বিজ্ঞানময় কিতাব, মুসলমানদের পূর্নাঙ্গ জীবন বিধান তাদের ধর্মগ্রন্থ ‘কোরান’, সেই কোরান বুঝার জন্যে হাদিস সমূহ ও হাদিস সমুহের তাফসির পাঠ তো অনেক হলো। এবার আগামী কিছুদিন সনাতন হিন্দু ধর্মগ্রন্থ বিজ্ঞানময় বেদ-বেদান্ত, স্মৃতি সংহিতা, গীতা, পুরাণ, আগামশাস্ত্র, রামায়ণ, মহাভারত, ষড়দর্শন, উপনিষদ, ঋকবেদ, সামবেদ, যজুর্বেদ, অথর্ববেদ, আয়ুর্বেদ,ধনুর্বেদ,গন্ধর্বেদ, স্থাপত্যর্বেদ ও এই ধর্মের শাস্ত্রকারদের কর্তৃক তাদের কিতাব সমুহের তাফসির ব্যাখ্যা পাঠ করার চেষ্টা করবো।
আগে ধর্মটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় জেনে নেয়া যাক। হিন্দু ধর্ম মূলত আর্যদের বৈদিক ধর্ম। এ ধর্মের আদি ধর্মগ্রন্থের নাম ঋক বেদ। এ বেদের সূচনাতে একটি একেশ্বরবাদী ধর্ম ছিল। এটা অবতারবাদের প্রবক্তা। অতঃপর যুগে যুগে ব্রহ্মের অবতারগণ আগমন করতঃ ঋক বেদের অনুশীলন করতে গিয়ে এর সাথে স্থান-কাল উপযোগী সংযোজন-সংবর্ধন করে আরো ৪টি সংস্করণ তৈরি করে। এগুলোই হিন্দু ধর্মের অনুসরণীয় পঞ্চবেদ। এ পঞ্চবেদে বিশ্বাস করাকেই হিন্দু ধর্ম বলে; যাকে পূর্বকালে আর্য ধর্ম বলা হত। শুধু বিশ্বাস করলে হবে, মানতে হবেনা? বেদে বিশ্বাস না রেখে হিন্দু থাকা যায়? বেদ কি ঈশ্বরের দেয়া অবশ্য পালনীয় বাণী? আধুনিক যুগের কিছু হিন্দু দাবী করছেন, হিন্দু ধর্ম আসলেই মানা মানির কোনো ধর্ম নয়, শাস্ত্রীয় কোনো বিধি বিধান নেই, কিছু মানা বাধ্যতামূলক নয়, মানা না মানা ঐচ্ছিক ব্যাপার, এটি একটি লোকায়ত দর্শন, একটি জাতি একটি দেশের লোকাচার, যাপিত জীবন ও সংস্কৃতির ইতিহাস মাত্র। শুনতে বেশ ভালই লাগলো। কিন্তু আসলেই কি তা’ই?
