০
১১২৫ বার পঠিত
ড. জাফর ইকবালকে নিয়ে একজন লিখেছিলেন অনুযোগের সুরে। তার লেখা অনুযায়ী, ড. জাফর ইকবালের অনেক উচ্চকর্ম রয়েছে। উল্লেখযোগ্য গবেষণা রয়েছে, যা দেশের বাইরের নামী সায়েন্স ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বিদেশের উচ্চ বেতনের চাকরি ছেড়ে দেশে ফিরে এসেছেন।
খুব ভালো কথা। দেশের প্রতি তার টান রয়েছে বুঝলাম। কিন্তু দেশে এসে তিনি কী করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য কর্মগুলো কী। সাস্টের আন্দোলনে তার ভূমিকা। পাঠ্যবই নিয়ে তার কর্মকাণ্ড। এমন অনেক কিছুই উল্লেখ করা যায়। বলবেন, পাঠ্যবই বিষয়ে তিনি তার ভুল স্বীকার করেছেন। কিন্তু যারা একথা বলেন তাদের বলি, সবকিছুই কি ভুল স্বীকারে শেষ হয়ে যায় এবং সেটা যদি হয় একটা প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেয়ার প্রক্রিয়া। এমন আব্দারটি কি ছেলেমি হয়ে যায় না? মুফতি ইব্রাহিমও ভুল স্বীকার করেছেন, কিন্তু তারপরেও তাকে কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।
দেশে ফিরে এসেছেন বলেই ড. জাফর ইকবালের সব কাজকে জাস্টিফাইয়ের সুযোগ নেই। তারচেয়ে বরং বিদেশে থেকে সত্যিকার অর্থেই বিজ্ঞানের জন্য যদি কিছু করতেন, তাতে সারাবিশ্বের মানুষের সাথে আমরাও নিশ্চিত উপকৃত হতাম। সাথে বিদেশেও আমাদের সম্মান বাড়তো।
যদি তিনি লেখক স্বীকৃতি পেতে দেশে ফিরে থাকেন, তবে হুমায়ূন আহমেদের মতন লেখাকেই বেছে নিন। হুমায়ূন আহমেদের মতন সার্থক মানুষ হোন। যাকে আজো মানুষ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে এবং করবে। যিনি বাংলা সাহিত্যে অমর হয়ে থাকবেন। তানা করে উল্টো যদি শুধু সফল হওয়ার দৌড়ে থাকেন এবং সেই দৌড় যদি হয় নিজের দর্শন প্রতিষ্ঠায় তাহলে তো মুশকিল। এখানে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে টেনে আনতে হয়। তিনি সফল ও সার্থকের পার্থক্য টানতে বলেছিলেন, ‘চোর-বাটপাররাও সফল হয়ে যেতে পারে’। সুতরাং এমন দৌড়ে থাকা তার কি খুব প্রয়োজন? সাথে দর্শন আর পদার্থ বিজ্ঞানের যুগল প্রক্রিয়া একটু গোলমেলে নয় কি?
শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক সংশোধনী বোর্ডের পক্ষে একজন সদস্যকে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যম বলেছে, ‘তথ্য ভুল নয় তবে কপি করা হয়েছে। যা উচিত হয়নি।’ কি সরল স্বীকারোক্তি! আইনের ভাষায় যেমন ব্যবহার হয় ‘সরল বিশ্বাসে’ তেমনি সরল। কিন্তু এই সরল স্বীকারোক্তির বিপরীতে শিক্ষার্থীরা যে জানলো তাদের বই রচয়িতারা খোদ নকল করেন, তখন তাদের মন ও মনন বিষয়টি কীভাবে নেবে, সেটা কি তারা ভেবে দেখেছেন? শুধু সংশোধনীর কথা বলে দায় সেরেছেন। ইতিহাসে যে বখতিয়ার খিলজি নিয়ে বিতর্কিত কথা রয়েছে সেটাও কি সংশোধন হবে? জানি না, আমরা আম-জনতা আসলে কিছুই জানি না। শুধু জানি আমরা চলছি এক অজানা গন্তব্যে, যার পথ অন্ধকার। আমাদের কোমলমতি বাচ্চাদের মানস গঠনের সময় কালে তাদের গিনিপিগ বানিয়ে শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার যে অন্ধকার যাত্রা তার পরিণতি কী তাও আমরা জানি না।
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন