[ভূমিকাঃ ডিসেম্বর, ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিল মাসে খালেদ ওলিদের লেখা ইসলাম পরিত্যাগের জবানবন্দি, সৌদি নারীদের অবস্থা, এবং ইসলামী সন্ত্রাসির অনুবাদ করেছিলাম। তখন লিখেছিলাম খালেদ আমাকে অনেক ই-মেইলে সৌদি আরাবের ইসলাম সম্পর্কে লিখেছিল। এখানে আমি তার আর একটি লেখা অনুবাদ করে দিলাম। উল্লেখযোগ্য যে খালেদের কয়েকটি লেখা একটা বইতে প্রকাশ হয়েছে। বইটার টাইটেল হলো: Why We Left Islam.
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ: খালেদের ই-মেইলের এইটাই আমার শেষ অনুবাদ। খালেদ ইসলাম ও সৌদি আরব সম্পর্কে আমাকে আরো অনেক ই-মেইল দিয়েছিল, কিন্তু সময়ের অভাবে আপাততঃ সেগুলোর অনুবাদ আমি করছি না। ভুলভ্রান্তি থাকলে জানিয়ে দিবেন। – আবুল কাশেম]
এই রচনায় আমি দেখাব আমরা, অর্থাৎ সৌদিরা, অ মুসলমানদের প্রতি কিরূপ আচরণ করি।
প্রথমেই বলতে হচ্ছে আমরা বিধর্মীদের সর্বদাই নির্মম ভাবে অপব্যবহার করি। এদেরকে আমরা শুকর ও বানরের নাতি নাতনি বলে আখ্যায়িত করি, একেবারেই খোলাখুলি ভাবে, বিশেষত মসজিদের ভিতরে।
সৌদি আরবে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মের প্রতি বিন্দুমাত্র সম্মান দেখান হয় না। সৌদি সরকারী নীতি হচ্ছে: ইসলাম ব্যতীত অন্য সব ধর্মই মিথ্যা; শুধুমাত্র ইসলামই সত্যিকার ধর্ম। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য গোঁড়ামিপূর্ণ সৌদি সরকারের নীতি হচ্ছে যে কোন প্রকারেই হউক যতবেশি সম্ভব, এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিধর্মীদের ইসলাম ধর্মে দিক্ষিত করতে হবে। সেজন্য অ মুসলিমদের ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে সরকারের এবং ধর্ম দপ্তরের একটি প্রধান সক্রিয় ক্রিয়াকলাপ। যে সব বিধর্মীরা ইসলাম গ্রহণ করে তাদেরকে আমাদের সরকার ঢালাওভাবে পুরস্কৃত করে থাকে। এই প্রক্রিয়াকে উৎকোচ দ্বারা অ মুসলিমদের ইসলামে প্রবেশের রাস্তা প্রদানই বলা চলে। অনেক ক্ষেত্রে বিধর্মীদের উপর এমন জোরজবরদস্তিও চালান হয়—যাতে কোন কোন বিধর্মীর ইসলামে অনুপ্রবেশ ছাড়া গত্যন্তর থাকে না। যেহেতু সৌদি আরবে অ মুসলিমদের জঘণ্য প্রাণী হিসাবে গণ্য করা হয়, তাই যে সব ইসলামী ধর্ম প্রচারক এবং খাদেমরা ঔ সব ঘৃণিত পশুসম বিধর্মীদের ইসলামে দীক্ষিত করে তাদেরকে সরকারীভাবে প্রচুর উপঢৌকন দেওয়া হয়।
