হিজাব কী শুধু মুহাম্মদের পত্নী ও কন্যাদের জন্যে প্রযোজ্য, না কি সকল মুসলিম নারীর জন্যেই? এ প্রশ্নে মুসলিম সমাজ দ্বিধা বিভক্ত। মুসলিম সমাজ আবার বহুধা বিভক্ত হিজাব পরার ধরণ নিয়ে। বহুধা বিভক্ত হিযাবের প্রেক্ষাপট নিয়েও। বহুধা বিভক্ত হিজাবের পোশাক নিয়েও। হিযাবের তৃতীয় ও চতুর্থ বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের প্রচুর অবকাশ রয়েছে। কিন্তু প্রথম দুটি বিষয় নিয়ে মতভেদ থাকার কথা নয়। কিন্তু আছে। প্রবলভাবেই আছে।
হিজাব কাদের জন্য তা নিয়ে মতভেদ ও বিতর্ক কেন?
হিজাব নিয়ে মতভেদ ও বিতর্ক যেটা আছে সেটা তৈরী করা। ইসলামি বিধানে অস্পষ্টতা বা ধোঁয়াশা থাকার কারণে বিতর্ক ও মতভেদ তৈরী হয়েছে এমনটা আদৌ নয়। হ্যাঁ, আবারো বলছি যে হিজাব কাদের জন্যে প্রযোজ্য এবং কীভাবে হিজাব পরতে হবে সে বিষয়ে ইসলামি বিধান অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় রচনা করা হয়েছে যেখানে অস্পষ্টতা বা ধোঁয়াশা একেবারেই নেই। মুসলিম বুদ্ধিজীবীগণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হিজাব নিয়ে কিছু বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। মুসলিম বুদ্ধিজীবীগণের মধ্যে যাঁরা মডারেট বুদ্ধিজীবী তকমাধারী তাঁরাই এই বিতর্কের স্রষ্টা। এই বুদ্ধিজীবীদের ইংরাজী পরিভাষায় বলে apologist। এঁরা ইসলামের পশ্চাদপদ, বর্বর ও অমানবিক বিধানগুলিকে প্রাণপণ আড়াল করার চেষ্টা করেন এবং সেই বিধানগুলির মনগড়া বাখ্যা দিয়ে ইসলামের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করে দেখানোর চেষ্টা করেন। এঁরাই বলেন যে, হিজাব প্রযোজ্য কেবল মুহাম্মদের পত্নী ও কন্যাদের জন্যে, সকল মুসলিম নারীর জন্যে নয়। তাঁরা আবার হিজাব পরার ধরণেও মডারেট পন্থার স্রষ্টা।
আধুনিক যুগে মুসলিম নারীর জন্যে হিজাব পরার বিধানটি অতি নিন্দনীয় একটি কুৎসিত বিধান হিসেবে পরিগণিত। হিজাব অনেকের চোখেই একটি চলমান কারাগার সদৃশ। হিজাবকে নারী দাসত্বের প্রতীক হিসেবেও গণ্য করা হয়। যে যে বিধানগুলির জন্যে ইসলামের কঠোর সমালোচনা ও নিন্দা করা হয় তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো হিজাব। মুসলিমরা কিন্তু দাবী করে যে ইসলাম নারীকে পুরুষের অধীনতা ও দাসত্ব থেকে মুক্ত করেছে, নারীকে স্বাধীনতা ও সম্মান দিয়েছে এবং পুরুষের সমানাধিকার দিয়েছে। মুসলিমরা মুহাম্মদকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ নারীবাদী ব্যক্তিত্ব বলেও দাবী করেন। মুসলিমদের এই সকল দাবীকে সম্পূর্ণ নস্যাত করে দেয় হিজাবের বিধানটি। হিজাব শুধু নারীর ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যতা, স্বাধীনতা ও স্বাধিকারই খর্বই করে নি, নারীকে করেছে চরম অপমান ও অপদস্থও। তবে হিজাব আরোপ করে নারীকে খাটো করতে গিয়ে ইসলাম নিজেও কম খাটো হয় নি। হিজাবের কারণে মানব সমাজে ইসলামের মাথাও যথেষ্ট হেঁট হয়েছে। হিযাব ইসলামের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল তো করেই নি, বরং ঢের মলিন ও কালিমালিপ্ত করেছে। ইসলামের যে যে বিধানের জন্যে মডারেট মুসলিম বুদ্ধিজীবীগণ প্রচণ্ড বিব্রত বোধ করেন তার মধ্যে একটি হলো হিজাব। উলামা (মুসলিম ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ) ইসলামে ভাল মন্দ যা আছে তার সবটার জন্যেই গর্ব বোধ করেন। ফলে কোনো বিধানকেই তা যতই খারাপ, কুৎসিত বা বর্বর হোক, তাঁরা অস্বীকার বা আড়াল করেন না এবং কোনো বিধানের জন্যেই তাঁরা বিব্রত বোধ করেন না। হিজাবের