বেদ থেকে সামান্য উদাহরণ দেয়া যাক;
“হে ঈশ্বর, যারা দোষারোপ করে বেদ ও ঈশ্বরের / তাদের উপর তোমার অভিশাপ বর্ষণ করো”। (ঋগবেদ ২,২৩,৫)
“যে লোক ঈশ্বরের আরাধনা করেনা, এবং যার মনে ঈশ্বরের প্রতি অনুরাগ নেই, তাকে পা দিয়ে মাড়িয়ে হত্যা করতে হবে”। (ঋগবেদ ১,৮৪,৮)
“গবাদিপশুগুলো কী করছে নাস্তিকদের এলাকায়, যাদের বৈদিক রীতিতে বিশ্বাস নেই, যারা সোমার সাথে দুধ মিলিয়ে উৎসর্গ করেনা, এবং গরুর ঘি প্রদান করে যজ্ঞও করেনা? ছিনিয়ে আনো তাদের ধন সম্পদ আমাদের কাছে”। (ঋগবেদ ৩,৫৩,১৪)
“যে ব্যক্তি ব্রাহ্মণের ক্ষতি করে, ব্রাহ্মণের গরু নিজের কাজে লাগায় তাকে ধ্বংস করে দাও”। (অথর্ববেদ, ১২,৫,৫২)
“তাদেরকে হত্যা করো যারা বেদ ও উপাসনার বিপরীত”। (অথর্ববেদ, ২০,৯৩,১) এবং যজুর্বেদ ৭/৪৪ “তাদের যুদ্ধের মাধ্যমে বশ্যতা মানাতে হবে”।
“সেনাপতি, হিংস্র ও নির্দয়তার সাথে শত্রুদের পরিবারের সদস্যদের সাথেও যুদ্ধ করবে”। (যজুর্বেদ ১৭/৩৯)
“শত্রুদের পরিবারকে হত্যা কর তাদের জমি ধ্বংস কর”। (যজুর্বেদ ১৭/৩৮)
“হাতি, ঘোড়া, অর্থ, শষ্য, গবাদিপশু ও নারী তার দখলে যে যুদ্ধের মাধ্যমে তা জয় করে”। (মনু, ৭, ৯৬)
[[{“fid”:”642″,”view_mode”:”default”,”fields”:{“format”:”default”,”field_file_image_alt_text[und][0][value]”:false,”field_file_image_title_text[und][0][value]”:”হিন্দু ধর্মে সতীদাহ প্রথা”},”type”:”media”,”field_deltas”:{“1”:{“format”:”default”,”field_file_image_alt_text[und][0][value]”:false,”field_file_image_title_text[und][0][value]”:”হিন্দু ধর্মে সতীদাহ প্রথা”}},”link_text”:null,”attributes”:{“title”:”হিন্দু ধর্মে সতীদাহ প্রথা”,”height”:235,”width”:392,”style”:”float: right; margin-left: 4px; margin-right: 4px;”,”class”:”media-element file-default”,”data-delta”:”1″}}]]ব্যস এটুকুই যথেষ্ট ছিল হিন্দু ধর্মকে বিবেকহীন চরম অমানবিক ধর্ম হিসেবে জানার জন্যে। কিন্তু এগুলোর চেয়েও এক নজিরবিহীন মারাত্বক পাশবিক জঘন্য বর্বর রীতিও এই ধর্মের মানুষগুলো পালন করেছে বহুদিন তাদের ভগবান প্রদত্ত্ব বিধান হিসেব। ‘সতীদাহ প্রথা’। ভন্ড আধুনিক হিন্দুরা নারীকে দোষ দেয়ার লক্ষ্যে এর নাম দিয়েছেন ‘সহমরণ’। তারা বলার চেষ্টা করেন ওগুলো ছিল ‘ইচ্ছে মরন’। হায়রে বুদ্ধিমান ব্রাহ্মণ!
ব্রাহ্মণ্যবাদীরা কোনো হিন্দু স্বামী মারা গেলে তার বিধবা স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলে ‘সতী’ বানা্তেন, ইংরেজ আমলে আইন করে এ ধর্মীয় বর্বর প্রথাকে রুখতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। কেইনের (Kane) ‘ধর্মশাস্ত্রের ইতিহাস’ (আট খণ্ড) গ্রন্থের ‘সতী’ বিষয়ক কয়েকটি অধ্যায়ে বেশ কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন। এই পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ১৮১৫ সাল থেকে ১৮১৮ সাল পর্যন্ত মাত্র তিন বছরে নারীর সতীত্ব (?) রক্ষার ধুয়া তুলে কেবলমাত্র বাংলোতেই (যা তখন বারাণসী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল) ২৩৬৬ জন নারীকে আগুনে পুড়িয়ে সতী বানানো হয়েছিল, যার মধ্যে কলকাতাতেই সতীদাহের সংখ্যা ১৮৪৫। আর ১৮১৫ থেকে ১৮২৮ সাল পর্যন্ত বাংলাতে ৮১৩৫ জন নারীকে আগুনে পুড়িয়ে সতী বানিয়েছিলেন ঠাকুর-পুরহিতগণ। এটা কি গণহত্যা নয়? এ কি জঘন্য-বর্বর ধর্মীয় রীতি নয়? বীভৎস ধর্মীয় রীতিনীতির প্রতি ইঙ্গীত করে Pascal বলেছেন Men never do evil so completely and cheerfully as when they do it from religious conviction. হিন্দু নারীরা কি স্বামীর মৃত্যুর পর স্বেচ্ছায় স্বামীর চিতায় ওঠে সহমরণে যেতেন? মোটেই তা নয়।
ঐতিহাসিকগণ জানিয়েছেন, কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সদ্য বিধবা নারীকে উত্তেজক পানীয় পান করিয়ে কিংবা নেশা জাতীয় দ্রব্য শুঁকিয়ে অজ্ঞান করে কিংবা অর্ধচেতন অবস্থায় স্বামীর চিতায় তুলে দেওয়া হতো। এ বিষয়ে ভারতের অন্যতম মানবতাবাদী লেখক ড. সুকুমারী ভট্টাচার্য তার ‘প্রাচীন ভারতে নারী ও সমাজ’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন :
“সদ্যবিধবা নারী নববধূর মতো সাজে, তার শ্রেষ্ঠ পোষাক পরে, সিঁদুর, কাজল, ফুলমালা, চন্দন, আলতায় সুসজ্জিত হয়ে ধীরে ধীরে সে চিতায় ওঠে, তার স্বামীর পা দুটি বুকে আঁকড়ে ধরে কিংবা মৃতদেহকে দুই বাহুতে আলিঙ্গন করে, এইভাবে যতক্ষণ না আগুন জ্বলে সে বিভ্রান্তির সঙ্গে অপেক্ষা করে। যদি শেষ মুহূর্তে বিচলিত হয় এবং নীতিগত, দৃশ্যগতভাবে ছন্দপতন ঘটে তাই শুভাকংখীরা তাকে উত্তেজক পানীয় পান করান। এমন কি পরে যখন আগুনের লেলিহান শিখা অসহনীয় হয়ে ওঠে, পানীয়র নেশা কেটে যায়, তখন যদি সেই বিধবা বিচলিত হয়ে পড়ে, ‘সতী’র মহিমা ক্ষুণ্ন হবার ভয় দেখা দেয় তখন সেই শুভাকাংখীরাই তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে চেপে ধরে যদি সে চিতা থেকে নেমে আসতে চায়, প্রতিবেশী, পুরোহিত, সমাজকর্তা সকলেই অনুষ্ঠানের সাফল্যের জন্য অতিমাত্রায় সাহায্য করতে চায়। তারা গান করে, ঢাক বাজায় এতো উচ্চ জয়ধ্বনি দেয় যে সতী যা কিছু বলতে চায় সবই উচ্চনাদে ঢেকে যায়।” (প্রাচীন ভারতে নারী ও সমাজ, পৃষ্ঠা ১৪৭)।
বর্তমানকালের তথাকথিত ‘মডারেট’ হিন্দুরা স্বীকার করতে চাইবেন না, অথবা অনেকেই জানেন না তাদের ধর্মগ্রন্থে ‘স্বামী মারা গেলে বিধবাকে স্বামীর চিতায় আগুনে পুড়ে মরে সতী হওয়ার’ সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। প্রমাণ চাই তো, দেখুন ঋগ্বেদের দশম মণ্ডলের ১৮নং সূক্তের ৭ নং শ্লোক(১০/১৮/৭) শ্লোকটির ইংরেজি হচ্ছে : Let these women, whose husbands are worthy and are living, enter the house with ghee (applied) as