সৌদি আরবে অ মুসলিমদের প্রতি অবাধ বৈষম্য ও বিরাগ একেবারে সোজাসুজি ভাবে প্রকাশ করা হয়। এই বৈষম্যের সূত্রপাত হয় আকামা অথবা পরিচিতি পত্রের দ্বারা: যেমন লাল পরিচিতি পত্র (লাল কার্ড) হচ্ছে অ মুসলিমদের জন্যে এবং সবুজ পরিচিতি পত্র (সবুজ কার্ড) হচ্ছে মুসলমানদের জন্যে। মুসলিম এবং অ মুসলিমদের কর প্রথাও ভিন্ন রকম। সভ্য জগতে এ প্রক্রিয়াকে দেখা হবে খোলাখুলি, পরিষ্কার এবং অতি সতর্ক ভাবে প্রণীত সরকারী জাতিবিদ্বেষী নীতিমালা হিসেবে। আমার মনে হয় সৌদি আরবের এই নীতিমালা অতি সহজেই অধুনালুপ্ত দক্ষিণ আফ্রিকার জাতিবিদ্বেষী নীতিকেও হার মানায়।
সৌদি আরবে বিধর্মীদের উপস্থিতি কোন রকমে শুধুমাত্র বরদাস্ত করা হয়। এখানে অ-মুসলিমদের ধর্মের আচার অনুষ্ঠান অথবা উপাসনালয় তৈরীর কোন অধিকারই নাই। একজন সৌদির উপস্থিতিতে কোন বিধর্মী তার ধর্মের রীতি, প্রথা অথবা আচার প্রকাশ করা নিষেধ। এমনকি কোন সৌদির উপস্থিতিতে অ মুসলমানরা একে অপরকে সাদর সম্ভাষণ জানাতে পারেনা। কোন বিধর্মীর যদির বুকের পাটা থাকে যে সে এই সব নিয়ম কানুন বরখেলাফ করবে তবে তাকে অবিলম্বে সৌদি আরব থেকে বহিষ্কার করা হয়। সৌদি আরবে কোন অ মুসলিম কোন ক্রমেই একজন মুসলিম নারীকে বিবাহ করতে পারে না—এটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। বে সৌদিকে, তা জন্মসূত্রেই হোক অথবা স্বভাবিকিকরণে (নেচারালাইজ্ড) হোক সৌদি নাগরিকত্ব দেওয়া হয় না। আজকাল অবশ্য এই কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করা হয়েছে, কিন্তু এক অ মুসলিম কোনক্রমেই সৌদি নাগরিকত্ব পাবেনা।
এ ছাড়াও আরো একটি আইন হচ্ছে যে বিধর্মীরা সৌদি আরবে কোন বিদ্যালয় স্থাপন করতে পারেনা।
যেসব বিধর্মীদের তাদের জন্যে পরিবেষ্টিত স্থানে বাস করার সৌভাগ্য হয়েছে, তারা গোপনে শুধুমাত্র ঐ নির্দিষ্ট স্থানেই তাদের ধর্ম পালন করতে পারে। কিন্তু তা হতে হবে একেবারেই নিভৃতে—মুসলমানদের চক্ষুর অন্তরালে। এর অর্থ হো্ল, এই বিধর্মীরা তাদের জন্য নির্দিষ্ট স্থানে বন্দীর মত থাকবে। ওরা কোনক্রমেই কোন মুসলিমকে তাদের গৃহে আমন্ত্রণ জানাতে পারবে না।
রমজান মাসে সৌদি সরকার অ মুসলিমদের নির্দেশ দেয় তারা যেন মুসলমানদের প্রতি সম্মান দেখায় এবং কোনভাবে মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না করে। বিধর্মীদের আদেশ দেওয়া হয় তারা যেন মুসলিমদের সামনে খাওয়া দাওয়া না করে। কোন বিধর্মী এই আদেশ অমান্য করলে তাকে সৌদি আরব থেকে বহিস্কৃত করা হয়। আপনারা হয়ত ভাববেন শুধুমাত্র খাওয়া দাওয়া করার জন্যএটা কি করে হতে পারে? কিন্তু সৌদি আরবে এটাই নিয়ম। এই জন্য রমজান মাস শুরু হবার সাথে সাথেই সৌদি সরকার বিধর্মীদের জানিয়ে দেয় যে, যদি ঘরের বাইরে তাদেরকে খেতেই হয়, তবে তা যেন তারা করে লুকিয়ে, মুসলিমদের দৃষ্টির অন্তরালে। আজকাল আমার কেমন যেন মনে হচ্ছে যে খুব শীঘ্রই হয়ত ইউরোপে বসবাসকারী মুসলিমরাও এই ধরণের দাবী করে বসবে।