ক্ষেত্রেও তাঁরা তাই কোনো প্রকার ছলনা করেন না, বরং সৎ ও অকপট থাকেন। মডারেট মুসলিম বুদ্ধিজীবীগণ কিন্তু ইসলামের অনেক বিধানের জন্যেই বিব্রত বোধ করেন। তাই তাঁরা সেই বিধানগুলির বেলায় উলামার মতো সৎ ও অকপট থাকতে পারেন না। আধুনিক যুগের পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামের যে বিধানগুলি মডারেট মুসলিম বুদ্ধিজীবীদেরকে অস্বস্তিকর ও লজ্জাকর অবস্থায় ফেলে সেগুলির কয়েকটি হলো বহুবিবাহ, মুতা বিবাহ, হালালা বিবাহ, বাল্যবিবাহ, তালাক, জিহাদ, দাসপ্রথা, গণিমতের মাল, ফারাজ আইন, দত্তক আইন, হিজাব ইত্যাদি ইত্যাদি। মুহাম্মদের ব্যক্তিজীবনের বহু ঘটনাও তাঁদের প্রচণ্ড বিব্রত ও লজ্জিত করে। এ রকম বিব্রতকর ও লজ্জাকর অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে তাঁরা ব্যাপক কপটতা ও মিথ্যাচারের আশ্রয় নেন। তাঁরা মিথ্যাচার করেন আপাদমস্তক কুৎসিত ও বর্বর ইসলামি বিধানগুলি বর্ণনা ও বাখ্যা করার সময়। যে বিধানগুলি ইসলামের ভাবমূর্তি উজ্বল করে না, পরিবর্তে মলিন ও মসীলিপ্ত করে সেই বিধানগুলিকে তাঁরা মনের মাধুরী মিশিয়ে এমনভাবে বর্ণনা ও বাখ্যা করেন যাতে ইসলামের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল দেখায়, এবং ইসলামকে একটা মহান ধর্ম বলে দাবী করা যায়। ফল হয় এই যে, তাঁদের বর্ণনাকৃত ও ব্যাখ্যাকৃত বিধানগুলির সঙ্গে কোরানে বর্ণিত ও ব্যাখ্যাকৃত বিধানগুলির মধ্যে মিল থাকে না। শুধু অমিল থাকে তাই নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বৈপরীত্যও দেখা যায়। মডারেট মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের মিথ্যাচারের শিকার হিজাবের বিধানও। ফলে হিজাব নিয়ে মুসলিম সমাজে তুমুল মতভেদ ও বিতর্কের উদ্ভব হয়েছে।
হিজাবের কোরানীয় বিধান
কোরানে অনেকগুলি আয়াত আছে যেগুলির সঙ্গে হিজাবের সম্পৃক্ততা রয়েছে। কিন্তু শুধু হিজাব নিয়েই অন্ততঃ দু’টি আয়াত আছে। সেই আয়াত দুটিতে অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় এ কথা বলা হয়েছে যে সমস্ত মুসলিম নারীকেই হিজাব পরতে হবে। না, শুধু বলা হয় নি, নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হিযাবের প্রথম যে আয়াতটি মুহাম্মদ আবৃত্তি করেন তাতে হিযাব আরোপ করা হয় তাঁর স্ত্রী ও কন্যা এবং সকল মুসলিম নারীদের উপর। হিজাবের দ্বিতীয় যে আয়াতটি মুহাম্মদ আবৃত্তি করেন সে আয়াতে শুধু মুসলিম নারীদের হিজাব পরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁর স্ত্রী ও কন্যাদের কথা আলাদা করে উল্লেখ করা হয় নি। হিযাবের প্রথম যে আয়াতটি মুহাম্মদ তাঁর সাহাবীদের শোনান সেটা হলো ৩৩/৫৯ নং আয়াত। এই আয়াতটির আদি সুরা নম্বর হলো ৯০ (নব্বই)। এই আয়াতটির ভাষ্য হলো,
“হে নবী (সঃ)! তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে এবং মুমিনদের নারীদেরকে বলঃ তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ তাদের নিজেদের উপরে টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে; ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।” (৩৩/৫৯), অনুবাদ – ইবনে কাসির
এই আয়াতে এতটুকু ধোঁয়াশা বা অস্পষ্টতা নেই যে হিজাব পরার আদেশ প্রদান করা হয়েছে মুহাম্মদের স্ত্রী ও কন্যাদের পাশাপাশি সকল মুসলিম নারীদের জন্যেই। হিজাবের দ্বিতীয় যে আয়াতে মুহাম্মদের পত্নী ও কন্যাদের উল্লেখ নেই, কেবল সাধারণ মুসলিম নারীর কথা বলা হয়েছে সেই আয়াতটি হলো ২৪/৩১ নং আয়াত যার আদি নম্বর হলো ১০২ (একশ’ দুই)। এই আয়াতটির বয়ান হলো এরূপঃ