collyrium (to their eyes). Let these wives first step into the pyre, tearless without any affliction and well adorned. অথর্ববেদে রয়েছে, “আমরা মৃতের বধু হবার জন্য জীবিত নারীকে নীত হতে দেখেছি।” (১৮/৩/১,৩)। পরাশর সংহিতায় পাই, “মানুষের শরীরে সাড়ে তিন কোটি লোম থাকে, যে নারী মৃত্যুতেও তার স্বামীকে অনুগমন করে, সে স্বামীর সঙ্গে ৩৩ বৎসরই স্বর্গবাস করে।” (৪:২৮)। দক্ষ সংহিতার ৪:১৮-১৯নং শ্লোকে বলা হয়েছে, A sati who dies on the funeral pyre of her husband enjoys an eternal bliss in heaven. (যে সতী নারী স্বামীর মৃত্যুর পর অগ্নিতে প্রবেশ করে সে স্বর্গে পূজা পায়)। এই দক্ষ সংহিতার পরবর্তী শ্লোকে (৫:১৬০) বলা হয়েছে, “যে নারী স্বামীর চিতায় আত্মোৎসর্গ করে সে তার পিতৃকুল, স্বামীকুল উভয়কেই পবিত্র করে।” যেমন করে সাপুড়ে সাপকে তার গর্ত থেকে টেনে বার করে তেমনভাবে সতী তার স্বামীকে নরক থেকে আকর্ষণ করে এবং সুখে থাকে। ব্রহ্মপুরাণ বলে, “যদি স্বামীর প্রবাসে মৃত্যু হয়ে থাকে তবে স্ত্রীর কর্তব্য স্বামীর পাদুকা বুকে ধরে অগ্নিপ্রবেশ করা।” (প্রাচীন ভারতে নারী ও সমাজ, পৃষ্ঠা ১৪০)।
মহাভারতের মৌষল পর্বে আমরা দেখি, ভগবান কৃষ্ণের মৃত্যুর পর তাঁর চার স্ত্রী রুক্কিণী, রোহিণী, ভদ্রা এবং মদিরা তাঁর চিতায় সহমৃতা হয়েছিলেন। এমন কি বসুদেবের আট পত্নীও তাঁর মৃত্যুর পরে সহমরণে গিয়েছিলেন। ব্যাসস্মৃতি বলছে, চিতায় বিধবা নারী তার স্বামীর মৃতদেহে আলিঙ্গন করবেন অথবা তার মস্তকমুণ্ডন করবেন। (২:৫৫)। ষষ্ঠশতকের বরাহমিহির তার বৃহৎসংহিতায় বলেন, “অহো নারীর প্রেম কি সুদৃঢ়, তারা স্বামীর দেহ ক্রোড়ে নিয়ে অগ্নিতে প্রবেশ করে।” (৭৪:২৩)। এ কুযুক্তি শুধু বরাহমিহির কেন, আজকের একুশ শতকের কতিপয় পুরোহিত-ঠাকুর গর্বভরে ঘোষণা করেন, “নারী তার স্বামীর প্রতি ভালোবাসার জন্যই সহমরণে যায়; এ হিন্দু নারীর বৈশিষ্ট্য, ঐতিহ্য, মমত্ব, স্বামীর প্রতি অগাধ ভালোবাসার দুর্লভ উদাহরণ।” ঠাকুর-পুরহিতের প্রচলিত ভণ্ডামিপূর্ণ বক্তব্যের স্পষ্ট জবাব দিয়েছেন ড. সুকুমারী ভট্টাচার্য; তিনি বলেন : “বৃহৎসংহিতার যুগ থেকেই সমাজ এই অতিকথা ঘোষণা করে আসছে যে নারী তার স্বামীর প্রতি ভালোবাসার জন্যই সহমরণে যায়। এই মিথ্যার অবসান হওয়া উচিৎ। যদি স্বামীর প্রতি প্রেমে এক নারী আত্মহত্যা করে তবে কেন আজ পর্যন্ত কোনো স্বামী তার স্ত্রীর চিতায় আত্মহত্যা করেনি? এ তো হতে পারে না যে আজ পর্যন্ত কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে ভালোবাসেনি। যদি সতীদাহের ভিত্তি হতো প্রেম, তবে আমরা অবশ্যই কিছু কিছু ঘটনা দেখতে পেতাম যেখানে মৃত স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীও সহমরণে গেছেন। কিন্তু তা হয়নি, এ বিষয়ে কোনো শাস্ত্রীয় বিধিও নেই। সুতরাং মূল ব্যাপার হল স্বামীর স্বার্থে স্ত্রীর সম্পূর্ণ আত্মবিসর্জন; আর সতীদাহ এই আজীবন নাটকেরই পঞ্চমাংকের শেষ দৃশ্য।” (দ্রষ্টব্য : প্রাচীন ভারতে নারী ও সমাজ, পৃষ্ঠা ১৪৮)