সৌদি শরিয়া আইন অনুযায়ী সমস্ত অ মুসলিম নারীদেরকে জোরপূর্বক মুসলিম পোষাক পরতে বাধ্য করা হয়। এই ইসলামী পোষাকের নাম হচ্ছে ‘আবায়া’। কোন বিধর্মী রমণী যদি আবায়া পরিধানে অপরাগতা দেখায় তবে ধর্মীয় আইন নির্বাহণ কর্তৃপক্ষ ঐ অ মুসলিম রমণীর জীবন দূর্বিসহ করে ফেলবে।
আমি আগেই বলেছি যে সৌদি সরকার বিধর্মীদের ইসলামে ধর্মান্তরিত করার জন্য প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগ করে। সত্যি বলতে কি আমি নিজের চক্ষে এই ধরণের অনেক জোরজবরদস্তিমূলক ধর্মান্তর অনুষ্ঠান দেখেছি। স্বীকার করতেই হবে যে এই কাজে ধূর্ত ও কৌশলী ওহাবী ইসলামীরা খুব জয়ী হচ্ছে। এই ধরণের দমণনীতি ও ইসলামের প্রচার চিরস্থায়ী করার উদ্দেশ্যে ধর্মান্তর অনুষ্ঠানগুলো সৌদি আরবের সব বিশিষ্ট সংবাদপত্রে ধুমধামের সাথে ফলাও করে প্রকাশ করা হয়। এই সব প্রচারে নতুন মুসলিমদের ছবিও দেখানো হয়।
সৌদি আরবে কোন বিধর্মী ইসলামে দীক্ষিত না হওয়া পর্যন্ত কোন রকম দান খয়রাত (যাকাত) পেতে পারেনা। সে জন্য দরিদ্র দেশ থেকে আগত অ মুসলিমদের এই যাকাতে প্রলোভিত করা হয় যাতে করে তারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এবং ধনবান সৌদি মুসলিমরা দান খয়রাতের মাধ্যমে আল্লাহ্র আশীর্বাদ লাভ করে।
এখন তুলনা করুন অ মুসলিমদের প্রতি সৌদিদের এই ঘৃণিত ব্যবহারের সাথে কাফেরদের দেশে মুসলমানদের কি ভাবে আপ্যায়িত করা হয়।
সৌদি আরব বিশ্বের সর্বত্র, বিশেষত, আমেরিকা ও ইউরোপে মসজিদ বানায়। কিন্তু অ মুসলিমরা সৌদি আরবে তাদের ধর্ম পালন করতে পারেনা। কাফেরদেশে অবস্থানরত মুসলমানরা তাদের পছন্দমত যে কোন মহিলাকে বিবাহ করতে পারে। এইসব মুসলমানরা তাদের ইচ্ছামত ইসলামী বিদ্যালয়ও তৈরী করতে পারে। এইসব মুসলমানরা হয়ত জন্মগতসুত্রে অথবা স্বাভাবিকীকরণের (ন্যাচারালাইজড্) মাধ্যমে কাফের দেশের নাগরিকত্ব পেতে পারে। কিন্তু সৌদি আরবে অ মুসলিমদের এই ধরণের কোন অধিকার নেই। কাফেরদের দেশে মুসলমানদের ইসলাম প্রচারের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। এই জন্যেই এই সব দেশের মুসলমানেরা আজ উঠেপড়ে লেগেছে কাফেরদের ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করতে।
পাশ্চাত্য দেশের মুসলমানেরা যাচ্ছেতাই ভাবে অন্য ধর্ম, বিশেষ করে ঈহুদি ও খৃষ্টান ধর্মের সমালোচনা করতে পারে, কিন্তু মুসলিম দেশে বসবাসকারী কাফেররা আইনগত ভাবে বাঁধা যে ইসলামের সমালোচনা করে একটা টুঁ শব্দ করতে পারবেনা—কেননা ইসলাম হচ্ছে পবিত্র, মহান ও সত্য। আমরা সবাই জানি যে এইসব ইসলামী দেশগুলোতে ইসলামের নিন্দা অথবা সমালোচনার মানেই হচ্ছে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হওয়া।