“এবং বিশ্বাসিনী নারীদিগকে বল, তারা যেনো স্ব স্ব দৃষ্টি সকলকে বদ্ধ করে এবং স্ব স্ব ভূষণ যাহা তাহা হইতে ব্যক্ত হইয়া থাকে তদ্ব্যবতীত প্রকাশ না করে, এবং যেন তাহারা আপন কণ্ঠদেশে স্বীয় বস্ত্রাঞ্চল ঝুলাইয়া রাখে, আপন স্বামী বা আপন শ্বশুর বা আপন পুত্র (এবং পৌত্র) বা আপন স্বামীর পুত্র (সপত্নীজাত পুত্র) বা আপন ভ্রাতা বা আপন ভ্রাতুষ্পুত্র বা আপন ভাগিনেয় বা আপন (ধর্মাবলম্বী) নারিগণ বা তাহাদের দক্ষিণ হস্ত যাহাদের উপর স্বত্ব লাভ করিয়াছে সেই (দাসিগণ) বা নিষ্কাম অনুগামী পুরুষগণ এই সকলের এবং যাহারা নারিগণের লজ্জাজনক ইন্দ্রিয় সম্বন্ধে জ্ঞান রাখে না সেই শিশুদিগের নিমিত্ত ভিন্ন তাহারা আপন আভরণ যেন প্রকাশ না করে, এবং তাহারা যেন আপন শব্দায়মান (ভূষণযুক্ত) চরণ বিক্ষেপ না করে, তাহা করিলে তাহারা আপন ভূষণ যাহা গোপন করিয়া থাকে (লোকে) তাহা জানিতে পাইবে, এবং হে বিশ্বাসিগণ, তোমরা একযোগে ঈশ্বরের দিকে ফিরিয়া আইস, সম্ভবতঃ তোমরা মুক্ত হইবে।”
(কোরান, ২৪/৩১) অনুবাদ – গিরিশচন্দ্র সেন
৩৩/৫৯ নং আয়াতটি স্পষ্টতই জারি হয়েছে মুহাম্মদের স্ত্রী, কন্যা ও সকল মুসলিম নারীদের উদ্দেশ্যে। ২৪/৩১ নং আয়াতটি জারি হয়েছে সকল মুসলিম নারীকে উদ্দেশ্য করে, সেখানে মুহাম্মদের স্ত্রী ও কন্যাদের প্রসঙ্গ নেই। এই আয়াতে মুসলিম নারীদের উদ্দেশ্যে বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে জানানো হয়েছে যে কীভাবে তাদের হিজাব পরতে হবে এবং কার কার সামনে তাদের হিজাব পরার ছাড় দেওয়া হয়েছে। সুতরাং হিজাবের উপরোক্ত দুটি আয়াত যে সকল মুসলিম নারীকে উদ্দেশ্য করেই জারি করা হয়েছে, কেবল মুহাম্মদের পত্নী ও কন্যাদের উদ্দেশ্য করে নয়, তা নিয়ে সামান্যতমও অস্পষ্টতা বা ধোঁয়াশা নেই। ৩৩/৫৯ নং আয়াতে মুসলিম নারীদের কেন হিজাব পরতে হবে তার স্পষ্ট উত্তর দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে যে, ‘এতে তাদের চেনা সহজ হবে; ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না।’ অর্থাৎ নারীদের হিজাব পরার আদেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তাদের কেউ ‘উত্যক্ত’ না করে। এই কথাগুলি যে শুধু মুহাম্মদের পত্নী ও কন্যাদের উদ্দেশ্যে বলা হয় নি, বলা হয়েছে সমস্ত মুসলিম নারীর উদ্দেশ্যে তা সামান্য সাধারণ জ্ঞান থাকলেই বোঝা যায়। ‘উত্যক্ত’ হওয়ার হাত থেকে সকল মুসলিম নারীকে রক্ষা করার কথা না ভেবে মুহাম্মদ কেবল তাঁর স্ত্রী ও কন্যাদের কথাই শুধু ভেবেছিলেন এমনটা কি ভাবা যেতে পারে? নিশ্চয়ই না। সুতরাং কোনো সংশয় বা সন্দেহ নেই যে, মডারেট মুসলিম বুদ্ধিজীবীরা কাঁচা মিথ্যাচার করেছেন এ কথা বলে যে হিজাবের বিধান শুধু মুহাম্মদের স্ত্রী ও কন্যাদের জন্যেই প্রযোজ্য, সাধারণ মুসলিম নারীর হিজাব পরার আবশ্যকতা নেই।
বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে হিজাব
হিজাব কথাটা এসেছে আরবি ‘হাজাবা’ শব্দ থেকে। হাজাবা শব্দের অর্থ আড়াল করা। হিজাবের মূল উদ্দেশ্যই হলো নারীর চেহারা পুরুষের সামনে থেকে আড়াল করা। আরও স্পষ্ট করে বললে নারীকে পর পুরুষের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা। প্রাক ইসলাম যুগে নারী পুরুষ স্বচ্ছন্দে মেলামেশা করতো, পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতো, নারী পছন্দ করে বিয়ে করতে পারতো ও বিয়ে ভাঙতে পারতো, এক কথায় নারী অনেক স্বাধীন ছিলো এবং তাদের অনেক অধিকার ছিলো। ইসলাম নারীর সে সমস্ত