায় না এনে বক্তব্যকে ভুল বোঝার একটি সরল দৃষ্টান্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিচে উল্লেখিত বক্তব্য:
يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ تَصَدَّقْنَ فَإِنِّي أُرِيتُكُنَّ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ. فَقُلْنَ وَبِمَ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ : تُكْثِرْنَ اللَّعْنَ وَتَكْفُرْنَ الْعَشِيرَ. مَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَدِينٍ أَذْهَبَ لِلُبِّ الرَّجُلِ الْحَازِمِ مِنْ إِحْدَاكُنَّ. قُلْنَ وَمَا نُقْصَانُ دِينِنَا وَعَقْلِنَا يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ : أَلَيْسَ شَهَادَةُ الْمَرْأَةِ مِثْلَ نِصْفِ شَهَادَةِ الرَّجُلِ؟ قُلْنَ بَلَى. قَالَ: فَذَلِكَ مِنْ نُقْصَانِ عَقْلِهَا. أَلَيْسَ إِذَا حَاضَتْ لَمْ تُصَلِّ وَلَمْ تَصُمْ؟ قُلْنَ: بَلَى. قَالَ: فَذَلِكَ مِنْ نُقْصَانِ دِينِهَا.
অর্থাৎ –
‘হে নারী সম্প্রদায়, তোমরা বেশি বেশি সদকা করো। কেননা, আমি তোমাদের বেশি জাহান্নামের অধিবাসী দেখেছি।’ মহিলারা বললেন, কেন হে আল্লাহর রসূল? তিনি বললেন, ‘তোমরা অধিকারে অভিশাপ দাও এবং স্বামীর অকৃতজ্ঞতা দেখাও। বুদ্ধিমান পুরুষকে নির্বুদ্ধি বানাতে অল্প বুদ্ধি ও খাটো দীনদারির আর কাউকে তোমাদের চেয়ে অধিক পটু দেখিনি।’ তাঁরা বললেন, হে আল্লাহর রসূল, আমাদের জ্ঞান ও দীনের অল্পতা কী? তিনি বললেন, ‘মহিলাদের সাক্ষী কি পুরুষদের সাক্ষীর অর্ধেক নয়?’ তাঁরা বললেন, জী, হ্যাঁ। তিনি বললেন, ‘এটিই তাদের জ্ঞানের অল্পতা। যখন তাদের মাসিক শুরু হয় তখন কি তারা নামায ও রোজা বাদ দেয় না?’ তাঁরা বললেন, জী, হ্যাঁ। তিনি বললেন, ‘এটিই তাদের দীনদারির স্বল্পতা। [1]
আবারও হাদিসের দিকে তাকাই –
১.
জয়নাব বিনতে আবু সালামা থেকে বর্ণিত, আল্লাহর নবী বলেন- যে নারী আল্লাহ ও শেষ বিচারে বিশ্বাস করে তার পক্ষে বৈধ না কোন মৃতের জন্য তিন দিনের বেশী শোক করা। তবে সে তার স্বামীর জন্য চার মাস দশ দিন শোক করতে পারে।
[সহি বোখারি, বই-২৩, হাদিস-৩৭০]
২.
হাম্মাম মুনাব্বি থেকে বর্ণিত যা আবু হোরায়রা কর্তৃক অনুমোদিত, আল্লাহর নবী বলেছেন- বাড়ীতে স্বামী উপস্থিত থাকা অবস্থায় কোন নারীর তার অনুমতি ব্যতীত রোজা রাখা উচিত না। তার অনুমতি ব্যতীত বাড়ীতে এমন কেউ থাকা উচিত না যারা মাহরাম (পিতা-মাতা, ভাই-বোন ইত্যাদি সম্পর্কে সম্পর্কিত)। এমনকি স্বামীর অনুমতি ব্যতীত কোন স্ত্রীর কোন সম্পদ ব্যয় করাও উচিত না।
[সহি বোখারি, বই -৫, হাদিস- ২২৩৮]
৩.
যাবির থেকে বর্ণিত, আল্লাহর নবী একজন নারীকে দেখলেন এবং সাথে সাথে তিনি তার অন্যতম স্ত্রী জয়নবের কাছে আসলেন যিনি তখন তার ত্বক রঙ করছিলেন এবং তার সাথে যৌন-ক্রীড়া করলেন। তারপর তিনি তার সাথীদের কাছে ফিরে গেলেন ও তাদের বললেন- স্ত্রীলোকটি আমার দিকে অগ্রসর হয়ে একটা শয়তানের রূপ ধারণ করল। তাই তোমরা যখন কোন নারীকে দেখবে তখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের কাছে সত্ত্বর চলে যাবে যাতে তোমরা তোমাদের মনের চাঞ্চল্য-ভাব দুর করতে পার।
[সহি মুসলিম, বই-৮, হাদিস- ৩২৪০]
৪.
আব্দুল্লাহ মাসুদ থেকে বর্ণিত, আমরা একবার আল্লাহর নবীর সাথে অভিযানে বের হয়েছিলাম ও আমাদের সাথে কোন নারী ছিল না। তখন আমরা বললাম- আমাদের কি খোজা (নপুংসক) হয়ে যাওয়া উচিৎ নয় ? তখন তিনি আমাদের তা করতে নিষেধ করলেন ও স্বল্প সময়ের জন্য কোন মেয়েকে কিছু উপহারের বিনিময়ের মাধ্যমে বিয়ে করার জন্য অনুমতি দিলেন।
[সহি মুসলিম, বই-৮, হাদিস-৩২৪৩]
৫.
আবু হোরায়রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূলকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন- একটা নারীকে চার কারণে বিয়ে করা যাবে – তার ধন সম্পদ, মর্যাদা, সৌন্দর্য ও ধর্ম।
[সহি মুসলিম, বই-৮, হাদিস-৪৩৫৭]
উপসংহার:
আমাদের এই ভারতীয় উপমহাদেশে বৈদিক সভ্যতা বলে একটা সভ্যতা ছিল। পাঁচ হাজার বছর সে এই উপমহাদেশকে জ্ঞান ধ্যান সভ্যতা দিয়েছে। যার ওপর চারটি বেদ-গ্রন্থ নিয়ে বেদসমগ্র পাওয়া যায়। এই সভ্যতাকে ভেড্ডিড সিভিলাইজেশনও বলে। লালন নানান জায়গায় ঘুরতেন। নানা মুনির থেকে জ্ঞান আহরণ করতেন। মানুষের প্রতি মানুষের এই আলগা শাসন বা ঈশ্বর আল্লাহর নাম নিয়ে মানুষকে ভয় দেখানো দেখে তিনি বুদ্ধিমানের মতো একটা গীত রচনা করেছিলেন। অনেক কথা একটি লাইনে তিনি বলে দিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন-
“বেদে নাই যার রূপরেখা…”
অর্থাৎ বেদও যাকে ডিফাইন করতে পারেনি পাঁচ হাজার বছর সভ্যতা চালিয়ে- বলি,
বেদে নাই যার রূপরেখা, পাবে সামান্যে কী তার দেখা?
অক্টোবর ৩, ২০১৭; ৮:৫৯ পূর্বাহ্ন
ভালো পোস্ট। লেখককে ধন্যবাদ।
খাঁটি মুসলমান বলতে আমরা আরবদের বুঝে থাকি। বিশ্বব্যাপী এটা স্বীকৃত যে আরবরাই ইসলাম ধর্মের একমাত্র মালিক ও বিপণনকারী। মুসলমানরা নারীদের কী মনে করে সেটার বহু প্রমাণ বিশ্বব্যাপী বিদ্যমান থাকলেও বাঙালি সাধারণ মুসলিম নারীরা সেসব ধর্তব্যে আনতে চান না। কারণ ইসলাম সম্পর্কে তাদের জ্ঞানের পরিধি সীমিত।
প্রসঙ্গক্রমে এখানে আজকে প্রথম আলোয় প্রকাশিত একটি রিপোর্ট শেয়ার করলাম। নারী পাঠকরা একটু হলেও ইসলামের স্বরূপ বুঝতে সমর্থ হবেন।
দৈনিক প্রথম আলো: শেখদের যৌন লালচের শিকার কুমারীরা!
শিরোনামের উপরে ক্লিক করলেই পড়তে পারবেন।