কিন্তু হায়, এখন দেখা যাচ্ছে কাফেরদের দেশে মুসলিমরা যে সব অধিকার এবং সম্মান উপভোগ করছে তা তাদের জন্যে অপ্রতুল। এইসব দেশের মুসলমানদের খাই অনেক বেশী—তারা আরো চায়। সে জন্যেই নিরীহ আমেরিকান জনতার উপর মুসলিমরা ঘটালো ৯/১১। আর এই জন্যেই শুধুমাত্র মুষ্টিমেয় কয়েকজন মুসলিম বিন লাদেনকে এই বর্বর হামলার জন্য নিন্দা করেছে। দেখা যাচ্ছে কাফেরদের প্রতি এই নৃশংসতা সম্পূর্ণভাবে ইসলামী মতবাদের অনুকুলে। আর এই জন্যেই দেখা যায় যে সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিমরা বিন লাদেনের সমর্থক। আমি আজ পর্যন্ত সৌদি আরবের কোন ইমামকে বলতে শুনি নাই যে বিন লাদেন ভুল করেছে। আজ পর্যন্ত কোন ইমাম ফতোয়া দেয় নাই যে বিন লাদিন একজন মুসলিম নয়, অথবা বিন লাদেন এক কাফের। সরাসরি না হলেও সব ইমাম গোপনে বিন লাদেনের সমর্থক—এতে আমার কোনই সন্দেহ নেই। যেহেতু আমি সৌদি আরবের স্থানীয় বাসিন্দা এবং যেহেতু আমার জন্ম এবং লালনপালন এই দেশেই, আমি লোকজনের মুখে যা শুনি এবং দেখি তাতে আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি যে সৌদি জনগণ বিন লাদেনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সে একাই অগুনতি কাফের হত্যা করেছে তাতে আপামর সৌদি জনগণ বেজায় খুশী। আমি টেলিভিশনে দেখলাম একজন প্রসিদ্ধ শেখ বিন লাদেনের উচ্ছ্বসিত প্রসংশা করছে যদিও ঐ শেখ স্বীকার করে নিল যে বিন লাদেনের কার্যের জন্য সৌদি আরবের সুনাম ব্যাহত হবে।
বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে যখন মুসলমানেরা ধৃষ্টতা দেখায় ফ্রান্সের আইন, যাতে সমস্ত বিদ্যালয়ে ধর্মীয় নিশানাকে নিষেধ করা হয়েছে, তার সমালোচনা করে। মুসলমানদের এই কুম্ভিরাশ্রুপাত কপটতা ও ভণ্ডামী ছাড়া কিছু নয়। মুসলমানরা মুসলিম দেশে অবস্থানরত কাফেরদেরকে তাদের ধর্মীয় অধিকার খর্ব করবে, কিন্তু তারা কাফেরদের দেশে চায় তাদের সেকেলে ধর্মের পূর্ণ ধর্মীয় অধিকার। চিন্তা করলে আমি আশ্চর্য হয়ে যাই এ কেমন অর্থহীন এক আবদার।
আজ ইউরোপ এক ভয়াবহ ও চুড়ান্ত বিপদের সম্মুখীন। এই বিপদ হচ্ছে সর্বত্র ইসলামের অনুপ্রবেশ। এই প্রসঙ্গে নেদারল্যাণ্ডের ভ্যান গঁগের কথা চলে আসে। তাকে দিনে দুপুরে, প্রকাশ্যে, নির্মমভাবে খুন করল এক ইসলামী জিহাদী। আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি যে ভবিষ্যতে এই রকম প্রচুর হত্যাকাণ্ড ঘটবে, যার হোতা হবে ইউরোপ এবং আমেরিকায় বসবাসী ইসলামী জিহাদীরা। এই ভাবেই অনেক নিরীহ ইউরোপিয়ান ও আমেরিকানকে জীবন দিতে হবে। তাদের একমাত্র অপরাধ হবে যে তারা কাফের। আমি ইসলামকে খুব ভালোভাবে জানি এবং আরো বলতে চাই যে আমি সৌদি আরবে বসবাস করি তাই এ ব্যাপারে আমার মনে কোন সন্দেহ নাই।