অধিকারগুলি একে একে হরণ করে নিয়েছে। আল্লাহর দোহায় দিয়ে মুহাম্মদ যে যে বিধানগুলির সাহায্যে নারীর সমস্ত অধিকার হরণ করেছেন তার মধ্যে হিজাব হলো অন্যতম একটি। হিজাব বলতে আমরা সাধারণতঃ বুঝি যে এটা মুসলিম নারীর জন্যে কেবল ঘরের বাইরে রাস্তাঘাটে চলাফেরা করার সময় প্রযোজ্য। কিন্তু আসলে তা নয়, হিজাব নারীর জন্যে আপন আপন গৃহের মধ্যেও সমান প্রযোজ্য। আসলে হিজাব একটা অনেক বড়ো বিষয় শরিয়তি সংস্কৃতিতে, এটা শুধু এক টুকরো কাপড় দিয়ে নারীর শরীর বা চেহারা ঢেকে ফেলার বিষয় নয়। তাই হিযাবের নানা দিক আছে, নানা ধরণ আছে। হিযাবের আর একটি সহজ প্রতিশব্দ হল পর্দা। ইসলামে নারীর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী জোর হয়েছে এই পর্দার উপর। হিজাব বা পর্দার মূল উদ্দেশ্য হলো নারীকে পুরুষজাতির (স্বামী এবং রক্তযোগ আছে এমন কতিপয় পুরুষ ছাড়া) থেকে সম্পূর্ণ আড়াল করা ও পৃথক করা এবং আপন গৃহের বাইরের জগত থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করা। এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত করার জন্যে ইসলাম নারীকে তার বাস গৃহের মধ্যেই অন্তরীণ থাকার নির্দেশ দিয়েছে। নারীকে গৃহবন্দী থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোরানের ৩৩/৩৩ নং আয়াতে। সেই আয়াতে বলা হয়েছে,
তোমরা আপন আপন গৃহ সকলে স্থিতি করিতে থাক ও পূর্বতন মূর্খতার বেশ-বিন্যাসের (ন্যায়) বেশ-বিন্যাস করিও না।
নামাজ পড়ার জন্যে মুসলমানদের মসজিদে যাওয়ার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু নারীর ক্ষেত্রে মুহাম্মদ বলেছেন যে তারা মসজিদে যেতে পারে, তবে তাদের জন্যে বাড়িই উত্তম। তিনি ঠিক কী বলেছেন তা শোনা যাকঃ
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহর বাঁদীদেরকে আল্লাহর মসজিদে যেতে বাধা প্রদান করবে না। কিন্তু তাদের উচিত যে, তারা বাড়ীতে যে সাদাসিধা পোশাকে পরে থাকে ঐ পোশাক পরেই যেন মসজিদে গমন করে।” অন্য একটি রেওয়াতে আছে যে, স্ত্রীলোকদের জন্য বাড়ীই উত্তম। (তফসিরঃ ইবনে কাথির, ১৫ খণ্ড, পৃষ্ঠা – ৭৮৪)
মুহাম্মদ নারীকে মসজিদে যেতে নিরুৎসাহিত করেছেন কেন? সেটা যে তাদেরকে পুরুষজাতি ও বাইরের জগত থেকে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যেই তা বলা বাহুল্য। পুরুষজাতির থেকে নারীকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্যে পুরুষকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোরানে। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে যে তারা যেন নারীর কাছ থেকে কিছু চাইলে আড়াল থেকেই চায়। সেই নির্দেশটি হলো,
তোমরা তাঁদের (নবী পত্নীদের) নিকট কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাও। এই বিধান তোমাদের ও তাদের হৃদয়ের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। (৩৩/৫৩)
আয়াতটি যদিও মুহাম্মদের সাহাবী ও তাঁর স্ত্রীদের উদ্দেশ্যে জারি করা হয়েছে, কিন্তু এর মধ্যে দিয়ে আসলে সমস্ত মুসলমান পুরুষ ও নারীদের কাছেই স্পষ্ট বার্তা পাঠানো হয়েছে যে পুরুষরা চেনাজানা বা প্রতিবেশী কোনো পরিবারের নারীর কাছে কিছু চাইলে যেন পর্দার আড়াল থেকেই চায়। নারীর একান্ত প্রয়োজনেও যদি ঘরের বাইরে যাওয়া আবশ্যক হয়ে পড়ে তবুও একা তার বাইরে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মুহাম্মদ বলেছেনঃ
‘কোনও স্ত্রী লোক যেন সাথে মুহরিম আত্মীয় ছাড়া একাকি একদিন ও এক রাত্রির দুরত্ব অতিক্রম না করে। (তিরমিযি শরীফ, হাঃ নং – ১১০৬ )
