৮৬১ বার পঠিত
দীপিকা নারায়ণ ভারদোয়াজ নারী অধিকারকর্মী। তবে এবার নারী নয়, পুরুষ নির্যাতনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন তিনি। নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া একটি অভিজ্ঞতা তাঁকে এই অবস্থান নিতে বাধ্য করে। পুরুষদের নির্যাতন নিয়ে তথ্যচিত্রও নির্মাণ করেছেন তিনি।
ভারতে প্রতি ১৫ মিনিটে একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। প্রতি পাঁচ মিনিটে ঘরের মধ্যে নারী সহিংসতার শিকার হন। প্রতি ৬৯ মিনিটে একজন কনেকে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়। প্রতিবছর হাজারো মেয়েশিশুর ভ্রূণ হত্যা করা হয়। নবজাতক মেয়েশিশুকে হত্যা করা হয়। এমন একটি দেশে নারী হয়ে পুরুষদের পাশে দাঁড়ানোয় প্রশ্নের সম্মুখীন হন দীপিকা।
এর উত্তরে পাল্টা প্রশ্ন তুলে দীপিকা বলেন,
পুরুষেরা কী ক্ষতিগ্রস্ত হন না? তাঁরা কী বৈষম্যের শিকার নন? তাঁরাও কী নির্যাতিত হন না?
ভারতের যৌতুকবিরোধী আইন আরও কঠোর করতে ৪৯৮/এ ধারা জারি হয়। শুনে অবাক হতে হয় দীপিকা এর বিরুদ্ধেই দাঁড়িয়েছেন। আইনটির এই ধারা পুনর্বিবেচনা করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
১৯৮৩ সালে যৌতুকবিরোধী আইনের ওই ধারা চালু হয়। দীপিকা বলেন,
যৌতুকবিরোধী আইনের ওই ধারা মানুষের কল্যাণের জন্য চালু করা হয়েছিল। কিন্তু জীবন বাঁচানোর ওই আইন অনেকের জীবন কেড়ে নিচ্ছে।
২০১২ সালে প্রথম বিষয়টি উপলব্ধি করেন দীপিকা। ২০১১ সালে তাঁর এক চাচাতো ভাইয়ের বিয়ে হয়। তিন মাস পর তাঁর স্ত্রী বিচ্ছেদ চান। এ কারণে তিনি যৌতুকবিরোধী ওই আইনের আশ্রয় নেন। অভিযোগ করেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে। ননদ দীপিকার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ তোলেন ওই নারী। মিটমাটের জন্য মেয়েটিকে দীপিকার পরিবার বড় অঙ্কের টাকা দেয়। কিন্তু তারপরও মামলা শেষ হয়নি। যৌতুকবিরোধী আইনটি ভয় দেখানোর একটি কৌশলে পরিণত হয়েছে।
বিবাহবিচ্ছেদের বিভিন্ন মামলা পর্যালোচনা করে দীপিকা দেখেন, আইনজীবীর ফাঁদে পড়ে অনেক স্ত্রীই স্বামীদের বিরুদ্ধে যৌতুকের মিথ্যে অভিযোগ তোলেন। সুপ্রিম কোর্টের এক বিচারকও আইনটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, আইনটির অপব্যবহার করা হচ্ছে।
গবেষণা করে দীপিকা দেখেন, আইনের বিশেষ ধারা অনুসারে অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ ওঠা এসব ব্যক্তির মধ্যে অনেকের বয়স খুবই কম। সুপ্রিম কোর্ট এ কারণে যৌতুকের অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারে যাচাই-বাছাই করার নির্দেশ দেন। নারীদের জাতীয় কমিশন যৌতুকবিরোধী আইনের অপব্যবহারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ভারতের বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা এই আইনের অপব্যবহারের কারণে নির্যাতিত পুরুষদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়ছে বলেও খবর পান দীপিকা। এর মধ্যে একটি হলো সেভ ইন্ডিয়ান ফ্যামিলি।
চার বছর ধরে নির্যাতিত পুরুষদের নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন দীপিকা। এসব পুরুষের অনেকে যৌতুকবিরোধী আইনের অপব্যবহারের শিকার হয়ে দিনের পর দিন কারাগারে কাটাচ্ছেন। আত্মহত্যা করার আগে নিজের যন্ত্রণার কথা বলে একজন পুরুষ ভিডিও পোস্ট করেন। আত্মহত্যা করার আগে লেখা একটি চিঠিতে একজন ব্যাংকার এই আইন বাতিলের দাবি জানান। দীপিকা জানান, তথ্যচিত্র দেখানোর পর তিনি ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন।
আইনের ধারা পরিবর্তনের জন্য পার্লামেন্টে যাবেন বলেও জানান দীপিকা।
সূত্র: বিবিসি অনুসরণে
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন
জানুয়ারি ২২, ২০১৭; ৮:২৪ অপরাহ্ন
বিদ্যমান কাঠামোর মৌলিক অর্থাৎ বৈপ্লবিক পরিবর্ত্তন ছাড়া, মানুষের মুক্তি নেই।
জানুয়ারি ২৩, ২০১৭; ১১:১৭ পূর্বাহ্ন
যে কোন কাঠামো পরিবর্তনের পূর্বশর্তই হচ্ছে শক্তিশালী সংগঠন ও তার সাংগঠনিক সামর্থতা। বাংলাদেশে এ ধরনের কোন সংগঠন আছে বলে কি আপনি মনে করেন?
জানুয়ারি ২৪, ২০১৭; ২:৩৯ অপরাহ্ন
না, নেই।
জানুয়ারি ২৪, ২০১৭; ৯:১৮ অপরাহ্ন
রচনাটির শিরোনাম দেখে মনে হচ্ছিল উপরোক্ত ঘটনার উলটা ঘটা শুরু করেছে। ভেতরে দেখি অন্য ঘটনা। পুরুষদের বিরুদ্ধে কিছু লোভী স্ত্রীর আইনের অপব্যবহার।