২০১৬’র অগাস্টে জার্মানির ফেডারেল সরকারের অর্থানুকূল্যে, লেখকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন PEN-এর Writers-in-Exile ফেলো লেখকের স্কলারশিপ নিয়ে জার্মানিতে স্থায়ী বসতি গড়ার পর, পৃথিবীর নানান দেশের লেখকদের পাশাপাশি তুরস্কের (তুর্কি, তুর্কাই কিংবা টার্কিশ) অনেক বিখ্যাত লেখকদের সঙ্গেও আমার ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে তুর্কি লেখকদের সঙ্গে বিভিন্নসময় আলাপ আলোচনা ও আড্ডার ফলে বিচিত্ররকম অভিজ্ঞতা সঞ্চারিত হচ্ছে।
নেজিম হিকমেত
গতবছর এরকম ছোট একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে তুর্কাই কবি ‘নেজিম হিকমেত’ (নাজিম হিকমত)-এর নামের উচ্চারণ বিষয়ে লিখেছিলাম। কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের মতো কবিও তুর্কাই এর এই বিখ্যাত বিপ্লবী কবির নাম বাংলা প্রতিবর্ণীকরণে ভুল করেছিলেন। যাই হোক আজকেও ছোট আকারে দু’টি তুর্কি শব্দ বিষয়ে লেখার তাগিদ অনুভব করছি। যেমন তুর্কি ‘হান’ এবং ‘হাতুন’ শব্দ নিয়েই বলা যাক। তুর্কি হান শব্দ ভারতবর্ষে গিয়ে হয়ে গেছে ‘খান’ এবং হাতুন হয়ে গেছে ‘খাতুন’। শব্দ দুটি মূলত মুসলমান ধর্মের অনুসারীরাই ব্যবহার করেন।
তবে মুসলমানদের বাইরেও অনেকে নিজেদের নামের শেষে ‘খান’ ব্যবহার করে থাকেন। তুর্কাই ‘হান’ শব্দটি ভারতবর্ষে গিয়ে কীভাবে ‘খান’ এবং ‘হাতুন’ শব্দটি কীভাবে ‘খাতুন’ হয়ে গেল, সেটা হয়তো ভাষা গবেষকরা বলতে পারবেন। তবে তুর্কাই লেখক বন্ধুদের কাছে জেনেছি ‘হান’ বলতে তাঁরা প্রধান’কে বুঝে থাকেন। ইংরেজিতে যাকে বলা হয় চিফ।
কথাগুলো পড়ার পরে এতোক্ষণে নিশ্চয় বলিউড হিরো সালমন খান, শাহরুখ খান কিংবা আমির খানের নাম নিশ্চয় মনে আসছে। হাহাহা। এতো গেল পুরুষদের কথা। ভারতবর্ষের (অবিভক্ত ভারত) অনেক মুসলমান নারীদের নামের শেষে ‘খাতুন’ ব্যবহার করেন। আজকের এই স্ট্যাটাস লেখার সময় হান বা খান উল্লেখ করতে গিয়ে হাতুন শব্দটিও চলে এসেছে। তবে দুঃখজনক খবর হলো, তুর্কাই লেখক বন্ধুদের কাছে ‘হাতুন’ শব্দের অর্থ জেনে নিতে ভুলে গেছি। পরে কখনো জেনে নিয়ে আরেকবার পোস্ট দেয়া যাবে।
অনেক রাত হয়েছে। এবার ঘুমোতে চললাম। শুভরাত্রি।
(ইমেজ: আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক নেইল আইটকেন এর কাছ থেকে ধার করা নেজিম হিকমেত-এর অংকিতচিত্র)