পাছে নারী একাকী বাইরে গিয়ে অন্য পুরুষের সাথে কথা বলে, তাদের সাথে মেলামেশা করে, তাই নারীর উপর এই অন্যায় ও অপমানকর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এমনকি নারীকে অন্ধ লোকের সামনেও পর্দা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ কথা শোনা গেছে মুহাম্মদের স্ত্রীদের কাছ থেকেই। সেই হাদিসটি বর্ণনা করেছেন মুহাম্মদের পত্নী উম্মে সালমা। হাদিসটি এরূপঃ
হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি এবং হযরত মাইমুনা (রাঃ) রাসূলুল্ললাহ (সঃ) – এর নিকট ছিলেন এমন সময় হযরত ইবনে উম্মে মাকতূম (রাঃ) তথায় আগমন করেন। এটা ছিলো পর্দার হুকুম নাযিল হওয়ার পরের ঘটনা। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাদেরকে বললেনঃ “তোমরা পর্দা কর।” তাঁরা বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! তিনি তো অন্ধ লোক। তিনি আমাদেরকে দেখতেও পাবেন না এবং চিনতেও পারবেন না।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “তোমরা তো অন্ধ নও যে তাকে দেখতে পাবে না?” (দ্রঃ ইবনে কাসিরের তফসির, ১৫শ’ খণ্ড, ২৪/৩১ – এর তফসির, পৃঃ ১৪৪)
অন্ধ পুরুষ মানুষের সামনেও নারীকে পর্দা করতে হবে কেন? মুহাম্মদের স্ত্রীদের প্রশ্ন বা আপত্তি ছিলো যথার্থ। কিন্তু মুহাম্মদ তাঁদের আপত্তি উড়িয়ে দিয়েছেন তাচ্ছিল্যের সঙ্গে যেভাবে স্বৈরশাসকরা উড়িয়ে থাকেন। নারীজাতিকে পুরুষজাতি ও বহিঃর্জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ও নিঃসঙ্গ করতেই মুহাম্মদ অন্ধ পুরুষদের সামনেও নারীকে পর্দা করার নির্দেশ দেন। এসব কুৎসিত উদাহরণগুলি থেকেও এটা বোঝা যায় যে, মুহাম্মদ হিযাবের বিধান আরোপ করেছেন সমগ্র মুসলিম নারীর উপর, শুধু তাঁর স্ত্রী ও কন্যাদেরে উপর নয়।
হিযাবের পোশাক ও হিযাব পরার ধরণ নিয়ে মতভেদ
হিযাবের পোশাক নিয়ে মতভেদের অবকাশ আছে। কারণ কোরানে হিযাবের জন্যে আলাদা কোনো পোশাক বিধির কথা বলা নেই। তাই একেক দেশে এবং একই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিজাবের ভিন্ন ভিন্ন নাম এবং ভিন্ন ভিন্ন ধরণের পোশাক প্রচলিত রয়েছে। আমাদের দেশে, বিশেষ করে বাংলায়, হিযাব বলতে বোঝানো হয় মূলতঃ চারটি পোশাককে। যেমন হিজাব, বোরখা, চাদর ও নিকাব। মুসলিম দেশগুলিতে পর্দাকে আরও নানা নামে অভিহিত করা হয়। এ প্রসঙ্গে আমেরিকা প্রবাসী ইবন ওয়ারাক লিখেছেনঃ
In Morocco, Algeria, and Tunisia we find haik, safsari, akhnif, and adjar. In Egypt, Israel, Syria, Iraq, and among the Bedouins, we find abaya, tarna, izar, milhafa, khabara, chambar, niquab, litham, and bourqou; in Iran, bourda, tchadar, pitcha, and rouband; in Turkey, yatchmek, yalek, harmaniya, and entari; in India and Pakistan, burka. (Vide: Why I am not a Muslim, Ibn Warraq, p. 315, Prometheus Books, New York)
মুসলিম নারীর পর্দা করার জন্যে প্রধান যে চারটি পোশাক প্রচলিত রয়েছে আমাদের দেশ সহ বিভিন্ন দেশে সেগুলির ডিজাইন ও কাজ আলাদা আলাদা রকমের। সেই পোশাকগুলির ডিজাইন ও কাজ নিম্নরূপঃ
- হিজাবঃ হিজাব হলো একখণ্ড কাপড় যার সাহায্যে মাথা ও বুক ঢাকা যায়। নীচে ছবিতে হিজাব –
হিজাব
- নিকাব বা নেকাবঃ নেকাব দেখতে আলাদা হলেও এটাও একখণ্ড কাপড় যার কাজ হলো হিজাবের মতই মাথা ও বুক ঢেকে রাখা। নীচের ছবিটি নিকাবেরঃ
নিকাব
- চাদরঃ চাদর হলো একটা বড় চাদর বা শাল যা দিয়ে পুরো শরীর ঢাকা যায়। চাদর পরিহিত নারী
চাদর
বোরকাঃ দুই পিস কাপর একসাথে সেলাই করা একটা পোশাক যার শুধু মাত্র দুটি চোখ খোলা থাকে, খোলা নাও থাকতে পারে, সেক্ষেত্রে চোখের উপর একখণ্ড মশারির মত কাপড় ঝোলানো থাকে। বোরকায় পুরো শরীর ঢাকা যায় এমন বড় লম্বা পোশাক। নীচে ছবিতে বোরকাঃ
বোরকা
পর্দা বা হিজাবের পোশাকের আকার, আয়তন ও ডিজাইন নিয়ে মতভেদের অবকাশ থাকলেও তার কাজ ও উদ্দেশ্য নিয়ে মতভেদ থাকার কথা নয়। কারণ হিজাব কীভাবে পরতে হবে তার স্পষ্ট বর্ণনা বা নির্দেশিকা রয়েছে ২৪/৩১ নং আয়াতে। সেখানে বলা হয়েছে, “যেন তাহারা আপন কণ্ঠদেশে স্বীয় বস্ত্রাঞ্চল ঝুলাইয়া রাখে”। এই বাক্যাংশটি বাখ্যা রয়েছে আয়াতটির তফসিরে। সেই তফসিরটি নিম্নরূপঃ
অর্থাৎ স্ত্রীগণ উত্তরীয় বস্ত্র বিশেষ মস্তক হইতে কণ্ঠের উপর ঝুলাইয়া রাখিবে, তাহাতে তাহাদের কেশপাশ কর্ণমূল গ্রীবা ও বক্ষদেশ আচ্ছাদিত থাকিবে।
(সূত্রঃ গিরিশচন্দ্র সেনের কুরআন শারীফ)
কোরানের নির্দেশিকা অনুযায়ী উপরের ছবিগুলির মধ্যে ‘বোরকা’ একমাত্র হিজাব বা পর্দার বৈধ পোশাক। কারণ বোরকার পোশাকেই মস্তক থেকে বক্ষদেশ পর্যন্ত আচ্ছাদিত করা সম্ভব। বাকি পোশাকগুলি কোরানের নির্দেশিকা অনুযায়ী হিজাব বা পর্দার বৈধ পোশাক বলা যায় না কারণ সেই পোশাকগুলিতে নারীদের চেহারা ঢাকা যায় না। হিজাবের পোশাকে পরিমার্জন নিয়ে এসেছে সম্ভবতঃ মডারেট মুসলিম বুদ্ধিজীবীরা যাতে নারীদের কাছে কিছুটা হলেও গ্রহণযোগ্য করা যায়।
হিজাবের প্রেক্ষাপট
কোন প্রেক্ষাপটে হিজাবের আয়াতগুলি এসেছে তা নিয়ে নানা গল্প চালু আছে। মুসলিম ধর্মবেত্তাগণ বলেন যে ২য় খলিফা ওমর ফারুককে সন্তুষ্ট করার জন্যে আল্লাহ হিজাবের আয়াত পাঠিয়েছিল। গল্পটি এ রকমঃ তিনি একদিন মুহাম্মদকে বলেন যে তাঁর ঘরে যে সব মুসলমানরা ঢোকেন তাদের মধ্যে মন্দ চরিত্রের লোকও থাকতে পারে, তাদের হাত থেকে নবী-পত্নীদের মান-মর্যাদা রক্ষা করার স্বার্থে তিনি কেনো তাঁদের (নবী-পত্নীদের) আড়ালে থাকার নির্দেশ প্রদান করছেন না। তারপরই ২৪/৩১ নং আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। অন্য একটি গল্পও শোনা যায়। সেটা এ রকমঃ ওমর ফারুকের একদিন মুহাম্মদের কনিষ্ঠতম ও প্রিয়তম পত্নী আয়েশার সঙ্গে আকষ্মিকভাবে দৈহিক সংস্পর্শ ঘটে এবং তারজন্যে তিনি ভীষণ লজ্জিত ও বিব্রত বোধ করেন। তারপরেই তিনি মুহাম্মদকে বলেন কেনো তিনি তাঁর পত্নীদের আড়ালে থাকার নির্দেশ প্রদান করছেন না। এর প্রেক্ষাপটেই নাকি হিযাব সংক্রান্ত ওহিগুলো অবতীর্ণ হয়। এ বিষয়ে Zeghidour – এর লেখা থেকে উদ্ধৃত করে ইবনে ওয়ারাক লিখেছেনঃ
Muslim theologians have a totally different explaination of the origin of the hijab. According to them it was imposed on women by the God to please the person, i.e., Omar ibn al – They refer to a tradition that recounts that Omar one day said to the prophet: “The pious ans the profligate have easy access to your house and see your wives. Why do not you order the mothers of all believers to cover themselves? And Muhammad recieved the revealatione quoted earlier. According to another version, attributed to Aisha, Omar accidently touched her hand and excused himself by saying that had he the power no one would steal a glance at her. Yet another rendition is recounted by historian al – Tabari. The real function of the hijab is to cover up the awra which wi have no right to see. By ‘‘awra” is meant “the shameful parts of the body and those parts we hide out of dignity and pride. As for women, they are entirely awra.” (Vide: Why I am not a Muslim, Ibn Warraq, p. 315, 316, Prometheus Books, New York)