রামায়ণেও আমরা দেখি, রাবণের কাছে বন্দি থাকাকালে সীতার “সতীত্ব” ঠিক ছিল কী-না সেটা জানার জন্য অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। সেটা ভগবান রামও অনুমোদন করে দেন! অথচ রামের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অধিকার কারও ছিল না! একই ঘটনা ঘটেছে বেহুলার বেলায়, দ্রোপদীর বেলায়ও। জগতে এই ধর্মটাই নারীকে সব চেয়ে বেশী অসম্মান অপমান, অবদমন পদদলিত করেছে।
গুপ্ত সাম্রাজ্যের আগে থেকেই ভারতবর্ষে সতীদাহ প্রথার প্রচলন ছিল। প্রাচীন সতীদাহ প্রথার উদাহারণ পাওয়া যায় অন্তর্লিখিত স্মারক পাথরগুলিতে। এ পর্যন্ত সবচেয়ে প্রাচীন স্মারক পাথর পাওয়া যায় মধ্যপ্রদেশে, কিন্তু সব থেকে বড়ো আকারের সংগ্রহ পাওয়া যায় রাজস্থানে। এই স্মারক পাথরগুলিকে সতী স্মারক পাথর বলা হত যেগুলি পুজো করার বস্তু ছিল [Shakuntala Rao Shastri, Women in the Sacred Laws – The later law books (1960)]। ডাইয়োডরাস সিকুলাস (Diodorus Siculus) নামক গ্রিক ঐতিহাসিকের খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতকের পাঞ্জাব বিষয়ক লেখায়ও সতীদাহ প্রথার বিবরণ পাওয়া যায় [Doniger, Wendy (2009). The Hindus: An Alternative History. Penguin Books. p. 611]।
হিন্দু ধর্মের বেদ-গীতা, মনুসংহিতা, উপনিষদ, রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণপাচালি ইত্যাদির মধ্যে এতো জাতপাতের বৈষম্য, বর্ণভেদ, গোত্রবিভেদ, ধর্মভেদ, ধর্মান্ধতা, গোঁড়ামি, কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানসিকতা, নারীর প্রতি কুসংস্কার, বিরূপ ধারণা, ভয়, ঘৃণা, জংলী আইন-কানুন একই ধর্মাবলম্বী বলে ঘোষণা করেও শূদ্র-বৈশ্যর প্রতি ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়ের শ্রেণীবিভেদের বিপুল সমাহার আর সরব উপস্থিতি ও চর্চা দেখেই হয়তো উপনিবেশিক ভারতবর্ষে বাংলার রেনেসাঁসের অন্যতম প্রাণপুরুষ বলে পরিচিত হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও (১৮০৯-১৮৩১) ও তাঁর অনুসারীরা Athenium নামক মাসিক পত্রিকায় সোচ্চারে ঘোষণা দিয়েছিলেন, If there is anything that we hate from the bottom of our heart, it is Hinduism.
(চলবে)
জানুয়ারি ৩, ২০১৭; ৪:২০ অপরাহ্ন
অনেকদিন পরে আপনার উপস্থিতিতে ব্লগ যেন প্রাণ ফিরে পেলো। ধন্যবাদ আকাশ মালিক।
প্রতিটা পর্ব পড়ার জন্য অপেক্ষায় থাকবো। আশা করি পাঠকরাও নিরাশ হবেন না।
জানুয়ারি ৮, ২০১৭; ২:৪০ পূর্বাহ্ন
খুব ভাল লেগেছে !
জানুয়ারি ৮, ২০১৭; ২:৪৮ পূর্বাহ্ন
আমি পূর্বে মনে করছিলাম ইসলাম ধর্মের চেয়ে হিন্দু ধর্ম অনেকটা শান্তি প্রিয় কিন্তু এখন দেখছি হিন্দু ধর্ম ও নিষ্ঠূর ও অমানবিক !