অনেক পাঠক আজ ইসলামের স্বরূপ দেখতে পারছেন। তার কারণ হলো ইন্টারনেট। আমরা জানতে পারছি ইসলাম আজ আধুনিক সভ্যতার জন্য বিরাট হুমকি।
আসলে আমি এখানে নতুন কিছুই লিখি নাই। যে ব্যাপারটা আমাকে উৎসাহিত করল এই রচনাটি লেখার জন্যে তা খুলে বলি। কয়েকদিন আগে আমাকে এক ই-মেইলে কতকগুলি ড্যানিশ জিনিষের তালিকা দেয়া হল এবং বলা হল ঐ সব জিনিষগুলো বয়কট করতে। আমার মনে হচ্ছে বিশ্ব এখন এক চরম পরীক্ষার সম্মূখীন। এটা হচ্ছে একদিকে ইসলাম ও অন্যপক্ষে সভ্য বিশ্ব—এই দুই শক্তি এখন মুখোমুখি। যে সব কাফেররা এখনও মনে করে যে কোথাও হয়ত ‘শান্তির’ অথবা ‘মডারেট’ ইসলাম আছে তাদের জন্যে এই মুহাম্মদের ব্যাঙ্গচিত্রের ঘটনাটি হচ্ছে তাদের নিদ্রা ভঙ্গ করার ডাক।
এখানে বলা যায় যে সংগত কারনেই মুহাম্মদের ব্যাঙ্গচিত্র হয়তো কিছু মুসলিমদের জন্যে অপমানকর মনে হতে পারে। কিন্তু এই ব্যাঙ্গচিত্রগুলো হয়তো একজন অথবা কয়েকজনের কাজ হতে পারে। এমনও হতে পারে যে এটা কোন সংবাদপত্রের কাজ। কিন্তু তার জন্য কেন মুসলিমরা সমগ্র ডেনমার্কের নাগরিকদের শাস্তি দিবে? এরূপ আচরণ কি ন্যায়সঙ্গত? যখনই আমি আমার বন্ধুদের এই প্রশ্ন করলাম তখনই তারা ক্রুদ্ধ হয়ে গেল। ওদের মতে সমগ্র ইউরোপ হচ্ছে ইসলামের শত্রু, ইউরোপ কোনদিনই ইসলামের সমালোচনা থেকে বিরত হবে না।তাই এই শাস্তি তাদের যথার্থই প্রাপ্য।
আমি বললাম তা হলে আমেরিকা এবং ইউরোপ যে মুসলিমদের সন্ত্রাসি মনে করে তা খুবই যুক্তিযুক্ত ও সঠিক। আমার বন্ধুরা আমার যুক্তি খণ্ডন করতে না পেরে আরো রেগে গেল। ওরা আমাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল—হয় আমি মুসলিমদের সাথে নতুবা কাফেরদের পক্ষে। কিন্তু আমি তো কারো পক্ষেই নেই—আমি শুধু ন্যায় ও সুবিচারের পক্ষে।
আমরা মুসলিমরা শুধুমাত্র অ মুসলিমদের সমালোচনা করেই ক্ষান্ত হই না। সত্য কথা হলো মুসলিমরা খুবই আবেগপ্রবণ, এবং অনেক ক্ষেত্রেই বিচার-বুদ্ধি দিয়ে চিন্তা করেনা। মুসলিমরা বোঝেনা যে আমেরিকা ও ইউরোপ যদি ইসলামের জাতিবিদ্বেষীমূলক পথ অনুসরণ করে তবে অতি অল্প সময়েই তারা সমগ্র মুসলিম বিশ্বকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। মুসলিমরা খুবই সৌভাগ্যবান যে কাফেররা ইসলামের নীতি অনুসরণ করে না।
আজ আমি দেখি মুসলিমরা ডেনমার্ক সরকারকে ক্ষমা চাইতে বলছে—সেই মৃত মুহাম্মদের জন্যে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে সত্যিকার ক্ষমা চাওয়া উচিত তাদের নয় কি যারা গোটা বিশ্ব জুড়ে অ মুসলিমদের প্রতি সীমাহীন বৈষম্য করে?
খালেদ ওলীদ
ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০০৬
===============================
মূলঃ খালেদ ওলীদ, অনুবাদ: আবুল কাশেম
মে ২, ২০১০ খ্রিস্টাব্দ