হিজাবের প্রেক্ষাপট নিয়ে মুসলিম ধর্মবেত্তাদের মধ্যে ভিন্ন মতও আছে। সেই মত অনুযায়ী একটি বিশেষ ঘটনার প্রেক্ষিতে হিজাবের আয়াত মুহাম্মদের কাছে আসে। ঘটনাটি ঘটে জায়েদের (মুহাম্মদের দত্তক পুত্র) মুহাম্মদের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী জয়নবকে মুহাম্মদ বিয়ে করার পর বিরাট ভোজ দেন। ভোজে নিমন্ত্রিতদের অনেকেই ভোজ খাওয়ার পরেও দীর্ঘক্ষণ মুহাম্মদের গৃহ ছাড়তে চায় নি। সন্ধ্যার পরে মুহাম্মদ ঘরে গিয়ে দেখেন তখনও তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর সাহাবিরা গল্পে মশগুল রয়েছে। তা দেখে তিনি ফিরে যান। এর পরে মুহাম্মদের কাছে হিজাবের আয়াত আসে। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে মুহাম্মদ ও একদা জায়েদ-পত্নী জয়নবের বিয়ে হয়েছিল চতুর্থ হিজরিতে অর্থাৎ ৬২৫/৬২৬ খৃস্টাব্দে। বুখারি হাদিসে এই গল্পটি রয়েছে। সেই হাদিসটি হলোঃ
Narrated Anas ibn Malik: “I know (about) the Hijab (the order of veiling of women) more than anybody else. Ubay ibn Ka’bused to ask me about it. Allah’s Apostle became the bridegroom of Zaynab bint Jahsh whom he married at Medina. After the sun had risen high in the sky, the Prophet invited the people to a meal. Allah’s Apostle remained sitting and some people remained sitting with him after the other guests had left. Then Allah’s Apostle got up and went away, and I too, followed him till he reached the door of ‘Aisha’s room. Then he thought that the people must have left the place by then, so he returned and I also returned with him. Behold, the people were still sitting at their places. So he went back again for the second time, and I went along with him too. When we reached the door of ‘Aisha’s room, he returned and I also returned with him to see that the people had left. Thereupon the Prophet hung a curtain between me and him and the Verse regarding the order for (veiling of women) Hijab was revealed.” Sahih al-Bukhari, 7:65:375, Sahih Muslim, 8:3334
হিজাবের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে উপরে যে গল্পগুলির উল্লেখ রয়েছে সেগুলি নিছকই গল্প যার কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। বিজ্ঞানের বিচারে আল্লাহর কাছ থেকে মুহাম্মদের কাছে আয়াত বা ওহির অবতীর্ণ হওয়ার ঘটনাতো সত্যি হওয়ার কোনো অবকাশই নেই। বাদ যাক বিজ্ঞানের যুক্তি। আস্তিকের চোখে দেখলেও উপরোক্ত গল্পগুলি একেবারেই যুক্তিগ্রাহ্য ও বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয় না। নিরাপত্তার জন্যে মুসলিম নারীদের হিজাবে আচ্ছাদিত করাই যদি আল্লাহর অভিপ্রায় হয় তবে হিজাবের ওহি পাঠাতে আল্লাহ দশ বছর বিলম্ব করবে কেন? কেন খাদিজার জীবিত কালে হিজাবের ওহিগুলো আল্লাহ পাঠায় নি। এখানেই ধরা পড়ে যায় যে গল্পগুলি একেবারেই মনগড়া। তাছাড়া গল্পগুলি সত্যি বলে মানলে এটাও মানতে হয় যে, নারীর নিরাপত্তার জন্যে হিজাবের আইডিয়াটা