ধন্যবাদ আকাশ মালিক ভাইকে ।
জানুয়ারি ১৬, ২০১৭; ৬:৫৫ পূর্বাহ্ন
আস্তিকেরা সকলেই ঐরকম একটা ধর্মকে বাকিগুলোর চেয়ে ভাল মনে করেই জীবন কাটিয়ে দেয়। তুলনামূলক ভালমন্দ আছে এটা মানতেই হবে, তবে মানসিক স্বাধীনতার জন্য সবগুলোই হুমকি।
জানুয়ারি ১৫, ২০১৭; ৭:৫১ পূর্বাহ্ন
ধর্ম মানেই পৃথিবীকে নরক বানিয়ে নিজে স্বর্গে যাবার ম্যানুয়াল। যখন যে ধর্ম ক্ষমতায় থেকেছে তখন সেইই যা ইচ্ছে তাই করেছে। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে আবার করবে। কেউ কারও চেয়ে কম যায়না।
জানুয়ারি ১৫, ২০১৭; ৮:০৩ পূর্বাহ্ন
বলতে বাধ্য হলাম যে মালিক সাহেব ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের মতের স্বপক্ষের কথাগুলি প্রকাশ করেছেন এবং যেগুলি বিপক্ষে যায় সেগুলি গোপন করে গেছেন। বেদে যে সতীদাহ প্রথাকে বাধ্যতামূলক করা হয়নি, বিধবাদের বেঁচে থাকার কাহিনীও আছে সেটা অন্তত রামমোহন রায়ের নাম যারা জানেন তাদের সবারই জানার কথা। বেদে যে বিধবা বিবাহের কাহিনীও আছে সেকথা বিদ্যাসাগরের নামের সঙ্গে পরিচিত সকলেই জানে। মালিক সাহেব যদি অন্যের লেখা কপি পেস্ট না করে থাকেন তাহলে আশাকরি উত্তর দিয়ে যাবেন।
জানুয়ারি ১৫, ২০১৭; ৮:২৯ পূর্বাহ্ন
মালিক সাহেব হয়তো সবটা বলেননি। বেদের পিঠ বাঁচাতে লাফানোর জন্য আপনি তো আছেনই। সবাই মিলে কাজ করলেই তো হয়। লেখক একাই সব করবেন কেন? আপনিও কিছু অবদান রাখুন। দেখুন যদি বেদের সম্মান বাঁচাতে পারেন।
জানুয়ারি ১৫, ২০১৭; ৮:৫০ পূর্বাহ্ন
বেদের সম্মান রাখার দায়িত্ব আমার নয়। কয়েক হাজার বছর ধরে বহু বড় বড় মক্কেল এসে বেদের বিরুদ্ধে বড় বড় লেকচার দিয়েছে, তাদের তুলনায় আপনারা তুচ্ছ মানুষ। সম্ভবত বেদ আপনারা পড়েও দেখেছেন বলে মনে হয়না। তবে রামমোহন রায় যখন সতীদাহ প্রথা বন্ধ করিয়েছিলেন সেজন্য বাইবেল বা কোরানের দরকার হয়নি। জাতিসঙ্ঘের আইন তখন ছিলনা। তিনি বেদের এবং অন্যান্য হিন্দুশাস্ত্রের নজির দেখিয়েই সতীদাহ বন্ধ করিয়েছিলেন। বিদ্যাসাগর যখন বিধবা বিবাহ চালু করেন তিনিও শাস্ত্রের নজির দেখিয়েই কাজটি করেছিলেন। লেখক যেমনটা দাবী করছেন সেটা যদি সত্যি হত তাহলে এমনটা ঘটনা সম্ভব ছিলনা।
বস্তুত লেখক আদৌ বেদের যথাযথ আলোচনার জন্য এই লেখাটি শুরু করেননি। শুরুতেই তিনি বলে দিয়েছেন এতদিন কোরান হাদিসের সমালোচনা করার পর ব্যালান্স করার জন্য হিন্দুধর্মকে ধরেছেন। আপনারা হয়ত এই লেখককে রামমোহন বা বিদ্যাসাগরের চেয়েও বড় পন্ডিত ভেবে হাততালি দেবেন। সে আপনাদের ইচ্ছা।