আল্লাহ ধার করেছে তারই সৃষ্টি ক্ষুদ্র একজন মানবের কাছ থেকে। এটা কি মুসলমানেরা মানতে সম্মত আছেন? তাছাড়া ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলেই রাশি রাশি প্রমাণ দেখতে পাওয়া যায় যে, হিজাব উপর থেকে আসা মুহাম্মদের কাছে কোনো বিধান বা সংস্কৃতি নয়। হিজাবের বিধান বা সংস্কৃতি তিনি নকল করেছিলেন ইরানিদের কাছ থেকে। আগেই উল্লেখ করেছি যে নারীদের গৃহবন্দী করাও হচ্ছে হিজাবেরই অঙ্গ। গৃহবন্দী করার আয়াত উপর থেকে আসে নি, এটা ছিল বাইজান্টাইন সমাজের সংস্কৃতি। বাইজান্টাইনরা এটা নিয়েছিলো এ্যাসিরিয়দের কাছ থেকে। খ্রিস্টপূর্ব ১৫শ’ শতাব্দীতে এ্যাসিরিয় সমাজে এর প্রচলন ছিল। ইরান ও বাইজান্টাইনদের এই কুৎসিত হিজাব সংস্কৃতিটি মুহাম্মদের খুবই পছন্দ হয়। প্রচণ্ড নারীবিরোধী সেই সংস্কৃতিটি তিনি আল্লাহর নামে মুসলিম নারীদের উপর চাপিয়ে দেন মদিনায় থাকাকালীন। ইবন ওয়ারাক এ প্রসঙ্গে লিখেছেনঃ
The veil and injunction to Muslim women to stay at home came with Islam; for it is clear, as I have already indicated, that Beduin women enjoined considerable freedom, accompanied their husbands on long marches and made themselves indispensable in the camps. But all this was to change as Islam became more and more an urban phenomenon and as it came into contact other more developed civilizations whose customs the Muslims adopted. The veil was adopted by the Arabs from the Persians, and the women obligations to stay closed in at home was a tradition copied from Byzantines, who in turn adopted an ancient Greek custom. (Vide: Do, Page – 315)
হিজাবের সমগ্র সংস্কৃতিটা মুহাম্মদের ধার করা সে কথা বহু ঐতিহাসিকের বইয়েই রয়েছে। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক G.R. Driver and J.C.Miles এর বই Laws from Mesopotamia and Asia Minor (1952), এবং J.M. Powis Smith এর বই The Origin and History of Hebrew Law (Chicago, 1931) – তে এই তথ্যগুলি দেখতে পাওয়া যায়। ইরানের আমেরিকা প্রবাসী ঐতিহাসিক আনোয়ার হেকমত সেই বই দুটি থেকে ব্যাপক উদ্ধৃতি দিয়েছেন তাঁর WOMEN AND THE KORAN গ্রন্থে। সেই গ্রন্থ দু’টির উদ্ধৃতিসহ আনোয়ার হেকমতের লেখার কিয়দংশ নিম্নরূপ:
This insigna separating married from unmarried women and free women from slaves did not originate in Arabia. The custom can be traced back to ancient Assyria. In the Middle Assyria Law, promulgated in the fifteenth century B.C.E., We find ordinances pertaining to the wearing of the veil. Law 40 of this Assyrian code stipulates that that every free woman must wear a veil:
If the wives of a man, or the daughters of a man or his women go out in the street, their heads (are to be veiled) … (As for widows) their heads … are to be veiled.
When (they go out) in the streeets, … they shall veil themselves. The concubines (captured women) who go the the streets apart from their mistress are to be veiled.
The (sacred) prostitute, whom a husband married, is to be veiled in the streets. But one whom a husband has not married is to have her head uncovered in the streets. She is not to veil herself; her head is to be uncovered.